নস্টালজিয়া পার্ট ২

আজকে আবার লিখা শুরু করলাম ।অনেকেই বলল যে আগের লিখায় নাকি ফিনিশিং ভালো হয় নাই । চেষ্টা করবো এই  লিখায় জিনিসটা ঠিক করতে ।

যাই হোক আজকে আলোচনা করবো ক্যাডেট কলেজে ব্যাবহৃত কিছু শব্দ নিয়া ।  প্রথম শব্দটা হইলো বাক্স । স্বাভাবিক মানুষ বাক্স বলতে যা বুঝে তাহা  হলো চতু্রভুজ আকৃতির একটা জিনিস জার মধ্যে জিনিস পত্র রাখা হয় । অথবা কলম পেন্সিল রাখার জিনিস । যাই হোক কিন্তু ক্যাডেট দের পরিভাষায় বাক্স সম্পূর্ণ ভিন্ন একটা জিনিস । ক্যাডেটরা বাক্স বলতে বুঝে ভাব বা পার্ট আরো clearly বললে বলতে হবে ইজ্জত বা prestige । আমি আমার ক্যাডেট জীবনে বহুবার এর ব্যাখ্যা বাহির করার চেষ্টা করছি । but  পারি নাই । suppose  কোনো junior ক্যাডেট senior ক্যাডেটরে অপমান করল । then ক্যাডেটরা ওইটারে বলবে যে অমুক তো অমুক ভাইয়ার বক্স ফাটাইয়া দিলো । ভাই বুঝি না অপমান করার সাথে বাক্স ফাটানোর কি সম্পর্ক । মনে মনে ধইরা নিলাম যে অপমান করা মানে কার ইজ্জত  ফাটানো । বাক্স ফাটানো যায় তাই ইজ্জত ফাটানরে বাক্স ফাটানো বলে । কিন্তু তাই যদি হবে তাইলে তো ওইটারে বাক্স না বইলা বেলুন বলতে পারতো কারন বাক্সের চাইতে তো বেলুন আরো ভালভাবে ফুটে ।  জিনিসটা এখনো আমার কাছে clear না ।

আবার যদি কোনো ছিনিয়ার খুব ভাব মারে তাইলে পোলাপাইন  কয় দেখছত ভাইয়াডার অনেক বক্স । যদিও  তার কাছে কোনো চতু্রভুয আকৃতির বাক্স থাকতো না ।

বাক্সের কথা বলতে হইলে সবার আগে যার নামটা মনে পরে তিনি হইলেন আমাদের শ্রধ্যেয় ইংরেজি শিক্ষক মিষ্টার মহাম্মদ শামসুল আরেফিন মহাম্মদ আইনুল হুদা আতিক স্যার । commonly known as আতিক বক্স । তার ওই বিশাল নামের পিছনে একটা কাহিনি আছিলো । তা হইলো তার জন্মের আগে তার দুই ভাই মহাম্মদ শামসুল আর মহাম্মদ আরেফিন মারা গেছিলো তাদের স্মৃতি রক্ষার্থে  স্যারের বাবা মা স্যারের নামের সাথে ওই দুইটা নাম যোগ করছিলো ।

ভাই এই পাবলিকের ব্যপক বক্স আছিলো । ক্লাসে অলওয়েজ ১০ মিনিট দেরি কইরা আশা ছিল তার কমন রুটিন । আর ক্লাসে আইসা সবাই seat to shun হইলো কনা এইটা তিনি খুব নিখুত ভাবে খুইটা খুইটা দেখতেন । তারপর বলতেন seat easy । আতিক স্যারের প্রথম ক্লাসে আমি চেয়ারে ঠ্যাং উঠাইয়া বসার জন্য উনার হাতে একটা চড় খাইছিলাম । স্যার ক্লাস থেকে যাওয়ার সময় আরেকটা নাটক করতো । সেইটা হইলো তিনি ক্লাস থেকে বাহির হইয়া যাইয়া কিছুক্ষণ পরে আবার ইউ টার্ন নিয়া দেখত যে সবাই seat to shunt  হইছে কিনা ।

