নী ল ম স লি ন

~ এক ~

হেমন্তের রোদের এমন তেজ। অবাক করা ব্যাপার। বছরের এই সময়ের কোন দিনের এমন খরতপ্ত ধৃষ্টতা ! স্মৃতির দেরাজ হাতড়ে পাওয়া গেলো না কিছুতেই। বেশ কিছুক্ষণ হলো সমীক হাঁটছে। ব্যস্ত, বাধা-বিঘ্নময় ফুটপাত। তবু আজ তুলনামূলকভাবে অনেক কম মানুষ পথে। হাঁটছে আরও কম জন। যাদের বেরুতেই হবে তেমন কেউ বাদে অন্যরা বোধ করি কেউই আজ বাইরে নেই।

রিকসা, স্কুটার, কিছুই মিলছিলোনা। দাঁড়িয়ে থাকা মানেই থেমে থাকা। পিছিয়ে যাওয়া। কতোক্ষণ হা করে দাঁড়িয়ে থাকা যায় এক জায়গায় ! থেমে থাকতে ভালো লাগে না মোটেই। এক সময় – এ্যই রিকসা, স্কু-টা-র, এসব ছন্দলয়হীন চীৎকার থামিয়ে পা চালাতে শুরু করেছে সমীক। একটা সময়ের প্রিয় কাজ ছিলো হাঁটা। প্রয়োজনে-অপ্রয়োজনে হেঁটে গন্তব্যের পর গন্তব্যে পাড়ি জমিয়েছে সে দিনের পর দিন। শ্রমে অনভ্যস্ততা আর আয়েশের চর্চা খুউব দ্রুত রক্ত-অস্থি-মজ্জায় যেনো স্থায়ী আবাস গড়ে নেয়। অনেক দিন পর সমীক হাঁটছে। অনেক বছর পর সেই অতি চেনা পুরোনো রাস্তাটায়।

সাধারণ মাঝারী হিলসমেত সুন্দর ছিমছাম একজোড়া স্যান্ডেল মৃদু শব্দ করে আগে আগে হাঁটছে। সেই শুরু থেকেই। প্রথমটায় নজর কাড়েনি। অনেকদিন পর হাঁটা, আর সেই চির চেনা পুরোনো জায়গাটা দিয়ে যাবার অনুভূতিটুকু বুকের ভেতর অনুপ্রাস ঘটাচ্ছিলো যতোক্ষণ। এখন চোখে পড়ছে, একজোড়া সুন্দর ছন্দবদ্ধ পা। হালকা শ্যাওলা রঙের একটা শাড়ী জড়িয়ে আছে যেনো এক চলমান ভাস্কর্য। বেয়াড়া রোদ্দুর শ্যামলা ত্বককে টানছে আরো ঘন শ্যামলিমায়। তাতে বিন্দু বিন্দু ঘাম, একটা অন্যটার সাথে জড়ো হয়ে একটু বড়, আর একটু বড় হয়ে একটা মুক্তোদানা গড়ার অভিসন্ধিতে যেনো সন্তর্পণে অগ্রসরমান। অভ্যস্ত পদক্ষেপ প্রতিটি পদস্থাপনায় একটা মৃদু স্রোত তৈরী করে যাচ্ছে ভাস্কর্যের সমস্ত সীমানা জুড়ে। এর স্থির যে কোন একটা মুহূর্ত নির্দ্বিধায় স্থান করে নিতে পারতো রাশিয়া কিংবা গ্রীসের পুঙখানুপুঙখ নিখাদ প্রাণময় একটা ভাস্কর্য হিসেবে।

পূর্ণ দৃষ্টিতে মহিলাকে দেখতে বেশ ভালো লাগছিলো। শুধু ভালো লাগা। একটা সুন্দর কিছু আবিষ্কার করা – দেখা – এমনতরো একটা সুখানুভূতি। আরো জোরে হাঁটার অভ্যেস ছিলো সমীকের। তবু অনভ্যাসে গতি শ্লথ রাখতেই ভালো লাগছিলো। তাছাড়া এই মহিলাকে সংগোপন সহযাত্রী পেয়ে ডিঙিয়ে এগুতে ইচ্ছে করছিলো না। ব্লাউজটা জায়গায় জায়গায় ভিজে গিয়েছে অভদ্র রোদ্দুরের যন্ত্রণায়। সুতী শাড়ীটা যেনো আরো অন্তরঙ্গ হয়ে জড়িয়ে ধরেছে শিল্প সুষমাকে। ভ্রুক্ষেপ নেই তাতে তার এক বিন্দুও।

অকস্মাৎ আনমনা কয়েকটা পলক পেরুতেই আবিষ্কার করলো সমীক সহযাত্রীটি দৃষ্টিসীমার মধ্যে কোথাও নেই। ফেলে আসা বাঁকটাতে নির্ঘাৎ অন্যদিকে মোড় নিয়েছেন। সমীক এতো সুন্দর করে শাড়ী পড়া একজন আটপৌরে মহিলা মনে হয় জীবনে কখনো দেখেনি। আলাদা করে কোন বৈশিষ্ট্যই তার মনে করতে পারলো না। শুধু মনে হলো – একটা সুতী শাড়ী ছিলো। খুব সাধারণ মানের এবং দামের একটা সাদামাটা শাড়ী। একজন কর্মঠ শ্যামলা নারী খুউব সহজাত – সাবলীল সাধারণ ভঙিমায় শাড়ীটা পরেছিলো। হয়তো সবকিছু এতোটাই সাদামাটা ছিলো যে তার সম্মিলিত উপস্থাপনার ভেতর থেকে শিল্পের অপূর্ব এক সুষমা সচেতন মনের আড়ালে নজর কেড়েছিলো কোনো অভাবিত ঔজ্জ্বল্যে। এমনটা কী কখনো দেখেনি সমীক! নাহয়, মনে এতোটা দাগ কাটলো কি করে?

