ঢাবিকে নিয়ে এক কিস্তি…

ভাবছিলাম এটা নিয়ে কিছু বলবো না, কিন্তু আর থাকতে পারলাম না। লিখেই ফেললাম আমার প্রিয় ঢাবিকে নিয়ে।

একবার ক্লাস শেষে ডাকসুর সামনে দিয়ে হেঁটে যাচ্ছি। কোন এক বাম দলের ‘বিরাট’ মিটিং হচ্ছে। কংক্রিটের রাস্তায় বসা দুইজন শ্রোতার চেয়ে মঞ্চে উপবিষ্টের সংখ্যা বেশি। মাইক বাজছে তারস্বরে। রাস্তা খোড়া শুরু হলেও বাঙ্গালী দাঁড়িয়ে যায় মনোযোগ দিয়ে দেখার জন্য। আর সেখানে এত জ্বালাময়ী বক্তৃতা! আমি তো বাঙ্গালীই! তাই না? দাঁড়িয়ে গেলাম শোনার জন্য। এক পর্যায়ে বক্তা বলে ফেললেন, ‘ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকেরা নাকি জাতির বিবেক! আজ তারা যাত্রার বিবেক হবার যোগ্যতাটুকুও হারিয়েছেন।’ জানি না সেদিনের পরিপ্রেক্ষিতে নাকি বয়সের অপরিপক্কতার জন্য লাইনদুটো আমার মনে দাগ কেটেছিল। আজও মনে আছে।

কিন্তু একটি প্রশ্ন মনে উঠেছিল, বাম দলগুলোর এত ‘ভাল ভাল’ কারনে তাদের ব্যয়কৃত সময়ের সঙ্গে তাদের কর্মী এবং সফলতার অনুপাত ব্যস্তানুপাতিক কেন? পরবর্তীতে তার উত্তর পেয়েছি, যখন দেখেছি হুমায়ুন আজাদের চেয়ে দেলোয়ার সাইদী বেশি জনপ্রিয় এই ভূখন্ডে।

যাই হোক মূল কথায় আসি।

একবার আমাদের এক শিক্ষক ক্লাসে বলেই বসলেন, “…………… ইউনিভার্সিটি কি ইউনিভার্সিটি নাকি? ওখানে তো আইডি কার্ড নিয়ে ঢুকতে হয়। ইউনিভার্সিটি হবে ইউনিভার্সাল। একজন শিক্ষার্থী যেমন আসবে ক্লাসরুমে বসে শিক্ষা নিতে তেমনি একজন ভবঘুরেও আসবে শিক্ষার্থীর আচরন থেকে শিক্ষা নিতে।”

ইউনিভার্সিটি হবে উদার, অবারিত খোলা মাঠের মত। জ্ঞানার্জনের খাতিরে সবার জন্যই সমানাধিকার থাকবে। কে ইউনিভার্সিটিতে আসলো আর কে গেলো এটা নিয়ে যদি মাথা ঘামাতে হয় তাহলে তার চেয়ে দুঃখজনক আর কিছু হতে পারে না। তবে হ্যাঁ অনেক সময় মাথা ঘামাতে হয় যখন সূর্যসেন হলের সামনের বাগানে বহিরাগতরা সঙ্গম করতে গিয়ে ধরা পড়ে (দুঃখজনক হলেও সত্যি), পহেলা বৈশাখে পুরান ঢাকার বাইকওয়ালা ইভ টিজার ঢাবির ছেলেদের কাছে মার খেয়ে পলায়ন করে, এস এম হলের সামনে থেকে মোবাইল ছিনতাই হয়। ভিসি চত্বরে পিকআপ ড্রাইভার আমার বান্ধবীকে অশ্লীল ভাষায় কুপ্রস্তাব দেয় তখন আমাদের চিন্তা করতেই হয় ক্যাম্পাসে কে ঢুকবে আর কে ঢুকবে না তা নির্ধারন করার।

উপরোক্ত বাক্যগুলোর সাথে রিলেভেন্ট প্রশ্ন আসে, আসলে আমরা কতটা পরিচ্ছন্ন রেখেছি ঢাবিকে? একুশে ফেব্রুয়ারীতে বহিরাগতের ওরনা- কাপড় ছিড়ে ফেলা ছেলেটি কি ঢাবির ছিল না? হলে হলে ফাও খাওয়া ছেলেটি কি ঢাবির নয়? দোকানে দোকানে চাদা তোলা ছেলেটির কি ঢাবির আইডি নেই? সন্ধ্যায় প্রেমিক যুগলের কাছে গিয়ে হয়রানি করে তাদের মানিব্যাগ, মোবাইল রেখে দেওয়া ছেলেগুলোকে কি ঢাবি অস্বীকার করবে তার ছাত্র হিসেবে? পিটিয়ে আধমরা করা বন্ধুকে মেডিকেল সেন্টারে নেবার পরও আবার মারতে যাওয়া ছেলেগুলো বুক ফুলিয়ে বলে তারা ঢাবির শিক্ষার্থী। চুরি, ছিনতাই, টেন্ডারবাজি, খুন এমন কোন অপরাধ নেই যে ঢাবির ছেলেরা করে নাই।

