রমযানের ঈদের পরের সপ্তাহে আমেরিকা আসা অব্দি দিনগুলো কেটে যাচ্ছে এলোমেলো, একেবারেই। পড়ায় আছি, কিন্তু মন নাই। আজ এই পড়ি তো কাল সেই।দেশে থাকতে একটা পেপার লিখছি আমার তিন নম্বর এমএ ডিগ্রীর লোভে, সেইটা নিয়েও সুপারভাইজারে টালবাহানা করছেঃ বেশি চালাকি করে লিখছিলাম একটা একাডেমিক জার্নালকে মাথায় রেখে যেন সুপারভাইজার আপ্রুভ করা মাত্র ছাপানোর জন্য পাঠাতে পারি, এখন খাইছি ধরা। সুপারভাইজার কয় আরেকটা থিওরেটিক্যাল ফ্রেমওয়ার্ক আমার ড্যাটা থেকে আরো কি সব নাকি ‘আবিস্কার’ করবে। আবার লিখা, আর সেই ধাক্কাতে আরো তিন সপ্তাহ গেল। দুইদিন আগে নতুন পেপার জমা দিছি। এখন আপাততঃ মান্যবরের মন্তব্যের অপেক্ষায়।
এদিকে প্রায় দেড়মাস হল আমার সাথে এসে যোগ দিয়েছে আমার বউ। আমি যাই ক্লাসে, আরে সে থাকে পাখির খাঁচার মত ছোট্ট পৌনে-দুই রুমের বাসায়। আমার বাসা, আমাদের বাসা। এক্কেবারে পিচ্চিবেলায় জন্মের পর বছর তিনেক ছিলাম নানার বাড়ী, তারপর ক্লাস সেভেন পর্যন্ত বাপের বাড়ী, সেখান থেকে ক্যাডেট কলেজ+বাপের বাড়ী, তারপর বাপের বাড়ী+ঢাবি’র সলিমুল্লাহ হল, তারপর বন্ধুদের সাথে মেস…..সব শেষে আমেরিকার লস এঞ্জেলস শহরের যেইখানে ‘লিটল বাংলাদেশ’ ঘোষনা করা হলো গত মাসে তার পাশেই প্রায় নব্বই বছরের পুরোনো ছয়তলা দালানের চারতলায় উত্তর-পশ্চিম কোণের একটা ষ্টুডিও এপার্টমেন্টে। বাবুই পাখির বাসা, পুরোনো দেওয়াল, ছাদ, জানালা, দরজা। তবুও মনে হয় কত বড়, কত নতুন! কারণ, সাথে যে বউ আছে, আমার একমাত্র বউ।
এইবার আমেরিকা এসেই আমার কানাডা প্রবাসী বন্ধু সামি’র (১৯৯০-৯৬) কথা মনে পড়ছে। আমাদের সিসিবি’র আদি-জামাই, বান্ধা গরু সামি। সে বলেছিলো, বান্ধা গরুর জীবনের নানা সুখ আর অসুখের কথা…… না না, আসলে কোনো অসুখ নাই, শুধুই সুখ (আকেলমান্দকে লিয়ে ইশারা)। আমার বউয়ের রান্না দুর্দান্ত। সারাদিন বাসায় বসে বসে মজার মজার সব রান্না করে, আর আমি ইউনিভার্সিটি থেকে ফিরে খাই আর ঘুমাই। এই করে করে গত ২ মাসে আমার ওজন বেড়েছে মাত্র ৭/৮ কেজি (অনুমান, কিন্তু এর বেশি ছাড়া কম নয়)! বিয়ের পর বউ ঢাকা শহরে ঘুরে ঘুরে অনেক গেঞ্জি কিনেছিলো সেকেলে এই আমাকে ‘স্মার্ট’ বানাবে মনে করে। তার সেই আশার মুখে ছাই দিয়ে আমি দিনদিন ফুলছি আর গেঞ্জিগুলো ওয়ার্ড্রোবের মধ্যে দিনদিন পুরোনো হচ্ছে। এখন বউ কয় ওজন কমাতে। কিন্তু খেতে বসলে সে-ই আবার ৪/৫ পদের দারুন সব তরকারী পাতে তুলে দিতে থাকে। আর আমিও মজে করে খেয়ে যাই। কি আর করা, দুইদিনের এই দুনিয়ায় আজ আছি কাল নাই। তাই সময় থাকতে ভালোমন্দ খেয়ে যাই। খাবার টেবিলে বউ বলে আর মোটা হওয়া চলবেনা। আমি বলি, “আমার কি দোষ, তুমিই ত’ ভালোমন্দ খাইয়ে খাইয়ে……”। সে মুখ ঝামটা দিয়ে আরেক বাটি তরকারি এগিয়ে দেয়। আমি কব্জী ডুবিয়ে খাই আর বলি “আল্লায় খাওয়াইলো”!