আতিক স্যার অবশ্য spoken English শিখাইত । তিনি পলাপাইনরে বহুত ষ্টাইলিস্ট ইংলিশ শিখাইত । যেমন টয়লেটে যাইতে হইলে  “may I go to toilet please sir” না বইলা ওইটার মডার্ন ফর্ম শিখাইত , ওইটার বদলে বলতে বলত ”may I go to ease mayself  please sir” তারপর ঢুকার সময় “may I come in please” এর বদলে “may I get in please sir?” etc. etc. পলাপাইন অবশ্য খুব মজা নিয়া জিনিসটা প্র্যাকটিস করতো । আর আনেয়ারুল হক স্যার একবার কইছিলো যে “nobody is allowed to go to toilet except dire necessary”  অইদিন ত্থেইক্কা টয়লেটে যাওয়ার সময় কেউ আটকাইলেই কইতাম ভাইয়া dire necessary । আনেয়ারুল হক স্যার আরেকবার আরেকটা ইংলিশ শিখাইছিলো ওইটা হইলো “voracious reader”  এইডা অবশ্য কলেজে খুব চলছিল ।

রাতে প্রেপে মাঝে মধধেই যখন কোন fault কইরা প্রেপ মনিটরের কাছে ধরা খাইতাম, তখন যখন মাথা নিচা কইরা sorry বলতাম প্রেপ মনিটর হালায় কইতো “fuck your sorry” ভাই বুঝি না এই জিনিসরে আবার fuck করে ক্যামনে ?

কলেজে ব্যবহৃত আরেকটা শব্দ আছিলো “চিকি”। স্বাভাবিক ভাবে শব্দটার কোন মানে আছে বইলা আমার জানা নাই । ক্যাডেটদের কাছে সুন্দর কিউট কিংবা মেয়েলি স্বভাবের ক্যাডেটরা হলো চিকি ক্যাডেট । আর এই সব ক্যাডেটদের সাথে নিয়মিত ভাবের আদান প্রদান করা কে বলা হয় চিকি ব্যাবসা বা চিকি বিজনেস । প্রথম প্রথম জিনিসটা আমার ভালো না লাগলেও পরে আমি নিজেও এই বাণিজ্য শুরু করি । কিন্তু সবচাইতে অবাক হইতাম যখন দেখতাম কোনো চিকি সিনিয়র আমার সাথে চিকি বাণিজ্য করার জন্য আমারে হায় দিতো বা চোখ মারতো । মনে মনে কইতাম “হায়রে ভাইজান পান্তা ভাতে ক্যান ঘী খান?”

ক্যাডেটরা বুধবারে লাঞ্চে একটু বেশিই খায় । কলেজের সেই খিচুড়ি আর মুরগির মাংসের কথা মনে পড়লে এখনো খিদা বাইরা যায় । যাই হোক আসল ঘটনায় আসি । সংগত কারনেই ঐদিন টয়লেটের ভিড় একটু বেশি থাকে । তার উপরে দোতালা আর তিনতালার পানির প্রব্লেম থাকলে তো কথাই নাই ।বহুখন টয়লেটের সুঘ্রাণ উপভোগ করা লাগে । তো একদিন বুধবার বরাবরের মতই টয়লেটে লম্বা লাইন । ঐদিন সবার শেষে আমরা তিনজন ক্লাসা নাইন টয়লেটে দাঁড়াইয়া আছি কিন্তু একটা টয়লেট ফাকা । টয়লেটটা নংরাও না । তো খুব স্মার্ট একজন ভাইয়া আসলো । সে দেখল টয়লেটটা ফাকা but আমরা কেউ ঢুকতাছি না । তো উনি আইসা এমন একটা ভাব ধরল যে আমরা খুবই হাদারাম । আর উনি বিরাট চালাক পাবলিক । এইরকম একটা ভাব ধইরা উনি ওই টয়লেটটাতে ঢুকল । আর তখনি শুরু হইলো মজা । আমরা তিনজনই আর নরি না ।  কি হয় সেইটা দেখার জন্য । কারন টয়লেটটাতে কোন বদনা আছিলো না । তো ভাইজান যখন তার প্রাকৃতিক কাজ শেষ কইরা আসোল জিনিসটা উপল্ধধি করল তখনতো সে আর বাইর হই না । ইতি মধ্যে আমরা তিনজন আমাদের প্রাকৃতিক কাজ সম্পাদন করে ফেলেসছি ,এখন অপেক্ষার পালা যে ভাইয়া কি করে । অইদিকে বেচারা ভাইজান তো আর বাহির হয় না । আমরাও নাছোড় বান্দা । যখন দেখতাসছি পা বেথা হইয়া যাইতেছে তখন একজন একজন কইরা গার্ড দেয়া আরাম্ভ করলাম । একজন থাকে আর বাকি দুইজন রুমে যাইয়া শুইয়া থাকে । তো প্রায় দেড় ঘন্টা পরে আস্তে পানি ছাড়ার আওয়াজ পাওয়া গেলো । অম্নি আমি যাইয়া বাকি দুইজনরে ডাইকা নিয়া আসলাম । তিন জন আবার পূর্বের মতো ফলিন কইরা টয়লেটের সামনে দাঁড়াইয়া পড়লাম । বেচারা ভাইয়া আবার কিছুক্ষণ পানি ছাড়ল । then আস্তে কইরা সিটকানিটা খুইলা একটু উকি মারল । then আমাদের সাথে চোখা চোখি হয়ায় একটানে দরজা খুইলা বাইর হইয়া speed এ হাইটা চইলা গেলো । লক্ষ করলাম যে লজ্জায় তার মুখখানা একবারে লাল হইয়া গেছে । উনি যাওয়ার সাথে সাথেই আমদের সে কি হাসি । আর স্বাভাবিক ভাবেই ক্যাডেট কলেজ এ কিছু ঘটলে জিনিসটার অতিরঞ্জন হয় । তাই আমরাও অন্নদের কাছে গল্পডা রসায় রসায় বলতে লাগলাম আর হাসতে লাগলাম ।