ভাবতে ভাবতে বড় বড় গাছে ছাওয়া ফুটপাথের দীর্ঘ একটা পথ পেরিয়ে আবার খরতপ্ত সূর্যের করতলে সমর্পিত হলো সমীক। আর অমনি মনে পড়লো অনেক বছর আগের একটা দৃশ্যের কথা। স্টেডিয়াম থেকে রিকসায় উঠে কেবল বেরুচ্ছিলো মোহামেডান গেটের পাশ দিয়ে। হারুন ডাইরী আর অন্য ষ্টেশনারীজের দোকানগুলোর সামনে গিয়েছে রিকসাটা ডানে ঘুরে। অকস্মাৎ চোখ পড়লো উল্টো দিকের এক রিক্শায়। বর্ষীয়ান একজন মহিলা। পঞ্চান্নর কম হবেন না কোন ভাবেই। সাদায় সাদা কাজ করা সৌম্য স্নিগ্ধ একটা শাড়ী পরিহিতা। হালকা প্রসাধন। চোখ আঁটকে গেলো। সেই রিকসাটা ক’সেকেন্ড পরই দৃষ্টি সীমার বাইরে। অথচ বাকী সময়ের সমস্ত পথ জুড়ে যেনো স্পষ্ট দৃশ্যমান হয়ে ছিলো চোখের সামনে। এতোটা বয়সী কাউকে প্রসাধন প্রয়োগ করতেই বোধকরি দেখেনি কখনো সমীক। অমন বয়সে এমন সুন্দর শাড়ী পরতেও সম্ভবত কাউকে দেখেনি কখনো। এতোটা সৌম্য সৌন্দর্য হয়তো কল্পনায়ও আনা যায় না। যখন তরুণী ছিলেন তখন কেমন ছিলেন। কতোটা আকর্ষণীয়া ! সে বিষয়টার চাইতে এমন বয়সী একজন মহিলাকে এতোটা সুন্দর – প্রেজেন্টেবল এ্যপিয়ারেন্সে – স্নিগ্ধ যাপনের মাঝে আবিষ্কার করে জীবনের অনেক অন্যরকম মানে উপলব্ধি করেছিলো সমীক সেদিন।

বয়সটা আসলে শরীরের চেয়ে বেশী বাসা বেঁধে থাকে মানুষের মনে। এই সত্যটার পাশাপাশি সেইদিনই সমীক যেনো প্রথম আবিষ্কার করেছিলো শাড়ীর অপার সৌন্দর্য। অন্য কোন পোষাকে কী অতোটা নজর কাড়তেন ! অবাক করতেন ! সেই বর্ষীয়সী ! সম্ভবত, না।

~ দুই ~

চা-পাতা, চায়ের দুধ, টোস্ট বিস্কিট, চানাচুর, ছোট চিংড়ি, পালং শাক … হঠাৎ মনে পড়লো বাজারের লিস্টটার কথা। কাগজটা নিয়ে বের হয়েছিলো তো সকালে ! পকেট হাতড়ে আঙুলে চেনা ভাঁজের স্পর্শটা অনুভূত হতেই নিশ্চিন্ত হলো। আজকাল স্মৃতিশক্তিটা পূর্ণ বিশ্বস্ততা হারিয়েছে নিজের কাছেই। অহরহ প্রয়োজনীয় কাজের কথা ভুলে যায়। অথচ অসময়ে অপ্রয়োজনে অকস্মাৎ তা বার বার মনে আসে। অদ্ভুত ! এ্যাতোক্ষণে অফিসের গেটে পৌঁছে গেছে সমীক। নাহ্ সময় মতোই ফিরে এসেছে। বড় সাহেব এখনো আসেননি ফিরে। সংগ্রহ করে আনা তথ্যগুলো সুন্দর ছকে সাজিয়ে আর হ্যাঁ একটা পরিপূর্ণ ব্যাখ্যা বিশ্লেষণ দিয়েই শেষ করতে হবে। রিপোর্টটা ডুবিয়ে রাখলো সমীককে সম্পন্ন এক নিমগ্নতায়। এজন্যেই বোধকরি অফিসের সবাই তাকে এতোটা সমীহ করে। নির্ভেজাল আন্তরিকতা,নিষ্ঠা আর শ্রম – নিরন্তর এর প্রয়োগ ঘটিয়ে যাচ্ছে বলেই নির্ভরতার উদাহরণ হতে পেরেছে সবার কাছে ওর নামটা।

