সময় গেলে সাধন হবে না

কটা দিন ধরে একটা ফ্র্যাইজ মাথার মধ্যে ঘুরপাক খাচ্ছে। হোয়াট ইফ। আমিও জানিনা হোয়াট ইফ। হোয়াট ইফ হোয়াট? হোয়াট ইফ ইউ ওয়্যার মাইন। কি হত? না তেমন কেউ না? আই মিন আমার ক্ষেত্রে না। পাঠক হয়তো ভাববেন ভনিতা। হ্যাঁ তা কিছুটা তো বটেই।

আচ্ছা যেহেতু হোয়াট ইফ ইউ ওয়্যার মাইন দিয়েই শুরু করলাম, সো এইটা নিয়েই একটু গ্যাজানো যাক। আমার দেখা মানুষদের মধ্যে একমাত্র ক্যাডেটস আর ভেরী স্পেশাল চিড়িয়া যারা কিনা বুঝে শুনে গ্যাজাইতে ওস্তাদ। যাউকগা, যেমন ছিলাম। কি হত যদি তুমি আমার হতে? কিইবা হতো? দেবদাস হয়তো মদ্যপ হয়ে চন্দ্রমূখীতে পার্বতীর ডিল্যুশনে পরতো না। বা মজনু মজনু না হয়ে কায়সার হয়েই থাকতো। কিংবা গুল সানোবার, একটা মহাবিরক্তিকর সিরিয়াল যা এককালে বিটিভিতে প্রচারিত হতো, তা দেখতে হতো না। কিংবা প্রেম নামক রোগখানার সংক্রমন এত্ত বাড়তো না। সংক্রমন কেন বলছি???? ঠিক। যথার্থ প্রশ্ন। ভালো গুনের প্রসার আবার সংক্রমন হয় কি করে? প্রেমতো স্বর্গীয়। স্বর্গ হতে আসে প্রেম স্বর্গতে মিলায়। তাও ঠিক, প্রেমতো স্বর্গীয়ই। তাহলে এর প্রসারে দোষ কি আর একে কেনইবা সংক্রমন বলা হবে??? জাতির বিবেকের কাছে প্রশ্ন। এহেন বক্তব্যের প্রতি তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাই।

প্রতিবাদ জানানোর অধিকার সবারই আছে। এখন নিজের মাথার চুল নিজেই ছিড়ি। এমন একটা বিষয় নিয়ে লেখা শুরু করেছি যেখানে যুক্তি আর পাল্টা যুক্তি দিয়ে নিজেই হ্যাং হয়ে গেছি। অনেকটা আমাদের এক পদার্থবিদ্যার অধ্যাপকের মত। দন্ড নিয়ে উনি প্রায়ই হ্যাং হয়ে যেতেন। তো আমি এই প্রেম, যা কিনা পুরো পৃথিবীর এক অমীমাংসিত ব্যাপার, তা নিয়ে না হয় একটু হ্যাং হয়েই গেলাম। আশা করি পাঠকরা কিছু মনে করবেন না। এই ফাঁকে একটা রিফ্রেশমেন্টের ব্যবস্থা।

আমাদের ক্যাম্পাসে একজন বড় ভাই ছিলেন, নাম প্রেম। ভারতের প্রেমকুমারের অনুকরণে তার বাপ-দাদা রাখেন নাই, এই ব্যাপারে কোন সন্দেহ নাই। ভার্সিটিতে আদু ভাই বলে একটা শব্দ বিভিন্নভাবেই ছোটবেলা থেকে জানতাম। তো প্রেম ভাই ছিলেন তেমন একজন আদু ভাই। উনি কেন আদু থুক্কু প্রেম ভাই হলেন তার অনেক গল্প আছে। তবে তিনি যে প্রেমে ছ্যাঁকা খেয়েই প্রেম নাম রেখেছিলেন এইটা সর্বজনবিদিত। উনার অন্য নাম অনেকটা মজনুর কায়সার নামের মত। যাই হোক, তার ছ্যাঁকা খাওয়ারও যথেষ্ট কারন আছে। তবে সেইটা একান্তই প্রেম ভাই আর তার সাবেক প্রেয়সীর ব্যাপার। ওইখানে ঢু না মারাই উত্তম। তো প্রেম ভাই একবার ক্যান্টিন-এ ব্রেকফাস্ট করছেন। আগেই বলে নেয়া ভালো, প্রেম ভাই যথেষ্ট ধনী ঘরের সন্তান। টাকা পয়সা খরচের ব্যাপারে তার কোন কার্পণ্য নেই, তবে কিনা সুরুচির অভাব। একটু ক্ষেত টাইপের। যাক পরটা দিয়েই উনি উনার ফাস্ট ব্রেক করছেন। বিশখানা আস্ত পরটা খাওয়ার পর হাকলেন, “ওই মাসুদ, পরটা লইয়া আয়”।
মাসুদ পরটা নিয়ে হাজির। হাজার হলেও প্রেম ভাই চাইছেন। বেশী না, মাত্র ৫টা। প্রেম ভাই তা থেকে ৪টা নিলেন আর ১টা ফিরিয়ে দিয়ে হুংকার করে উঠলেন, “অত্তগুলা আনছস ক্যান। আমারে রাক্ষস পাইছস?”

