সিসিবি’র উদীয়মান বুদ্ধিজীবিদের জন্য প্রস্তাবিত এজেন্ডা

গত দুইদিন সিসিবি’তে ধর্ম-বিষয়ক পোস্ট ও মন্তব্যের জোয়ার দেখে মনে হলো মাঝে মাঝে আমাদের ক্যাডেটদের মধ্যে সিরিয়াস বিষয়ে আলোচনা থাকা দরকার। সব সময় হালকা-মেজাজের পোস্ট মনে হয় আমাদের কৌতুহলী মনকে তৃপ্ত করতে পারেনা। কিন্তু আমার একটু আক্ষেপ লাগে যখন দেখি বর্তমান সমস্যা নিয়ে খুব একটা বাস্তবমুখী আলোচনা হচ্ছে না, কোথাওই না :no: । অথচ আমরা বাস করি বর্তমানেই, যেখানে নানা রকম সমস্যা আছে যা’র সমাধান সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার দাবী করে।

ব্যক্তিগত ভাবে আমি মনে করি, দেশের কাছে আমার ঋন অপরিসীম। আমার পারিবারিক অবস্থানের বিবেচনায় আমি দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করি যে, আজকে আমি যতোটাই আসতে পেড়েছি, তা’র সিংহভআগের জন্য আমি দেশের কাছে ঋণী। এই উপলব্ধি আমাকে প্রায়শঃই ভাবায় কি কি উপায়ে আমি দেশের মানুষের ভালো’র (আমি বিমূর্ত দেশের কথা বলছি না) পথে কিছুটা হলেও কাজে আসতে পারবো।

বর্তমানে আমাদের দেশের কি কি সম্ভাবনা আছে, সেই আলোচনা দিয়ে আমি শুরু করতে চাই। সেইসব সম্ভাবনার আলোকে এরপর সমস্যা চিহ্নিতকরণ এবং তা থেকে উত্তোরণের উপায় নিয়ে আলাপ করা যাবে।

আশা করি, সিসিবি’তে আমার বস’রা আর পিচ্ছি-পোলাপাইনগুলা আমার এই প্রস্তাবে সারা দিবে। এতে এই মুহুর্তেই দেশে উন্নয়ণের জোয়ার না আসলেও স্বল্পমেয়াদে আমার উন্নয়ণ-বিষয়ক ধারণার ভান্ডার সমৃদ্ধ হবে ;;; , আর দীর্ঘমেয়াদে ৫/৬ বছর পরে দেশ আরেকজন উন্নয়ণ-বিষয়ক ‘কাগুজে-বাঘ’ পাবে :shy: ;))

২,৪৪৭ বার দেখা হয়েছে

৩২ টি মন্তব্য : “সিসিবি’র উদীয়মান বুদ্ধিজীবিদের জন্য প্রস্তাবিত এজেন্ডা”

  1. মাহমুদ (১৯৯০-৯৬)

    আমি মনে হয় বোঝাতে পারিনি ঠিক মতো যে আমি কি চাইছি।

    "বর্তমানে আমাদের দেশের কি কি সম্ভাবনা আছে, সেই আলোচনা দিয়ে আমি শুরু করতে চাই।"-

    আগে যেসব আলোচনা হয়েছে, তা মূলতঃ শুরু হয়েছে 'সমস্যা'কে শুরু হিসেবে ধরে। আমার মনে হয় 'সম্ভাবনা'কে শুরু হিসেবে ধরে চিন্তা করলে আলাদা সিদ্ধান্ত আসতে পারে।


    There is no royal road to science, and only those who do not dread the fatiguing climb of its steep paths have a chance of gaining its luminous summits.- Karl Marx

    জবাব দিন
  2. জুনায়েদ কবীর (৯৫-০১)