বড় সাহেব ডাক্তাছে স্যার। কদম আলী এসে কানের কাছে জোর ঘণ্টা বাজিয়ে জানালো যেনো। স্যার – আপনের চা তো বরফ হইয়া গেছে ! হেই আইলেন পরে দিছি। দেওনের আগে তিনবার কইলেন দেও দেও, অথচ … । এক চুমুকে চায়ের কাপটা খালি করে দিতেই দাড়ি – কমা বাদ দিয়ে থেমে গেলো কদম আলীর গলা।

গুড্, ভেরি গুড্। আলতো করে ধরা বড় সাহেবের কলমের ডগাটা বুলিয়ে যাচ্ছে সমীকের লেখা,লাইনের পর লাইন। কলমটার যেনো দৃষ্টি শক্তি আছে। যে কোন সময় কাঠখোট্টা একটা মন্তব্যও উচ্চারণ করে বসতে পারে। সারা বছর এতোটা গরম লাগে কেনো বড় সাহেবদের ! আজ না হয় বাইরে গরমটা বড্ড বেশী। শীতকালেও এসি চলে, আর এই একই রকম হিম হয়ে থাকে এই বিশাল রুমটা। নরোম কার্পেটে জুতোর তলাটা অনেকাংশেই দেবে হারিয়ে গেছে যেনো। গলায়, ঘাড়ের কাছে আর শার্টের ঘামে ভেজা অংশগুলোতে বড্ড বেশী শীত শীত লাগছে সমীকের।

ব্যাখ্যা বিশ্লেষণ কোথায়? এটুকুই ! ইনফারেন্স অব দ্য নিউম্যারিক্যাল স্টাডিজ ? আই হ্যাভ টোল্ড য়্যু দ্য প্রসেস সেভারেল টাইমস !
স্যার। আমি শেষ করতে পারিনি এখনও। আপনি ডেকেছেন শুনে তড়িঘড়ি চলে এলাম। ভাবলাম নতুন কোন পয়েন্ট যদি ইনস্ট্রাকট করেন।
ওয়েল ! ফিনিশ ইট বিফোর য়্যু লিভ্ এন্ড মেক শ্যুর টু কিপ্ ইট অন মাই ডেস্ক।

পঁচিশ মিনিট অতিরিক্ত সময় লেগেছে কেবল। আরো বেশী লেগে যেতে পারতো। সেরকমই ভয় পাচ্ছিলো সমীক। অবশ্য সেই থেকে কেউ এসে একটা মিনিটও সময় নষ্ট করেনি। বেরুবার আগে কোন খোশ-গল্পও আজ আর ভর করেনি কোন সহকর্মীর মাথায়। শুধু কদম আলী বসে ছিলো একা। চুপচাপ। মাঝে এক কাপ চা দিয়েছে যত্ন করে। নিজে থেকেই। স্যার এই চা টা গরম গরম খান – মাথাটা ঝরঝরা লাগবো …। ব্যস, আর কোন শব্দ নেই। শুধু কাগজ আর কলমের সখ্যতা কিংবা বিরোধের অনিয়মিত ফিসফাস বাদে। কদম আলী আসর পড়ে বিড়বিড় করে দোয়া পড়েছে ওর টুলটায় বসে। অবশ্য এটা হচ্ছে নিঃশব্দে বিড়বিড় করা। না তাকালে কেউ জানবেনা ওর মুখের ব্যস্ততার কথা।

~ তিন ~

মাছ’অলাটা জোর করে একটা ইলিশ দিয়ে দিলো। পদ্মার। খাইয়া ভালো লাগলে দাম দিয়েন স্যার। এর পরে না নিয়ে আর পারা যায়নি। খানিকটা সরিষাও কিনেছে। আজ শায়লাকে বলবে সরিষা বাটা ইলিশ, আর চাকা চাকা করে ইলিশের ডিমটা ভাজি করতে। লেবু, ধনেপাত দেয়া পাতলা ডাল। নাহ্ শেষ বিকেলটা যেনো ফুরফুরে হয়ে উঠেছে খরতপ্ত দুপুরকে ছাপিয়ে। রিকসায় চানাচুর অলার কৌটার মতোন ঝাঁকি খেতে খেতে একসময় বাসার দরোজায়।

শায়লা কেবল ফিরেছে অফিস থেকে। পেঁয়াজ রঙের একটা শাড়ী আর ক্লান্ত চেহারার কম্বিনেশনে অদ্ভুত সুন্দর লাগছে। এখন এসব বললেই সব মাটি হয়ে যাবে। তারচে মনে মনে নিজের সাথেই অনুভূতির ভাগাভাগি – লুকোচুরি করা ঢের ভালো। অনেকদিন পর শায়লাকে শাড়ীতে দেখলো। শাড়ীগুলো আলমারীর শোভা হয়েই পড়ে থাকে। কখনো ওর মন চাইলে পরে। অন্যথা সচরাচর হয় না।

