প্রিভিউ পোস্টঃমুক্তিযোদ্ধা কামরুল হাসান স্যারের সাথে এ সপ্তাহে আরেকটি সাক্ষাৎ করতে যাচ্ছি,যাঁরা প্রশ্ন রাখতে চান দয়া করে লিখুন

এবছর ফেব্রুয়ারিতে অস্ত্র থেকে অক্ষরঃএকজোড়া লড়াকু হাতের গল্প পোস্টটিতে ক্যাডেট কলেজ পরিবারের গর্ব মেজর কামরুল হাসান ভূঁইয়ার একটি সাক্ষাতকার নেওয়ার কথা বলেছিলাম।নানাবিধ কারণে প্রায় আট মাস বিলম্বের পর অবশেষে আগামীকাল শুক্রবার সন্ধ্যা ছয়টায় তাঁর বাসায় সাক্ষাতকারের উদ্দেশ্যে যাচ্ছি আমি আর আমার ডাক্তার বান্ধবী জ্যেতি(পোস্টটির নামকরণ ওর হাতেই)।মাত্র ১৫ মিনিট আগে স্যারের সাথে মোবাইল ফোনে কথা বলে সময় এবং স্থান ঠিক করলাম।স্যারকে ক্যাডেট কলেজ এবং সিসিবির কথা বলামাত্রই চিনতে পারলেন এবং সঙ্গে সঙ্গে রাজি হয়ে গেলেন। “জনযুদ্ধের গণযোদ্ধা” , “পতাকার প্রতি প্রণোদনা” , “বিজয়ী হলে ফিরব নইলে ফিরবই না” প্রভৃতি অসাধারণ বইগুলোতে স্যার দেশের আনাচে কানাচে ছড়িয়ে থাকা মুক্তিযোদ্ধাদের বীরত্বের কথা বললেও নিজের যুদ্ধের অভিজ্ঞতার কথা বলতে গেলে পুরোপুরিই এড়িয়ে গিয়েছেন।অসম্ভব ব্যক্তিত্বসম্পন্ন এই মুক্তিযোদ্ধা নিজের কথা বলতে প্রচন্ড সংকোচ বোধ করেন-সম্ভবত ক্যাডেট কলেজের হৃদ্যতার দোহাই দিয়েই সেই খোলস ভেদ করে কাল আমরা তাঁর সাথে কথা বলতে যাচ্ছি।কথার ফাঁকে ফাঁকে স্যারকে বললাম জীবিত মুক্তিযোদ্ধাদের সাক্ষাতকার নেবার মাধ্যমে মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস ধারণ করতে সিসিবির প্রচেষ্টার কথা-যেটি শুনে তিনি অত্যন্ত খুশি হলেন।শুধু তা-ই নয়,উল্লেখযোগ্য কার কার সাক্ষাৎকার আমরা নিতে পারব এরকম মুক্তিযোদ্ধাদের সাথে আমাদের যোগাযোগ করিয়ে দেবার কথাও বললেন।

প্রিয় সিসিবিবাসী,এত বড় মাপের একজন মানুষের সাথে কথা বলা এবং আগামীকাল তাঁর সাথে সাক্ষাৎকারের উত্তেজনায় আক্ষরিকভাবেই আমি শিহরিত,মাথা আপাততঃ ঠিকভাবে কাজই করছেনা।ফেব্রুয়ারিতে বইমেলায় স্যারের সাথে দেখা হবার সময় যেসব প্রশ্ন করেছিলাম মোটামুটি সেগুলো দিয়েই সাক্ষাতকার শুরু করব।এই প্রশ্নগুলো হচ্ছেঃ

১) স্যারের যুদ্ধে যাবার সময় অভিজ্ঞতা,কিভাবে যুদ্ধে যোগ দিলেন-এ বিষয়গুলো।ক্যাডেট কলেজের ইতিহাসে এই বিষয়টি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ কারণ যুদ্ধে যাবার সময় স্যারের বয়স ছিলো ১৮ বছর তিন মাস এবং তিনি তখন এইচএসসি পরীক্ষার্থী ছিলেন।এ সময়টা আমরা সব এক্স ক্যাডেটরাই পার করেছি,কাজেই সেই সময়ে স্যারের অনুভূতি আমাদের নিজেদের সেই সময়ের অনুভূতির সাথে তুলনার মাধ্যমে দেশের জন্যে মহৎ কোন কাজে আমরা অনুপ্রাণিত হব বলেই আমি মনে করি।