সামনে ৪ দিনের ছুটি, ‘থ্যাঙ্কস গিভিং’। আমেরিকানরা কয় ইউরোপ থেকে আসা ওগো পূর্বপুরুষরা নাকি এইদিন এইখানকার প্রকৃত আদিবাসী রেড-ইন্ডিয়ানদের দাওয়াত করে খাইয়েছিল তাদের প্রতি কৃতজ্ঞতা থেকে, আবার কেউ কয় দাওয়াতের ছলে ডেকে এনে ওদের মেরে ফেলেছিল। কোনটা ঠিক তা নিয়ে আমার মাথা ব্যথা নাই। ঠিক করেছি সানফ্রান্সিস্কোতে বেড়াতে যাবো। আসলে আমি ঠিক করিনি, করেছে আমার বউ। তার এক মামা, মানে আমার মামা-শশুড় সপরিবারে থিতু হয়েছেন ওখানে। খুব করে যেতে বলেছেন। আমার বউ মহা খুশি- একে ত বেড়াতে যাওয়া, তা-ও আবার মামাবাড়ী! আমি আছি খানিকটা টেনশনে। কারণ, দেশের বাইরে এই প্রথম কোন শশুড়-পক্ষীয় আত্মীয়বাড়ী যাওয়া। এদিকে বউ বলেছে স্মার্ট হয়ে থাকতে। বুঝতে পারছিনা কি কি পরিস্থিতির উদ্ভব হয়, আর কিভাবে সেসব ফেস করি। সবার কাছে দোওয়া চাই। আল্লাহ ভরসা।
ইয়েস! আই এম দ্যা ওয়ান হু ইস নম্বর অয়ান!
You cannot hangout with negative people and expect a positive life.
ইউ আর দ্যা ওয়ান নিও । :grr:
অয়ান এর স্থলে পড়ুন ওয়ান 😛
You cannot hangout with negative people and expect a positive life.
ইয়ে নম্বর ওয়ান সাকিব খান ? 😛
দোয়া রইলো! ইনশাল্লাহ ইস্মার্টলী পেশ আসিবেন 😀
You cannot hangout with negative people and expect a positive life.
ধন্যবাদ জিতু।
There is no royal road to science, and only those who do not dread the fatiguing climb of its steep paths have a chance of gaining its luminous summits.- Karl Marx
ঐ
ভাবীরে আমার শুভেচ্ছা জানাইয়া দিয়েন । হাপ্পি থ্যাংকস গিভিং । :thumbup:
জানায়া দিলাম।
There is no royal road to science, and only those who do not dread the fatiguing climb of its steep paths have a chance of gaining its luminous summits.- Karl Marx
লেখা ভালু পাইছি। লাইক 🙂
আমিও একখান চড়ুই পাখির বাসায় থাকি ... 🙁
দুঃখের ব্যাপার বাসায় কোনো বউ নাই ....
নিজের রান্ধন নিজেরেই করতে হয় ,....হাই কপাল ~x(
একটা গানের লাইন মনে পড়ল ..
