কেভিন স্টিলের জন্য সমবেদনা

কেভিন স্টিল নামটা গত কয়েক মাসে বেশ কয়েকবার আলোচিত। প্রথমত বাংলাদেশ বিমানের মত চরম অলাভজনক খাতের প্রথম বিদেশী এমডি নিয়োগের জন্য। দ্বিতীয়ত বাংলাদেশের সংস্কৃতি বহির্ভুত অনুষ্ঠান আয়োজনের জন্য। তৃতীয়ত বাংলাদেশ ব্যাংকের কাছে চাওয়া ঋন না পাবার জন্য। চতুর্থত নিউইয়র্ক ফ্লাইট ঘোষনা করার কয়েক ঘন্টার মধ্যে তা স্থগিত হবার জন্য। পঞ্চমত এবং সর্বশেষ দুদকের করা তলবী নোটিশে সিবিএ নেতাদের সাড়া না দেবার প্রেক্ষিতে

মূল আলোচনায় যাবার আগে কেভিন স্টিল এবং বাংলাদেশ বিমানে সংক্ষিপ্ত আদ্যোপান্ত জানার অনুরোধ করবো সবাইকে। কেভিন স্টিলের উইকিপিডিয়া পেজ আছে সেখানে ঢু মারতে পারেন। এছাড়াও লিঙ্কডইন একাউন্টেও দেখতে পারেন।

কেভিন স্টিল ১৯৯২ সাল থেকে ব্রিটিশ এয়ারওয়েজে চাকরী করে সর্বশেষ ২০০৪ সালের রাজস্ব উন্নয়ন বিভাগের জিএম হিসেবে উক্ত প্রতিষ্ঠানে ইস্তফা দেন। এরপর ইতিহাদ এয়ারওয়েজে ওয়ার্ল্ড সেলস এন্ড মার্কেটিং এর প্রধান হিসেবে কাজ করেন প্রায় ২ বছর। এরপর তিনি সামা এয়ারলাইন্স এর প্রথমে সেলস ডিরেক্টর এবং পরে চিফ কমার্শিয়াল অফিসার হিসেবে কাজ করেন। বাংলাদেশ বিমানে যোগদানের পূর্বে তিনি এরিক এয়ারের সিনিয়র ভাইস প্রেসিডেন্ট কমার্শিয়াল হিসেবে কাজ করেন। এরপর তিনি তার জীবনের এবং ক্যারিয়ারের সম্ভবত সবচেয়ে বড় ভুলটি করে বসেন (!) চ্যালেঞ্জপ্রিয় মানুষ হয়তো তিনি। ৪২ জন প্রার্থীর মধ্যে থেকে তাকেই বাংলাদেশ বিমানের এমডি এবং সিইও হিসেবে বেছে নেয়া হয়। ব্রিটিশ এয়ারওয়েজ, ইতিহাদ, এরিক এয়ারের মত লাভজনক প্রতিষ্ঠানে ঈর্ষনীয় পদে চাকুরী করে ক্রমাগত লোকসান গোনা বাংলাদেশ বিমানের মত লো প্রোফাইল প্রতিষ্ঠানে যোগদান করে সফল না হওয়ার ঝুকিটা নিয়ে ক্যারিয়ারকেই সম্ভবত তিনি ঝুকির মধ্যে ফেলেছেন। কোন প্রতিষ্ঠানের এমডি হয়ে সেই প্রতিষ্ঠানকে লাভের মুখ না দেখানো কিন্তু প্রতিষ্ঠান প্রধানের ব্যর্থতা হিসেবেই ধরা হয়।

এরপর আসি বাংলাদেশ বিমানের কথায়। ১৯৭২ সালে প্রতিষ্ঠার পর থেকে এই ৪৩ বছরে কতবার লোকসানের ঢিবি থেকে মুখ তুলেছে তা হাতে গোনা যায়। তন্মধ্যে ২০০৬ সালের তত্বাবধায়ক সরকারের কঠিন কিছু সিদ্ধান্তের কারনে বাংলাদেশ বিমান কর্পোরেশনকে পাবলিক লিমিটেড কোম্পানিতে রুপান্তর করা হয় ২০০৭ সালে। এছাড়া বিমানের কাছে সরকারের বিভিন্ন পাওনা ইক্যুইটিতে রুপান্তর করা হয় এবং মূল ঋণ ও সুদ পরিশোধের দায় থেকে মুক্তি দেয়া হয়। কোম্পানিটি প্রথম ও দ্বিতীয় বছর যথাক্রমে ৫.৯১  ও ১৫.৫৭ কোটি টাকা লাভ করে। ১৯৭২ সাল থেকে ২০০৭ সাল পর্যন্ত এ সংস্থায় লোকসান হয় ১১৮২.৫৫ কোটি টাকা। এর মধ্যে অবশ্য ৯৪-৯৯ সালে সামান্য কিছু লাভ করেছিল। বানিজ্যিক এয়ারলাইন্স হিসেবে তা রীতিমত লজ্জা পাবার মত। আগের হিসেব বাদ দিন। এরপরের বছরগুলোতে লোকসানের পরিমান চোখ কপালে তুলে দেবার মত। ২০০৯-১০ অর্থবছরে ৮০ কোটি, ১০-১১ অর্থবছরে ১৯০ কোটি, ১১-১২ অর্থবছরে ৬০৬ কোটি, ১২-১৩ অর্থবছরে ১৯৩ কোটি টাকা লোকসান দিয়েছে। এই লোকসানের কারন অনুসন্ধান করার জন্য রকেট সাইন্টিস্ট হতে হয় না।