সৈকত আর শৈলী নিজেদের মধ্যে খুনসুটি করছে আর পড়ছে। থেকে থেকে মার উচ্চকন্ঠ পেলে পড়াটা সরব হচ্ছে। হাত-মুখ ধুয়ে বারান্দার মোড়াটায় বসলো এসে সমীক। এক চিলতে আকাশ দেখা যায় – কংক্রিটের ল্যান্ডস্কেপের ফাঁক গলে। তাতে এতোক্ষণে সাজানো হয়েছে একঝাঁক তারা আর আধখানা চাঁদের পসরা। সৈকত আর শৈলী এখন যেনো স্বতঃস্ফুর্ত ভাবেই তাড়া করে পড়ছে। পাট চুকানোর তাড়া। শায়লা গোলাপী প্রিন্টের সুতী শ্যালোয়ার-কামিজ আর একটা কমলা ওড়না পেঁচিয়ে ঘরময় খবরদারি করে বেড়াচ্ছে।

এর মধ্যে একাকী বারান্দায় আধো চাঁদের সখ্যতায় পেঁয়াজ, কাঁচামরিচ, সর্ষের তেলে মাখানো মুড়ি আর চা শেষ করে সন্ধ্যার প্রথম সিগারেটটা ধরালো। সমীক ভাবছিলো হারানো দিনের কথা। অতনুর গীটার, মাহিনের টেবিলে বাজানো তবলা-তুড়ি, কায়েসের দরদী গলায় আবুল হাসান কিংবা জীবনানন্দ, গওহরের জীব্রান পড়ে যাওয়া, সুহৃদের ফাঁকে ফাঁকে শায়ের বলে যাওয়া …। যাঁদেরকে নিয়ে উচ্চকিত থাকা হতো – অর্থাৎ যাঁদের লেখা বা সৃষ্টিকে নিয়ে – তাঁরাও কি এতোটা উচ্চকিত ছিলেন কখনো? জানা নেই কারো। সেইই ছিলো সময়ের সৌরভ – যাপনের ঔজ্জ্বল্য – প্রাণবন্ত দিন যাপনের দীপ্রপ্রভা। সমীক ভাবে আর কিছু না হোক অমন উজ্জল সময়ের স্মৃতিটুকুতো অন্ততঃ আছে। এটুকুই বা ক’জনের থাকে ।

সমস্বর চীৎকারে শায়লা, সৈকত, শৈলী – টানছিলো খাবারের টেবিলে। অকস্মাৎ ইলিশের গন্ধ-স্বাদ মাখা নিঃশ্বাস মনে করিয়ে দিলো প্রিয় স্বাদু খাবারের কথা। বাজার করা – তা নিয়ে ঘরে ফেরা – সন্তানের কলজে জুড়ানো খলবল কলতান। সবচেয়ে মিষ্টি আদুরে ডাক। এতো সবকিছুর মধ্যে যেনো নিয়ন্ত্রণহীন সম্মোহিতের মতোন সমীক এগিয়ে গেলো খাবার টেবিলে। অথচ প্রিয় পদ্মার ইলিশের স্বাদ যেনো সে খুঁজেই পেলো না। ইলিশের ভাজা ডিমের আকর্ষণ টানলো না। মনের মধ্যে এক দুর্বোধ্য অসংলগ্নতা, ক্ষরণ আর দহন; অপূর্ব সম্মিলনে অন্তহীন কোন শোক-সন্ধ্যা-সম্মোহনে ডুবিয়ে রেখেছে তাকে। সমস্ত সুখ-স্বপ্ন লুকোচুরি খেলছে যেনো সত্যের অনেক আড়ালে। সংগোপন বেদনাবিলীন, নীল, সুবিস্তৃত এক ক্যানভাসের আবর্তে। অকস্মাৎ লেবুর একবিন্দু রস চোখে ছিটকে যেতেই সম্বিত ফিরলো সমীকের। স-রি আ-ব্-বু। শৈলীর অপরাধী চোখ বাবার দিকে তাকায়।

চোখ কচলাতে কচলাতে খাওয়ার পাট চুকিয়ে চলে এলো সমীক বারান্দায়। শৈলী চেঁচাচ্ছে। ভাইয়াকে দিলে, আমাকেও আরেক টুকরা ডিম দাও, মা। একটা সিগারেট ধরিয়ে টান দিলো সমীক পরিতৃপ্তির সাথে। শায়লাকে আজ সত্যিই সুন্দর দেখাচ্ছিলো। অনেকদিন পর শাড়ীতে দেখেছে আজ। অফিসে মনে হয় মাঝে মধ্যে পরে যায়। অন্য দিন আগে আগে ফেরে শায়লা। যতোটা পরে ফেরে সমীক তার অনেক আগেই পোষাক পাল্টানো হয়ে যায় শায়লার। আজ সময়ের হের-ফেরে বহুদিন পর শাড়ীতে শায়লাকে দেখা হয়ে গেলো। শাড়ীর প্রতি কেমন যেনো একটা অদ্ভুত দুর্বলতা আছে সমীকের। সম্ভবত সমীকের একার নয়। প্রতিটি পুরুষেরই। অন্ততঃ যেসব দেশের নারীরা শাড়ী পরে সেসব দেশের পুরুষদের। খুব শখ করে একটা নীল শাড়ী কিনেছিলো সমীক। শায়লা পছন্দ করেনি অতোটা। নীল রঙটা অতোটা স্মার্ট কোন রঙ নয় নাকি। অমন নীল – একটু গেঁয়ো গেঁয়ো। এরপরও সমীক শায়লাকে শাড়ী কিনে দিয়েছে। আসলে শায়লা কিনেছে সমীক সাথেই থেকেছে কেবল। আর যাই হোক শাড়ী হচ্ছে মহিলাদের ব্যাপার। অতসব শাড়ীর নাম-ধাম, তাতে কাজের ধরণ-পদ্ধতি, এসব মাথায় রাখা, যুগ সময়-ফ্যাশন এসবের চল বোঝা, বড্ড শক্ত কাজ। শুধু কখনও কখনও কাউকে শাড়ী পরিহিতা দেখে মুগ্ধ চোখে তাকিয়ে দেখতে ভালো লাগে। ঝামেলাহীন, নির্ভেজাল আনন্দ। এর বেশী কিছু বুঝতে বা বলতে যাওয়ার মতোন তত্ত্ব-তথ্য ধারণ করা বড়ই জটিল ব্যাপার। ওসবের চেষ্টায় সমীক যায়নি।