লেখা ভালো লাগলো ভাই :clap:
@ রায়হান, রিফাত,
ধন্যবাদ।
There is no royal road to science, and only those who do not dread the fatiguing climb of its steep paths have a chance of gaining its luminous summits.- Karl Marx
@ রিফাত
চড়ুই পাখি তো আছে ;;; ;)) ;)) ;)) ;)) ;))
আপনারে আমি খুঁজিয়া বেড়াই
না ভাই, ইহা একখান পরিত্যাক্ত চড়ুই পাখির বাসা !!! 🙁
চড়ুই পাখিও নাই !
বাহ কী মজা। অনেক দিন পর এন্টেনা ছাড়াই মাহমুদ ভাইয়ের লেখা বুইঝা ফালাইছি :tuski: :tuski:
আমিন,
লেজকাটাদের 😉 ফ্রিকোয়েন্সি কাছাকাছি হওয়ার কথা। সেই মোতাবেক, আমার লেখা বুঝতে তোমার আর এন্টেনার প্রয়োজন হবেনা আশা করি। (সম্পাদিত)
There is no royal road to science, and only those who do not dread the fatiguing climb of its steep paths have a chance of gaining its luminous summits.- Karl Marx
ভালোমতো দাওয়াত খান ভাইজান। হ্যাপী দাওয়াত 😀
শশুর বাড়ীতে কব্জী ডুবায়ে না খাইলেই হলো।
আমি ও আমার বউয়ের হাতের রান্না খেয়ে দশ কেজি ওজন বাড়ায়ছিলাম, তুই কি করলি এটা মাত্র সাত কেজি বাড়াইলি?
সকালে জগিং করতে করতে ইউনিতে গেলে ওজন কমার সম্ভবনা আছে :grr:
বন্ধু,
ইউনি থেকে ১১ কিলো দূরে থাকি। কাজেই জগিং...নো ওয়ে। কাজেই, ওজন বাড়তেই থাকপে......... :grr:
There is no royal road to science, and only those who do not dread the fatiguing climb of its steep paths have a chance of gaining its luminous summits.- Karl Marx
মাহমুদ ভাই, এখনও মাত্র ৭/৮ কেজি বাড়ছেন। ব্যাপার না। চালায়া যান। 😀
আমি বিদেশে আইসা, বউ ছাড়াই, ১ বছরে ১৪ কেজি বাড়ছিলাম। 😕
সেই যে মুটা হইছি, আর চিকুন হইবার পারিনাই।
এখন বউ আমারে গুতায়াও কিছু করবার পারে না। 🙁
- তাই নাকি?- সাহস পাইলাম। B-)
There is no royal road to science, and only those who do not dread the fatiguing climb of its steep paths have a chance of gaining its luminous summits.- Karl Marx
একটা পেপার লিখছি আমার তিন নম্বর এমএ ডিগ্রীর লোভে
কপাল রে, আমার বড়ভাই এইদিকে তিন নম্বর মাস্টার্স করে আর আমি শালার মূর্খই রয়া গেলাম-হুদা ব্যাচেলর ডিগ্রি লইয়াই দিন পার করতেছি-বিছিঃএছের কারণে মাস্টার্সটা আর করা হয়নাই। 😀 আমাগো সারদার ট্রেনিংএ এক বছর পরে অবশ্য রাজশাহী ভার্সিটি থেইক্কা এমপিএস(মাস্টার্স ইন পুলিশ সায়েন্স) ডিগ্রি দেয়...ভাবতেছি এইটা দিয়াই "আমিও মাস্টার্স ডিগ্রি হোল্ডার" পার্ট লমু :shy:
ব্যাপার না মাসরুফ,
পুলিশ অফিসাররা মাষ্টারস করে, পিএইচডিও করে। সিসিআর-এর ১১তম ব্যাচের নাহিদ ভাই জাপানে মাষ্টারস শেষ এখন পিএইচডি করছেন। তিনি ২২তম বিসিএস-এর পুলিশ ক্যাডার।
There is no royal road to science, and only those who do not dread the fatiguing climb of its steep paths have a chance of gaining its luminous summits.- Karl Marx
😮 😮 কি কন!!! ইয়ে,বসের যোগাযোগের মাধ্যম/ইমেইল/ফেসবুক একটু দেওয়া যায় কী?