বাংলাদেশ প্রতিদিনের এই রিপোর্ট আপনাকে বলে দিবে কিভাবে, কোথায় এবং কত টাকার নয় ছয় হচ্ছে বিমানে। বিমানের মতিঝিল সেল্স অফিস, কার্গো বিভাগ, এয়ারপোর্ট সার্ভিস বিভাগ, বিক্রয় ও বিপণন পরিদফতর, সম্ভার ও ক্রয় পরিদফতর, যানবাহন উপবিভাগ, সিকিউরিটি ও তদন্ত বিভাগ, বিএফসিসি, বিমানের কর্মচারী নিয়োগ, পদোন্নতি ও ডিউটি রোস্টার শাখায় মোটা অঙ্কের টাকা লেনদেন ও লুটপাট ঘটে থাকে। তবে বিমানের সিট রিজার্ভেশনের নামে চলে সবচেয়ে বেশি দুর্নীতির কার্যকলাপ। সিট রিজার্ভেশন শাখায় এজেন্টদের কাছ থেকে সিট কনফার্মের নামে ফ্লাইটভিত্তিক লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নেওয়া হচ্ছে। বিমানের ট্রাভেল এজেন্ট, মার্কেটিং ও রিজার্ভেশন শাখায় এই সিন্ডিকেট রীতিমতো স্থায়ী ঘাঁটি গেড়ে বসেছে। তাদের খপ্পরে অনলাইন টিকিট বুকিংয়ের নামে কম্পিউটারাইজড রিজার্ভেশন সিস্টেম (সিআরএস) প্রোভাইডারকে ১৪০ কোটি টাকা বিল পরিশোধে বাধ্য হয়েছে বিমান। সরকারি অডিটেও এ বিষয়ে ঘোরতর আপত্তি উত্থাপন করা হয়েছে। সরকারি ওই অডিটে বলা হয়েছে, যদি সিন্ডিকেট না থাকত তাহলে রিজার্ভেশন প্রোভাইডারের সর্বোচ্চ বিল হতো মাত্র ৬ কোটি টাকা। সম্ভার ও ক্রয় বিভাগে যে কোনো ধরনের মালামাল আসামাত্র সংশ্লিষ্ট সিন্ডিকেটকে কমিশন দিতে হচ্ছে। এ খাত থেকে সিবিএসহ সংশ্লিষ্ট সিন্ডিকেট প্রতি মাসে কোটি টাকা বাণিজ্য করছে বলেও অভিযোগ রয়েছে। ঘাটে ঘাটে শুধু মাসহারা আর চাঁদাবাজিতেই সীমাবদ্ধ থাকছে না, লাগামহীন দুর্নীতিও জেঁকে বসেছে বিমানে। উড়োজাহাজ কেনা, লিজ নেওয়া, প্রয়োজনীয় কেনাকাটা, মেরামত, স্পেয়ার পার্টস কেনা, বিএফসিসি, পোলট্রি, টিকিট বিক্রি, গ্রাউন্ড হ্যান্ডলিং, বৈদেশিক অফিস চালনা, লোকবল নিয়োগসহ প্রতিটি ক্ষেত্রে চলছে সীমাহীন লুটপাট। কর্মচারী থেকে বোর্ড সদস্য, কোথাও টাকা ছাড়া কাজ হয় না। ফলে বেসরকারি ও বিদেশি এয়ারলাইন্স যখন লাভ করছে, তখন বাংলাদেশ বিমানকে শত শত কোটি টাকা লোকসান গুনতে হচ্ছে। বাংলাদেশ বিমান ২০১১-১২ অর্থবছরে ৬৩২ কোটি ৩৭ লাখ টাকা লোকসান দিয়েছে। এ নিয়ে টানা তিন বছর লোকসান দিয়েছে রাষ্ট্রীয় এ সংস্থাটি। শুধু তা-ই নয়, সব মিলিয়ে ৬ বছরে জমা হওয়া ৯৬২টি অডিট আপত্তি অনিষ্পন্ন অবস্থায় পড়ে আছে। এসব অডিট আপত্তির সঙ্গে জড়িত অর্থের পরিমাণ ৪ হাজার ৯৮৬ কোটি ৮৬ লাখ ৮৪ হাজার ৪৬৮ টাকা। এদিকে, বিভিন্ন দুর্নীতি আর অনিয়মের দায়ে প্রায় ৩৫০টি মামলা রয়েছে বিমানের বিরুদ্ধে। এত মামলা মোকাবিলা করতে গিয়ে হিমশিম খেতে হচ্ছে বিমান কর্তৃপক্ষকে। আবার এসব মামলা চালানোর নামে প্রতি মাসে কোটি কোটি টাকা লোপাট হচ্ছে।