কখনো কোনদিন শায়লা যদি সমীকের জন্য শাড়ী পরে সেজে গুজে বলতো চলো কোথাও থেকে বেরিয়ে আসি। খুব সম্ভবত, গন্তব্য নির্ধারনের মনোশক্তি হারিয়ে নির্বাক বসে থাকতো সমীক। শুধু শায়লাকে দেখতো অপলক। যেনোবা অনাদিকাল। এসব অবাস্তব অনুভূতির কথা শায়লা টের পেয়ে গেছে কি কখনো ! সম্ভবত না। নয়তো কোন একদিন নিশ্চয়ই অকস্মাৎ শাড়ীতে চমকে দিতো সমীককে।

এবারের ঈদে ছোট্ট মেয়ে শৈলীর জন্য একটা শাড়ী কিনেছিলো সমীক। সেকি উচ্ছ্বাস আর উল্লাস। মেয়েটা বড় হলে বাবার পছন্দকে ভালো বলবে কী ! তখনতো আরও বেশী সেকেলে হয়ে যাবে এই সমীক।
কোথাও কেউ একজন গান বাজাচ্ছে। সুন্দর। অনেকদিন এমন সুন্দর বাংলা গান সমীক শোনেনি। আসলে অনেক দিনের চেয়েও বেশী সময় সমীক গানই শোনেনি। হালকা শব্দে অজানা উৎস থেকে ভেসে আসছে না শোনা গানের সুর। খুব ভালো লাগছে। ভালো লাগছে এই সময়টায় আকাশের দিকে তাকিয়ে থাকতে। উদ্দেশ্যহীন দৃষ্টি যেনো সেখানে কিছু একটা খুঁজে বেড়াচ্ছে। নিজেই জানেনা।

~ চার ~

আত্মমগ্নতার একটা সময়ে অকস্মাৎ মনে পড়লো সুস্মিতার কথা। দেখতে দেখতে দেড় যুগেরও বেশী সময় পার হয়ে গেছে। অথচ মনে হচ্ছে এই তো সেদিন। সমীক বলেছিলো শাড়ীতে নীল রঙটা সবচেয়ে পছন্দের। মনে হয় নারীকে আরো রহস্যময়ী – আরো গভীর সুন্দর লাগতে পারে একটা গাঢ় নীল রঙের শাড়ীতে। এরপর বলতে গেলে ভুলেই গিয়েছিলো সমীক এসব সংলাপ। অকস্মাৎ, সুস্মিতা সব রীতি ভেঙে বায়না ধরলো, একটা বিকেল বেড়াবে কোথাও। এর বেশী কিছু কথা হয়নি, যদিও সাতদিন ধরে বলাবলি তবু যাওয়া হয়নি। শেষে একদিন বলতেই হলো – কাল যাবো।

অনেক রাত হলো। এবার ঘুমোতে আসো। মার সাথে সাথে সৈকত আর শৈলীও গলা মেলালো বেশ কবার। সমীক শুধু বলে – আসছি। শায়লার গলা শোনা গেলো। আমি শুয়ে পড়লাম সৈকত-শৈলীকে নিয়ে। তুমি এসো তোমার মতো। রাত জেগে শরীর খারাপ করো না খামোখা। সকালে অফিস যেতে হবে …। শায়লা থামার আগেই শৈলী বললো আ-ব্-বু গু-ত না-ই-ত।