তারপরও ঢাবির প্রাক্তন শিক্ষার্থী হিসেবে গৌরব বোধ করি এজন্য যে, এর ইতিহাস কালজয়ী,যে শিক্ষা আমি পেয়েছি তার জন্য কৃতজ্ঞ। ভুল করলে ক্ষমা চাওয়ার মত সাধারন শিক্ষাটি আমি এখান থেকেই নিয়েছি। হোক না আমার সাবজেক্টটা বাজারে প্রচলিত চাকরির জন্য অনুপযুক্ত। বুক ফুলিয়ে বলি, বাংলাদেশের সর্বোচ্চ বিদ্যাপীঠে পড়েছি। অহমিকা করে ‘প্রাচ্যের অক্সফোর্ড’ও বলি। এই বিদ্যাপীঠেই লেগে আছে ড. শহীদুল্লাহ, রমেশচন্দ্র মজুমদার, সত্যেন্দ্রনাথ বসু, হরপ্রসাদ শাস্ত্রী, হুমায়ুন আজাদ, আনিসুজ্জামান স্যারের মত প্রতিথযশা শিক্ষকদের পদধূলি। আমি নিশ্চিত আমার মতই ঢাবির ৩২-৩৫ হাজার শিক্ষার্থীও গৌরববোধ করে। চোর ছ্যাচ্চর সব জায়গার মত আমার এখানেও আছে। গুটিকয়েক নষ্টদের ঠিক করতে ঢাবি ব্যর্থ। কিংবা তাদের নষ্ট হবার উপকরণ গুলো আমরাই হাতে তুলে দিয়েছি। তাদের অন্যায় থেকে আমাদের গা বাঁচানোর কোন অবকাশ নেই। অতীতের মৌনতাই আজ অপরাধীদের গ্রীন সিগন্যাল।

কষ্ট পেয়েছি তাদের ডিফেন্ড করার লেভেল টা দেখে। অন্যায়কে সাপোর্ট করার মত মানসিকতা দেখে। স্বাধীন মতপ্রকাশের অধিকারটুকুও তারা আর রাখেনি। গর্ব করার মত ইভেন্ট আর আমার চোখে ভাসে না। ভাষা আন্দোলন, বঙ্গবন্ধু, স্বৈরাচার বিরোধী আন্দোলন, মুক্তিযুদ্ধে অবদানের সুখস্মৃতি নিয়ে আত্নমৈথুনের সুখ নিতে আমি অপারগ।

‘সব কিছু নষ্টদের অধিকারে যাবে’ আমি বিশ্বাস করতে শুরু করি।

২,৭২২ বার দেখা হয়েছে

২৭ টি মন্তব্য : “ঢাবিকে নিয়ে এক কিস্তি…”

    • মাহমুদুল (২০০০-০৬)

      কোন কিছু লেখার আগেই আপনার কথা মনে করে বানানের প্রতি সতর্ক থাকার চেষ্টা করি। কিন্তু যদি ভুলটাই জানি/ ধরে নেই ঠিক তাহলে ভুল অবশ্যম্ভাবী। 😀

      নুপুরদা, আপনি যে ভুল গুলো ধরেন আমার বিশ্বাস জীবনেও আর সে ভুলগুলো করবো না। অসংখ্য ধন্যবাদ। :hatsoff: :hatsoff: :hatsoff:


      মানুষ* হতে চাই। *শর্ত প্রযোজ্য

      জবাব দিন
  1. জিহাদ (৯৯-০৫)
    অতীতের মৌনতাই আজ অপরাধীদের গ্রীন সিগন্যাল।

    এক লাইনে কথা শেষ। সমস্যা হচ্ছে এইসব প্রাউড ফীল করনেওয়ালা লোক সব ভালো শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানেই সমান হারে বিদ্যমান। গর্ব যদি করতেই হয়, সেটা নিজের কাজের মাধ্যমে আরো দশজনের উপকার সাধনে হোক। কেবল একটা প্রতিষ্ঠানে চান্স পেয়েই যাদের গর্বে পা পড়েনা, আর সেই প্রতিষ্ঠানকে ডিফেন্ড করতে গিয়ে চোখ বন্ধ করে কালোকে সাদা বলে চালিয়ে দিতে চায়, তাদের মানসিক সুস্থতা কামনা করছি।