আমার ফেসবুকে বন্ধু-তালিকায় দেখো- নাহিদ হোসেন।
There is no royal road to science, and only those who do not dread the fatiguing climb of its steep paths have a chance of gaining its luminous summits.- Karl Marx
লেখাটা অতি উপাদেয় হইছে মাহমুদ ভাই...
আমার বউ এখনো আসেনাই।
তাই ভ্যাকেশন চলছে, ডিসিপ্লিনের বালাই নাই।
ওজন বাড়ারো কোন চান্স নাই।
ইয়ে মানে নূপুরদা, ভাবী আসেনাই মানে কি ভাবী এখন আপনার সাথে নাই নাকি আপনার ল্যাজ এখনো কাটা পড়েনাই? 😛
অফ টপিক- সিনিয়রকে একান্ত ব্যক্তিগত প্রশ্ন করার দায়ে :frontroll: :frontroll:
আসেনাই মানে এই মুহুর্তে আমার সাথে নাই।
একা একাই বৈদেশে আছি, ভ্যাকাশনের মজা নিতেসি। 😛
আর রান্নায় এক্সপার্টাইস করতেসি (রেসিপিতেও। 😀 ) .......
কারেকশন: ভ্যাকেশন।
নূপুর ভাই,
মজা যা' করার এ'বেলায় করে নিন।
There is no royal road to science, and only those who do not dread the fatiguing climb of its steep paths have a chance of gaining its luminous summits.- Karl Marx
নূপুরদাকে কুপরামর্শ দেওয়ার জন্য ফুকো মাহমুদ ভাইয়ের ভ্যাঞ্চাই
😀
সুপরামর্শ দিলেও কি আর লাভ হতো?
অবশ্য মজা যা করার করছি ঠিকই, কিন্তু বউটা সাথে থাকলে সে সবই আরো মজাদার হতো। পিচ্চিটাকেও মিস করতেসি।
অবশ্য মজা যা করার করছি ঠিকই 😮 :-B 😉 😀 O:-) :dreamy: :boss:
কি ভাবো এত! 😉
এই যে চুটাইয়া ব্লগ লিখতেসি এটাই আমার মজার সিংহভাগ জুড়ে আছে হে।
আর আছে টো টো করে ঘুরে বেড়ানো। (বউ আসলে টো টো করে ঘুরে বেড়ানো যাবেনা বটে, তখন পিচ্চি নিয়া অনেক হিসেব কষে বেরুতে হবে তবে সেটারো মজা অন্যরকম, তাই না!)।
ওরা এলে একটাই ব্যাপার হবে: তখন ঘরেও এত কাজের চাপে সিসিবিতে লেখার মাত্রাটা অনেক কমে যাবে।রেসিপি নিয়া এক্সপেরিমেন্টও যাবে। 🙁
কিচ্ছু করার নাই। এগুলোই সংসার করার হ্যাজার্ড বা মজা।
হ, নতুন বউ হইলে সবায় এমনে লাফায়। ব্যাপার না।
এনিওয়ে, মাহমুদ, এইগুলার উপ্রে কারও থিসিস নাই, ব্রাইডাল বিহেভিয়ার্যাল থিওরি টাইপ কিছু 😛
পালটে দেবার স্বপ্ন আমার এখনও গেল না
ফয়েজ ভাই,
ব্রাইডাল বিহেভিয়ার্যাল থিওরি টাইপ কিছু আছে, যেমন Diane Vaughan এর Uncoupling (২০০৫)। তবে এইখানে দম্পতিদের আলাদা হয়ে যাওয়ার প্রকৃয়াটা কিভাবে ক্রমশঃ ধাপে ধাপে ঘটতে থাকে তা' বর্ণনা করা হয়েছে। B-)
There is no royal road to science, and only those who do not dread the fatiguing climb of its steep paths have a chance of gaining its luminous summits.- Karl Marx
আল্লারে... 😮
কি সাংঘাতিক! যে মানুষ ইউনুস নবীর তত্ত্বকথা ঘ্যাচাং করে ফেলে সে কিনা মামাশ্বশুরের ভয়ে একটা ব্লগ নামিয়ে ফেলল। চিন্তার কথা!