আধো চাঁদের আধো আলো আবার ভাসিয়ে নিতে বেশী সময় লাগলো না। এই ফাঁকে আর-একটা সিগারেট ধরালো সমীক। ধোঁয়া আর চাঁদের আলোর লুকোচুরির মাঝে অকস্মাৎ তার চোখে ভাসলো একটা নীল-মসলিন। অবাক চোখে তাকিয়ে ছিলো। নীল মসলিন। নীল টিপ। খোলা চুল। এই নিয়ে প্রসাধনহীন প্রাণবন্ত একটা মুখ। অনাবিল উচ্ছ্বাস নিয়ে তাকিয়ে আছে। সমীকের সমস্ত ভাষা ছিলো শুধু চোখে। তারপর সারাটা বিকেল ওরা হেঁটে যাচ্ছিলো যেনো মেঘের ভেতর দিয়ে। পথ চলতে চলতে একটা ফুল উঠে এসেছিলো সমীকের হাতে। স্থান করে নিলো সেটা সুস্মিতার খোলা চুলের পাশে। অনভ্যস্ত পদক্ষেপে শাড়ী সামলাতে একটু বেশীই ব্যস্ত ছিলো যেনো। তাই কৌতূহলী সমীককে শান্ত করে বললো, মা’র মসলিন। লুকিয়ে পরে এসেছি। ঠিক তখুনি আড়ষ্ট পা দুটো থমকে গেলো সুস্মিতার। কোথায় যেনো বেঁধে ফড়্ড়ড় করে ছিঁড়ে গেলো শাড়ীটা। খুঁজে পাওয়া গেলো, পায়ের কাছে পাড়ের খানিকটা ছিঁড়ে গেছে কিছু একটায় বেঁধে। অগত্যা বসে পড়তে হলো সহসাই। শান্ত পানির একটা পুকুর পাড়ে। নীরবতাই ছিলো সেখানে অধিকাংশ সময়ের কথোপকথন। তবু যেনো এক অন্তহীন সংলাপ। চললো সন্ধ্যার সীমানা পর্যন্ত। শাড়ী ছিঁড়ে কষ্ট পেলো সুস্মিতা। মা’র প্রিয় শাড়ী। অমন শাড়ী সবারই প্রিয় হওয়ার কথা। অথচ দিব্যি নিশ্চিন্ত। হাসিমুখে চলে যাবার আগে সেই ছিঁড়ে যাওয়া ছোট্ট এক টুকরো স্মৃতি সমীকের হাতে তুলে দিয়ে গেলো। সুস্মিতা এমন করেই তৈরী করেছিলো প্রিয় শাড়ী, প্রিয় রঙ, প্রিয় মানুষের মাঝে নিকষিত চির সৌন্দর্য উন্মোচনের সুবর্ণ সময়। স্মৃতি। যা বোধকরি আজো পূর্ণ করে আছে তার আকাঙ্খার ভিখিরি পাত্র, কানায় কানায়।

শাড়ীতে সুন্দর সাজলে শায়লা, সমীক দেখে। অন্যরা প্রশংসা শোনায়। সমীক শুধুই দেখে। শাড়ীতে শায়লাকে ভালো লাগে খুব। শায়লা জানে। সমীক বোঝে। কেউ প্রশংসা করলে শায়লা আরো উৎসাহী হয়। আবারও কোনদিন শাড়ী পরে। যার প্রশংসা পেলো, তাকে আবারও দেখাতে চায়। এমনটা সম্ভবতঃ সব নারীরই পছন্দ। এমনটা সম্ভবতঃ সব মানুষেরই জানা সত্য। সমীক বোঝে। শুধু শায়লা জানেনা, শাড়ীতে শায়লাকে সমীকের কতোটা ভালো লাগে। সমীক যে কেবলি বলেছে চোখে – ব্যস্ত শায়লা শোনে সবই, শুধু দেখবার ফুরসত হয় না কখনও।

সে’ই ভালো। তাকাতো কখনো যদি সমীকের চোখে, হয়তো আহত হতো। যখন দেখতো সমীকের আকাঙ্খার পাত্র কানায় কানায় পূর্ণ হয়ে গ্যাছে, সেই কবেই। এটুকু বুঝতে পারলে, শাড়ীতে সুন্দর শায়লাকে মাঝে মধ্যে এভাবে দেখার সুযোগ আর যারই হোক, সমীকের হতো না কখনোই।

কিংবা একটা নীল মসলিন হয়তো কোন একদিন শায়লা পরতেও পারে। লুকিয়ে পরা মা’র শাড়ী নয়। হয়তো … অন্য … কারো … । সেদিন কেমন দেখাবে শায়লাকে ! হয়তো কেউ জানবে …। যে জানবে, শুধু সেই জানবে। হয়তো সমীক জানবেনা …। মানুষ জানে না ভবিষ্যৎ।

২০০ বড় মগবাজার, ঢাকা ১২১৭
২৮ ফেব্রুয়ারী ২০০৩
[ প্রকাশিত ]

১,৭৭১ বার দেখা হয়েছে

১৬ টি মন্তব্য : “নী ল ম স লি ন”

  1. সাইদুল (৭৬-৮২)

    মানুষের জীবনে যে কত গোপন কুঠুরি!
    সমীকের অন্তর্জগতে পৌছাতে অনেক সময় লাগলো। সেই হীল পরা পায়ের হাটা দেখতে দেখতে নীল মসলিন অব্দি কত কিছুইনা , চোখে ভাসলো।


    যে কথা কখনও বাজেনা হৃদয়ে গান হয়ে কোন, সে কথা ব্যর্থ , ম্লান

    জবাব দিন
  2. লুৎফুল (৭৮-৮৪)

    গদ্যগুলো বড় হয় বলে পোস্ট করতে খুব ইতস্তত করছিলাম। করে ভয়ে ভয়ে ছিলাম। ব্যস্ততার মাঝে কেউ পড়বে তো ?
    সময় নিয়ে পড়ে মতামত দিয়ে সাহস যোগানোর জন্য অনেক ধন্যবাদ সাইদুল ভাই। (সম্পাদিত)

    জবাব দিন
  3. নূপুর কান্তি দাশ (৮৪-৯০)