যাক, যেখানে ছিলাম। প্রেমের প্রসারে দোষের কিছু দেখিনা, কেননা এটি একটি মানবীয় গুন। আর সমাজের যে অবস্থা তাতে এর প্রসারের প্রয়োজনীয়তা আছে বৈকি। তবে সীমাবদ্ধ নারী-পুরুষের প্রেম নয়, মানব প্রেম, পারস্পরিক সহমর্মিতা, সহানুভূতি এই ধরনের প্রেম। আবার নারী-পুরুষের প্রেমের প্রসারের প্রয়োজনীয়তা অনুভব করি না কারন নারী-পুরুষ মাত্রই প্রেমাকাংখী। মস্ত বড় সন্ত্রাসী কিংবা চরম দজ্জাল মহিলাও প্রেমের কাঙ্গাল।

আরেকটু গভীরে যাই। ক্ষুধা-তৃষনা, জৈবিক তাড়না এগুলো অত্যন্ত মানবীয় কিছু ব্যাপার এবং এটা নিশ্চয়ই দোষের কিছু নয়। যথার্থ ভাবে এসকল চাহিদা পূরণের কিছু নর্ম আমাদের পরিবার, সমাজ এবং ধর্মে বিদ্যমান। এর ব্যতয় কেউই পছন্দ করে না এবং ভদ্র এবং শিষ্টজন মাত্রই তা মেনে চলার চেষ্টা করেন। এটা সামাজিক মূল্যবোধের এক গুরুত্বপূর্ন উপাদান। বৈবাহিক সম্পর্কের বাইরে কোন ধরণের প্রেমকেই আমাদের অভিভাবকসমাজ ভাল দৃষ্টিতে দেখেন না যদিও তারা হয়তো নিজেরাই প্রেম করে বিয়ে করেছেন, আর সমাজের অবস্থা আসলে দেখিয়াও দেখিবনা টাইপ কেননা আমাদের সমাজে ব্যাপারটা ধীরে ধীরে সয়ে যাচ্ছে তথাপি সুদৃষ্টি আকর্ষন করতে অক্ষম।

অনেকে দাবী করতে পারেন যে তার মন হচ্ছে প্রজাপতির ন্যায়, এক ফুল থেকে আরেক ফুলে যখন ইচ্ছা বসা তার মানবিক, নাগরিক, আরো কিছু থাকলে সেই অধিকার। তাহলে তো সমাজে আর শৃংখলা বলতে কিছু থাকে না আর ক্লিনটনের সেই কৌতুকের দশা হয় যে তার ছেলে আর কাউকে বিয়ে করতে পারে না, কেননা মহল্লার সবাই তার সৎ বোন।

তো এই প্রেম বিষয়ে অভিভাবকদের এত অনীহা কেন? আশা করি এই ফোরামের অনেকেই এর সদুত্তর দিতে পারবেন। তবে একটা কথা বলতে পারি, তা হচ্ছে, যারা যে স্টেজটা অতিক্রম করে আসেন, তারাই বলতে পারেন কোনটা ভুল আর কোনটা সঠিক। একটা পর্যায় বা ক্রান্তিকাল অতিক্রম করার সময় কখনোই শতভাগ সুনিশ্চিত হওয়া যায় না ভুল বা শুদ্ধ এই ব্যাপারে, যদিও পূর্বের গাইডলাইন হয়তো ইঙ্গিত বহন করে। তারপরও কৌতুহল মানুষের জন্মলগ্ন সংগী। এইজন্যই স্লোগান আছে যে কৌতুহলবশতও কখনো মাদক নেবেন না। তো মাদক আর প্রেমতো এক জিনিস নয়, কিন্তু এই প্রেমবিষয়ক ব্যাপার-স্যাপার আমাদের সমাজে টাবু হিসেবেই গন্য হতো একসময় যদিও তা আজকাল অনেক সহজ হয়ে যাচ্ছে। আর যুগের সাথে, পুরো বিশ্বের সাথে তাল মিলাতে যাযাদি …খ্যাত শফিক রেহমান আমদানী করেছেন ভ্যালেন্টাইনস ডে-এর। প্রেমিক প্রেমিকাদের জন্য ভালই। ধীরে ধীরে তারা স্বীকৃতি পাচ্ছে।

সে যা হোক, এইসকল প্রেমিক প্রেমিকা ভাই বোনদের নিয়েই একটু গ্যাজাই। তাদের প্রতি আমার গভীর সমবেদনা, যেহেতু এই ডিজিটাল বাংলাদেশেও তাদেরকে পার্কে ঝোপঝাড়ের ভিতর ঘুপ্টি মেরে পড়ে থাকতে দেখা যায়। কিংবা হুডতোলা রিক্সায়। এই কথাগুলা অবশ্য পাবলিক এডিশন যেহেতু পাবলিক প্লেসেই এইগুলো দৃশ্যমান। তো পাবলিক প্লেসে ধুমপানের জন্য সরকার কোন একসময় ৫০টাকা জরিমানার বিধান করে যা আজ শায়েস্তা খাঁর আমলের চালের সস্তা বিক্রির মত অতীত। তবে সরকার কেন যে পাবলিক প্লেসে একটু অন্তরংগ হওয়ার উপর জরিমানার বিধান করলো না, তা বোধগম্য নয় যদিও সরকার বিয়েকে ঠিকই নিরুতসাহিত করে যাচ্ছে। আসলে বিয়েকে নয়, বাল্যবিবাহকে। স্লোগানটা অনেকটা এমন, সুস্থ কৈশোর, সমৃদ্ধ জাতি। মানি, শতভাগ সত্যি। কিন্তু সরকার কেন, পুরো সমাজই কি মনে করে যে, বাল্য প্রেম শতভাগ নিরাপদ??? আমি আসলে যে অর্থে কথাটা বলছি তা হচ্ছে, বাল্য এবং বিবাহবহির্ভূত প্রেমকে কি সমাজ-সরকার কৈশোরকে অসুস্থ করার উপাদান মনে করেন না? ইদানীংকালে নাকি ক্লাস ফাইভের বাচ্চাকাচ্চাদেরও বয়ফ্রেন্ড-গার্লফ্রেন্ড না হলে চলে না!!! গৃহশিক্ষকদের সাথে অবলীলায় এইসব ব্যাপারে আলোচনা করতেও তারা দ্বিধাবোধ করে না এবং মাঝে মধ্যে তো গৃহশিক্ষকদের চরম অস্বস্তিকর পরিবেশে পড়তে হয়। এই ব্যাপারগুলো সরকারের গোয়েন্দা সংস্থাসমূহ এখনও ধরতে পারেনি বলেই বোধ হচ্ছে। যা হোক, ব্যাপারটা অনেকটা এমন যে সরকারের উপলব্ধি প্রায় শিশুদের মত, যেমনটা তারা ভেবে থাকে যে বিয়ে ছাড়া সন্তান উতপাদন অসম্ভব??? প্রসংগত, ক্লাস এইটে থাকতে আমাদের কয়েকজন বন্ধুর মধ্যে সন্তান উৎপাদন নিয়ে মতবিরোধ এবং তুলনামূলক অভিজ্ঞ একজনের মতকেই গ্রহন করা হয়। সরকারের লোকজন নিশ্চয়ই ক্লাস এইট পাশ করা, তবে হ্যাঁ তারা জেএসসি পাশ করে নাই, তাই তাদের পূর্বেকার ওই পাশকে অপর্যাপ্ত মনে করা যেতেই পারে। তাই তাদের শুধুমাত্র বাল্যবিবাহ নিরুতসাহিত করাই যথেষ্ট, সুস্থ কৈশোর ও সমৃদ্ধ জাতি গড়ে তোলার জন্য আর কোনকিছুর দিকে দৃষ্টিপাত করার কোন প্রয়োজনই নেই। তবে সরকার যেমন ক্ষমতা উপভোগকেই তাদের একমাত্র দায়িত্ব জ্ঞান করে, তাই তাদের কোন আমলনামাও নেই, মানে তাদেরকে উন্মাদশ্রেনীর মধ্যে রাখাই শ্রেয়। কিন্তু আমাদের ভগ্ন সামাজিক ব্যবস্থা যা কিনা কোন এককালে ইভটিজিংএর মত সামাজিক ব্যাধিকে পর্যন্ত মাথাচাড়া দিয়ে উঠতে দিত না, তাকেও কি তার ভগ্নদশাতেই থাকতে হবে??? এই ব্যাপারটা কি স্বতঃস্ফুর্তভাবেই সংঘটিত? নাকি এর পিছনে কোন সুদূরপ্রসারী চক্রান্ত বিদ্যমান??? ব্যাপারটা কি এমন নয় যে, যে কারনে এইদেশে প্রবাসীরা তাদের সন্তানদের মানুষ করার জন্য ফিরে আসতে চান, রক্ষনশীলতার চাদরে ঢেকে রাখতে চান, সেই কারনগুলোকে খুব সচেতনভাবে ধ্বংস করা হচ্ছে প্রতিনিয়ত?