অফটপিকঃ অধ্যাপক ইউনুসের সাথে গত জুলাই মাসে সাক্ষাত হয়েছিল। ওনার তিন তিনটা টক শুনেছিলাম। কোনটাতেই কেউ প্রশ্ন করে তাকে ঘায়েল করতে পারেনি। সাংঘাতিক কমিউনিকেশন স্কিল এই গরীবের ব্যাংকারের! ফড়ফড় ফড়ফড় করে বুঝায়ে ছাড়লেন উনিই ঠিক। এবং সব সমস্যার সমাধান তো মাইক্রো-ফাইনান্স দিয়ে সম্ভব না। এইজন্যই সামাজিক ব্যবসা। কেন যে রাজনীতিতে চিৎপটাং হইছিলেন, এইটা বুঝে উঠতে পারলাম না। সবগুন ছিল ওনার। যাইহোক, বোধকরি দেশদেশান্তরে সামাজিক ব্যবসা ফেরি করে বেড়ানো ভাল চলছে। তবে আশার কথা হলো, দেশের লোকজন নাকি এ্যাডিডাসের জুতা কম দামে পেতে যাচ্ছে। ভালই হলো, ফ্যাশানেবল জুতার যা দাম!
আমার বন্ধুয়া বিহনে
উনার থিয়োরি বড়ই শ্রুতিমধুর কিন্তু বাংলাদেশে যে এইটার প্র্যাকটিস অতিমাত্রায় খারাপ সেইটা ফিল্ড লেভেলে কাজ করেছেন এমন যে কেউ জানবেন।অর্থনীতির ছাত্র হিসেবে ক্লাশরূমে উনার গুনগান শুনেই আমার বেড়ে ওঠা কিন্তু দুঃখের কথা,ফিল্ডে গিয়ে শোনা কথার উল্টাটাই বাস্তবায়িত হইতে দেখছি। (সম্পাদিত)
মাসরুফ,
ঘটনা কি একটু খোলাসা কইরা কইবা? :-/
ভাই জলবায়ু পরিবর্তনে বাংলাদেশে প্রভাব নিয়ে বিআইডিএসের(বাংলাদেশ উন্নয়ন গবেষণা কেন্দ্র) একটি গবেষণার কাজে প্রত্যন্ত বেশ কয়েকটি গ্রামাঞ্চলে যেতে হইছিলো।জলবায়ুর পরিবর্তনের ফলে জীবিকা নির্বাহে সমস্যার সমাধান এবং দারিদ্র্য দূরীকরণে যে কয়টি বিষয় ফোকাস করা হয়েছিলো মাইক্রক্রেডিট তার মধ্যে অন্যতম।সংক্ষেপে বিষয়টা বর্ণনা করি(ভাই আমি সামান্য মানুষ-এইগুলা আমার বানানো না,একেবারে হাতে কলমে ভুক্তভোগীদের কাছ থেকে শোনা)
অধিকাংশ ক্ষেত্রেই গ্রামের মানুষ তখনই এনজিওগুলোর কাছে ঋণ নিতে যায় যখন তারা ইতোমধ্যেই মহাজন,আড়তদার,দোকানী-এদের কাছে ঋণের দায়ে আবদ্ধ।ঋণ নিয়ে আসার অল্প কয়েক দিনের মধ্যেই দেখা যায় এই আগের ঋণ শোধ করতেই অধিকাংশ টাকা শেষ হয়ে গিয়েছে।বাকি যে টাকাটুকু থাকে তা দিয়ে দারিদ্র্য দুরীকরণ তো সম্ভব হয়-ই না,কিস্তি দিতে না পারায় ঋণ আদায়কারিদের অত্যাচারে ভিটেমাটি ছেড়ে শহরে পালিয়ে যাওয়ার ঘটনা খুব কমন।