    ১। রেডিমেড গার্মেন্টস- এই সেক্টর কেন জানি বারবার হোঁচট খাচ্ছে...আমাদের খুব খিয়াল করে চলতে হবে...খুব খিয়াল কইরা...
    ২। জনশক্তি- আমি একটা কথা মনে প্রাণে বিশ্বাস করি যে, যেদিন আমাদের বেশিরভাগ মানুষ শিক্ষিত (সুশিক্ষিত) হয়ে উঠবে- সেদিন আমাদেরকে আটকে রাখা কারও পক্ষে সম্ভব হবে না...
    ৩। চিংড়ী- সাদা সোনা নামের এই শিল্প বারবার পিছিয়ে পড়ছে...দক্ষিণাঞ্চলের এই সম্ভাবনাময় শিল্পকে রক্ষা ও বিকাশের জন্য মৎস অধিদপ্তরসহ তদসংক্রান্ত সকলকে একযোগে কাজ করতে হবে...
    ৪। পোল্ট্রি ও ডেইরি - প্রচুর সম্ভাবনাময় একটি খাত। কিন্তু...
    ৫। পর্যটন শিল্প- আমরা প্রায়শই আফসোস করি, আমাদের দেশে এই নেই- ঐ নেই...কিন্তু আমাদের দেশে যা আছে তা দিয়েই বছরে অনেক অনেক বৈদেশিক মুদ্রা অর্জন সম্ভব। এজন্য দর্শনীয় স্থানগুলোর অবকাঠামো ঠিক করতে হবে, পর্যটকদের নিরাপত্তা নিশ্চিৎ করতে হবে, যোগাযোগ ব্যবস্থা উন্নত করতে হবে, থাকা-খাওয়ার জন্য মানসম্পন্ন হোটেল, রেস্টুরেন্ট, গেস্ট হাউজ করতে হবে। সবচেয়ে বড় কথা পর্যটন সংক্রান্ত প্রয়োজনীয় তথ্য সবার জন্য সহজলভ্য করতে হবে।
    ৬। সমুদ্র-বন্দর- সিংগাপুর সমুদ্র বন্দরকে কাজে লাগিয়ে প্রতি বছর প্রচুর অর্থ উপার্জন করে। আমাদের দুইটি বন্দর থাকা স্বত্ত্বেও সঠিকভাবে কাজে লাগাতে না পারার কারনে বলার মতন কিছুই হচ্ছে না...
    ৭। ঔষধ শিল্প- আমাদের তৈরি ঔষধ বিশ্বমানের হওয়ার পরও এই খাত এখনো খুব বেশি একটা বিকশিত হয় নাই।
    ৮। সফটওয়ার শিল্প- আমাদের দেশে গুনী সফটওয়ার প্রকৌশলীর অভাব নেই। দ্রুত গতি সম্পন্ন ইন্টারনেটের লাইন কম খরচে সবার জন্য নিশ্চিৎ করতে পারলে সফটওয়ার তথা ভার্চুয়াল জগৎ থেকে প্রচুর অর্থ উপার্জন সম্ভব...
    ৮। দেশে বর্তমানে বাউ কুল, আপেল কুল- এর ব্যাপারে ব্যাপক আগ্রহ তৈরি হচ্ছে...এসব সহ অন্যান্য ফল উৎপাদন ও রপ্তানী খুব লাভজনক খাত হতে পারে...

    অনেক কিছু বলে ফেললাম...আপাতত খেমা দিলাম... 😛


    ঐ দেখা যায় তালগাছ, তালগাছটি কিন্তু আমার...হুঁ

    জবাব দিন
    • আলম (৯৭--০৩)

      পয়েন্টগুলোর সাথে একমত। :boss: এর সাথে কাজগুলো করার ক্ষেত্রে পদ্ধতিগত সীমাবদ্ধতার ব্যাপারে ফয়েজ ভাইয়ের "বৃত্ত ভাঙ্গার গান" থেকে সিদ্ধান্ত নেয়া যেতে পারে। তাছাড়া আমার "কেমন দেখলাম বাংলাদেশ" থেকেও কিছু পাওয়া যাবে মনে হয়।

      আমার মতে বাংলাদেশের জন্য প্রথম যে সম্ভাবনা দেখা যাচ্ছে, তা হলোঃ জন সচেতনতা। মানুষ এখন দেশের ব্যাপারে অনেক সচেতন, বিশেষতঃ দুর্নীতিবিরোধী সচেতনতা। এটা প্রশংসনীয়। এটাকে কাজে লাগানো যায়।

      জবাব দিন
    • মাহমুদ (১৯৯০-৯৬)

      আসলেই অনেক কিছু।
      জুনা, তুমারে অনেক থ্যাংকু......

      দেখা যাচ্ছে আমাদের এক জুনা'ই বাংলাদেশে কতকিছু আছে বলে ধরতে পারছে। তাহলে আমরা কেন বলি যে আমাদের কিছু নেই, আমাদের দ্বারা কিছু হবে না?!!


