বাজেট, সাদা-কালো টাকা আর মামলার গল্প

১.
১৯৯৬, সাল অনেক দিন পর আবার ক্ষমতায় আওয়ামি লীগ, হাসিনা আপা মন্ত্রী খুজছেন। প্রায় সব মন্ত্রনালয়ের লোক পাওয়া গেছে, বাকি শুধু অর্থমন্ত্রী । তো ইন্টারভিউ বোর্ড বসল, তোফায়েল, আমু, রাজ্জাক আর আপা নিজে। একেক জন আসে, আপা খালি একটা প্রশ্ন জিগায় … ” কনতো মিয়া, ৪ যোগ ৪ কত ? ” সবাই বলে, আপা, এইডা তো সবাই জানে, ৮। আপা মন খারাপ করে বলেন – “আউট”। এর পর আসলেন কিবরিয়া সাহেব – উনি ভাইবা চিন্তা কইলেন – “আফা, আপনি যা কইবেন, তাই হইব, আপনি কইলে ৮, আবার আপনি কইলে ৯”। এইবার আপার মুখে হাসি – “আপনি আমগো নয়া অর্থমন্ত্রী “। দেশটা উনি ভালাই চালাইতেছিলেন … কিন্তু বেশি দিন থাকতে পারলেন কই। এই দেশে সবাই থাকতে পারে না রে পাগল, এরশাদের মত চরিত্রবানদের দেশ এইডা ।

২.
২০০৭, এইবার আফার আর সমস্যা নাই, বিল্ট ইন অর্থমন্ত্রী পাইয়া গেছেন মালামাল মুহিতকে । আমাদের মত আম পাবলিকের কাছে বাজেট মানে হইল, কিছু জিনিসের দাম কমা আর কিছুর দাম বাড়া। ফি বছর বাজেট এর পরের দিন, প্রথম আলুতে এইডা খুব সুন্দর কইরা ছাপা হয়। “দাম কমবে – আলু, পটল, কচু”, দাম বাড়বে – “দুধ, মুবাইল, কাগজ”। কিন্তু আমাদের মাল সাহেব এইবার বাজিমাত করে দিছেন, হালার বিড়ি থেকে এসি আর কাগজ থেকে গাড়ি, সব কিছুর দাম বাড়াইয়া দিছেন।

৩.
টাকার আবার সাদা কালো কি ? সব টাকাই তো কালার টিভির লাহান। ১/১১ থেকে কত সাদা – কালো টাকার গল্প শুনলাম। একাবার শুনলাম এই টাকা দিয়া গরিবের হাসপাতাল হবে, আসলে সব ছিল মইন ভাইয়ের গাল গল্প। দেশের টাকা দেশের কাজে খরচ কইরা ওনারা গেছেন অবসরে। আমাদের মত আম পাবলিকের তো লাভ নাই এইসবে। তো মাল সাহেব আর এক কাঠি সরেস, উনি বিনিয়োগ বাড়ানোর জন্য সাদা – কালো টাকারে রঙ্গীন বানানোর ডিজিটাল মেশিন নিয়া আইছেন। সাবাস মাল সাবাস

৪.
দুদকের ” দুর্নীতির জিহাদ” অনেক আগেই শেষ, এরপরে শুরু হইল “মামালার জিহাদ”। আসলেই, হাসান মশহুদ বুজেন নাই, ‘নেতা দের দোষ আসলে কোন দোষ না। খালি খালি এদের মৌজ মাস্তিতে ঝামেলা করছেন কিছু দিন। এখন দেখেন, আবার সব ফক ফকা । সব মামলা মাফ, আর দন্ড মাফের জন্য রাষ্ট্রপতির কাছে আবেদন করবেন। আমাদের রাষ্ট্রপতি, যিনি আপার একজন একনিষ্ট কর্মী উনি তো সবাইকে মাফ করে দিবেন। তবে বিএনপির ব্যাডলাকটাই খারাপ। সোনার ছেলেদের আর কিছুদিন দেশের বাইরে থাকতে হবে। হাসান মশহুদ খালি খালি মামলা করতে যে টাকা গুলা খরচ করলেন, সেই টার কি দরকার ছিল?

৫.
সব বুজলাম, এখন মঈন ভাই , হাসান মশহুদ, ফকর উদ্দিন অবসরে, বারি সাহেব নাকি পলাতক, সবার মামলা মাফ, দন্ড মাফ। কয়দিন পরে সোনার ছেলেরা ফিরে আসবে। পল্টন ময়দানে আবার শুরু হবে চোর আর তার মায়ের চিল্লা চিল্লি। দেশ অচল হয়ে যাবে হরতালে। কিন্তু ২ বছরে অনেক সাধারন মানুষ মারা গেছেন। মারা গেছেন চারেশ রিসিল, তার কি হবে, রাষ্ট্রপতি তারে কি ফিরায়া দেবেন ? হার্ট এটাকে এই সব সাধারন মানুষ মরে, আর সাকা মরে না কেন ?? লাভ নাইরে পাগলা, আম পাবলিকের আবার বেচে থাকা ।

প্রিয় রাষ্ট্রপতি ! আপনি শুধু হাসিনা আর আওয়ামি লীগের না। আমাদের সবার রাষ্ট্রপতি । সেই সব মানুযের রাষ্ট্রপতি যারা দেশের জন্য যুদ্ধ করছেন । অনেক কিছুই তো করছেন দলের জন্য, নিজের স্ত্রীকেও হারিয়েছেন। একবার বলুন, “না, আমি এই সব চোরদের ক্ষমা করবো না”। প্লিজ একবার বলুন।

৩,১৮৪ বার দেখা হয়েছে

৪০ টি মন্তব্য : “বাজেট, সাদা-কালো টাকা আর মামলার গল্প”

  1. সত্য কথা কারো ভালো লাগে না।
    এই কথাগুলা আমার ভালো লাগছে। সত্য বুঝে আরো কষ্ট বাড়ে---- কিছু করতে না পারার কষ্ট।

    আমি জানিনা এই কথাগুলো ক'জন সহ্য করতে পারবেন।
    আমার কষ্টটুকু বেড়ে গেলো ভাইয়া......

    কেন আমরা এমন? আমাদের নেতারা এমন? আমাদের ভোটেই তো তারা অতদূর যান......... :bash: :bash: :bash: :bash: :bash: :bash: :bash: :bash: :bash: :bash: :bash: :bash: :bash:

    জবাব দিন
  2. তাইফুর (৯২-৯৮)

    নাম করনের সার্থকতায় বাবা-মা কে ১০০ তে ১০০ পাইয়ে দেবার জন্য প্রানান্ত চেষ্টা করে যাচ্ছেন তিনি ...


    পথ ভাবে 'আমি দেব', রথ ভাবে 'আমি',
    মূর্তি ভাবে 'আমি দেব', হাসে অন্তর্যামী॥

    জবাব দিন

মওন্তব্য করুন : মেহেদী হাসান সুমন (১৯৯৫-২০০১)

জবাব দিতে না চাইলে এখানে ক্লিক করুন।

দয়া করে বাংলায় মন্তব্য করুন। ইংরেজীতে প্রদানকৃত মন্তব্য প্রকাশ অথবা প্রদর্শনের নিশ্চয়তা আপনাকে দেয়া হচ্ছেনা।