ক্যাডেট কলেজে কোন কিছুর যে কিরকম অতি রঞ্জন হয় তার একটা উধারন দেই । suuppose ক্যাডেট X of class seven  রুমে একটা পাদ মারল (sorry শব্দতা খ্যাত খ্যাত হইয়া যাই এইটার বদলে আমরা বলতে পারি যে ক্যাডেটটা রুমে ভুল রাস্তায় বায়ু বিসর্জন করল ) এবং তাহাতে কিঞ্চিৎ শব্দ হইলো ।এইটা শুইনা ক্লাস এইটের রুম লিডার হাসতে হাসতে ফিট হইয়া তার অন্য ক্লাসমেটের রুমে যাইয়া বলল জানছ দোস্ত অমুক জুনিওর না আজ কে রুমে এমন ভাবে ভুল রাস্তায় বায়ু বিসর্জন করল যে ধুম কইরা শব্দ হইলো । এইটা শুইনা ওই রুমের রুম লিডার ক্লাস নাইন হাসততে হাসতে গেলো তার ক্লাসমেটদের রুমে এবং যাইয়া বলল দোস্ত জানোছ আজকে না ক্লাস সেভেনের একটা পোলা ভুল রাস্তায় বায়ু বিসর্জন করল আর এমন জরে শব্দ হইলো যে পুরা রুম কাইপা উঠল । এইটা শুইনা ওই রুমের রুম লিডার ক্লাস টেন হাসতে হাসতে মইরা যাইয়া তার ক্লাসমেটদের রুমে যাইয়া বলল যে দোস্ত তরা কি জানছ ? আজকে ক্লাস সেভেনের একটা এমন জোরে ভুল রাস্তায় বায়ু বিসর্জন করল যে রুমের জানালার কাঁচ ভাইঙ্গা যাওয়ার মতো অবস্থা । ক্লাসমেটরা তো হাসতে হাসতে পইরা যাইয়া এইটা কোন এলেভেনের ভাইয়ার কাছে গিয়া বলল জানেন ভাই  আজ কে না একটা ক্লাস সেভেন রুমে একটা সেভেন এমন জোরে ভুল রাস্তায় বায়ু বিসর্জন করলো যে পুরা হাউসে কাইপা যাওয়ার মতো অবস্থা   then সেই এলেভেন আবার তার সব ক্লাসমেটরে কাহিনি শুনাইয়া এক টুয়েলভের কাসে পাস করল যে জানেন ভাই আজ কে না এক ক্লাস সেভেন রুমের মধ্যে এমন জোরে ভুল রাস্তায় বায়ু বিসর্জন করল যে পোলাডা রুমেই টয়লেট কইরা দিলো । যথারীতি নেক্সট ফলিনে বিষয়টা সব ক্লাসের ফলিনে আলোচনা হইলো আর পুরা কলেজ বিষয়টা সম্বন্ধে জাইনা গেলো ।