ও, অনেকের আবার রক্ষশীলতা শব্দ শুনলেই গায়ের মধ্যে চুলকানি শুরু হয়ে যায়, বিশেষত যৌবনে। কিন্তু যখন নিজের সন্তানের ব্যাপার আসে তখন কিন্তু ঠিকই একাট্টা হয়ে যান। আমার এক বন্ধু আছে(নন-ক্যাডেট), যে বহু ঘাটে জল খাওয়া এবং একই সাথে ছ্যাঁকা খাওয়া এবং দেওয়া(এই ব্যাপারে সুনিশ্চিত নই, তার দাবী), যখন তার প্রেমের অবস্থা রমরমা, বলতো, “আমার পোলায় যদি প্রেম করে, তাইলে ওরে আমি পিটায়া লম্বা বানায়া ফেলমু”। আমি বলতাম তুইও তো করিস। তাইলে তোর ছেলে করলে দোষ কি? তার উত্তর ছিল, তারপরেও দিমু না। তার লজিকটা আমার কাছে অজ্ঞাতই রয়ে গিয়েছিল, তারপরো এইটা বুঝতাম যে, যদিও সে এই ব্যাপারটায় যুক্ত, তথাপি সে তার পরবর্তী প্রজন্মের জন্য ব্যাপারটায় কনভিন্সড নয়। প্রবাসী বাংলাদেশীরা যৌবনকালে যাই করুক, তারা তাদের ছেলেমেয়েদের মানুষ করার জন্য বিদেশের তথা ইউকে অথবা ইউএসএর সমাজ ব্যবস্থাকে মোটেও সুবিধার মনে করে না এবং অনেকেই দেশে ফিরে আসার অজুহাত হিসেবে এটাই টেনে আনেন। এমনকি আমি আমার নিজের আত্মীয়-স্বজনকেও শুনি একি কথা বলতে যে ওখানকার ছেলেমেয়েগুলো বাচ্চাকাল থেকেই বেয়াদব হয়ে যায়। তার মানে আমাদের দেশের সামাজিক ব্যবস্থা বাচ্চাকাচ্চাদের আদব লেহাজ শিখানো এবং ভদ্র-সভ্য করে গড়ে তুলতে যথেষ্ট অনুকূলে।

কিন্তু এই সামাজিক ব্যবস্থা আর কতদিন থাকবে তা অনিশ্চিত। প্রেম শিক্ষা আর সাধনার যে তালিম আমাদের মিডিয়া আর সোশ্যাল নেটওয়ার্কিং-এর মাধ্যমে(এক দশক আগে মোবাইলও ছিল, এখন তা প্রস্তরযুগের) চলছে, তার ফলাফল আমাদের চারপাশে এবং কখনো কখনো আমাদের মধ্যে তাকালেই আমরা দেখতে পাই। যতনা গড়তে সক্ষম তার চাইতে ভাংগতেই ওস্তাদ।