    এ গল্পটি পড়ি ঘণ্টা দুয়েক আগে গ্রোশারি শপের ভেতরে দাঁড়িয়ে, একপ্রকার ঘোর দ্বারা আক্রান্ত হতে হতে। লিস্ট মিলিয়ে সদাই শেষ করার দায়িত্ব কি করে যেন গিন্নীর হাতে চলে গেছে।
    এই যে কয়েকজন নারী --- তাদের শাড়ি -- বিভঙ্গ -- সব কেমন সেলুলয়েড কি নদীর মত বয়ে গেল চোখের সামনে। সে মুহূর্তগুলোকে ছুঁতে ইচ্ছে করল, জড়িয়ে ধরতে মন চাইল। হঠাত মনে হল Amazon এ গিয়ে কারো জন্যে মিছেমিছিই নীল শাড়ির খোঁজ করি। শাড়ির তবু কিছুই বুঝিনা --- কেবল বুঝি সেই জড়িয়ে থাকাটুকু, সেই সুষমাটুকু।

    কিছু বানান -
    সুষমা। হ্রস্ব উকার
    ঔজ্জ্বল্যে
    উচ্ছ্বাস
    তাঁরাও কি এতোটা উচ্চকিত ছিলেন কখনো?

    একটি আদ্যোপান্ত চারুগল্প। নীল মসলিনের মতোই। ঘোরের মধ্যেই পড়া শেষ করেছি না থেমে। ঘোর কাটেনি --- কিছুক্ষণ থাকুক। শেষ বাক্যে এসে বাক্যহারা হলাম (সম্পাদিত)

    জবাব দিন
  4. লুৎফুল (৭৮-৮৪)

    কিছুদিন ধরে পুরোনো সব লেখা জড়ো করতে গিয়ে আবিষ্কার করলাম গদ্যগুলোর সফট কপি নেই একটাও।
    পুরোনো ল্যাপটপটার সাথে সব গিয়েছে। অবশ্য প্রায় সব লেখারই মুদ্রিত একখান কপি বাসায় আছে ছড়ানো ছিটানো। কিন্তু সেগুলোকে আবার কম্পোজ করবে কে ! এর মধ্যেই অফিসের এক পিসিতে আবিষ্কার হলো। যে ছেলেটাকে দিয়ে আগে কম্পোজ করাতাম তার পিসি।

    কিন্তু পড়ে নিজেরই যেনো ঠিক মনে হচ্ছিলো না, তেমন কোনো গভীরতা আছে লেখায়। তবু নিজের পুরোনো লেখা বলে কথা। ভাবলাম দেই সিসিবিতে বা রোদ্দুরে। দিয়েই মনে হলো এতো বড় লেখা পড়বার সময় বা ধৈর্য না হবারই কথা পাঠকের।

    তবু যারা পড়বে তাদের জন্য এক সমুদ্দুর কৃতজ্ঞতা।

    তোমার মতামত পাবার অপেক্ষায় ছিলাম। যেভাবে পড়ার কথা বললে তাতে হাজার গল্প লেখার প্রেরণা পেলাম। আর বানান বিভ্রাটগুলো দেখিয়ে দেবার জন্য বরাবরের মতো রুটিন ধন্যবাদ।

    কি কে কী লেখাটা আমার বদ অভ্যাস। তবে প্রশ্ন বোঝাতে। সেই তালে ছিলো। বাকীগুলো আমার চোখে পড়েনি চিরাচরিত ভাবে। উচ্ছ্বাস টা যেমন এখনো খুঁজে পাচ্ছিনা। আর একবার দেখে পরে শুধরাবো।

    তাহলে শেষমেষ কি মত দেবে ! গল্প কি পোস্ট করবো আর!

    জবাব দিন
  5. মোস্তফা (১৯৮০-১৯৮৬)

    এত চমৎকার! বুননে, শব্দচয়নে, ভাষার সূক্ষ্ম কারুকাজে, মননের পরিশীলনে, অন্তর্জগতের গোপন দীর্ঘশ্বাসকে সযতনে-সন্তর্পণে আস্তে-ধীরে বের করে নিয়ে আসার কৌশলে! বিমুগ্ধ ঈর্ষা!
    খুব খুঁটিয়ে খুঁটিয়ে পড়ব বলে এতদিন পড়িনি। আজ ছুটির দিন, আয়েশ করে পড়লাম ও যথারীতি চমৎকৃত হলাম।