    সাতেও নাই, পাঁচেও নাই

    জবাব দিন
    • মাহমুদুল (২০০০-০৬)
      প্রাউড ফীল করনেওয়ালা লোক সব ভালো শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানেই সমান হারে বিদ্যমান।

      সমান হারে না বলে 'কম বেশি' বললেই বোধ করি যুতসই হতো। সে যাই হোক সত্যিটা হচ্ছে ভালো আর খারাপে যদি যোগ বিয়োগ করেন তাহলে তাহলে ঢাবির অবদান সম্ভবত মাইনাসে গিয়ে লাগবে আজ। তারপরও যারা ডিফেন্ড করছে তাদের মানসিক সুস্থতা আমিও কামনা করি।

      ধন্যবাদ মূল্যবান মন্তব্যের জন্য।


      মানুষ* হতে চাই। *শর্ত প্রযোজ্য

      জবাব দিন
  2. পারভেজ (৭৮-৮৪)

    এই বিষয় নিয়ে কিছু পড়তে ভয় পাই।
    অনেক বোদ্ধা ও পছন্দের কিছু মানুষকে সম্প্রতি যখন এই অপরাধটাকে ডিফেন্ড করতে দেখলাম, বিষ্ময়ে বিমূঢ় হয়ে গেলাম।
    তাই শুধু যে কেউ না, খুব পরিচিত জনের লিখা দেখলেও পড়ার আগে গ্রেইন অব সল্ট খুঁজি, কি জানি মুখটা বিস্বাদ হয়ে ওঠে কিনা?
    সারা জীবনের মত একটা কালিমা লেপন করতে হয় কিনা লেখক-চরিত্রে।

    মাহমুদুল, তুমি হতাশ কর নাই, প্রথমতঃ তোমাকে ধন্যবাদ এই কারনে।
    তুমি আশাবাদ জাগিয়েছ, দ্বিতীয়তঃ তোমাকে ধন্যবাদ এই কারনেও।

    ভাল লেগেছে।


    Do not argue with an idiot they drag you down to their level and beat you with experience.

    জবাব দিন
    • মাহমুদুল (২০০০-০৬)

      :hatsoff:

      আত্নসমালোচনা করেছি। ঢাবির অনেক কিছুই আছে মনে রাখার মত। কিন্তু কোন ভাবেই একটা অন্যায়কে 'ন্যায়' এর প্রলেপ দেয়া যায় না। যতদিন আমরা আয়নায় নিজেদের দস্যু চেহারাটা না দেখবো ততদিন আমাদের সম্মানের জায়গাটায় বসতে পারবো না।

      অসংখ্য ধন্যবাদ ভাই। স্বপ্ন দেখি আপনার মতই লেখকের কুৎসিত একটা চেহারা কল্পনা করা থেকে আমরা নিজেদের বিরত রাখতে পারব।


      মানুষ* হতে চাই। *শর্ত প্রযোজ্য

      জবাব দিন
  3. মোকাব্বির (৯৮-০৪)
    অতীতের মৌনতাই আজ অপরাধীদের গ্রীন সিগন্যাল।

    ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় সেই এইচএসসির সময় থেকে ভয় পাই। কোন দুর্ঘটনা থেকে নয়। ভয়টা এসেছে গল্প শুনে, সংবাদ পড়ে, কিছু ছোটখাট ঘটনা দেখে। হেঁটে গেলে মাথা নিচু করে হাঁটি। কোথাও বসতে গেলে ডানে বায়ে তাকাই। টঙয়ের দোকানে সিগারেট বন্ধুবান্ধব না থাকলে একা কিনি না। মনে হয় না আমার এই প্যারানয়ার কোনদিন পরিবর্তন হবে। আর বিদেশ আসার আগে শেষের একমাস প্রেমিকার সাথে দেখা করতে গেলে রীতিমত তটস্থ থাকতাম। পঁচতে থাকুক আনমনে।


    \\\তুমি আসবে বলে, হে স্বাধীনতা
    অবুঝ শিশু হামাগুড়ি দিল পিতামাতার লাশের ওপর।\\\

    জবাব দিন
    • মাহমুদুল (২০০০-০৬)

      ভয়টা অমূলক নয়। শিক্ষিতের সার্টিফিকেট পেলেই তো মনুষত্বের, বোধের সার্টিফিকেট পাওয়া যায় না। এইসব বোধহীন মানুষগুলো কিভাবে একজায়গায় একই সাথে দল বাধে আমার বোধগম্য নয়। নাকি পরিস্থিতি তাদের বোধহীন বানিয়ে তুলেছে কে জানে! তাই যদি হয় তবে রুচিহীন ছাত্র-শিক্ষক রাজনীতির দিকেই আমি ঢাবির এই অধঃপতনের জন্য আঙুল তুলবো।


