~ প্রেম প্রণয় যদাপি দীপ্য বহমান | জীবন ঋতি নিয়ত ঋদ্ধিমান – তিন ~

কিন্তু সেই পেরে ওঠা আর কখনো হয় না … … …

আমাদের চারপাশে অগণন আকাঙ্ক্ষার দীর্ঘ তালিকা । এর মাঝে কিছুই চাই না আমি বাদ দেবো । এই ইঁদুর দৌড়ে এতোটাই মগ্ন আমরা যে তাতে আমাদের মনের গহীনের সুকোমল অংশটুকুকে যার পর নাই অনায়াস গ্রাস করে নিচ্ছে অদৃশ্য এক এথলেটিক ট্র্যাক । আমাদের অজান্তে । কিংবা কখনো কখনো আমাদের সাগ্রহ সমর্পণে ।

এই প্রাপ্তির লাগামহীন তেষ্টা সারাক্ষণ অন্তর্গত আবেগ ও সুকুমার অনুভূতিগুলোকে দাবড়ে হটিয়ে দিচ্ছে জীবনের মঞ্চ থেকে । আর অনবধানে ভালো লাগার জলরঙ ছবি আঁকবো বলে কখনো তুলে নিচ্ছি তেল রঙ ইজেল ক্যানভাস । তেল রঙের জন্য জল-রং-কাগুজে বাহার। প্রস্তর নিয়েছি হাতে মার্বেল সমান, তাতে গড়া যাবে কতোটা ভাষ্কর্যের আসমান ! তারপর বিহবলতায় বিদ্যুতস্পৃষ্ট মৃত কাঠের মতোন চলছে বাকীটা জীবন ।

অথচ তখনো বুকের ভেতর স্বপ্ন ওই মরা কাঠে একদিন হঠাত গজিয়ে উঠবে সবুজ পাতা । সেখানে মুগ্ধ-বিমোহিত করবে ভীষণ উজ্জ্বলবর্ণ চেনা কিংবা অচেনা কোনো ফুল ! হায় ! স্বপ্নবিদ্ধ লাশের মিছিলে ভাসছে যেনো প্রিয় জল ও জঙ্গল, রাতারগুল !!!

কী আশ্চর্য হন্তারক সময় । ভালোবাসার জন্যে আজ আর এতোটুকু হয়না ব্যাকুল ! বিনিময় বানিজ্যের হিসেবের মারপ্যাঁচ কলেজ বিশ্ববিদ্যালয়ের বই কিংবা পরীক্ষার খাতার সীমানা ডিঙ্গিয়ে অনায়াসে ঢুকে গেছে যেনো আজ মনুষ্য মস্তিষ্কের প্রকোষ্ঠে প্রকোষ্ঠে ! নিপূণ নির্মাণ করে যাচ্ছে অলৌকিক এক মর্মন্তুদ রক্তপাতহীন জীবন বিনাশের তূণ । এখানে এতোটাই আকাল তোমার, হে জীবন ! হে সৃষ্টিশীল প্রাণবন্ত ভ্রুণ !

আমাদের চারপাশে দ্বিধা । পায়ে ও আষ্ঠে পৃষ্ঠে শিকল । আমরা ভাবি নিরন্তর কিন্তু জলে ভিজবার লাগি পারি না যেতে শ্রাবণ সখ্যতায় । আমরা স্বপ্ন দেখি অবিরাম … অথচ জোছনা মাখতে কখনো নামিনা মাঠের মগ্ন নগ্নতায় ! আমাদের স্বপ্নের কাছে পৌঁছুতে আমাদেরই তীব্র বিবমিষা । সম্ভাবনার স্বপ্ন ফ্রেমে সেঁটে তুলে রাখি তাকে ফ্রিজে ও ফ্রিজারে । জল ও জীবন নদীর স্রোতধি পরিভ্রমনের পাড়ে … স্থবির কিনারে …

তখনো বদ্ধমূল । জীবন আমার ফ্রেমে বাঁধাই প্রেম ও বোধের যাপনেরে নিশ্চিত কোনো দিন পৌঁছে দেবে সব স্বপ্নের কাংখিত মিনারে ।
অথচ এই আমি কখনো হাত ধরে বলিনি । বলিনি কথাটা আজো ! যদি শুনে ফেলে কেউ … আর ভাবে কি আহাম্মক ব্যাটারে !!!

এইভাবে অবিরাম চলতে থাকে নিজের সংগে প্রতারণার পর্ব এক পর্ব দুই থেকে পর্ব অনন্ত ! মন যখন আকুলি বিকুলি করে করে খুঁজতে থাকে প্রেম, তার হাতে সন্তর্পণে ধরিয়ে দেয়া হয় নানান সম্ভাবনার ফ্রেম ! ব্যাস ! জীবন তো মামুলি ! এক হাতের কড়ায় গোনা যায় এক কুড়ি !
ধুত্তুরি !!!!!!!