বাংলাদেশে ক্লাস নাইন-টেন থেকেই মূলত বহু কিশোর-কিশোরী (ক্যাডেটস ইনক্লুডেড) পর্নোগ্রাফির সাথে পরিচিত হয়ে যায়। একটা টাবু প্রসংগ টেনে আনায় দুঃখিত, কিন্তু বাস্তবতার প্রয়োজনে না টেনে পারছি না এবং সেইজন্য ক্ষমাপ্রার্থী। আমাদের সময় রাজশাহীর স্মৃতি সিনেমা হল যার আরেক নাম অলকা এইসবের জন্য পরিচিত ছিল। এইসকল হাউস থাকা কোনকালেই সমর্থনযোগ্য বা কাংক্ষিত নয় তবে গ্রাসের বিস্তৃতির তুলনা করতে গেলে তা এখনকার চাইতে অনেকাংশেই কম ছিল এবং এর ক্ষতির পরিমানও ছিল অনেক কম। আর এখন ইন্টারনেটের কল্যানে তাতো চাহিবামাত্র পেতে সক্ষম। বিশ্বায়নের যুগে পর্নোগ্রাফির সাইট কোন ব্যাপার? এসব সাইট ভিজিটররা কিন্তু কখনো চিন্তাও করে দেখেন না কিভাবে তার ইমোশন-সেক্স-সেনসেশন নিয়ে ব্যবসা করে চলেছে কিছু মানুষ আর তার স্বাভাবিকত্ব বিনষ্ট করে তাকে বানিয়ে দিচ্ছে পশুপ্রমান। এর প্রভাব কিন্তু ব্যক্তিজীবনেই সীমাবদ্ধ নয়, বরং তা সুদূরপ্রসারী এবং চরম ক্ষতিকর। আমাদের দেশে আর কিছুতে সেঞ্চুরী না হোক এহেন কতিপয় বিষয়ে কিন্তু ঠিকই সেঞ্চুরী হয়ে যায়। কিংবা দ্রোপদীর মত আরও অনেক বাধনকে বস্ত্র হারাতে হয়। তবে যে হারে এর প্রভাব আমাদের দেশ ও সমাজে পড়ছে, তাকে মোকাবেলা করার মত কেন এর থেকে বেঁচে থাকার মতও কোন পদক্ষেপ আমাদের সমাজ কিংবা রাষ্ট্র ব্যবস্থায় নেয়া হচ্ছে বলে আমার জ্ঞান বা অভিজ্ঞতা নেই। বরংচ এই ব্যাপারগুলোতে সকলেই কেমন যেন নিশ্চুপ। তার মানে কি সবাই এর থাবায় আটকে গেছে, নাকি ভাবছে এটা একটা স্বাভাবিক ব্যাপার আর এই বয়সে ছেলেমেয়েরা একটু-আধটু এসব করবেই।
একজন ব্যক্তি স্বপ্নে উলটো পায়ের এক মানুষকে দেখে দানব বোধ করে দৌড়াচ্ছে আর হাঁপাচ্ছে। পথে আরেকজনের সাথে দেখা। তো তার প্রশ্ন কি ব্যাপার তুমি এমন দৌড়াচ্ছা কেন আর হাঁপাচ্ছই বা কেন? হাঁপাতে হাঁপাতে তার উত্তর, ভাই আমি একজনকে দেখলাম যার পাগুলো উলটো, রাক্ষসের মত। তো সেই ব্যক্তি তার নিজের পা দেখিয়ে জিজ্ঞেস করলো- কেমন, আমার মতো? প্রথম ব্যক্তি দেখে ঐ মানুষের পাগুলোও উলটো। তখন তার অবস্থা কি হতে পারে?

ভারতীয় সংস্কৃতির যে অবাধ অনুপ্রবেশ আমাদের আকাশে হচ্ছে তার কোনরকম সেন্সরের ব্যবস্থাও তো আমাদের দেশে নেই। তাই তা দিয়ে হাতেখড়ি হওয়া শিশুটির কাছে কৈশোরে পর্ণোস্টাররাই পরম আকাংক্ষিত হবে আর যৌবনে তার প্রেমিকা বা স্ত্রীকেও সেই ভাবেই চাইবে, তাই নয় কি? আর যখন একজায়গায় পাবে না তখন হানা দিবে অন্যকোথাও। আর এর ফলে আরও হাজারো সমস্যার মতো এই সমস্যাগুলো নীরবঘাতকের মতো আমাদের ঘর-সংসার সমাজকে করে তুলছে অসুস্থ এবং অস্থিতিশীল। তাই শুধুমাত্র অশিক্ষিত মানুষদের বাল্যবিবাহ রোধই যথেষ্ট নয়, সমৃদ্ধ জাতি গড়তে বিবাহপূর্ব এবং বিবাহ বহির্ভূত প্রনয়-সম্পর্ককেও বিবচনায় নিতে হবে।

ভারতবিদ্বেষ বা আমেরিকাবিদ্বেষ নামক সস্তা কথায় আমি যেতে চাইনা। কিংবা এখানে অন্য কোন সৌখিন গবেষকদের গবেষেনাও উল্লেখ করতে চাইনা। এইসকল হাবিজাবি কথা মানুষ সুযোগ পেলেই যে কোন ভালো কথা বলতে যায় তার বিরুদ্ধে চালিয়ে যায় আর মানুষের সস্তা সেন্টিমেন্টকে কাজে লাগাতে চেষ্টা করে। অথচ এইটা বুঝে না যে এই প্রপাগান্ডার কবলে তার নিজের ছেলেমেয়েই পড়ছে। যাই হোক চোখে আঙ্গুল দিয়ে অশিক্ষিত মূর্খদেরই দেখাতে হয়, শিক্ষিত বিবেকবান লোকদের নয়। তাই আমার অগ্রজ এবং অনুজরা আশা করি সহজেই বুঝতে সক্ষম হবেন কেনো আমাদের দেশের সভ্যতা-সংস্কৃতি আজ বিলীয়মান আর কারাই এই সকলের পিছনে ইন্ধন যোগাচ্ছে আর ফলশ্রুতিতে দেশের সামাজিক ব্যবস্থায় নেমে আসছে ভয়াবহ বিপর্যয়।

পরিশেষে একটা কথাই বলবো, তা হচ্ছে, হোয়াট ইফ ইউ ওয়ার মাইন? অনেকে ঢং করে বলে যে- তোমায় না পেলে আমি বাঁচবো না, অথচ বাস্তব সত্য হচ্চে, পেলেও কিন্তু বাঁচবে না, বরংচ সময় আর ব্যস্ততায় একসময় তা স্মৃতিই হয়ে রবে। তবে প্রেমের মত একটি স্বর্গীয় অনুভূতিকে দিয়ে শুরু করে এবং একে পুঁজি করে যারা ব্যবসা করে যাচ্ছেন তাদের থেকে নিজেকে, পরিবারকে, সমাজকে এবং দেশকে বাঁচানোর সময় এখনই, পরে আর পাওয়া যাবে না।

৩,২৩৯ বার দেখা হয়েছে

২৫ টি মন্তব্য : “সময় গেলে সাধন হবে না”

      • রাব্বী (৯২-৯৮)

        যাক তাও ভাল, সবটা রসাতলে যায়নি! আমি লেখা পড়ে ভাবলাম আবাল, বৃদ্ধ, বণিতা সব যৌন ফ্যান্টাসিতে হাবুডুবু খাচ্ছে। লেখক কি মনে করে, করণীয় কী এক্ষেত্রে?