      মানুষ* হতে চাই। *শর্ত প্রযোজ্য

      জবাব দিন
  4. সাবিনা চৌধুরী (৮৩-৮৮)

    আমাদের সময়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কিন্তু অনেকটাই অন্য রকম ছিল। বিচ্ছিন্ন কিছু ঘটনা যে ঘটতো না হঠাৎ তা নয়। এছাড়া আমরা সচ্ছন্দ ছিলাম সব জায়গাতেই বলতে গেলে। ক্লাস শেষে বন্ধুরা আড্ডা দিতাম টিএসসি তে। পাঁচ টাকায় বিরিয়ানি খেতাম দুই বন্ধু মিলে। মোকার মত এদিক ওদিক না তাকিয়েই গল্প করতাম নিশ্চিন্তে।

    সময় যেমন মানুষকে বদলে দেয় তেমনি বিভিন্ন জায়গাগুলো চরিত্রও বদলে যায় বোধ করি সময়ের সাথে।

    চমৎকার লিখেছো, ভাইয়া! 🙂

    জবাব দিন
    • মাহমুদুল (২০০০-০৬)
      সময় যেমন মানুষকে বদলে দেয় তেমনি বিভিন্ন জায়গাগুলো চরিত্রও বদলে যায় বোধ করি সময়ের সাথে।

      :boss: এটিই সত্যি।

      বিশ্বাস করুন আর নাই করুন মোকা ভাইয়ের মত আমিও এখন ভয় পাই। এই দস্যুরা তো আমাকে ছেড়ে কথা বলবে না। দস্যুতা যখন মাথায় চাপে তখন শিক্ষকই কি আর বন্ধুই কি? এদের চরিত্র এমন, যে বন্ধুর সাথে এক কাপ চা শেয়ার করে খেয়েছে, একই বেঞ্চে বসে খুনসুটি করেছে তার গায়েও চাপাতির কোপ দিতে দ্বিধা করবে না। ঢাবিতে পড়ার সুবাদে এদের আচরণ দেখে হতভম্ব হয়েছি, হতাশ হয়েছি।

      আপনাদের সোনালী সময়ের কথা শুনতে ভালোই লাগে। লিখে ফেলুন না একটা পোষ্ট। ক্ষতে একটু আলগা প্রলেপ পড়বে।

      মন্তব্যের জন্য ধন্যবাদ আপা।


      মানুষ* হতে চাই। *শর্ত প্রযোজ্য

      জবাব দিন
  5. আহসান আকাশ (৯৬-০২)

    খুব খুব ভাল লিখেছো, এই কথাগুলো বলার মানুষ মনে হয় আস্তে আস্তে কমে যাচ্ছে।

    শুধু ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে কেন, যে কোন বিশ্ববিদ্যালয়েই আমি আউটসাইডার। ভিসাবিহীন আমি সচেতন ভাবে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এলাকা সচেতন ভাবে এড়িয়ে চলার চেষ্টা করি।


    আমি বাংলায় মাতি উল্লাসে, করি বাংলায় হাহাকার
    আমি সব দেখে শুনে, ক্ষেপে গিয়ে করি বাংলায় চিৎকার ৷

    জবাব দিন
  6. খায়রুল আহসান (৬৭-৭৩)

    ইউনিভার্সিটি হবে উদার, অবারিত খোলা মাঠের মত। জ্ঞানার্জনের খাতিরে সবার জন্যই সমানাধিকার থাকবে। কে ইউনিভার্সিটিতে আসলো আর কে গেলো এটা নিয়ে যদি মাথা ঘামাতে হয় তাহলে তার চেয়ে দুঃখজনক আর কিছু হতে পারে না - এগুলো আদর্শ পরিস্থিতির কথা, যা থেকে আমরা যোজন যোজন মাইল দূরে!
    চুরি, ছিনতাই, টেন্ডারবাজি, খুন এমন কোন অপরাধ নেই যে ঢাবির ছেলেরা করে নাই। - চরম লজ্জার কথা, তবে সত্য!
    রুচিহীন ছাত্র-শিক্ষক রাজনীতির দিকেই আমি ঢাবির এই অধঃপতনের জন্য আঙুল তুলবো (লেখকের প্রতিমন্তব্য) -- :thumbup:

    জবাব দিন

মওন্তব্য করুন : মাহমুদুল (২০০০-০৬)

জবাব দিতে না চাইলে এখানে ক্লিক করুন।

দয়া করে বাংলায় মন্তব্য করুন। ইংরেজীতে প্রদানকৃত মন্তব্য প্রকাশ অথবা প্রদর্শনের নিশ্চয়তা আপনাকে দেয়া হচ্ছেনা।