২) স্যারের ব্যক্তিগত সম্মুখ সমরের অভিজ্ঞতা।তিনি ৫ বার পাক বাহিনীর হাতে এবং একবার ভারতীয় বাহিনীর হাতে নির্যাতিত হয়েছেন,সাক্ষাৎ মৃত্যুকে বহুবার ফাঁকি দিয়েছেন,চরম সাহসিকতার মাধ্যমে বালক অবস্থাতেই সাড়ে চারশ মুক্তিযোদ্ধার নেতৃত্ব দিয়েছেন-নিজের কথা বলতে চাননা দেখে সচেতনভাবেই স্যার এই বিষয়গুলো এড়িয়ে গিয়েছেন বারংবার।আমার মনে হয় সময় এসেছে চূড়ান্ত বীরত্বের এই কাহিনীগুলো আমাদের সবার জেনে নেয়ার।আজ থেকে ১০০ বছর পরেও একজন বীর মুক্তিযোদ্ধার এই বীরত্বগাঁথা আমাদের ভবিষ্যৎ প্রজন্মকে আলো দেখাবে বলে আমার ধারণা।

৩) অধিকাংশ ভারতীয়,পাকিস্তানি এবং আমাদের এদেশীয় কিছু কিছু মানুষের ধারণা যে ১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধ আসলে পাক-ভারত যুদ্ধ,এতে আমাদের দেশের মানুষের তেমন কোন হাত নেই।এই নির্লজ্জ্ব মিথ্যাকথাগুলোর বিপরীতে সত্যিকারের মুক্তিযোদ্ধাদের তেজদৃপ্ত উচ্চারণ আজ বড় প্রয়োজন,যাতে নতুন প্রজন্ম নিজের বীরত্বের ইতিহাস পড়তে গিয়ে কোনরূপ সংকোচবোধ না করে।আগামীকাল এ ব্যাপারে স্যারের সাথে কথা বলব।স্যারের কথা সেইসব মানুষ এবং টাকার বিনিময়ে নিজের দেশের স্বাধীনতা সংগ্রামকে পাক-ভারত যুদ্ধ বলে চালিয়ে দেবার অপচেষ্টার মুখে সপাট পদাঘাত হিসেবে ব্যবহার করা এ মুহূর্তে অতীব প্রয়োজনীয়।

এই পোস্টটি দেবার পর থেকে আগামীকাল বেলা ৪টা পর্যন্ত উপরোক্ত প্রশ্নগুলোর পাশাপাশি অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন কি কি হতে পারে সেগুলোর একটি খসড়া দাঁড় করানোর পরিকল্পনা রয়েছে আমার।এ ব্যাপারে সিসিবির সদস্য এবং অন্য যে কোন পাঠকের সহায়তা কামনা করছি।আপনি যে প্রশ্নটি গুরুত্বপূর্ণ মনে করেন দয়া করে মন্তব্যের ঘরে সেটি পোস্ট করে অনুষ্ঠিতব্য সাক্ষাৎকারটিকে বস্তুনিষ্ঠ এবং সময়োপযোগী করে তুলতে সহায়তা করুন।

ধন্যবাদ সবাইকে।

৫১ টি মন্তব্য : “প্রিভিউ পোস্টঃমুক্তিযোদ্ধা কামরুল হাসান স্যারের সাথে এ সপ্তাহে আরেকটি সাক্ষাৎ করতে যাচ্ছি,যাঁরা প্রশ্ন রাখতে চান দয়া করে লিখুন”

  1. মইনুল (১৯৯২-১৯৯৮)

    যুদ্ধ ব্যাপারটা অবশ্যই কোনো ঠাট্টার ব্যাপারনা| প্রিয়জনকে বা সহকর্মীকে মরতে দেখা সবচে বড় ব্যাপার অনেক ভালো ইকুপমেন্ট নিয়ে লড়তে থাকা শত্রুপক্ষের সাথে ধাওয়া পাল্টা ধাওয়া, খুনোখুনির ব্যাপার স্যাপার|
    আমার জানতে ইচ্ছে করে কিভাবে তিনি তার নিজের মধ্যে এবং তার সহযোদ্ধাদের মধ্যে যুদ্ধ চালিয়ে যাবার অনুপ্রেরণা যোগার করেছিলেন|

    জবাব দিন
  2. নূপুর কান্তি দাশ (৮৪-৯০)