      There is no royal road to science, and only those who do not dread the fatiguing climb of its steep paths have a chance of gaining its luminous summits.- Karl Marx

      জবাব দিন
  3. সামিয়া (৯৯-০৫)

    আমার ক্যান জানি স্থির বিশ্বাস হয়ে গেছে জুনা ভাইয়ের কমেন্ট মানেই... 😛 , হাসিহাসি মুখ নিয়ে কমেন্ট পড়া শুরু করতেই দেখি হাই আল্লাহ...এ কি অবস্থা!!!

    এইবার সিরিয়াস কথাঃ
    জুনা ভাইয়ের পয়েন্ট গুলো খুবই উল্লেখযোগ্য। আমার মনে হয়, বাংলাদেশের সম্ভাবনাময় খাতগুলো আমরা নিজেরাই ধ্বংস করছি, মূল কারণ দেশী পণ্যের ওপর অনাস্থা। এর অবশ্য সুস্পষ্ট কারণও রয়েছে। দুই পক্ষেরই।
    অনাস্থার কারণে আমরা দেশী পণ্য ব্যবহার করা থেকে বিরত থেকে বিদেশী পণ্য ব্যবহার করি। সামান্য কলম,মাখন থেকেশুরু করে মোবাইল প্যাকেজ পর্যন্ত। এই মানসিকতা বাদ দিতে হবে। একটু কষ্ট করে হলেও যদি আমরা এক বছর, বেশী হলে দুবছর দেশী পণ্য ব্যবহার শুরু করি, তাতে করে মান বাড়বে বই কমবে না। আমাদের অর্থনীতি একতু একতু করে দাঁড়াতে শুরু করবে।

    জবাব দিন
  4. শার্লী (১৯৯৯-২০০৫)

    জুনা ভাইয়ের সাথে একমত থেকে আর একটা পয়েন্ট যোগ করতে চাই।
    আমি সবসময় দেখেছি আমাদের প্রধান খাদ্যশস্য ধাম সবচেয়ে উপেক্ষিত একটি বিষয়। জাপানের পাথুরে মাটিতে যদি একর প্রতি ৮৫০০ মেট্রিক টনের বেশি ধান উৎপন্ন হতে পারে তবে আমাদের দেশে কেন সেই পরিমান মাত্র ২৮০০ মেট্রিক টন? আমার কথা শুনলে সবাই জাসে, কিন্তু আমার স্বপ্ন আমি কোন একদিন জাপানের চেয়ে বেশি হারে ধান উৎপন্ন করে দেখাবো ওদেরই টেকনলজি দিয়ে। আমি আইন পড়ছি, তাই আমি এটা কিভাবে করব বলে অনেকে প্রশ্ন করে। এই প্রশ্নের উত্তরে আমি বলি "হিম্মতে মারদা মদদে খুদা (ভাবার্থঃসাহস করলে উপায় বের হয়ে যায়)"।

    জবাব দিন
  5. কাইয়ূম (১৯৯২-১৯৯৮)

    একটা পয়েন্ট আপাততঃ লেখি, পাট শিল্প এই সেক্টরটা পিতৃ-চাকরি সুবাদে খুব কাছে থেকে দেখেছি, অমিত সম্ভাবনাময় একটা খাতের কি করুণ হাল বানিয়েছি আমরা 🙁


    সংসারে প্রবল বৈরাগ্য!

    জবাব দিন
  6. সামীউর (৯৭-০৩)

    আমার মনে হয় বাস্তবমুখী আলোচনার জন্য দেশের বিভিন্ন টিভি চ্যানেল এ বিভিন্ন মাত্রার টক ঝাল মিষ্টি শো আছে, আর আমার আব্বুর সেগূলো মাত্রাতিরিক্ত দেখার কারনে আমি টিভি দেখা প্রায় বাদ দিসি , এবং আমার মনে হয় এই ব্যাপারটা অনেক ফ্যামিলিতে মোটামুটি কমন হয়ে গেসে। সচেতন নাগরিক হিসাবে কিসু কথাবার্তার দরকার আসে তবে সিসিবিকে 'উন্নয়নের জোয়ারে' না ভাসানোটাই মনে হয় ভালো।

    জবাব দিন

মওন্তব্য করুন : কামরুল হাসান (৯৪-০০)

জবাব দিতে না চাইলে এখানে ক্লিক করুন।

দয়া করে বাংলায় মন্তব্য করুন। ইংরেজীতে প্রদানকৃত মন্তব্য প্রকাশ অথবা প্রদর্শনের নিশ্চয়তা আপনাকে দেয়া হচ্ছেনা।