দ্বিধার হাতছানি

কিছু ব্যাপার আছে যেগুলো নিজের ভেতরই জমিয়ে রাখতে হয়। তার বহিঃপ্রকাশ কোন সমাধান নয়। বরং আরো কিছু সমস্যার আগমনী বার্তা। শহরে যে ছেলেটি পড়তে এসেছে চোখে একরাশ স্বপ্ন নিয়ে। স্বপ্ন কি শুধু তার একার। গ্রামের অল্প কিছু জমি। তা থেকে যা ধান পায় তা দিয়েই বছর চলে। সে জমির অর্ধেক টা বন্ধক রেখে ভর্তি ফী জোগাড় করেছে যে বাবা। কিংবা বিয়ের সাধের গয়না গুলোও বিক্রি করে দিতে দ্বিধা করেনি যে মা শুধুমাত্র ছেলেটার উজ্জ্বল ভবিষ্যৎের কথা ভেবে। বরং বারবার বলেছে ” টাকা পয়সা নিয়ে একদম ভাববি না। শুধু পড়বি।” ভাবতে না চাইলেও ভাবনা এসে যায়। বাসা থেকে পাঠানো আক্ষরিক অর্থে সীমিত সে টাকা গুনে আর কত চলা যায়। আবেগ মূল্যায়নের বিচারে হয়ত তা অনেক কিন্তু বাজারে তো আর আবেগ চলে না। নির্লিপ্তের মত বাসের কন্ডাকটর কে বলে যায় ” মামা স্টুডেন্ট ভাড়া। আরো দুই টাকা দাও।” একসময় অনেক বন্ধুও হয়ে যায়। তাদের সাথে ওঠা বসায় স্ট্যাটাস মেইনটেইনে খরচ বাঁচাতে নির্দ্বিধায় ক্যান্টিনের আড্ডায় বলে দেয় ” তোরা খা। আমার ক্ষুদা নেই।”
“আরে খা। আমি খাওয়াচ্ছি তো।” বলে কেউ যখন এগিয়ে আসে……. থামিয়ে দেয়। ” না। আমার আসলেই ক্ষুদা নেই।”
জানে ওরা খাওয়ালে একদিন আবার খেতে চেয়ে বসতে পারে।
কিছু করার নেই।কাউকে বলতে পারে না। না পারে সমাজকে বলতে নিজের অবস্থার কথা, না পারে বলতে বাবা কে আর কটা টাকা বেশি পাঠানোর কথা।সবাই যখন ঘুমিয়ে যায়……. ছেলেটি চাঁদের পানে চেয়ে কথা গুলো ভাবে। চোখে একরাশ স্বপ্ন। অনেক বড় হওয়ার।

১,১৩০ বার দেখা হয়েছে

১০ টি মন্তব্য : “দ্বিধার হাতছানি”

  1. সাইদুল (৭৬-৮২)

    সবাই যখন ঘুমিয়ে যায়……. ছেলেটি চাঁদের পানে চেয়ে কথা গুলো ভাবে। চোখে একরাশ স্বপ্ন। অনেক বড় হওয়ার।

    ছেলেটা যেন অনেক বড় হয়। শেষের কথা গুলো নাড়া দিয়ে গেল


    যে কথা কখনও বাজেনা হৃদয়ে গান হয়ে কোন, সে কথা ব্যর্থ , ম্লান

    জবাব দিন

মওন্তব্য করুন : লুৎফুল (৭৮-৮৪)

জবাব দিতে না চাইলে এখানে ক্লিক করুন।

দয়া করে বাংলায় মন্তব্য করুন। ইংরেজীতে প্রদানকৃত মন্তব্য প্রকাশ অথবা প্রদর্শনের নিশ্চয়তা আপনাকে দেয়া হচ্ছেনা।