    আমার কিছু প্রশ্ন:
    ১। মুক্তিযুদ্ধে গুপ্তচরবৃত্তির অবদান সম্পর্কে জানতে চাইবো তাঁর কাছে।গুপ্তচরদের নিজের প্রাণ বাজি রেখে শত্রুশিবিরের খবর আনানেয়া করা ও স্বাধীনতাপরবর্তী সময়ে সঠিকভাবে মূল্যায়িত হওয়া বা না হওয়ার প্রসংগগুলো আসতে পারে।

    ২।মুক্তিযুদ্ধের অর্থনৈতিক দিক (গোলাবারুদ, অন্যান্য সরঞ্জাম, খাবার দাবার ইত্যাদির বাজেট, বন্টন) সম্পর্কে আলোকপাত।

    ৩। বিশ্বাসঘাতকতা নিয়ে মুক্তিফৌজের নিয়মনীতিমালা কি ছিলো, শাস্তির কি কি বিধান ছিলো।

    আরো মনে এলে লিখে রাখবো।সাক্ষাৎকারটি পড়তে পাবো কখন?
    আমিও তোমার মতো উত্তেজিত মাস্ফ্যু।

    জবাব দিন
    • মাসরুফ (১৯৯৭-২০০৩)

      দারুন তিনটি প্রশ্ন দিলেন ভাইয়া।কালকে সাক্ষাতকার নেবার পর চেষ্টা করব ফিরে এসেই লেখা শুরু করার।শনিবারের মধ্যেই দিতে পারবো আশা করি।আমার ইচ্ছে আছে দরকার হলে কয়েক দফায় হলেও বেশ বড় আর ইন-ডিটেইলস একটা সাক্ষাতকার নেবার... 🙁 ধুর সময় কাটছেই না...

      জবাব দিন
  3. রায়হান আবীর (৯৯-০৫)

    একটাই প্রশ্নঃ সামগ্রিক ভাবে মুক্তিযোদ্ধারা কেন মুক্তি সংগ্রাম করেছিলেন? শুধুই কি অত্যাচার থেকে মুক্ত হবার আশায়? নাকি অনেকের মাঝে অন্য কোনো চিন্তাও ছিলো?

    জবাব দিন
  4. রায়হান রশিদ (৮৬ - ৯০)

    শুভ কামনা থাকলো। এই প্রশ্নটি মাথায় ঘুরপাক খাচ্ছে -

    মুক্তিযুদ্ধে সামরিক ব্যক্তিবর্গের বিশাল ভূমিকা ছিল, সন্দেহ নেই। কিন্তু অসামরিক ছাত্র-জনতার অংশগ্রহণও কোনও অংশে কোন বিচারেই হয়তো কম ছিল না। অথচ, বীরত্বের স্বীকৃতিস্বরূপ পদক/সম্মান প্রদানের ক্ষেত্রে আপনার কি মনে হয় না বেসামরিক মুক্তিযোদ্ধারা অফিশিয়াল স্বীকৃতি কিছুটা কম পেয়েছে? (দ্রষ্টব্য: বিভিন্ন ধরণের সম্মান, যেমন - বীর শ্রেষ্ঠ, বীর বিক্রম, বীর উত্তম ইত্যাদির ক্ষেত্রে সামরিক-বেসামরিক স্বীকৃতির তারতম্য)। অংশগ্রহণের সংখ্যার সাথে বীরত্বের অফিশিয়াল স্বীকৃতি কি সামঞ্জস্যপূর্ণ বলে মনে করেন আপনি? মুক্তিযুদ্ধে সামরিক বাহিনীর অংশগ্রহণ যেমন গুরুত্বপূর্ণ, তেমনি মুক্তিযুদ্ধের "সামরিকায়িত ইতিহাস" লেখার প্রয়াসকে "খন্ডিত" বললে তা কি ভুল বলা হবে? আপনি কি মনে করেন এর প্রতিকার হওয়া উচিত?

    [প্রশ্নটি মুক্তাঙ্গন এর ব্লগার 'অবিশ্রুত' এর একটি আলোচনায় উঠে এসেছিল। সেখান থেকেই যতটুকু মনে করতে পারছি, তুলে দেয়া হল]

    ========
    টুইটার একাউন্ট

    জবাব দিন
    • মাসরুফ (১৯৯৭-২০০৩)

