বুঝতে পারছি না কি শিরোনাম দিয়ে লিখবো, কি লিখবো সেটাও। কিন্তু খুব ইচ্ছে করছে অনুভূতিগুলা সিসিবিতে শেয়ার করতে। আবার গুছিয়ে লেখার মতো সময় এবং শক্তি কোনটাই নেই। ভ্রমন শেষে হয়তো অনেক কথাই ভুলেও যাবো। এর কারণ হলো- পথে এতো এতো নতুন কিছু দেখছি যে, আগেরটার থেকে পরেরটাকে আরও বেশি আকর্ষণীয়, সুন্দর, নয়নাভিরাম মনে হচ্ছে। শুধু সুন্দর না, বলা উচিত ‘ভয়ঙ্কর সুন্দর’-
গতকাল লস এঞ্জেলস থেকে একটা সাড়ে চার ঘণ্টা ড্রাইভ করে (ঘন্টায় মোটামুটি ৮০ মাইল বেগে) লাস ভেগাস পৌঁছলাম। সেখানে শুধু প্যারিস হোটেল এবং এর আশেপাশে মিনিট ৪০ এর মতো ঘুরাঘুরি করে আবার পথে, গন্তব্য ইউটাহ-এর সেন্ট জর্জ (St. George) শহর। লাস ভেগাস থেকে ১২০ মাইলের দূরত্বে। প্রথম ৭০/৮০ মাইলের মধ্যে শুধুই ধূ ধূ মরু আর ন্যাড়া পর্বত। মেসকিট-ঝোপগুলোও ক্রমশঃ আকারে ক্ষুদ্রতর হতে হতে এক সময় বিলীন হয়ে গেলো ছোটো পাথরের পর্বতের ঢালে। সামনে বিশাল পর্বতমালার মধ্য দিয়ে পথ! আমি ঠিক বুঝতে পারছিলাম না কি বিস্ময়ের মাঝে প্রবেশ করতে চলেছি- একটা জর্জ (ক্যানিয়নের ক্ষুদ্র-সংস্করণ) এর মধ্য দিয়ে প্রায়-সর্পিল পথ চলে গেছে পর্বতমালা ভেদ করে। পথের দুইধারে বিশাল আর উচু সব লালচে পাথর, গম্ভীর ভঙ্গিতে দাঁড়িয়ে আছে, যা’র সাথে শুধু সমুদ্রের বিশালতারই তুলনা চলে।
বলেছিলাম বুনো পশ্চমে যাচ্ছি। কিন্তু এখন পর্যন্ত নাকি আসল ‘বুনো’ পশ্চিমে যাইনি, সেটা আরো সামনে- বললেন যে মোটেলে উঠেছি তা’র ম্যানেজার (মালিকও হতে পারে, আমি নিশ্চিত নই)। তিনি ভারতীয়, লস এঞ্জেলসে অনেক বছর কাটিয়ে এখন সেন্ট জর্জে থিতু হয়েছেন। তাছাড়াও আরো একটা পরিচয় দিলেন- ১৯৭১ এ ভারতীয় মিত্র বাহিনীর প্যারাট্রুপার (সেঃ লেঃ) হিসেবে ঢাকায় যুদ্ধ করেছিলেন। আমাদের বুকিং ছিল ‘কিং-বেড’ রুম, খাতির করে দিয়ে দিলেন একটা সুইট। ও ভালো কথা, মোটেলের নাম ‘Coronada Inn’। মোটামুটি মানের, কিন্তু রুমের কন্ডিশন বেশ ভালো। তাছাড়া গরম পানির পুল এবং স্পা আছে। প্রায় সারাদিন গরম (১০০ ডিগ্রী ফারেনহাইটের উপরে, যদিও গাড়ীর মধ্যে এসি ছিলো) আবহাওয়ার মধ্যে ড্রাইভ শেষ আয়েস করে ঠান্ডা-গরম মিলিয়ে দীর্ঘ একটা গোসল করতে পারাটা যে কি তা’ বর্ণনা করা অসম্ভব।
আজ সকালে নাস্তা সেড়ে যাবো Zion National Park দেখতে। তারপর যাত্রা শুরু হবে কলোরাডোর Grand Junction শহরের উদ্দেশ্যে। প্রায় ৬ ঘণ্টার ড্রাইভ।
ব্লগের ভাই-বোন সকল, দোওয়া রাইখেন যেন সহিহ-সালামতে থাকি।
ঈদের নামাজ কোথায় পড়বি, I-29 নাকি I-69 এ ?
সাবধানে চালাইস.. ড্রাইভিং সবসময়ই রিস্কি ..
প্রথম হইলাম মনে হয় 😉
১৮ তারখ বিকেলে ডেনভারে পৌঁছে যাওয়ার কথা। আর ঈদ হবে ১৯এ। অর্থ্যাৎ, ডেনভারে পড়বো ঈদের নামাজ।
প্রথম হওয়ার জন্য অভিনন্দন 🙂
There is no royal road to science, and only those who do not dread the fatiguing climb of its steep paths have a chance of gaining its luminous summits.- Karl Marx
চলতে থাকেন মাহমুদ ভাই, সাথে আছি :thumbup:
কিছু ছবি কি দেয়া যায়?