    বছরের এই সময়ের কোন দিনে এমন খরতপ্ততা>খরতাপ(ভুল প্রয়োগ) কিন্তু খরতপ্ত সূর্য (শুদ্ধ প্রয়োগ)
    স্মৃতিতে>স্মৃতি হাতড়ে পাওয়া গেলো না কিছুতেই।
    কিছুক্ষণ হলো>ধরে সমীক হাঁটছে।
    অছন্দবদ্ধ>ছন্দহীন চীৎকার
    একটা মুক্তোদানা গড়ার অপেক্ষায়>অভীপ্সায় অগ্রসরমান।
    'মহিলা' না লিখে 'নারী' অধিকতর মানানসই।
    না হয়>হলে, মনে এতোটা দাগ কাটলো কি করে?
    সমস্ত সুখ-স্বপ্ন সত্যতার>সত্যের অনেক আড়ালে।
    কেমোন>কেমন
    উপলদ্ধি>উপলব্ধি
    কতোক্ষণ>কতক্ষণ (যেসব শব্দে ও-কার ব্যবহার না করলে অন্যকোন শব্দ বলে ভ্রম হতে পারে শুধু সেখানেই ও-কার ব্যবহার করা ভাল। যেমনঃ মত>মতো)
    যেনো>যেন
    ক্ষেপনায়>ক্ষেপণে
    আটপৌড়ে>আটপৌরে
    কী>কি (কী সুন্দর!--সৌন্দর্যের মাত্রা বোঝাতে, কি সুন্দর?--সুন্দর কি না সেটি জিজ্ঞেস করতে।)
    আকর্ষনীয়া>আকর্ষণীয়া
    ঘন্টা>ঘণ্টা
    নৈঃশব্দে>নৈঃশব্দ্যে অথবা নিঃশব্দে
    স্বতস্ফুর্ত>স্বতঃস্ফূর্ত
    উজ্জল>উজ্জ্বল
    নির্ধারনের>নির্ধারণের
    উচ্ছাস>উচ্ছ্বাস
    কৌতুহলী>কৌতূহলী
    উন্মেচনের>উন্মোচনের (সম্পাদিত)


    দেখেছি সবুজ পাতা অঘ্রানের অন্ধকারে হতেছে হলুদ

    জবাব দিন
    • লুৎফুল (৭৮-৮৪)

      অনেক অনেক ধন্যবাদ মোস্তফা । তোমাকে কুর্ণিশ ।
      আমি এই একটা ব্যাপারে কিছুতেই ঠিক হয়ে আসতে পারবো না কোনো দিন ।
      পুরোনো লেখাটা পেয়ে শুধু কনভার্ট করবো বিজয় থেকে অভ্রতে, তাতেই খেয়েছি কয়েক দিন ।
      বেশ কটা জিনিস আমার নিজেরই সংশোধন করা উচিত ছিলো পোস্ট করার আগে ।
      চিরাচরিত ভাবে করিনি । যদিও একটা 'ব'ফলা কেবল চোখে পড়েছিলো মিসিং পোস্ট করবার পর পর ।
      ওকারগুলো ইচ্ছাকৃতভাবে দেয়া । বাকীগুলো ভুল বা টাইপো সংশোধন করতে হবে ।
      নাহ ! এর পর থেকে চোখ খুলে একটু দেখতে হবে । এতো ভুল থেকে গেলে তো পাঠকের যন্ত্রণা ।

      আগের এই লেখা পড়ে এখন নিজেই এখন তুষ্ট হচ্ছি না । তবুও যে ভালো লাগছে বলছো । তাতে বিচলিত হচ্ছি কিছুটা ।
      যাহোক । আবারো অনেক ধন্যবাদ । সব ফিডব্যাকের জন্য ।

      জবাব দিন
  6. সাবিনা চৌধুরী (৮৩-৮৮)

    🙂 🙂 🙂 🙂

    নীল মসলিন শাড়িটি নয় আমি খুঁজে ফিরছিলাম হ্যাংগারটির মনের গলিঘুপচি! দেরীতে হলেও একটানে পড়লাম। গল্প ভাল লেগেছে, ভাইয়া। আরো পড়তে চাই।

    জবাব দিন
  7. খায়রুল আহসান (৬৭-৭৩)

    চমৎকার একটা গল্প পড়লাম, লুৎফুল। তুমি সব্যসাচী, চালিয়ে যাও দুহাতেই, গল্প আর কবিতা লিখে।
    মেয়েদের শাড়ী, শাড়ী প্রীতি আর শাড়ী সজ্জা নিয়ে আমিও মাঝে মাঝে obsessed হই। এ নিয়ে কয়েকটা কবিতাও লিখেছি। আগামীতে কোন একসময়ে এখানে প্রকাশের আশা রাখছি।

    জবাব দিন
    • লুৎফুল (৭৮-৮৪)

      অনেক অনেক ধন্যবাদ খায়রুল ভাই ।
      আপনার মন্তব্যে একাধারে লজ্জিত, গর্বিত ও অনুপ্রাণিত ।
      জানিনা যতোটুকু প্রশংসা আর সাধুবাদ পাচ্ছি আদৌ সেইমতো লেখাটা হয়েছে কিনা ।
      সাহসটা পেয়ে যাচ্ছি বটে, আগামীতে আরো জ্বালাতনের ।
      আপনার লেখাগুলো বরাবরই একটা শান্ত সৌম্য আবহের মাঝে কথার ফুল ফুটিয়ে রেখে যায়।
      অপেক্ষায় থাকলাম আপনার সেই লেখাগুলো পড়বার ।
      আবারো ধন্যবাদ ভাই ।

      জবাব দিন

মওন্তব্য করুন : মোস্তফা (১৯৮০-১৯৮৬)

জবাব দিতে না চাইলে এখানে ক্লিক করুন।

দয়া করে বাংলায় মন্তব্য করুন। ইংরেজীতে প্রদানকৃত মন্তব্য প্রকাশ অথবা প্রদর্শনের নিশ্চয়তা আপনাকে দেয়া হচ্ছেনা।