      এটা একটা চমৎকার প্রশ্ন,কিছুটা "সেনসিটিভ"-ও বটে।১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধে নামেমাত্র সামরিক ট্রেনিং নিয়ে গণযোদ্ধারা যে অসাধারণ বীরত্ব দেখিয়েছিলেন সে তুলনায় স্বীকৃতি অবশ্যই আমার কাছে অনেক কম বলে মনে হয়।মেজর কামরুল হাসান ভুঁইয়া নিজে সামরিক যোদ্ধা হওয়া সত্বেও বার বার এ বিষয়টি তাঁর লেখায় তুলে এনেছেন।আমার মনে হয় চার দশকে আমাদের এতটুকু পরিপক্কতা আসা উচিত যে এজাতীয় বিষয়গুলোও বিনা দ্বিধায় আমরা আলোকপাত করব।অনেক ধন্যবাদ রায়হান ভাইকে প্রশ্নটি তুলে ধরার জন্যে।

      জবাব দিন
    • রাব্বী (৯২-৯৮)

      এই প্রশ্নটি খুবই গুরুত্বপূর্ন। রায়হান ভাইকে ধন্যবাদ।

      ইউনিভার্সিটিতে থাকতে আমরাও এই বিষয়টা নিয়ে কথা বলতাম যে মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাসকে এবং বিশ্লেষনের টুলসগুলোকে ডিমিলিটারাইজ করার প্রয়োজন আছে। আরেকটা বিষয় গুরুত্বপূর্ন, পাকিস্থানের পরিবর্তে "হানাদার বাহিনী" শব্দটি ব্যবহার করে মুক্তিযুদ্ধের শত্রুপক্ষের পরিচয় নিয়ে একটি সূক্ষ্ম রাজনীতি চালু আছে। এই জাতীয় আরো কিছু শব্দ টেক্সটে ব্যবহার করা হয় যখন পলিটিক্যাল ইসলামকে মূলধারার রাজনীতিতে ব্যবহার করা শুরু হয়। এর ভেতর মুক্তিযুদ্ধের শত্রু পক্ষের পরিচয় আড়াল করা বা শত্রুকে অস্পষ্ট করে দেবার একটি প্রয়াস আছে। ব্যাপারটি খুব ছোট মনে হতে পারে কিন্তু এর গুরুত্ব আমার কাছে সাংঘাতিক মনে হয়।


      আমার বন্ধুয়া বিহনে

      জবাব দিন
  5. শেখ আলীমুজ্জামান (১৯৭০-৭৬)

    মাসরুফ,
    যতদূর মনে পড়ে, মুক্তিযুদ্ধের পর কলে জে ফিরে এসে, ভূঁইয়া ভাই (উনি খায়বার হাউজের হাউজ লীডার ছিলেন) হাই টেবিলে বসে খেজুর খেয়ে বিচি টোকা দিয়ে নীচে ছুড়ে দিতেন আমাদের লক্ষ্য করে এবং খুবই নিরীহ ভাবে দেখাতেন যেন কিছুই জানেন না! সে সময় আমরা ক্লাস সেভেন এ। তবে উনারা জেসিসিতে অস্ত্র নিয়ে ফেরেন নি, জমা দিয়ে তারপর কলেজে এসেছিলেন। বন্ধুদের কাছে শোনা আরসিসি র যারা মুক্তিযুদ্ধে গিয়েছিলেন তাদের কেউ কেউ নাকি কলেজ়ে মুক্তিযুদ্ধের অস্ত্র নিয়ে ফিরেছিলেন, পরে তা জমা দেন।এ বিষয়ে এবং কোন ক্যাডেট কলেজ থেকে কতজন মুক্তিযুদ্ধে অংশ নিয়েছিলেন সে বিষয়ে বিষদ জানতে ইচ্ছা হয়।

    জবাব দিন
  6. মাসরুফ (১৯৯৭-২০০৩)

    আপডেটঃ
    ঠিক ইন্টারভিউ নয়,প্রায় তিন ঘন্টা ধরে স্যারের সাথে আলাপচারিতা হয়েছে মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে।শিঘ্রি প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী পোস্ট দেবার আশা রাখছি 🙂

    জবাব দিন
  7. মাসরুফ (১৯৯৭-২০০৩)

    বিশেষ ঘোষণাঃ স্যার আজকে ফোন দিয়েছিলেন,আরেকটি মিটিং করতে যাব খুব শিঘ্রি-দয়া করে প্রশ্ন দিন যেগুলো স্যারকে জিজ্ঞাসা করতে পারি-আগেরগুলোর উত্তর দিয়েছেন তিনি।পোস্ট লেখা চলছে,দ্রুত দিতে পারব বলে আশা রাখি...