এছাড়াও আছে ওভারটাইমে লুটপাট, রোস্টার তৈরিতে চাদাবাজি, চোরাচালানি, নিয়োগ বানিজ্য, গাড়ির চালকরা পর্যন্ত আকন্ঠ দূর্নীতিতে জড়িত। আর যাত্রীসেবার মানের কথা বাদই দিলাম। খোদ প্রধানমন্ত্রীকে মান সম্মত খাবার পরিবেশন না করায় তিনি সেই খাবারই খাননি। ‘অনিয়ন্ত্রিত সময়সূচীর জন্য ২০০৭ সালে বিমান লন্ডন হিথ্রো বিমানবন্দর ও দুবাই ইন্টারন্যাশনাল এয়ারপোর্ট সহ অন্যান্য বড় আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরগুলো থেকে ব্যাপক সমালোচনার শিকার হয় ২০০৭ সালের গ্রিষ্মে লন্ডন হিথ্রো বিমানবন্দর পরিচালনাকারী সংস্থা বিএএ বিমানকে প্রমানসহ একটি চিঠি দেয় যাতে উল্লেখ ছিল যে বিমান ৮০ শতাংশ ক্ষেত্রেই বরাদ্দকৃত সময়সূচীতে হিথ্রো বিমানবন্দরে অবতরন করে নি যা ইন্টারন্যাশনাল এয়ার ট্রান্সপোর্ট এসোসিয়েশন  এর নিয়মানুযায়ী বাধ্যতামূলক। এবং পরবর্তী গ্রীষ্মে যদি বিমান লন্ডনে পরিসেবা চালু রাখতে চায় তাহলে হিথ্রো বিমানবন্দরের আশা ছেড়ে দিয়ে স্ট্যান্সড বা গেটউইক বিমানবন্দর ব্যাবহার করতে পারে। পরবর্তী বছর বিএএ এর সাথে অলোচনায় বসে বিমান এই মর্মে আশ্বস্ত করে যে এটি বরাদ্দকৃ অবতরন সময়সূচীর অন্তত পক্ষে ৮০% ব্যাবহার করবে। এর ফলে ২০০৮ সালে বিমান লন্ডন হিথ্রো বিমানবন্দরে অবতরনের অনুমতি পায়। ২০০৮ সালের সেপ্টেম্বরে বিমানের একটি ডিসি ১০ দিয়ে পরিচালিত ঢাকা-লন্ডন সরাসরি সেবার একটি বিমান হিথ্রো বিমানবন্দরে তার নির্ধারিত সময়ের তিন ঘন্টা পর পৌছালে তাকে হিথ্রোতে অবতরন করার অনুমতি না দিয়ে জ্বালানী ভরার জন্য গেটউইক বিমানবন্দরে পাঠিয়ে দেওয়া হয়। ২০০৮ সালের ১০ সেপ্টেম্বরে দি টাইমস পত্রিকায় প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সকে হিথ্রো বিমানবন্দরের সবচেয়ে নিকৃষ্ট বিমান সংস্থা হিসেবে আক্ষা দেওয়া হয় যার প্রত্তেকটি বিমানে প্রায় তিন ঘন্টা করে দেরি হয়। ২০০৮ সালে জাতিসংঘ নিরাপত্তা, সুরক্ষা এবং ময়সূচি না মানার কারনে এর কর্মীদের বাংলাদেশ বিমানে ভ্রমন না করার সতর্কতা জারি করে। তাসত্বেও যারা বাংলাদেশ বিমানে ভ্রমন করেছে তারা নিজ দায়িত্বে ভ্রমন করেছে এবং তাদের বীমার টাকা দাবি করতে পারে নি। (উইকিপিডিয়া)

শুরুতে বিমানের রুট ছিল ২৬টি।  বর্তমানে তা কমিয়ে ১৬টি রুট করা হয়েছে। এই ১৬ রুটেও আবার লোকসানের দোহাই দিয়ে ফ্লাইট সিডিউল কমিয়ে দেয়া হচ্ছে।

আর বিমানের এ নীতির সুযোগে বিদেশী এয়ালাইন্সগুলো কাজে লাগাচ্ছে। অর্থাৎ বিমানের  রুট ও ফ্লাইট সিডিউল যত কমছে বিদেশী এয়ারলাইন্সগুলো তত বাড়াচ্ছে। ফলে দিন দিন বিমানের আকাশ সংকুচিত হয়ে যাচ্ছে। তবে সম্প্রতি নতুন করে বিমানের দু’একটি রুট বাড়ানো হয়েছে।

