~ গ্যাছি গত কাল ~

শিয়রে প্রহরীর মতো বসে আছো
বুঝিবা অনন্তকাল।

পাখিদের যাওয়া আসা নিয়ে
খুঁজছো কারণ বেসামাল।
মেঝের সীমান্তময় ছড়িয়ে
যতিহীন শ্যেন দৃষ্টিজাল
সারাক্ষণ খুঁজে গেছো সব
সম্ভাব্য পথের কংকাল।

তখনো বুকের ছাতি
মৃদু ওঠানামা করছিলো তার।
পিঁপড়ের নীরব যাতায়াত
বাধাহীন বাড়ছিলো নির্বিকার।

পাখি ও পাতাদের লঘু স্বর
কথকতা মিছিলে
উৎসুক বাতাসের আনাগোনা
চালু ছিলো কৌশলে।

সবুজ ঘাসফড়িং, প্রজাপতি;
ওরাও বলেছিলো,
ন্যূজ ও ম্রিয়মান ঘাসেদের
কানে খুব ঝাঁঝালো –
প্রস্থানের নোটেশনে
কীর্তনের সুর এলোমেলো।

শুধু মৌমাছি নয়
সন্ধ্যা জুড়ে জোনাক আলো
দিনের স্মৃতি মেখে
তোমার দেখাদেখি
প্রগাঢ় অপেক্ষায়
যতিহীন জ্বলে রয়।

শিয়রে প্রহরীর মতো বসে আছো
বোঝনি অস্ত গ্যাছি কাল।

০৬ অক্টোবর ২০১৫

১,৯৬৮ বার দেখা হয়েছে

১২ টি মন্তব্য : “~ গ্যাছি গত কাল ~”

  1. সাইদুল (৭৬-৮২)

    সিসিবিতে যারা সত্যিকারের কবি, তুমি তাদের অন্যতম।

    শুধু মৌমাছি নয়
    সন্ধ্যা জুড়ে জোনাক আলো
    দিনের স্মৃতি মেখে
    তোমার দেখাদেখি
    প্রগাঢ় অপেক্ষায়
    যতিহীন জ্বলে রয়।

    বাহ, বাহ


    যে কথা কখনও বাজেনা হৃদয়ে গান হয়ে কোন, সে কথা ব্যর্থ , ম্লান

    জবাব দিন
  2. লুৎফুল (৭৮-৮৪)

    সাইদুল ভাই। ভাষাহারা।
    আপনার এমন মন্তব্য স্বর্গের চাবি হাতে পাওয়ার মতোন অভাবিত আর বিশাল।
    আমার সামর্থ্য সীমাবদ্ধতার অপার।
    আপনাকে কুর্ণিশ।
    :boss: :boss:

    জবাব দিন
  3. পারভেজ (৭৮-৮৪)

    কবি আর অকবির এই এক পার্থক্য।
    অকবি ইদুরকে ধানের শীষের দিকে তাকালে ভাবে, সে খাবার দেখছে।
    আর কবি দেখে তাঁর নক্ষত্রের দিকে তাকানোর আকুতি।
    "ধানের নরম শীষে মেঠো ইদুরের চোখ নক্ষত্রের পানে / আজও চায়..." - এর পরিপ্রেক্ষিতে মিঃ বাকীর ব্যাখ্যা ছিল এটা।

    এই কবিতাটায়ও সেরকম বেশ কিছু উল্লেখ চোখে পড়লো।
    "...... বুঝিবা অনন্তকাল"
    "...... নষ্ট করোনি ত্রিকাল"
    "...... সম্ভাব্য পথের কংকাল" ইত্যাদি

    একবার পড়ে সবটা নেয়া কঠিন। কয়েকবার পড়তে হলো তাই......
    :clap: :clap: :clap: :clap: :clap:


    Do not argue with an idiot they drag you down to their level and beat you with experience.

    জবাব দিন
  4. খায়রুল আহসান (৬৭-৭৩)

    "শিয়রে প্রহরীর মতো বসে আছো
    বুঝিবা অনন্তকাল।" - আর
    "শিয়রে প্রহরীর মতো বসে আছো
    বোঝনি অস্ত গ্যাছি কাল।" - এ পংক্তিগুলো অসাধারণ হয়েছে। এই আচমকা ঘোষণাগুলোর মাঝখানে যা কিছু বলা হলো, সবই কাব্যময়।
    সবুজ ঘাসফড়িং, প্রজাপতি; ন্যূজ ও ম্রিয়মান ঘাস, সন্ধ্যা জুড়ে জোনাকের যতিহীন জ্বলা, ইত্যাদি বর্ণনা খুবই হৃদয়গ্রাহী হয়েছে।

    জবাব দিন
    • লুৎফুল (৭৮-৮৪)

      কিছু কথা অন্ধকারের জগত গুঁড়িয়ে আলোর তীক্ষ্ণ তীরের ফলায় বিদ্ধ করে ভাবনার শাব্দিক নির্মাণ।
      আর সেইমতো উচ্চারণ সাহসের তূণে স্থিতধী লক্ষ্যভেদী করে তোলে শব্দময় আবেগ অনির্বাণ।
      আপনাকে শ্রদ্ধা ও কৃতজ্ঞতা।
      :boss:

      জবাব দিন

মওন্তব্য করুন : পারভেজ (৭৮-৮৪)

জবাব দিতে না চাইলে এখানে ক্লিক করুন।

দয়া করে বাংলায় মন্তব্য করুন। ইংরেজীতে প্রদানকৃত মন্তব্য প্রকাশ অথবা প্রদর্শনের নিশ্চয়তা আপনাকে দেয়া হচ্ছেনা।