[ লেখার সময়কাল ~ ১৪ সেপ্টেম্বর ২০১৪ | প্রথম প্রহর ]

২,১৬২ বার দেখা হয়েছে

১৯ টি মন্তব্য : “~ প্রেম প্রণয় যদাপি দীপ্য বহমান | জীবন ঋতি নিয়ত ঋদ্ধিমান – তিন ~”

  1. পারভেজ (৭৮-৮৪)

    বেশির ভাগ মানুষের ক্ষেত্রেই ঘটনা সত্যি।
    করি করি করেও করা হয় না অনেক কিছুই। তারপরেও, আসলেই কি করা হয় কিছুই?
    এতকিছুর মাঝেও কেউ কেউ কিন্তু করে অনেক কিছুই। বেশ আয়েশ করে, ধীরে সুস্থে, জাকিয়েই করে অনেক কিছুই।
    হয়তো এইজন্যই ওগুলোর কৃতিত্ব তাই একটু বেশীই......

    ভাল লেগেছে, পড়তে......


    Do not argue with an idiot they drag you down to their level and beat you with experience.

    জবাব দিন
  2. সাবিনা চৌধুরী (৮৩-৮৮)

    🙂 🙂 🙂 🙂

    ঠাসবুননে লেখা আপনার, ভাইয়া! গল্প, নাকি কবিতা অথবা অন্যকিছু..কোনটিই মাথায় আসেনা। মনে হলো আমার ভাবনাগুলো কি করে আপনি যেন চুরি করে লিখে দিলেন নিপুণ আঁচড়ে! (সম্পাদিত)

    জবাব দিন
    • লুৎফুল (৭৮-৮৪)

      প্রথমটার পরে বাকীগুলো আকস্মিক সিদ্ধান্তে দিনের পর দিন লিখে যাবো ভেবে লিখেছি ...
      ফেবু স্ট্যাটাস হিসেবে রাথমিক প্রকাশ বলে কাট করার প্রবণতাটা প্রবল ছিলো ...
      সেটাই কাজে লেগে গ্যাছে ।
      আর হ্যা মানুষের মনের মধ্যে ঘুরে বেড়াবার বদ অভ্যাস আমার সেই ছোটোবেলা থেকে ...
      সেই রকম একটা সর্বাংগীন ব্যক্তিস্বত্ত্বার অবয়বে কথাগুলোকে ফেলতে চেয়েছি ।
      এই যা ... মন্তব্যে কিয়দ সাফল্যস্ফীত হলাম ...
      আর আমার গদ্যে কবিতার এক রকম প্রভাব মনে হয় সব সময় থেকে যায় ।
      পরে নিরেট কিছু ছোটো গল্প পোস্ট করবো । সেখানে এর প্রভাব কতোটা দূরে রাখতে পেরেছি সে মতামত পেলে ... যাচাই বাছাই পর্বটা পূর্ণ হবে ।
      এখানে নিশ্চিত ভাবে কাব্য প্রভাব প্রবল । আর আবেগ প্রাধান্য বজায় রাখতে এটাকে সচেতন ভাবেই প্রশ্রয় দিয়েছি ।
      🙂 🙂

      জবাব দিন
  3. খায়রুল আহসান (৬৭-৭৩)

    "মন যখন আকুলি বিকুলি করে করে খুঁজতে থাকে প্রেম, তার হাতে সন্তর্পণে ধরিয়ে দেয়া হয় নানান সম্ভাবনার ফ্রেম" - চমৎকার বলে্ছো এ কথাগুলো! ভাবনাগুলো অনবদ্যরূপে প্রস্ফূটিত হয়েছে কী বোর্ডের টোকায় (স্মার্টফোন হলে ছোঁয়ায়)!

    জবাব দিন
  4. সাইদুল (৭৬-৮২)

    আমাদের চারপাশে দ্বিধা । পায়ে ও আষ্ঠে পৃষ্ঠে শিকল । আমরা ভাবি নিরন্তর কিন্তু জলে ভিজবার লাগি পারি না যেতে শ্রাবণ সখ্যতায়

    আহারে! এই তিনটি লাইন যদি আমি লিখতে পারতাম!


    যে কথা কখনও বাজেনা হৃদয়ে গান হয়ে কোন, সে কথা ব্যর্থ , ম্লান

    জবাব দিন

মওন্তব্য করুন : লুৎফুল (৭৮-৮৪)

জবাব দিতে না চাইলে এখানে ক্লিক করুন।

দয়া করে বাংলায় মন্তব্য করুন। ইংরেজীতে প্রদানকৃত মন্তব্য প্রকাশ অথবা প্রদর্শনের নিশ্চয়তা আপনাকে দেয়া হচ্ছেনা।