বিমানের অভিযোগ লিখে শেষ করা যাবেনা। অনেকেই বিমানে যাত্রা করার সুবাদে এর মান এবং সেবা সম্পর্কে অবগত আছেন। তবে আলোচনার ফোকাস টা আসলে অন্য জায়গায়।

১৮ মার্চ ২০১৩ তে দৃশ্যপটে কেভিন স্টিলের আগমন। তারপরই তিনি প্রধানমন্ত্রীকে প্রতিশ্রুতি দেন ২০১৪-১৫ অর্থবছরে বিমান লাভজনক করা হবে।

কেভিন স্টিল বলেন, তিনি এখনো আশাবাদী, ২০১৪-১৫ সালের মধ্যে লাভে যাবে বিমান। তিনি বলেন, গত সেপ্টেম্বর-অক্টোবর মাসে বিমান কিছুটা লাভ করেছে। চলতি অর্থবছরে লোকসান থাকবে না বলেও আশাবাদী তিনি। এই কিছুটা লাভ কত তা জানতে হলে একবার ঢু মারুন দৈনিক কালেরকন্ঠের ২ ডিসেম্বরের শিল্প ও বানিজ্য পাতায়। এখানে তিনি বলেন, ‘ চলতি অর্থবছরের জুলাই-অক্টোবর এই চার মাসে আমাদের অর্জন বাজেটে উল্লিখিত পরিমানের চেয়ে ৬০ লাখ ডলার বেশি।‘ উল্লেখ্য ২০১৩-১৪ অর্থ বছরে অনুমোদিত বাজেটে এক কোটি ২০ লাখ ডলার লোকসান উল্লেখিত আছে। একই দিনে তিনি বাংলাদেশ ব্যাংকের কাছে ১৬০০ কোটি টাকা ঋন সহায়তার কথা স্বীকার করেন যা সুদসহ প্রচলিত নিয়মে পরিশোধ করা হবে। এই ঋনের টাকায় পদ্মা ওয়েল, বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষের পাওনা মেটানো হবে। বর্তমান সময়ের কোন প্রয়োজন বা পরিচালন ব্যয় মেটাতে এই ঋনের প্রয়োজন হচ্ছে না। কিন্তু বাংলানিউজের আরেকটি রিপোর্ট করেছে এই শিরোনামে, ‘বিমানকে বাংলাদেশ ব্যাংকের, ‘না’ ভেস্তে গেলো কেভিনের ফন্দিফিকির” এই রিপোর্টে দাবী করা হয় বিমানের ঋনের বোঝা নাকি বাংলাদেশ ব্যাংকের ঘাড়ে চাপানোর চেষ্টা করছে কেভিন। কেভিন দায়িত্ব নেবার পর নাকি ব্যর্থ (!) এবং সেটার দায়ভার নাকি বাংলাদেশ ব্যাংকের উপর চাপানোর চেষ্টা করছে। বিমান দেউলিয়া হলে সেই দায় কেভিনের বলে মন্তব্য করেছে বাংলাদেশ ব্যাংক। সে সফল না বিফল সেটা বলার জন্য কি বাংলাদেশ ব্যাংক? এছাড়াও ওই রিপোর্টএর ভাষা যথেষ্ঠ উদ্দেশ্যপ্রনোদিত এবং অফেন্সিভ।

বিমানের একটি অনুষ্ঠান ইস্যুতে তাকে হেনস্থা করা হয় যাচ্ছেতাই ভাবে। তৃতীয় শ্রেনীর কিছু অনলাইন নিউজ পোর্টাল সংস্কৃতির ধোয়া তুলে তাকে ক্ষমা চাইতে বাধ্য করে। একই ভাবে ‘উড়ে এসে জুড়ে বসা’ কেভিনের সমালোচনা করে অত্যন্ত নিকৃষ্ট ভাবে। (এ নিয়ে কারো দ্বিমত থাকলে কমেন্ট করুন) বিমানের অস্থিরতা তৈরী করা এবং কেভিনকে হেনস্থা এবং বিতর্কিত করাই ছিল যার মূল উদ্দেশ্য।