        আমার বন্ধুয়া বিহনে

        জবাব দিন
            • আসাদুজ্জামান (১৯৯৬-২০০২)

              নৈতিকতা এবং মূল্যবোধের মান এবং ভিত্তি আমাদেরকেই পছন্দ করে নিতে হবে আমাদের রুচি, চাহিদা এবং বিবেকের উপর ভর করে।

              আর সমস্যাটা হচ্ছে সামাজিক ও সাংস্কৃতিক পরিবর্তনশীলতার ভাল-মন্দ যাচাই এবং তার উপর নিয়ন্ত্রনের উপর আমাদের সমাজ এবং রাষ্ট্রের অজ্ঞানতা, নিস্পৃহতা এবং নিষ্ক্রিয়তা।

              জবাব দিন
              • রাব্বী (৯২-৯৮)

                নৈতিকতা এবং মূল্যবোধ বিষয়ক কথাটা স্কেপটিক্যাল এবং মূল লেখার সাথে পরষ্পর বিরোধী শোনাচ্ছে। কারণ "পছন্দ" করার সুযোগ যদি থাকে তাহলে জটিল বিষয়ে সোজাসাপ্টা ম্যরালিস্টিক পাঞ্চ কেন লেখাতে দেয়া হয়েছে সেটা বুঝিনি। মান এবং ভিত্তির উপাদান কি কি সেটা জানতে চেয়েছিলাম। "আমাদেরকেই" বলতে কারা এখানে?

                সমস্যাটা আরো ইল্যুসিভ করে দেখানো হলো। কে কি নিয়ন্ত্রন করবে?


                আমার বন্ধুয়া বিহনে

                জবাব দিন
                • আসাদুজ্জামান (১৯৯৬-২০০২)

                  রাব্বী ভাই, নৈতিকতা এবং মূল্যবোধ শব্দ দুটি কেন মূল লেখার সাথে পরস্পরবিরোধী- ব্যাখ্যা করবেন দয়া করে?

                  পছন্দ করার সুযোগে আপনি কি পছন্দ করতে চান? আমি কিন্তু সেটস অব ম্যরালিটিকেই ইংগিত করেছি। যেহেতু আপনি মান ও ভিত্তি জানতে চান, তাই বলতেই হবে প্রচলিত এবং সার্বজনীন যে সকল সেটস অব ম্যরালিটি রয়েছে সেগুলোর কথা। আর যদি তাতে আস্থা না থাকে তাহলে সময়োপযোগী অন্য কিছুর কথা বলতে পারেন এবং প্রতিষ্ঠার চেষ্টা করতে পারেন। আর আমাদের মানেই তো আমি, আপনি, সে, অর্থ্যাৎ সমাজের প্রথম ও প্রধান উপাদান- মানুষ।

                  আর সামাজিক বা রাষ্ট্রীয় আচরন কে নিয়ন্ত্রন করতে পারে বলে আপনার বিশ্বাস? নিশ্চয়ই একাকী সম্ভব নয়। সমষ্টিগতভাবেই করতে হবে।

                  জবাব দিন
                  • রাব্বী (৯২-৯৮)

                    প্রথম প্রশ্নের ইন্টারপ্রিটেশনটা একটু অন্যরকম হবে – কথাটা ছিল “নৈতিকতা এবং মূল্যবোধ বিষয়ক কথাটা” অর্থাৎ সেটা আগের মন্তব্যে তোমার কথাটা। কারণ মূল লেখাটিতে কাঁচাভাবে প্রেম-ভালবাসা (প্রচ্ছন্নভাবে ইঙ্গিতটি যৌন) বিষয়ে সিম্পল মাইন্ডেড ম্যরালিসটিক এ্যাপ্রোচ ব্যবহার করা হয়েছে। সেখানে মন্তব্যে পাঠককে ‘পছন্দ’ বলতে তার “রুচি, চাহিদা এবং বিবেকের” উপর ছেড়ে দেওয়া হচ্ছে। একদিকে লেখায় লেখকের জাজমেন্টাল স্ট্যান্ডপয়েন্ট, আবার মন্তব্যে মানুষের “পছন্দ” করার স্বাধীনতা কথা - এটা আমার পরষ্পর বিরোধী অবস্থান মনে হয়েছে। পরের মন্তব্যে “প্রচলিত এবং সার্বজনীন” জুড়ে দিলেও প্রেম বিষয়ে এমন কোন কিছু বেধে দেয়া যায় কিনা, আমি নিশ্চিত না। কারণ "স্বর্গীয় প্রেম" তো দুনিয়াতে থাকার কথা না। তাই না?

                    আমার “সময়োপযোগী অন্যকিছু” প্রচার বা “প্রতিষ্ঠা” করার কোন উদ্দেশ্য নেই। বরং কেউ নিজের চিন্তা আরোপিত দৃষ্টিভঙ্গি “সেটস অব ম্যরালিটি” কিংবা “সমাজের” নামে ‘গেল, গেল’ বলে সবার উপর আরোপ করার নসীহত করলে খানিকটা ভীত-সন্ত্রস্ত হই। এটুকুই। সমাজের “প্রথম এবং প্রধান” উপাদান যদি “মানুষ” হয় তাহলে সার্বজনীন বলে কিছু নেই, কারণ চর্চা, অভ্যাস, আচার যেমন সমাজে গড়ে ওঠে তেমনি সময়ের দাবিতেই তা ভাঙতে ও গড়তে থাকে। ম্যরালিটি নামক জিনিসটা প্রশ্নের উর্দ্ধে না।

                    হবস, লক এবং রুশোর কথা অনুযায়ী, রাষ্ট্র/সমাজ চলে এক ধরনের “স্যোশাল কন্ট্রাক্টের” ভিত্তিতে, যেটা আমাদের দেশে বহুলাংশে অনুপস্থিত। আমি নিয়ন্ত্রনবাদী না, তবে কিভাবে কি শর্তের ভিত্তিতে এবং প্রক্রিয়ায় নিয়ন্ত্রন প্রতিষ্ঠা করা হয় সেটা জানার ব্যাপারে কিউরিয়াস।

