অসুখের ছবি-

এবারে একেবারে জমকালো ঠাণ্ডা পড়েছে মেলবোর্নে।
এইটুকু লিখে মনে হলো, প্রতি বছরই কি এরকমই লিখি? নাকি এবারের ঠাণ্ডা আসলেই অনেক বেশি?
প্রতি বছরই মনে মনে প্রস্তুত থাকি, বছরে এক সপ্তাহ সর্দি-কাশি লাগিয়ে বসে থাকবো বাসায়। রুটিনের মত করেই। এবং ব্যস, ওই একবারই। তারপরেই আবার পুরো বছরের জন্যে মুক্তি।
কিন্তু এবারের ঠাণ্ডা আমাকে ভালোই বাগে পেয়েছে। মাসখানেক আগে সোনামুখ করে সপ্তাহখানেক সর্দি জ্বরে ভুগলাম, বাৎসরিক রুটিন শেষের পরে যখন ভালো হয়ে গেলাম, গা ঝাড়া দিয়ে উঠে ভাবলাম, আহ, কি শান্তি।
কিন্তু এই সপ্তাহ দুয়েক আগেই আবার হঠাৎ কী হলো, দেখি নাকের ভেতরে বাতাসের সুড়সুড়ি, কপালে হাল্কা গরমের আভাস। আমাকে আশ্চর্য করে দিয়ে জ্বর ব্যাটা এই এক বছরেই দ্বিতীয়বারের মতন এটাক করে বসলো আমাকে!
এটা একেবারে যাকে বলে, খুব খারাপ হলো।
কুমিল্লায় রিকশা চড়লে একসময় রিকশাওয়ালা মামারা ভাড়ার কথা বলতে গেলেই শোনাত, মামা, ইনসাফ করে দিয়েন।
রিকশা থেকে নেমে ভাড়া যত বেশিই দিতাম না কেন, তাদের করুণ চোখ দেখে সর্বদাই মনে হতো, ব্যাপক না-ইনসাফি করে ফেলেছি!
আমি এখন একই চোখ করে কোল্ড এন্ড ফ্লু-র দিকে তাকিয়ে আছি, ব্যাটা, তাই বলে দ্বিতীয়বার! একেবারে না-ইনসাফি হয়ে গেলো না আমার সাথে?

অসুখে পড়লে আমি একটু ঝিম মেরে যাই। জ্বর থাকলে বিছানায় শুয়ে বসে বই পড়ে কাটিয়ে দিতে হয়।
এবারেও তাই করছিলাম। পরে ভাবলাম দেখি অন্য একটা কাজে লাগানো যায় কি না সময়টা।
নতুন একটা এপ নামিয়েছি আইপ্যাডে, Procreate নাম, দুর্দান্ত যাকে বলে। অনেক ভালো সব ফিচার, কিন্তু দাম সে তুলনায় একেবারেই সস্তা।
সেই প্রোক্রিয়েট দিয়ে শেষমেশ একটা ছবি এঁকে ফেললাম। একেবারেই বেসিক টুলস। আমার বহু বছরের পুরনো আইপ্যাড, সাথে একই পুরনো ওয়াকম স্টাইলাস, কোন প্রেশার সেনসিটিভিটি নেই। তবু আঁকতে গিয়ে মজাই লাগলো।

এটাকে আমি মনে মনে নাম দিলাম, অসুখের ছবি।

পুনশ্চঃ প্রোক্রিয়েট আবার পুরো প্রসেসটাকে ভিডিও হিসেবে এক্সপোর্ট করতে দিচ্ছে। সেটা দিয়ে দিলাম এখানে। ভিডিওর পেছনে গান গাইছে তিথি আর FCC-এর মহিবুল কবির। দুজনই দারুণ শিল্পী, ইউটিউবে ওদের আরো বেশ কিছু গান রয়েছে, আগ্রহীরা শুনে দেখতে পারেন।

৬,২৩০ বার দেখা হয়েছে

২ টি মন্তব্য : “অসুখের ছবি-”

  1. জিহাদ (৯৯-০৫)

    অসুখের কারণে ব্লগ লিখে একটা ইনসাফি কাজ তো হইলো। ভালোই আছেন তাইলে। মহিব এবং আপনি - দুজনই বেঁচে আছেন জেনে ভালো লাগলো।

    গানের ভোকালটা আসলেই ঠিক ঠাক শোনা যাচ্ছেনা। বাজনাটা বেশি শোনা যাচ্ছে।


    সাতেও নাই, পাঁচেও নাই

    জবাব দিন

মওন্তব্য করুন : জিহাদ (৯৯-০৫)

জবাব দিতে না চাইলে এখানে ক্লিক করুন।

দয়া করে বাংলায় মন্তব্য করুন। ইংরেজীতে প্রদানকৃত মন্তব্য প্রকাশ অথবা প্রদর্শনের নিশ্চয়তা আপনাকে দেয়া হচ্ছেনা।