আসলে কি হচ্ছে বিমানে? কেভিন আসার পরপরই কিছু পদক্ষেপ নেন যা বিমানে আমাদের কর্তাব্যক্তিদের মাথা ব্যথার কারন হয়ে দাঁড়ায়। কারন টা সহজেই অনুমেয়। ‘সময়সীমা’ নিয়ন্ত্রণ দিয়ে শুরু করে স্বতন্ত্র সিকিউরিটি ফোর্স গঠনেরও প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে। চূড়ান্ত অনুমোদন পাওয়া গেলে এ ফোর্স কাজ শুরু করবে। বিমানের বহরে এরই মধ্যে নতুন দুটি বিমান যুক্ত হয়েছে, শীঘ্রই পাওয়া যাবে আরও দুটি। বিমানে প্রযুক্তি সেবা বৃদ্ধিকল্পে নানারকম পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। তথ্য-প্রযুক্তিসহ নেটওয়ার্ক ব্যবস্থার উন্নয়নে সুইজারল্যান্ডভিত্তিক প্রতিষ্ঠান সোসাইটি ইন্টারন্যাশনাল ডি টেলি কমিউনিকেশনস অ্যারোনটিকসের (সিটা) সঙ্গে ১০ বছর মেয়াদি চুক্তি, ধারাবাহিকভাবেই বিমানের প্রযুক্তিগত উন্নয়নে নানা পরিকল্পনা ,দুই বছরের মধ্যে বিমানের ফ্লাইট ও যাত্রীসংখ্যা দ্বিগুণ করার পরিকল্পনা, একই সঙ্গে যাত্রীসেবার মানোন্নয়ন ও পরিচালন ব্যয় হ্রাসের বিষয়টিও গুরুত্বের সঙ্গে বিবেচনা করা হচ্ছে , সব রুটের যে কোনো ক্লাসে বুকিং দিলেই অর্ধেক ছাড় , এ সুবিধায় যে কোনো ক্লাসে অর্ধেক মূল্যে (ট্যাক্স ছাড়া) টিকিট কেনা যাবে। সর্বোচ্চ দুই হাজার আসন এই প্রোমোশনের আওতায় বিক্রির সিদ্ধান্ত রয়েছে।ছাড় দেওয়া সংক্রান্ত ঘোষণাকালে কেভিন স্টিল জানান, ‘প্রি-রিজার্ভড’, স্পেশাল খাবার বুকিং, অক্টোবর নাগাদ ফ্রিকোয়েন্ট ফ্লাইয়ার স্কিম, ডিসেম্বরে অনলাইন চেক-ইন সুবিধাসহ আরও অনেক সুবিধা নিশ্চিত হয়েছে।

কেভিনের পরিকল্পনা যে কোন মূল্যেই হোক বিমানকে লাভজনক করা। এলক্ষ্যে  বর্তমানে যে কটি রুট নিয়ে যেসব উড়োজাহাজ আছে তা দিয়েই আগামী এক বছরে কমপক্ষে সাড়ে ৭০০ কোটি টাকা আয় বাড়ানো এবং মাত্রাতিরিক্ত অপচয় রোধ করে আরও অন্তত চার হাজার কোটি টাকা সাশ্রয়,  কর্মচারীদের ওভারটাইম, উড়োজাহাজ মেইনটেনেন্স কস্ট, উড়োজাহাজ হ্যান্ডলিং কস্ট, ইনসেনটিভ কমিশন, ট্রাভেল এজেন্টদের অতিরিক্ত কমিশন, কার্গো হান্ডলিং, বিএফসিসি বিভাগে খরচ কমিয়ে আনা, কার্গো সেক্টর থেকে আরও বিপুল অঙ্কের টাকা আয় বাড়ানোর দিকে নজর দিয়েছেন।

আন্তর্জাতিক, অভ্যন্তরীণ ও কার্গো সেক্টরের উন্নতিতে গ্রাউন্ড হ্যান্ডলিংয়ে আসছে বিদেশি পার্টনার। ফলে বিমানের রাজস্ব আয় আগের তুলনায় বছরে প্রায় এক হাজার কোটি টাকা বাড়বে বলেও আশা করা হচ্ছে। বিমানের এ গ্রাউন্ড হ্যান্ডলিং নিয়ে দেশি-বিদেশি এয়ারলাইনস কোম্পানিগুলো দীর্ঘদিন ধরে বিমানের ওপর যথেষ্ট ক্ষুব্ধ। ফ্লাইট উড্ডয়ন ও অবতরণের পর মালামাল লোড-আনলোড, বোডিং কার্ড ইস্যু, এয়ারক্রাফট ল্যান্ড করানো, পার্কিং, উড়োজাহাজে বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও এসি সরবরাহ, হাই লিফটার, লেডার, টো ট্রাক্টর সরবরাহ, কার্গো সার্ভিস, খাবার পরিবেশন ইত্যাদি নানা কর্মকাণ্ড নিয়ে প্রায়ই যাত্রী ও এয়ারলাইনসগুলোকে নানা ভোগান্তির মুখে পড়তে হতো। ঘণ্টার পর ঘণ্টা দাঁড়িয়ে থেকেও যাত্রীরা তাদের লাগেজ পেতেন না। লাগেজ পেলেও কাটাছেঁড়া করে মালামাল লুটপাটের ঘটনা ঘটতো হরহামেশা। অপরদিকে কার্গো উড়োজাহাজের মাধ্যমে যেসব মালামাল আসে সেগুলোও হ্যান্ডলিং করে বিমান। এ ছাড়া দেশি-বিদেশি উড়োজাহাজ বিমানবন্দরে অবতরণ করানো, ট্যাঙ্ওিয়েতে আনা ও পার্কিং করানোর দায়িত্বও বিমানের। বোডিং কার্ড প্রদানের জন্য বিমানের যে পরিমাণ জনবল থাকার কথা তার অর্ধেকও নেই। নেই প্রয়োজনীয় যন্ত্রপাতি। যার কারণে একজন যাত্রীকে দীর্ঘ সময় ধরে লাইনে দাঁড়িয়ে থেকে বোডিং কাজ সম্পন্ন করতে হয়।এক্ষেত্রে বিদেশি দক্ষ পার্টনার নিয়োগের মধ্য দিয়ে অবশেষে বিমান দীর্ঘদিনের অব্যবস্থাপনা দূর করার উদ্যোগ নিয়েছে।