                    “পছন্দ করার সুযোগে” আমি কি চাই? খানিক হাসলাম পড়ে। কি বলা উচিত, একটা ব্যক্তিগত হারেমখানা চাই! অন এ্যা সিরিয়াস নোট, চাইলে খোলামনের সচেতন, বিচক্ষণ এবং সংস্কারমুক্ত মানুষজন দেখতে চাই। মজার ব্যাপার হচ্ছে, যার গানের কথা ব্যবহার করে ব্লগের শিরোনাম, তিনি মানুষের সম্পর্কের ব্যাপারে দুর্দান্তভাবে সংস্কারমুক্ত। সত্যি সেলুকাস, কি বিচিত্র এদেশ! এবার প্রশ্নটা তোমাকেই করি, “পছন্দ করার সুযোগে” তুমি কি পছন্দ করতে চাও?


                    আমার বন্ধুয়া বিহনে

                    জবাব দিন
                    • আসাদুজ্জামান (১৯৯৬-২০০২)

                      @ রাব্বী ভাই, তার মানে কি আপনি লেখকের কাছে পাঠককে টোট্টা গেলানোর মত ইমপোজিং লেখনী প্রত্যাশা করেন? আমি কিন্তু তেমনটির ঘোরবিরোধী।

                      আর আপনি আমার ব্যবহৃত প্রচলিত আর সার্বজনীন কথাটা কেন প্রেমের সাথে জুড়তে চাইলেন তা বোধগম্য হল না। আমি কিন্তু এই দুটি শব্দের ব্যবহার সেটস অব ম্যরালিটির ক্ষেত্রে ব্যবহার করেছিলাম। আর যখনই মূল লেখায় প্রেম বিষয়ক আলোচনা ছিল তখন প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষ যে কোন ভাবেই এর নৈতিক এবং অনৈতিক দিকটি স্পষ্ট করা হয়েছে।

                      বরং কেউ নিজের চিন্তা আরোপিত দৃষ্টিভঙ্গি “সেটস অব ম্যরালিটি” কিংবা “সমাজের” নামে ‘গেল, গেল’ বলে সবার উপর আরোপ করার নসীহত করলে খানিকটা ভীত-সন্ত্রস্ত হই।

                      অথচ আপনিই কিন্তু এগুলোকে ইনসিস্টিং ওয়েতে দেখতে চাইছেন আমার লেখায়। আর না হওয়ায় মন্তব্যের সূত্র ধরে তাকে বলছেন পরস্পর বিরোধী।

                      সমাজের “প্রথম এবং প্রধান” উপাদান যদি “মানুষ” হয় তাহলে সার্বজনীন বলে কিছু নেই, কারণ চর্চা, অভ্যাস, আচার যেমন সমাজে গড়ে ওঠে তেমনি সময়ের দাবিতেই তা ভাঙতে ও গড়তে থাকে। ম্যরালিটি নামক জিনিসটা প্রশ্নের উর্দ্ধে না।

                      সময়ের দাবিতে পরিবর্তন হবে খুবই স্বাভাবিক কিন্তু যখন তা হয় অতিসূক্ষ্মভাবে কোন জাতিকে পংগু করার উদ্দেশ্যে বিনোদনমাধ্যমকে ব্যবহারের মাধ্যমে তখন তা আশংকা এবং প্রতিরোধের বিষয়ই বটে। আর আপনার কাছে যদি ম্যরালিটি বিষয়টা প্রশ্নের উর্ধ্বে না হয় তাহলে তো ভাই মানুষের সংজ্ঞাকেও পালটে ফেলতে হয়।

                      তবে আপনি যেমন বললেন আমাদের দেশে সোশ্যাল কন্ট্রাক্টের বহুলাংশে অনুপস্থিতির কথা সেই সাথে আমিও সুর মিলিয়ে বলতে চাই এর সরব উপস্থিতির বর্ধনের কথা।

                      আর আমি বেছে নিতে চাই সুস্থ, সুন্দর, স্বাভাবিক, নিরাপদ, ভারসাম্যপূর্ন এবং ন্যায়বিচার সমৃদ্ধ জীবনপ্রবাহে সহায়ক সমাজব্যবস্থা। অনেক বেশি চাওয়া হয়ে গেল, তাই না ভাই?

                    • রাব্বী (৯২-৯৮)
                      তার মানে কি আপনি লেখকের কাছে পাঠককে টোট্টা গেলানোর মত ইমপোজিং লেখনী প্রত্যাশা করেন?

                      টোট্টা কি জিনিস? আমি এমন কথা কোথায় বলেছি? তুমি এটার “ঘোরবিরোধী” বলছো নিজেকে, তোমার ব্লগ কিন্তু ঠিক উল্টো কথাটাই বলছে।

                      আপনার কাছে যদি ম্যরালিটি বিষয়টা প্রশ্নের উর্ধ্বে না হয় তাহলে তো ভাই মানুষের সংজ্ঞাকেও পালটে ফেলতে হয়

                      তুমি আমার কথা সম্ভবত ধরতে পারোনি। ম্যরালিটি প্রশ্নের উর্দ্ধে না বলার কারণ ক্যাথোলিক ম্যরালিটিকে চ্যালেঞ্জ করে প্রোটেস্টা্ন্ট ম্যরালিটি/ব্যাপটিজম এসেছে তাই এটা এমন কিছু না যা প্রশ্নের উর্দ্ধে। মানুষ সবসময় এটাকে চ্যালেঞ্জ করে, লালনও করেছে। আর, মানুষের সংজ্ঞা পালটে কি হবে?