আমি বাংলায় মাতি উল্লাসে, করি বাংলায় হাহাকার
আমি সব দেখে শুনে, ক্ষেপে গিয়ে করি বাংলায় চিৎকার ৷
সহমত
কোথায় কোথায় যাইতেছো জিপিএস রিডিং সহ আপলোডাও, আর ছবি তো মাস্ট। নাহলে কিন্তু ডাউট খাইবা, জাপান পিকনিকের মত :grr:
পালটে দেবার স্বপ্ন আমার এখনও গেল না
ফয়েজ ভাই,
এই যাত্রাটা আমার লাইফটাইম অভিজ্ঞতা।
গতকাল সেন্ট জর্জ থেকে বের হয়ে জায়ন ক্যানিয়নে গেলাম প্রথমে (Zion national park)। সেখানে যাওয়ার প্রায় ৪০ মাইল লাল পাথরের পাহাড়ী পথ, ক্যানিয়নের মধ্যে প্রায় ২ ঘণ্টার শাটল বাস ট্রিপ,... বর্ণনাতীত!
জিপিএস রিডিং লাগবে না, আমি ইন্টারস্টেট ফ্রীওয়ে ধরে চলছি, I-15 ধরে লাস ভেগাস, সেন্ট জর্জ হয়ে এখন I-70 নিয়ে ইউটাহ থেকে কলোরাডো ঢুকে পড়েছি গত সন্ধ্যায়। আজ আরো ২৬০ মাইল গেলে ডেনভারে পৌঁছে যাবো, দুপুরের পরপর।
ছবির ব্যাপারে টেনশন নিয়েন না ভাইয়া, এইবার সুমাইয়া আছে আমার সাথে। ইতোমধ্যেই কমপক্ষে হাজারখানে ছবি তুলে ফেলেছে SLR ক্যামেরায় 🙂 । জাপানে গেট-টুগেদার হইছে ঠিকই, কিন্তু ছবি নাই। আমি পুরো একমাসে টোকিওতে ছবি তুলেছি মোট দুইটা।
দোওয়া রাইখেন যেন লস এঞ্জেলসে সুস্থ অবস্থায় ফিরতে পারি এবং সিসিবিতে ছবির বন্যা নিয়ে আসতে পারি। (সম্পাদিত)
There is no royal road to science, and only those who do not dread the fatiguing climb of its steep paths have a chance of gaining its luminous summits.- Karl Marx
সুমাইয়া যে আছে সেটা না বললেও বুঝতে পারতেছি। এতো লম্বা জার্নি, তাও সেলফ ড্রাইভিং এর পর তোমার ব্লগিং করার শখ থেকেই সেটা বুঝা যায় 😉 ;;;
:)) :))
আরও বর্ণনামূলক হলে ভালো লাগতো...।।
জিয়া ভাই,
অনেক দূর ড্রাইভ করতে হচ্ছে প্রতিদিন। রাতে মোটেলে এসে কোন রকমে ডিনার করে ঘুম দিয়ে আবার সাত-সকালে বেড়িয়ে পড়ি। তাছাড়া ইন্টারনেটও পাইনা সবসময়। তাই, বর্ণনা খুব একটা করা যাচ্ছে না এখন। লস এঞ্জেলসে ফিরে ফলোআপ করার ইচ্ছে থাকল।
There is no royal road to science, and only those who do not dread the fatiguing climb of its steep paths have a chance of gaining its luminous summits.- Karl Marx
হিংসা আর হিংসা! যাইহোক, রথ দেখা এবং কলা বেঁচা দারুণভাবে উপভোগ্য হোক। মাহমুদ ভাই, এইসব ফাঁকিবাজি পোষ্ট রেখে একটা ভালকরে পরে ভ্রমণ পোষ্ট দেন (ছবি সহ)।
আমার বন্ধুয়া বিহনে
সহমত .. 🙂
গতকাল সন্ধ্যায় প্রায় ২৪০০ মাইল মোটরযাত্রা শেষ করে লস এঞ্জেলসে ফিরলাম... আলহামদুলিল্লাহ!
এখন কয়েকদিন ঘুমাবো... গায়ের ব্যাথা সাড়লে তারপর ইচ্ছে আছে একটা ব্লগ লিখার 🙂
There is no royal road to science, and only those who do not dread the fatiguing climb of its steep paths have a chance of gaining its luminous summits.- Karl Marx
ভাই তারাতারি ফটোসহ পোস্ট দেন 🙁 🙁 🙁
আর দেরী সহ্য হইতেছে না 😕
ইয়ে মানে লাস ভেগাস নিয়া একটা আলাদা ফটোব্লগ দিলে ভালো হয় :shy: :shy: :shy:
"আমি খুব ভাল করে জানি, ব্যক্তিগত জীবনে আমার অহংকার করার মত কিছু নেই। কিন্তু আমার ভাষাটা নিয়ে তো আমি অহংকার করতেই পারি।"