এটি সহজেই অনুমেয় যে এই খাতগুলোতে অব্যবস্থাপনাই বিমানের লোকসানের অন্যতম কারন। যার কারনে বিদেশী এয়ারলাইন্স গুলো বছরের পর বছর লাভের মুখ দেখছে সেখানে বিমান বিপরীতমুখী। সেই দূর্ণীতির বহরের সাথে লড়তে হচ্ছে কেভিনকে। সাথে রুচিহীন মিডিয়াকেও সামাল দিতে হচ্ছে। বিমানের দূর্নীতি তদন্ত করার জন্য তিনি একাধিকবার দুদক কে তাগিদ দিয়েছেন। দুদক শেষ পর্যন্ত তলব করলেও সিবিএ নেতারা দুদকের নোটিশকে পাত্তাই দেয়নি। আইনগতভাবে দুদককে মোকাবেলা করবে বলে জানিয়েছে তারা।

নিউইয়র্ক রুট বন্ধ হয় ২০০৬ সালে। তা চালু করার জন্য অতিরিক্ত উড়োজাহাজ ভাড়ার জন্য ৫০ কোটি টাকা অগ্রিম দিতেও বিমানের আপত্তি। টাকা তারা ফেলে রাখবেন কিন্তু বিমান নিয়ে তা দিয়ে রোজগার করবেন না। ইনফ্যাক্ট বিমানের ফান্ডে কত টাকা আছে তাও জানেন না পরিচালনা পর্ষদের সদস্যরা। এই প্রস্তাব দেবার পর আবার তাদের একজন বলেছেন, পাচ বছর ধরে যে ভাড়া গুনতে হবে তা দিয়ে উড়োজাহাজই কেনা সম্ভব। প্রশ্ন করতে ইচ্ছে করে সে টাকা কি বাংলাদেশ ব্যাংক বা কোন ব্যাংক দিয়েছে?

চোখ বন্ধ করে বলা দেয়া যেতে পারে কেভিনকে কাদের সাথে লড়তে হচ্ছে এবং তাদের পেছনে কারা আছে। অদূর ভবিষ্যতে হয়তো আমরা কেভিন স্টিলকে ব্যর্থ হয়ে ফিরে যেতেও দেখতে পারি। সমূহ সম্ভাবনা আছে তা ঘটার। বিমানকে দেউলিয়া করে দেবার জন্য আমাদের দেশের সোনার ছেলেরা (সিবিএ নেতারা এবং কর্মকর্তারা) যে পথে হাটছেন তা নিজের নাক কেটে পরের যাত্রা ভঙ্গ করারই সামিল। আমরা কিইবা করতে পারি? শুধু সমবেদনা জানানো ছাড়া? কেভিনের জন্য সমবেদনা।

১,১২৪ বার দেখা হয়েছে

২৩ টি মন্তব্য : “কেভিন স্টিলের জন্য সমবেদনা”

  1. মোকাব্বির (৯৮-০৪)

    একটা কথাই বলার আছেঃ "বেচারা কেভিন।"

    রেজিস্ট্রি অফিস, বিমান, টেলিফোন এদের মাঝে প্রতিযোগিতায় এগিয়ে কে আছে জানো কিছু?


    \\\তুমি আসবে বলে, হে স্বাধীনতা
    অবুঝ শিশু হামাগুড়ি দিল পিতামাতার লাশের ওপর।\\\

    জবাব দিন
  2. সিরাজ(১৯৯১-১৯৯৭)

    আমি লক্ষ করেছি যে বিডিনিউজ২৪(আওয়ামীলীগের মুখপাত্র) ক্রমাগত স্টিভেনের পিছনে লেগেই আছে একটার পর একটা রিপোর্ট প্রকাশ করে। দুর্নীতির রিপোর্ট প্রকাশ করা ভাল কিন্তু রিপোর্টগুলো পড়ে আমার কেনে জানি মনে হয়েছে দূরভিসন্ধিমুলক।
    আমার কথা হল লোকটা কেবল মাত্র দ্বায়িত্ব নিয়েছে তাই তাকে সময় দেয়া উচিৎ।আরো একটা ব্যাপার হল এবারই প্রথম উচ্চ বেতন এবং সুযোগ সূবিধায় বিদেশী একজন কে বিমানের এমডি পদে নিয়োগ দেয়া হয়েছে যা কিনা অনেকেরই চক্ষুশূল।