                      যখন তা হয় অতিসূক্ষ্মভাবে কোন জাতিকে পংগু করার উদ্দেশ্যে বিনোদনমাধ্যমকে ব্যবহারের মাধ্যমে তখন তা আশংকা এবং প্রতিরোধের বিষয়ই বটে

                      মূল লেখায়, আন্দালিবের প্রতিমন্তব্যে এই কথাটা দেখছি। ঘটনাটা কি? কে “অতি সূক্ষ্মভাবে জাতিকে পঙ্গু করার উদ্দেশ্যে বিনোদনমাধ্যম” ব্যবহার করছে? কেন করছে? এই ‘কন্সপিরেসি থিওরি’ প্রেমের সাথে কিভাবে সর্ম্পকিত?

                      তোমার লেখা পড়ে হয়, যেন দেশের মানুষ শুধু চেঁটেপুটে প্রেম করছে, সমাজ-রাষ্ট্র ধ্বংসের পথে, এখন ইন্টারনেট, বিনোদনমাধ্যম/মিডিয়া, নারীপুরুষের সম্পর্ক নিষিদ্ধ করে নৈতিকতা, মূল্যবোধ প্রভৃতি চর্চা করলে যেন সব ল্যাঠা চুকে যায়। জাতির বিবেক সেজে ব্লগে ম্যরাল জাজমেন্ট দেওয়াটা আমার কাছে সঠিক মনে হয় না। তবে যদি বলো, ব্লগ এবং মন্তব্যে বিষয়বস্তু নারী-পুরুষের সম্পর্কের পরিবর্তে তালগাছের সাথে সম্পর্ক তাহলে আর কোন কথা নাই!


                      আমার বন্ধুয়া বিহনে

                    • আসাদুজ্জামান (১৯৯৬-২০০২)

                      ভাই লেখাতে আমি বলেছি কি হচ্ছে, কিন্তু এইটা বলিনি কি করতে হবে, তাহলে আপনিও নিশ্চয়ই জিজ্ঞেস করতেন না করণীয় কি?

                      ক্যাথলিক বা ব্যাপ্টিস্ট বা প্রোটেস্ট্যান্ট এইগুলাকে ম্যরালিটি না বলে ডকট্রিন বলাই মনে হয় শ্রেয়। ম্যরালিটি কিন্তু ইউনিভার্সাল ট্রুথ টাইপের আর সকল ধর্ম, মত, বা আদর্শ অনুযায়ী প্রায় একই রকম। মানবীয় গুনাবলীর উপর ভিত্তি করেই এগুলো বিদ্যমান, তাই এগুলো যখন প্রশ্নবিদ্ধ তখন তো মানুষ আর মানুষ থাকবে না, অমানুষ হয়ে যায়।

                      আর ভাই শেষের কথাগুলো একদম ঢালাওভাবে বলে গেলেন দেখে দুঃখ পেলাম। তার মানে কি আপনার চারপাশে না হোক দেশের আনাচে কানাচে বিভিন্ন সময়ে ঘটে যাওয়া বিভিন্ন ঘটনা-দুর্ঘটনা আপনার বিবেককে নাড়া দেয় না? নৈতিক স্খলন এবং সামাজিক অবক্ষয় আপনাকে ভাবায় না? ভাই, নগর পুড়লে কিন্তু তা থেকে মন্দিরও রক্ষা পায় না। আর আমি এইসব কিছু নিষিদ্ধ করার কথা কখনোই বলিনি বা ইংগিতও দেই নি। তবে সমাজ এবং পরিনতিতে রাষ্ট্রের এই ব্যাপারে সচেতনতা এবং প্রয়োজনীয় যথার্থ পদক্ষেপ নেয়ার কথা আলোচনা করেছি এবং সচেতন মানুষ মাত্রই জানে এবং মানে যে মাথাব্যথার জন্য মাথা কেটে ফেলা কোন সমাধান নয়।

  1. আন্দালিব (৯৬-০২)

    বর্তমানে যে অবস্থা সেটা ভাল না তাহলে!

    লেখার এই প্রস্তাবমতে, অতীতের যে কোনো একটা নির্দিষ্ট সময়ে অবস্থা ভাল ছিল। সেই সময়টা কবে?

    প্রেম করেও ভাল থাকে না, আবার প্রেম না করেও ভাল থাকে না। প্রেম করে ঝোপঝাড়ে যায়, প্রেম না করে পর্নো দেখে। তাহলে এখন উপায় কী! রাব্বী ভাইয়ের মতোন আমিও কোশ্চেন রেখে গেলাম।

    জবাব দিন
    • আসাদুজ্জামান (১৯৯৬-২০০২)

      ডিগ্রেস না করাই ভালো। কোন সমাজেই কোন কালে কোন অনাচার অনুপস্থিত থাকে না। তবে উপস্থিতিই তার অনুমোদন এবং গ্রহনযোগ্যতা নয়। বরংচ তার হারই হচ্ছে আশংকার বিষয়।

      লেখার উদ্দেশ্যই হচ্ছে- কিভাবে অত্যন্ত নীরবে এবং সচেতনতার সাথে আমাদের সমাজে কোন ব্যাপারগুলোকে প্রমোট করা হচ্ছে, এ ব্যাপারগুলোতে আমরা কতটা অজ্ঞ এবং সমৃদ্ধ জাতি হিসেবে গড়ে উঠার পথে তা কতটা অন্তরায়। এই ব্যাপারে কোন তথ্য, উপাত্ত এবং আলোচনা থাকলে সুস্বাগতম।

      জবাব দিন
      • আন্দালিব (৯৬-০২)

        ডিগ্রেস না করাই ভালো।
        এনট্রপির বৈশিষ্ট্যই এই যে তা বাড়বে। আর এই বৃদ্ধির হারও দিনে দিনে বাড়বে। আমি মনে করি আমাদের ভৌত অস্তিত্বের সাথে এই সত্য সক্রিয়।

        ডিগ্রেস করা মানে অবশ্যই একটা পয়েন্টে প্রগ্রেসিভ অবস্থান ছিল। সেই সময়টা কবে জানা হলো না!