থিয়োরিতে বলা আছে যে এই ক্ষুদ্র ঋণ নিয়ে সমবায় প্রতিষ্ঠান তৈরির মাধ্যমে দারিদ্র্য দূরীকরণ করা হচ্ছে কিন্তু বাস্তবতা হচ্ছে,অধিকাংশ ক্ষেত্রে ঋণ গ্রহীতাদেরকে কিভাবে ঋণের টাকা কাজে লাগিয়ে অবস্থার উন্নয়ন করতে হবে সে সম্পর্কে বিন্দুমাত্র প্রশিক্ষণ দেয়া হয়না।এদিকে ঋণের যে টাকা শোধ করতে ঋণ গ্রহীতা পারেনাই সেই টাকা আসল ঋণের সাথে যুক্ত হয়-ফলে সুদের হার(যা ইতোমধ্যেই অনেক বেশি) চক্রবৃদ্ধি হারে বাড়তেই থাকে।একবার এই ঋণের জালে আবদ্ধ হলে এ থেকে বের হতে পারে এমন মানুষ মাইক্রোস্কোপ দিয়ে খুঁজতে হয়েছে আমাকে।বাংলাদেশেই ক্ষুদ্রঋণ কনসেপ্টের উৎপত্তি-এই কনসেপ্ট কাজে লাগিয়ে লাতিন আমেরিকার কিছু কিছু দেশে(বিশেষ করে ব্রাজিলে)বেশ সুফল পাওয়া গেছে।সেখানে এক্সপার্টদের দিয়ে গরীব মানুষকে পূর্ণাংগ প্রশিক্ষণ দেয়া হয় যাতে তারা ঋণের টাকা কাজে লাগিয়ে অবস্থার পরিবর্তন করতে পারে।অথচ আমাদের দেশে এই প্র্যাকটিসটা এতই জঘন্য যে গাইবান্ধার এক ভুক্তভোগী ডাবলু বিশ্বাসের মতে- "এই লোকের কারণে আমাদের রাতের ঘুম নষ্ট হচ্ছে দেনার দায়ে আর একেই কিনা শান্তিতে নোবেল দেয়া হল"।
ভাই আমি বিলক্ষণ জানি যে অপরের সমালোচনা করাটা খুবই সহজ-আর সারা বাংলাদেশের মাত্র ১০ টা গ্রামের মানুষের অবস্থা দেখে পুরো চিত্র বোঝা হয়তো সম্ভবও না।তাছাড়া অর্থনীতির ক্লাসে ইউনুস নবীর পূজা আমিও করেছি।এই কারণেই তৃণমূল পর্যায়ে কাজ করতে এসে ভয়াবহ রকমের ধাক্কা খেয়েছি।মাইক্রক্রেডিটকে এ কারনে আমি ঈশ্বরপ্রদত্ত প্যানাসিয়া অথবা ডঃ ইউনুসকে নবী বলে অন্ততঃ আমি আর ভাবি না।
আরেকটা কথা কিছুটা বিব্রতভাবেই স্বীকার করি- মাহমুদ ভাই যখন ক্ষুদ্রঋণের সমালোচনা করেছিলেন আগের একটা ব্লগে তখন অর্থনীতির ছাত্র হিসেবে আমার বেশ আঁতে ঘা লেগেছিলো-কিন্তু ওই রিসার্চের কাজে মানুষের অবস্থা স্বচক্ষে কিছুটা হলেও দেখে পরে ফোন করে উনার কাছে মাপ চেয়ে নিয়েছিলাম। ক্ষুদ্রঋণ এবং তার জনকের সমালোচনাটা মাহমুদ ভাই যে শুধুমাত্র বাঙ্গালী স্বভাবজাত ঈর্ষাবোধের কারণে করেন নাই এইটা বুঝতে আমার ফিল্ড লেভেলে যাইতে হইছিলো।
- ধন্যবাদ মাসরুফ।
আমার কপাল ভালো যে আমি গ্রামেই জন্মেছি, বড় হয়েছি। আমার চোখের সামনে দেখেছি ক্ষুদ্রঋণের জন্ম, বেড়ে ওঠা। তাই, শহুরে বুদ্ধিজীবিদের টকশো আর বেনিয়া মিডিয়ার চাপাবাজীর আগেই আমি ক্ষুদ্রঋণকে চিনি।
