আমরা আর লিখিনা

সিসিবি তে অনেকদিন লিখা হয় না। জানিনা কেন। এমন না যে অন্য কোথাও লিখি। লিখি ই না। পড়ি ও না কোন বই। হয়তো কোন সম্পর্ক আছে দুটোর মধ্যে।
আমার আজকাল ওপাড়ের জীবন টা কে মনে পড়ে। আজ একটা কনফারেন্স এর অর্গানাইজার ছিলাম। ৬-১২ এর বাচ্চাদের কনফারেন্স। ওদের মধ্যে কি তীব্র আগ্রহ! কি নির্ভীক!! সব ভেঙ্গেচুরে শিখরে উঠে যাবার কি তীব্র উদ্যম!!! আর সবথেকে বড়… কি নিশ্চিন্ত ওরা! জীবন টা অদের চোখে কতই না সোজা!!!
ওই বয়সটা আমার কেটেছে ক্যাডেট কলেজে। আর আমি আকাশ ছোঁওয়ার স্বপ্ন দেখতাম দু চোখ ভরে।
আমারো মনে হোত আকাশটা খুব দূরে না।। হাত বাড়ালেই ছোঁওয়া যায়।
আজকাল আর তা মনে হয়না। বাস্তবতায় বাস্তবতাময় হয়ে উঠেছি, জানি আসলে জীবনটা কেমন। জীবনের ভয়াবহ তম দিনগুলিতে যখন একা হয়ে পড়লাম আরো বুঝেছি। আরো বড় হয়েছি, আর বাস্তবমুখী হয়েছি।
খুব ভয় করে ভাবতে। এই যে জ্বলজ্বলে চোখমুখ গুলো, ছোট ছোট হাতে আকাশ ছোঁয়ার স্বপ্নগুলো, এগুলোও কি হারিয়ে যাবে? এরাও কি বাস্তবতায় হারিয়ে যাবে??

নানান লড়াই রোজ। যোগ্যতা প্রমানের লড়াই, টিকে থাকার লড়াই, ভালোবাসা পাবার লড়াই, প্রিয় মুখ গুলোকে ধরে রাখার লড়াই…
দুঃখ না পাবার লড়াই। হার না মানার লড়াই। ঘুরে দাঁড়ানোর লড়াই।
এই রোজকার লড়াই আমায় ক্লান্ত করেনা মোটেই। রোজ সকালে আমি আয়নায় নিজেকে বলি আমি পারি, আমি সব পারি! দিনটা সুন্দর, যদি আমি ভাবি সুন্দর।
মাঝে মাঝে ভাবি, মানুষ কত কিছুই না ভয় পায়! সুন্দরী মেয়েরা তেলাপোকা ভয় পায়। দূর্বল ভয় পায় সবলকে। স্বপ্নগুলো আমার বাস্তবকে ভয় পায়।
কেউ আগুন ভয় পায়। কেউ মৃত্যু ভয় পায়। অজানা কে সবাই ভয় পায়।
অথচ আমরা কেউ ভাবি না যে ইএ সবকিছুর চেয়ে কতো বেশি ভয়ঙ্কর জীবন! জীবনে প্রতিটা দিন আসে সব সব শঙ্কা নিয়ে, অনিশ্চয়তা নিয়ে। অথচ আমরা কিভাবে নির্বিকার রোজ বাঁচি, জীবনের দিকেই এগোই, জীবনকেই ধারন করি।

আমি জানিনা আমি কেন আর লিখিনা। আমি জানিনা আমি কেন আর গুছিয়ে নিতে পারিনা নিজের চিন্তাগুলো।

এখন তো মাথার উপর মুক্ত আকাশ। অফুরন্ত সময়। উজ্জ্বলতম নক্ষত্র গুলোকে হার মানানোর দৃঢ়তা। তবে আজ পারিনা কেন মনের কথা গুলো অকপটে বলে ফেলতে?

বাস্তবতা। জীবন। ভয়ঙ্কর লাগে আজকাল সব।

১,৩৭৮ বার দেখা হয়েছে

১৩ টি মন্তব্য : “আমরা আর লিখিনা”

  1. রাজীব (১৯৯০-১৯৯৬)

    সুন্দরী মেয়েরা তেলাপোকা ভয় পায়।

    তেলাপোকা ভয় পাবার সাথে সুন্দরের সম্পর্ক আছে জানতাম না। B-)


    এখনো বিষের পেয়ালা ঠোঁটের সামনে তুলে ধরা হয় নি, তুমি কথা বলো। (১২০) - হুমায়ুন আজাদ

    জবাব দিন
  2. মোকাব্বির (৯৮-০৪)
    তেলাপোকা ভয় পাবার সাথে সুন্দরের সম্পর্ক আছে জানতাম না।

    ;)) ;)) স্টেরিওটাইপিং। জানতে অজানতে স্টেরিওটাইপিং


    \\\তুমি আসবে বলে, হে স্বাধীনতা
    অবুঝ শিশু হামাগুড়ি দিল পিতামাতার লাশের ওপর।\\\

    জবাব দিন
  3. আসিফ খান (১৯৯৪-২০০০)

    লুবজানা@ লেখার বন্ধ্যাত্ব যে ঘুচেছে সেতো এ লেখাতেই প্রমানিত 🙂 আর লিখতেই হবে হবে সে দিব্যি তোমাকে কে দিয়েছে? আর হয়তো কাজ দিয়েই নিজেকে প্রকাশিত করছ তাই লেখার জন্য যথেষ্ট উদ্দীপনা তৈরী হচ্ছেনা। কেউ জীবনকে লেখা দিয়ে ছোয়, কেউ কাজ দিয়ে, কেউ স্বপ্ন দিয়ে, এমনকী কেউ কেবলই দ্বিধা দিয়ে, সে যার যার ধরন। নিজের ধরনটা সত্যিই খুজে পেলে তো সবই পাওয়া হবে!! ( তবে লেখালেখি যদি না থাকে তবে নতুন চিন্তার উম্মেষ কেমনে হবে? তাই যা পার, যতটুকু পার লেখো, লিখতে থেকো)

    জবাব দিন

মওন্তব্য করুন : জিহাদ (৯৯-০৫)

জবাব দিতে না চাইলে এখানে ক্লিক করুন।

দয়া করে বাংলায় মন্তব্য করুন। ইংরেজীতে প্রদানকৃত মন্তব্য প্রকাশ অথবা প্রদর্শনের নিশ্চয়তা আপনাকে দেয়া হচ্ছেনা।