    যুক্তি,সঠিক তথ্য,কমন সেন্স এবং প্রমাণের উপর বিশ্বাস রাখি

    জবাব দিন
    • মাহমুদুল (২০০০-০৬)

      ভাই ধন্যবাদ কমেন্ট করার জন্য।

      শুধু বিডিনিউজই নয়, ছাড়পোকার মত নোংরায় বাসা বাধা অনলাইন কিছু নিউজ পোর্টাল ক্রমাগতভাবে কেভিনের পিছে লেগে আছে। পান থেকে চুন খসলেই তারা হাঙ্গামা বাধানোর চেষ্টা করে। রিপোর্টের ওয়ার্ড সিলেকশন দেখেই বোঝা যায় কি জন্য রিপোর্ট করা হয়েছে।

      শুধু বেতনটাই যে চক্ষুশূল তা আমি বলতে নারাজ, লুটপাটের মহোৎসব থেকে নিজেকে বঞ্চিত দেখতে এদের ভালো না লাগার অন্যতম কারন কেভিন বিরোধিতার।


      মানুষ* হতে চাই। *শর্ত প্রযোজ্য

      জবাব দিন
  3. ওয়াহিদা নূর আফজা (৮৫-৯১)

    দেরী হয়ে গেল তোমার পোস্টটিতে প্রবেশ করতে। প্রথমেই ধন্যবাদ দিচ্ছি এরকম একটি তথ্যবহুল এবং রেফারেন্স দিয়ে ব্লগ লেখার জন্য।
    "তবে বিমানের সিট রিজার্ভেশনের নামে চলে সবচেয়ে বেশি দুর্নীতির কার্যকলাপ।" - যারা বাইরে থাকে এবং বিমানের টিকিট কিনতে চেয়েছে তারা এই কথাটির সত্যতা সম্পর্কে নিশ্চিত। রিজার্ভেশন থেকে বলে টিকিট নেই। পরে দেখা যায় বিমান খালি চলে যাচ্ছে।
    আর এই প্রবাসে বিভিন্ন পেশার মানুষদের সন্তানদের কাছ থেকে দেখা হয়। একজন বিমানের কর্মকর্তার সন্তানের উক্তি ছিল "ঘুষ খাওয়ার জন্যও যোগ্যতা লাগে।"
    কী মনে হয় তোমার - শেষ পর্যন্ত কেভিন স্টিল পারবে চালিয়ে যেতে?
    এই লেখার আরেকটি উল্লেখযোগ্য পয়েন্ট হচ্ছে - বিমান ২০০৭ এর সময় পর পর দুবছর লাগের মুখ দেখেছিল। আবার সেই ২০০৯ থেকে লস। ঐ সময় ক্ষমতায় কারা ছিল তা থেকেও একটা বিশ্লেষণে আসা যায়। স্বচ্ছতা আর জবাবদিহিতার সুযোগ না থাকলে - যে দুটো গনতন্ত্রের মূলমন্ত্র - গনতন্ত্র একটি বোঝার মতো। তোমার এই পোস্টের মতো মানুষ যতই সচেতন হবে গনতন্ত্র ততই সুসংহত হবে।


    “Happiness is when what you think, what you say, and what you do are in harmony.”
    ― Mahatma Gandhi

    জবাব দিন
    • মাহমুদুল (২০০০-০৬)

      আপনার মুল্যবান কমেন্টের জন্য :hatsoff:

      "ঘুষ খাওয়ার জন্যও যোগ্যতা লাগে।"

      কথা সত্য। তবে তা হীন মানসিকতার, অন্যকে মাড়িয়ে নিজের ভোগ বিলাসের ইচ্ছার অসৎ যোগ্যতা। 'শিক্ষার' (অনেকেই বলে কুশিক্ষা, আমি তা বলতে নারাজ কেননা তারা যেটাকে শিক্ষা বলে তা আদৌ 'শিক্ষা' নয়। বড়জোর লিখতে, পড়তে এবং চুরি করার কৌশল) অভাবটাই কারন। এর জন্য পরিবেশও অনেকাংশে দায়ী।

      আজ দুদকের চেয়ারম্যান বলেছে, দূর্নীতি বিরোধী/মুক্ত সমাজ গঠনের জন্য সবার আগে চাই শিক্ষিত সমাজ। আমি তার বক্তব্যের সাথে কিছুটা একমত হলেও দ্বিমত আছে বৈকি। নীতি নৈতিকতার শিক্ষাটা কি স্কুল কলেজে লেকচার দিয়ে দেয়া সম্ভব? এর জন্য আমার মনে হয়, প্রয়োজন সঠিক 'নার্সারিং'।