        জবাব দিন
        • আসাদুজ্জামান (১৯৯৬-২০০২)

          ওহ হো আন্দালিব,

          ডিগ্রেস না করাই ভালো।

          আমি কিন্তু বিষয়বস্তু থেকে ডিগ্রেস না করতে মিন করেছি। 😉

          আর প্রগ্রেসিভ অবস্থান অবশ্যই ছিল। মানুষের নৈতিকতা, সততা, আন্তরিকতা, সহমর্মিতা, সহযোগিতা প্রভৃতি অনেক অকৃত্রিম এবং নিঃস্বার্থ ছিল। এখনকার মত ব্যবসায়িক ছিল না। আর গ্লোবালাইজেশনের এই সময়ে শুধুমাত্র দেশের সংস্কৃতিকে কনসিডার করলেই হবে না, বহিঃর্বিশ্বের সংস্কৃতি কিভাবে আমাদেরকে প্রভাবিত করছে তাও বুঝতে হবে।

          সুতরাং এখানে সমৃদ্ধ জাতি গড়তে অন্তরায় কারনসমূহের আলোচনায় উত্থাপিত প্রশ্ন যখন জাতির অতীত সমৃদ্ধি কাল নিয়ে, তখন তা কি ইংগিত প্রদান করে? হয় জাতি কখনো সমৃদ্ধই ছিল না কিংবা যাকে সমৃদ্ধ বলে দাবী করা হয় তার প্রতি অনাস্থা। এখন তুই-ই বল, তোর যুক্তি এবং অভিজ্ঞতায় এই জাতি কি কখনো প্রগ্রেসিভ অবস্থায় ছিল না?

          জবাব দিন
  2. রাব্বী (৯২-৯৮)
    সেই সময়টা কবে?

    সূদুর অতীতে, যখন বাৎসায়ন সংস্কৃত মিডিয়ামের রসাতলে যাওয়া ছেলেমেয়েদের জন্য প্লেটোনিক ভালবাসার কলাকৌশল নির্ভর সাহিত্য রচনার ব্রত নিয়েছিলেন 😀


    আমার বন্ধুয়া বিহনে

    জবাব দিন
    • আসাদুজ্জামান (১৯৯৬-২০০২)

      মানুষ তার কাজে কখনোও বড় হয় না, যখন সে চিন্তা চেতনায় বড় নয়। যখন কেউ চিন্তা করতে সক্ষম তখনই তার পক্ষে সম্ভব চিন্তাকে বাক্যে পরিণত করা। সেই কথা প্রয়োজন আছে বৈকি। আর তা সকলকেই চিন্তা-চেতনায় বড় করতে।

      কিন্তু কথায় না বড় হয়ে কাজে বড় হওয়া অসম্ভব বলবো না, তবে কথা হচ্ছে চিন্তা এবং কাজের অন্তর্বতী অবস্থান। কেউ কেউ চিন্তা থেকে কথাতে যেয়ে আটকে যায় আর কেউ কেউ কথা এড়িয়ে কাজে পৌছায়।

      বড় হওয়া দুই রকম। একটা ব্যষ্টিক, আরেক সামষ্টিক। সামষ্টিক উন্নতিতে কথা বলতেই হবে।

      জবাব দিন
  3. ওয়াহিদা নূর আফজা (৮৫-৯১)

    পোষ্টটা একটু হায়ারোগ্লিফিক টাইপের। বোঝার জন্য গামলা গামলা আয়োডিন খেতে হবে বলে মনে হচ্ছে। তবে মন্তব্যগুলো দারুণ। হেভী জমজমাট।

    শিশির আরো অনেক অনেক পোস্ট দাও। আমাদের সাধন হবে সেই সাথে সিসিবিও জমে উঠবে।

    অঃ টঃ তুমি পশ্চিমা বিশ্বকে এক কথায় তুড়ি মেরে উড়িয়ে দিয়েছ। হে বৎস, সাধারণ কোন মন্তব্য করতে গেলে আমাদের কি নিজেদের গণ্ডীর বাইরেও একটু বের হয়ে চারপাশটা একবার দেখা উচিত নয়?


    “Happiness is when what you think, what you say, and what you do are in harmony.”
    ― Mahatma Gandhi

    জবাব দিন
    • আসাদুজ্জামান (১৯৯৬-২০০২)
      বোঝার জন্য গামলা গামলা আয়োডিন খেতে হবে বলে মনে হচ্ছে।

      ~x( উত্তরবংগের লোকদের লাগে জানতাম। 😀

      অনুপ্রেরনায় ধন্য। তবে আপু, আমি যদিও আমাদের দেশ আর সমাজকে লক্ষ্য করে ইনিয়ে বিনিয়ে কথাগুলো বলার চেষ্টা করেছি, আসলে কিন্তু পৃথিবীর সকল আমজনতাই এর আওতাভূক্ত। তাদের কিছু মানবীয় বৈশিষ্ট্যকে পুঁজি করে ব্যবসা করে যায় একদল ব্যবসায়ী আর যুবসমাজকে(যুবতীরাও ইনক্লুডেড) কোমর সোজা করে দাঁড়াতে দেয় না, নানা অনাচার বঞ্চনার বিরূদ্ধে রূখে দাঁড়াতে দেয় না তাদেরকে কোন না কোন কিছুতে নিমগ্ন রেখে। নারীকে পন্যরূপে উপস্থাপন করে তাদের মর্যাদাহানি ঘটিয়ে যাচ্ছে প্রতিনিয়ত অথচ ধোঁকায় ফেলে রেখেছে তাদের, ফলাফল- সমাজের ছন্দপতন। এই চিত্র শুধু আমাদের দেশের না, সারা পৃথিবীর, তবে আমরা জাতি হিসেবে এখনও অতটা শিক্ষিত আর সভ্য হিসেবে গড়ে না উঠায় দুর্ঘটনা বেশি ঘটাই। তাই সমৃদ্ধ জাতি হিসাবে গড়ে উঠতে একটু বেশিই কষ্ট হচ্ছে।

      জবাব দিন

মওন্তব্য করুন : আন্দালিব (৯৬-০২)

জবাব দিতে না চাইলে এখানে ক্লিক করুন।

দয়া করে বাংলায় মন্তব্য করুন। ইংরেজীতে প্রদানকৃত মন্তব্য প্রকাশ অথবা প্রদর্শনের নিশ্চয়তা আপনাকে দেয়া হচ্ছেনা।