    জবাব দিন
  8. গুলশান (১৯৯৯-২০০৫)

    স্যারকে সিসিবিতে আসতে অনুরোধ করা যায় না? আমি স্যারের কাছে স্যারের হাউসের একজন হিসেবে অনুরোধ করছি। মাসরুফ ভাইয়ের কাছে অনুরোধ পৌঁছে দেবার জন্য।

    জবাব দিন
    • মাসরুফ (১৯৯৭-২০০৩)

      x-( স্যারদের সময় কোন হাউস ছিলোনা- উপরের তলা আর নিচের তলাকে হাউস-১ আর হাউস-২ হিসেবে গন্য করা হত।খায়বার হাউসের তখন নির্মান কাজ চলতেছিলো।হাউসের নাম যেহেতু নাই,স্যারকে নিজের হাউসের হিসেবে দাবী করার তীব্র প্রতিবাদ জানাই।আমি জানতাম যে পোংটা পোলাপান স্যারকে নিজের হাউসের বলে দাবী করবে তাই এই বিষয়গুলা ঠিক ঠিক জেনে এসেছিলাম।
      অফ টপিকঃ স্যার হুনাইন হাউসের হলে অবশ্য এইগুলা কিছু বলতাম না 😛

      জবাব দিন
      • গুলশান (১৯৯৯-২০০৫)

        উপরে আলীমুজ্জামান ভাইয়ের মন্তব্য থেকে-
        "যতদূর মনে পড়ে, মুক্তিযুদ্ধের পর কলেজে ফিরে এসে, ভূঁইয়া ভাই (উনি খায়বার হাউজের হাউজ লীডার ছিলেন) হাই টেবিলে বসে খেজুর খেয়ে বিচি টোকা দিয়ে নীচে ছুড়ে দিতেন আমাদের লক্ষ্য করে এবং খুবই নিরীহ ভাবে দেখাতেন যেন কিছুই জানেন না! সে সময় আমরা ক্লাস সেভেন এ।"
        বুঝলেন কেমনে হাউসের নাম জানলাম? আপনি হাউস প্রিফেক্ট সম্পর্কে এই সব কথা কন কেমনে? (সম্পাদিত)

        জবাব দিন
  9. ভাই আমি ক্যাডেট না । কিন্তু লিখলাম। আমার নিজেরই ১০০০টা প্রশ্ন আছে। কিন্তু আমার সুয়োগ কখনও হবে কি না জানি না। আর আমি যেহেতু ক্যাডেট না তাই প্রশ্ন আর করণাম না। আর যে ভাই এই সাক্ষাতকার নিচ্ছে তাকে অনেক ধন্যবাদ।

    জবাব দিন
  10. "মাসরুফ",
    স্বাধীনতার ঘোষণার কি কোন প্রভাব ছিল মুক্তিযুদ্ধতে???যা নিয়ে আমরা মারামারি করি বা এই বিসয়ে তার মতা মত বা ভাবনাগুলি তখন কার দিন গুলির কি ছিল। সবশেষে এই কথাগুলি কি জানতে চাওয়া যায়।

    জবাব দিন
    • মাসরুফ (১৯৯৭-২০০৩)

      আমার মনে হয় এ প্রশ্নটি স্যারকে করলে তাঁকে অযাচিতভাবে ক্ষেপিয়ে তোলা হতে পারে।সশরীরে মুক্তিযুদ্ধ এবং ৩৯ বছর এ নিয়ে গবেষণা করার পর "স্বাধীনতা ঘোষণার প্রভাব মুক্তিযুদ্ধে ছিলো কি-না" এ প্রশ্ন শুনলে ক্ষেপে যাওয়া স্বাভাবিক।এই প্রশ্নের উত্তর মোটামুটি জেনারেল নলেজের পর্যায়ে পড়ে এবং এটি নিয়ে যারা মারামারি করে তারা স্বার্থোদ্ধারেই করে।মুক্তিযুদ্ধ সম্পর্কে নূন্যতম ধারণা আছে এমন যে কোন ব্যক্তি নিরপেক্ষভাবে একেবারে প্রাথমিক বইপত্র পড়লেও এ প্রশ্নটির উত্তর জানার কথা।প্রকৃতপক্ষে এটি নিয়ে বিতর্কের কোন অবকাশই নেই।আমি দুঃখিত,মনে হয়না এ প্রশ্নটি করা হবে।

      জবাব দিন
  11. রকিব (০১-০৭)

    মাস্ফ্যুদা, একটা ছোট প্রশ্ন। পোষ্টটা কি আমরা পর্বে পর্বে ভাগ করে পেতে যাচ্ছি নাকী একক পোষ্টেই পুরোটা হবে। আমার ব্যক্তিগত একটা অভিমত হলো, যদি পোষ্টের আকার দীর্ঘ হয় সেক্ষেত্রে খন্ডাকারে দিলে সুষম আলোচনার সুযোগ পাওয়া যাবে।


    আমি তবু বলি:
    এখনো যে কটা দিন বেঁচে আছি সূর্যে সূর্যে চলি ..