      কেভিন পারবেন কিনা তা বলা কঠিন। হয়তো কিছুদিন পড় বাফুফের বিদেশী কোচদের মত আর চুক্তি নবায়ন করতে ইচ্ছুক হবেন না। তবে তিনি যে চেষ্টা করেছেন তার জন্য হয়তো কিছুটা পরিবর্তন আস্তে পারে। অথবা ইতিবাচক পরিবর্তনের সুযোগটাই বন্ধ হয়ে যেতে পারে। ইতিহাস বলে, আমরা গড়ার চেয়ে ধ্বংসেই বেশি পারদর্শী।

      একটু অপ্রাসঙ্গিক হলেও আমি বিশ্বাস করি ২০০৬ সালের তত্বাবধায়ক সরকার সীমিত পরিসরে হলেও কিছু ভালো উদাহরন তৈরি করতে পেরেছে। সময় পেলে হয়তো আরো পারতো। এই লোকসানের জন্য যে পলিটিকাল চামচারাই দায়ী তা চোখ বন্ধ করে বলা যায়। তবে এখানেও ৪১/৪২ জন কে সরিয়ে যে কেভিন কে আনা হয়েছে তাও কিন্তু পলিটিকাল সরকারের সময়ই। হয়তো কারো শুভ বুদ্ধির উদয় হয়েছিল বলেই এটা সম্ভব হয়েছিল। এতকিছুর পরেও বিমানের ভবিষ্যত নিয়ে 'প্রেডিক্ট' করা কঠিন।


      মানুষ* হতে চাই। *শর্ত প্রযোজ্য

      জবাব দিন
  4. আহসান আকাশ (৯৬-০২)

    চমৎকার লেখার জন্য ধন্যবাদ মাহমুদুল। :hatsoff:

    ওয়াসার সাথে কাজ করতে গিয়ে এইসব নেতাদের কাজ দেখার দূর্ভাগ্য হয়েছিল। এক কথায় ভয়ঙ্কর।


    আমি বাংলায় মাতি উল্লাসে, করি বাংলায় হাহাকার
    আমি সব দেখে শুনে, ক্ষেপে গিয়ে করি বাংলায় চিৎকার ৷

    জবাব দিন
  5. ইমরান (১৯৯৯-২০০৫)

    মাহমুদুল, প্রথমেই ধন্যবাদ তোমকে সুন্দর ও তথ্যবহুল এরকম একটা লেখার জন্য।

    জানো, আমার মাঝে মাঝে মনে হয় 'দোজখ থেকে যে বাঙ্গালী পালাতে পারবে না কেন' জাতীয় একটা জোকস আছে না, ঐটা পুরাই সত্য। আমরা জানি শুধু কেউ উঠতে চাইলে তার পা টেনে ধরা। চিন্তা করতে জানিনা যে একজন উঠলে সে বাকিদের জন্য একটা রশি ফেলতে পারে।

    আফসোস হয় শুধু।


    রঞ্জনা আমি আর আসবো না...

    জবাব দিন
  6. তাওসীফ হামীম (০২-০৬)

    লেখাটার পিছনে অনেক পরিশ্রম আছে, ধন্যবাদ গুরুত্বপূর্ন লেখাটার জন্য, অনেক কিছুই অজানা ছিলো, কেভিন স্টিলকে ভিলেন ভাবা শুরু করেছিলাম।


    চাঁদ ও আকাশের মতো আমরাও মিশে গিয়েছিলাম সবুজ গহীন অরণ্যে।

    জবাব দিন
    • মাহমুদুল (২০০০-০৬)

      হামীম তোমার মূল্যবান মতামতের জন্য ধন্যবাদ।

      এইসব নিউজ পড়লে যে কেউ তাকে ভিলেন ভাববে। কিন্তু খবর গুলোকে যদি একটার সাথে আরেকটা জোড়া দেয়া হয় তাহলেই সব পরিষ্কার হয়ে যায়।

      আমি জানি না কেভিন কেমন মানুষ। তার সাফাই গেয়ে লেখা একটা লাইন কোন পত্রিকায় পড়িনি। বড় বড় বিবৃতি কোথাও দেননি। সেটাই আমার ভালো লেগেছে। নিভৃতচারী মানুষ আমার ভীষন পছন্দের। কাজ করতে না পারুক, অন্তত গলা বাড়িয়ে বলেননি, আমিই সেরা, আমিই সফল। বর্তমান প্রেক্ষাপটে এটুকু দিয়েই আমার বিবেচনা করতে হচ্ছে। 🙂


      মানুষ* হতে চাই। *শর্ত প্রযোজ্য

      জবাব দিন

মওন্তব্য করুন : মোকাব্বির (১৯৯৮-২০০৪)

জবাব দিতে না চাইলে এখানে ক্লিক করুন।

দয়া করে বাংলায় মন্তব্য করুন। ইংরেজীতে প্রদানকৃত মন্তব্য প্রকাশ অথবা প্রদর্শনের নিশ্চয়তা আপনাকে দেয়া হচ্ছেনা।