There is no royal road to science, and only those who do not dread the fatiguing climb of its steep paths have a chance of gaining its luminous summits.- Karl Marx
জানি কিছুটা।
আমার বন্ধুয়া বিহনে
- জামালপুর রেলষ্টেশনে 'তাইজদ্দি' নামের এক লোক আছে, মজমা বসায়া ওষুধ বেচে। হেন রোগ নাই যা'র মহৌষধ তার কাছে পাওয়া যায় না। ঐ লোকের কনভিন্সিং ক্ষমতা অসাধারণ। তার মজমায় উপস্থিত যে কারো মনে হবে যে, তার কাছ থেকে ঔষধ নিলে রোগ সারবেই। এটা ঔষধের গুণে নয়, তার লেকচারের গুণে।
- আশা করি বোঝাতে পেরেছি। (সম্পাদিত)
There is no royal road to science, and only those who do not dread the fatiguing climb of its steep paths have a chance of gaining its luminous summits.- Karl Marx
সেইটাই, মাহমুদ ভাই। সবথেকে সাংঘাতিক খবরটা পড়লাম সেদিন। মাইক্রো-ক্রেডিটের কিস্তির চাপ সামলাতে না পেরে ভারতে কৃষক আত্মহত্যা করছে বলে পাওয়া গিয়েছে।
আমার বন্ধুয়া বিহনে
রাব্বী,
ভারতে যাওয়া লাগেনা, বাংলাদেশেই এইরকম ঘটনা ঘটে, শুধু সংবাদপত্রে খবর হয়না। তারপরেও দুএকটা ঘটনা সংবাদপত্রে ঠিকই আসে। টোকিও থাকতে ইত্তেফাকে দেখতাম মাঝে মধ্যে এই রকম খবর- ক্ষুদ্রঋণের দেনার চাপে আত্মহত্যা। ২০০৭ এর নভেম্বর+ডিসেম্বর আর তার পরবর্তী কয়েকমাসের পত্রিকা ঘাটলে পেয়ে যাবে।
There is no royal road to science, and only those who do not dread the fatiguing climb of its steep paths have a chance of gaining its luminous summits.- Karl Marx
🙂 🙂 লেখা ভালো লাগলো মাহমুদ ভাই। দোওয়া রইল। আল্লাহ ভরসা।:) 🙂
আপনারে আমি খুঁজিয়া বেড়াই
আহা সেই দিনগুলো ----
উত্তর ক্যালিফোর্নিয়ায় আসলে খবর দিও। আর রাঁধুনীকে একটা সিসিবি একাউন্ট করে দিয়ে এখানে সক্রিয় করে থাকতে বলো। তাহলে একটু কম কম রাঁধবে। তোমার ওজন সমস্যাও কিছুটা স্থির হবে।
“Happiness is when what you think, what you say, and what you do are in harmony.”
― Mahatma Gandhi
ফুর্তিতেআছোসদেইখাভাল্লাগ্লো 😉
বাহ কী মজা। অনেক দিন পর এন্টেনা ছাড়াই মাহমুদ ভাইয়ের লেখা বুইঝা ফালাইছি :tuski: :tuski:
এলাহী ভরসা 😀
সাতেও নাই, পাঁচেও নাই