    জবাব দিন
    • মাসরুফ (১৯৯৭-২০০৩)

      প্রথম পর্ব(অর্থাৎ প্রথম সাক্ষাতে যেসব বিষয়ে আলচনা হয়েছে) সেগুলো আজ-কালের মধ্যেই দিয়ে দিচ্ছি।একটু দীর্ঘ হলেও পাঠকের সুবিধার্থে ১,২,৩...এরকম করে প্রায় ১০টা ছোট ছোট অনুচ্ছেদে ভাগ করে দিচ্ছি।যিনি একটানে পড়তে অসুবিধা বোধ করবেন তিনি এভাবে অনুচ্ছেদ অনুযায়ী ক্ষুদ্র আকারে পড়ে সে অনুযায়ী আলোচনা করতে পারবেন।মন্তব্যে এভাবে উল্লেখ করলেও হবে এত অনুচ্ছেদের এই বিষয়টি...।প্রথমে চিন্তা করেছিলাম পর্ব আকারে দেবো কিন্তু পুরো আলোচনাটা পর্ব আকারে ভাগ করলে আসলে মূল যোগসুত্র কিছুটা ব্যাহত হবে।একারণে একটা পোস্টেই দিচ্ছি।পরে অসুবিধা হলে সেটা পর্ব আকারে ভাগ করার সুযোগও রইলো 🙂

      জবাব দিন
  12. মাহমুদ (১৯৯০-৯৬)

    মাসরুফ,
    আমি দুঃখিত এই কারণে যে, তোমার এই পোষ্টটা যে সময়ে এসেছিল তখন আমি পুরা দৌড়ের উপরে- কেবল ইউনি-তে এসেছি, এসেই একগাদা পড়ার চিপায় পড়েছি, পড়ে হাসফাঁস করেছি। মাথা পুরাই ফাঁকা হয়ে গেছিল। তাই মন্তব্য/প্রশ্ন করা হয়নি। কিন্তু তা'তে একদিকে ভালোই হয়েছে- তোমার বাস্তব অভিজ্ঞতা হয়েছে এবং তুমি এখন আরো ভালোভাবে বুঝতে পারছো কি কি করলে সাক্ষাৎকার আরো তথ্যবহহুল হবে।
    যাই হোক, পোষ্টে আসি-

    তোমার প্রশ্ন তিনটাকে আমি নিম্নোক্তভাবে পাঠ করছিঃ মেজর কামরুল ভাইয়ের কাছ থেকে জানতে চাইছো তাঁর-
    ১। যুদ্ধে যাওয়ার অনুপ্রেরণা
    ২। সম্মুখসমরের গল্প যেখানে তার বীরত্বের কথা থাকবে
    ৩। বিজয়ে মুক্তিযোদ্ধাদের ও ভারতীয় বাহিনীর অবদানের তুলনা

    - একটু ভালো করে লক্ষ্য করলে দেখবে যে, যেকোন মুক্তিযোদ্ধাকে যদি তার গল্প বলতে অনুরোধ করো, তাহলে প্রথম দুটো প্রশ্ন এমনি এমনি চলে আসে- তারা গল্পের শুরুই করবেন হয় একটা খন্ড যুদ্ধের কাহিনী দিয়ে অথবা নানান বাধা-বিপত্তি এড়িয়ে যুদ্ধে যোগদানের কাহিনী দিয়ে। এই দুটো আসবেই, আগে অথবা পরে। আর এইসব গল্প করতে গিয়ে তারা আরো অনেক কথাই বলবেন যা সেই প্রেক্ষাপটে প্রাসঙ্গিক। একারণে, আমি তাদের 'গল্পবলা'কে কোন নির্দিষ্ট প্রশ্নের কাঠামোয় সীমাবদ্ধ করতে চাইনা।