ক্যাডেট কলেজের আরেকটা বিশাল প্রবলেম হইলো চুল কাটা । বিশেষ করে ছুটিতে আসার সময়ের চুল কাটাটা । ভিতরে চান্দি ছিলা মুরগির মতো থাকলেও বাইরে তো সবারই একটা মান সম্মান আছে । ভিতরে তো আর কোন মাইয়া নাই যে আমারে দেখব ।কিন্তু চান্দি ছিলা লুক নিয়া তো ভেকেশনে জাওয়া যায় না । অইখানে বহুত মাইয়ারা থাকে । তারা কি ভাব্বে ? এমনিতেই চুলকাটাটা একটা ঝামেলার কাজ তার উপর যখন অ্যাডজুটান্টের আদেশে মাথাডারে চান্দি ছিলা মুরগির মতো বানাইয়া দেয় তখন তো জিনিসটা আরো খারাপ লাগে। বিপদে পড়লে মাঝে মাঝে ক্যাডেটরা নিজেরাই নিজেদের চুল কাটে । উধাহরন স্বরূপ আমদের নিজেদের সিলেট ক্যাডেট কলেজের একটা রিয়াল ভিডিও দিলাম ক্যাডেটর নিজেদের চুল নিজেরা কাটতে পারে এর ভিডিও তো এই জিনিস থেইক্কা পরিত্রান পাওয়ার জন্য আমরা প্রায়ই নাপিত দাদারে ঘুষ দিতাম,ঘুষ দেয়ার সিস্টেম খুবই ইজি । চুল কাটার জন্য বসার সময় নাপিত দাদার পকেটে আস্তে কইরা দশ টাকার একটা নোট ঢুকাইয়া দেয়া হইত । সাধারণত ক্লাস টুয়েলভের ভাইয়ারা কাজটা বেশি করতো । কিন্তু মজার বেপার হল , কিছু কিছু পুঙটা ভাই উঠার সময় নাপিত দাদারে কিছু বুঝার সুযোগ না দিয়াই টাকাটা আবার উঠাইয়া নিতো । কয়েকজনতো নিজেরটা সহ আর কয়েকজনের টাকা একসাথে বান্ডিল ধইরা উঠাইয়া নিয়া আসতো।

echarao college e baborito shobder modhdhe silo hajo= hard jokes , bojo=booring jokes , fajo= funny jokes, hajo shommondhe ekta hajo silo ja holo hajo = hashir jokes etc. etc.

এইরকম আরো বহুত স্মৃতি আছে । সময় ও সুযোগের অভাবে সব দিতে পারলাম না । আস্তে আস্তে দিবো । এইটা আমার সেকেন্ড লিখা এইটাতেও কোন ভুল ত্রুটি থাকলে ক্ষমা চেয়ে নিচ্ছি ।

Last of all wanna tell one thing that I miss my cadet life very much , miss all my dearest friends like Tanjim , Dastgir , shuvo  ,julion ,shirajul ,abdullah ,ridwan ,ahasan ,zaman ,shahriar ,and other  36 part of my heart.

Thanx to 28th batch of sylhet cadet college  bros for their vedio.

Video link : ক্যাডেটরা নিজেদের চুল নিজেরা কাটতে পারে

Video credits:sylhet cadt college 28th batck

————————————————CADET ASHIK

CADET NO.;1605

BATCH NO: 32ND (2007 INTAKE)

SYLHET CADET COLLEGE,SYLHET,3101

 

১,৯৫৬ বার দেখা হয়েছে

১২ টি মন্তব্য : “নস্টালজিয়া পার্ট ২”

মওন্তব্য করুন : আশিক (২০০৭-২০১১)

জবাব দিতে না চাইলে এখানে ক্লিক করুন।

দয়া করে বাংলায় মন্তব্য করুন। ইংরেজীতে প্রদানকৃত মন্তব্য প্রকাশ অথবা প্রদর্শনের নিশ্চয়তা আপনাকে দেয়া হচ্ছেনা।