    আর তৃতীয় প্রশ্নটা একজন মুক্তিযোদ্ধার পক্ষে দেওয়া খুব কঠিন। কারণ, এটা যুদ্ধক্ষেত্রের বাইরে একটা কূটনৈতিক বিতর্কের সাথে জড়িত। ব্যক্তিগতভাবে বেশিরভাগ মুক্তিযোদ্ধাই এইটা নিয়ে মাথা ঘামায়নি। আমার ধারণা, তাদের একমাত্র চিন্তা ছিল যুদ্ধ জয় করা তা' সে যেভাবেই হোক, যেকারো সাহায্যেই হোক। তবে, অনেকগুলো ব্যক্তিগত গল্প থেকে যুদ্ধের একটা সামগ্রিক চিত্র পাওয়া যাবে যেখান থেকে এটা বোঝা কঠিন হবেনা যে মুক্তিযোদ্ধারা পাকিস্তানী শুত্রুদের কতটা নায়েহাল করতে পেরেছিল, আর সেখান থেকেই বোঝা যাবে ভারতীয় বাহিনী কতটা সাহায্য করেছিল যুদ্ধের ফলাফল নির্ধারণে।

    কাজেই, সরাসরি কোন প্রশ্ন না করে সাধারণভাবে তাদের যুদ্ধের গল্প/কাহিনী শুনতে যাওয়া আমার কাছে বেশি কার্যকরী মনে হয়। (সম্পাদিত)


    There is no royal road to science, and only those who do not dread the fatiguing climb of its steep paths have a chance of gaining its luminous summits.- Karl Marx

    জবাব দিন
    • মাসরুফ (১৯৯৭-২০০৩)

      এইখানে একটা সমস্যা আছে মাহমুদ ভাই- কামরুল স্যারের কাছে সেইদিনের পিচ্চি আমি গিয়েই "আপনি আপনার মত করে মুক্তিযুদ্ধের গল্প বলুন"- বললে তাঁর বিরক্ত হওয়ার সম্ভাবনা মোটামুটি ১০০%।এছাড়া "মুক্তিযুদ্ধের গল্প" অতি বিশাল,প্রায় সমুদ্রসম একটি ব্যাপার-এভাবে জিজ্ঞাসা করলে কোথায় শুরু হবে আর কোথায় শেষ হবে সেটাও চিন্তার বিষয়। কামরুল স্যারকে শুরুতে যখন বলেছি যে তাঁর কাছে মুক্তিযুদ্ধ সম্পর্কে জানতে এসেছি,তিনি জিজ্ঞাসা করেছিলেন আমি ঠিক কি জানতে চাই।তখন আগে থেকে প্রশ্নগুলো ঠিক থাকায় মান-ইজ্জত কিছুটা রক্ষা পেয়েছিলো,যদিও উত্তর শোনার সময় সমস্যার কথা আগের ব্লগে বলেছি।এছাড়া এরকম আনস্ট্রাকচার্ড ইন্টারভিউ এর আরেকটা সমস্যা হল এর নির্দিষ্ট কোন দিক-নির্দেশনা না থাকা,ঠিক ওই মুহূর্তে বক্তা যে মেজাজে আছেন এবং তাঁর মাথায় যে কাহিনী ঘুরপাক খাচ্ছে তিনি সেগুলোই বলা শুরু করবেন,যদিও ওই ব্যাপারগুলোর চাইতেও গুরুত্বপূর্ণ অভিজ্ঞতা তাঁর থাকাটা অস্বাভাবিক নয়।এ কারণে আমার কাছে মন্দের ভালো হিসেবে স্ট্রাকচার্ড ইন্টারভিউই অধিক্তর উপযোগী বলে মনে হয়েছে।

      জবাব দিন
      • মাসরুফ (১৯৯৭-২০০৩)

        তবে একটা বিষয় স্বীকার করতেই হবে- আনস্ট্রাকচার্ড ইন্টারভিউ থেকে দক্ষ গবেষক নিজের প্রয়োজনীয় তথ্য বেছে নিতে পারেন,নিজের মত বিশ্লেষণ করতে পারেন।ভাবছি পরবর্তী ইন্টারভিউটা আপনার পরামর্শমত আনস্ট্রাকচার্ডভাবে নেবো।

        জবাব দিন
      • মাহমুদ (১৯৯০-৯৬)
        এছাড়া “মুক্তিযুদ্ধের গল্প” অতি বিশাল,প্রায় সমুদ্রসম একটি ব্যাপার-এভাবে জিজ্ঞাসা করলে কোথায় শুরু হবে আর কোথায় শেষ হবে সেটাও চিন্তার বিষয়।

        - মুক্তিযুদ্ধ ত' বিশালই, এর ইতিহাস তুলে আনা তারও চেয়ে বড়, বি-শা-ল......।
        এমন কাজ করার জন্য তাই যুক্তি নয়, আবেগ দরকার, তীব্র আবেগ। আর সেইজন্যই এই কাজের ব্যাপারে আশাবাদী। লাল-নীল-গোলাপী রঙএ রাঙ্গা শিক্ষক-গবেষক-বুদ্ধিজীবিদের থেকে একারণেই তোমাদের উপর আমার আস্থা।


        There is no royal road to science, and only those who do not dread the fatiguing climb of its steep paths have a chance of gaining its luminous summits.- Karl Marx

        জবাব দিন
  13. মাহমুদ (১৯৯০-৯৬)

    এই ধরণের সাক্ষাৎকারের শুরুটা সব সময়ই চ্যালেঞ্জিং, কারণ এখানে দুইজনের মধ্যঅকার সম্পর্ক একটা ফ্যাক্টর হয়ে দাঁড়ায়। আমার ক্লাসে, এবং গবেষণায়ও, দেখেছি এইটা একটা কমন সমস্যা।

    কামরুল স্যারকে শুরুতে যখন বলেছি যে তাঁর কাছে মুক্তিযুদ্ধ সম্পর্কে জানতে এসেছি,তিনি জিজ্ঞাসা করেছিলেন আমি ঠিক কি জানতে চাই।

    কামরুল ভাই তোমাকে প্রশ্ন করতে বলেছেন কারণ তিনি জানতেন তুমি প্রশ্ন করবে, তাই। তিনি যদি সেই সাক্ষাৎকারের বিষয়ে আগে থেকে কিছুই না জানতেন, তাহলে মনে হয় ঐ প্রশ্ন করতেন না। আর, তার সেই প্রশ্নের উত্তরে তুমি নিজের প্রশ্নগুলো না বলে যদি বলতে যে তাঁর পছন্দমত বিষয়ে আলাপ করতে, অথবা যুদ্ধে তাঁর ব্যক্তিগত অভিজ্ঞতাগুলো বলতে, তাহলে নিশ্চিতভাবেই অন্য অনেক বিষয়ের অবতারণা হতো যেগুলো এইপর্বে তুমি পাওনি। আরেকবার গিয়ে দেখা করে ট্রাই করো আমার এই পরামর্শ অনুযায়ী- বিফলে 'মূল্য ফেরৎ'।

    ইচ্ছে আছে, একদিন সময় করে বাংলাদেশের মাজারের গাঞ্জাখোর, জাপানে বাংলাদেশী ছাত্র-অভিবাসী আর লস এঞ্জেলসের বাংলাদেশী অভিবাসীদের মাঝে করা রিসার্চের কাজের অভিজ্ঞতায় আমাদের আলোচ্য বিষয় নিয়ে আলাপ করার। (সম্পাদিত)


    There is no royal road to science, and only those who do not dread the fatiguing climb of its steep paths have a chance of gaining its luminous summits.- Karl Marx

    জবাব দিন
    • আমিন (১৯৯৬-২০০২)
      একদিন সময় করে বাংলাদেশের মাজারের গাঞ্জাখোর, জাপানে বাংলাদেশী ছাত্র-অভিবাসী আর লস এঞ্জেলসের বাংলাদেশী অভিবাসীদের মাঝে করা রিসার্চের কাজের অভিজ্ঞতায় আমাদের আলোচ্য বিষয় নিয়ে আলাপ করার।

      অপেক্ষায় রইলাম মাহমুদ ভাই আগ্রহ নিয়া।

      জবাব দিন
    • মাসরুফ (১৯৯৭-২০০৩)
      তুমি নিজের প্রশ্নগুলো না বলে যদি বলতে যে তাঁর পছন্দমত বিষয়ে আলাপ করতে, অথবা যুদ্ধে তাঁর ব্যক্তিগত অভিজ্ঞতাগুলো বলতে, তাহলে নিশ্চিতভাবেই অন্য অনেক বিষয়ের অবতারণা হতো যেগুলো এইপর্বে তুমি পাওনি। আরেকবার গিয়ে দেখা করে ট্রাই করো আমার এই পরামর্শ অনুযায়ী- বিফলে ‘মূল্য ফেরৎ’।

      চেষ্টা করব পরবর্তী সাক্ষাৎকারটা এভাবে নিতে।মনে হয়না বিফলে মূল্য ফেরত যাবে 😀

      জবাব দিন

মওন্তব্য করুন : মাহমুদ (১৯৯০-৯৬)

জবাব দিতে না চাইলে এখানে ক্লিক করুন।

দয়া করে বাংলায় মন্তব্য করুন। ইংরেজীতে প্রদানকৃত মন্তব্য প্রকাশ অথবা প্রদর্শনের নিশ্চয়তা আপনাকে দেয়া হচ্ছেনা।