টিউবলাইট ছ্যাঁকা- দ্য নিউ মুনমুন

এম্নিতে আজগুবী সিনেমা আমি ব্যাপুক ভালু পাই। ধুমধাড়াক্কা সাই ফাই থিয়েটারে আসলে আমি নিয়মিত দেখি। আর ভুত-প্রেত-ভ্যাম্পায়ার থাকলে তো কথাই নাই! রাতের বেলা ঘর অন্ধকার করে ভুতের মুভি দেখার মজাই আলাদা।
শেষবার সিরিয়াসলি ভয় পেয়েছিলাম হিন্দি একটা মুভি দেখে, নাম ছিলো বাস্তশাস্ত্র। আমি তখন ডারবানে থাকি, ইউনিভার্সিটির ছুটি চলছিলো তখন। পুরো হলে আমি ও আমার মতন আরও দু’চারজন ভিনদেশী অভাগা ছিলাম শুধু, যাদের যাওয়ার কোন জায়গা নাই। সেই সময়ে বোকার মত এই সিনেমা নিয়া আসলাম দেখার জন্যে! দেখা শুরুর পরে ভয়ে নড়তে চড়তে পারি না, জানালার দিকে তাকালেই ভয়ে জান উড়ে যাচ্ছিলো। সারারাত লাইট জ্বালিয়ে রেখে ঘুমালাম।

সম্প্রতি আরেকটা মুভি দেখেও ভয় পেয়েছি। এইটার নাম চন্দ্রমুখী- তামিল সিনেমা। ঘটনা হচ্ছে, আমি আর আমার বউ দেখছিলাম ভুলভুলাইয়া। শ্রেয়া ঘোষালের মারাত্মক একটা গান আছে এই সিনেমায়, আমি যে তোমার- ওইটার আমরা দুইজনই ব্যাপক পাংখা। তবে গানটায় বিদ্যা বালনরে হেব্বি মেকাপ দেয়া হইছে, দেখলেই ভয় লাগে।

একবার হইলো কি, আমি অফিসে, হুট করে দেখি বউএর ফোন। আমি বললাম, কী হইছে? দেখি বউ এর গলা প্রায় কান্না কান্না। কাহিনি হচ্ছে, বউ কম্পিউটারে -আমি যে তোমার- গানটা ছেড়ে দিয়ে কিচেনে গেছিলো কী একটা কাজে, এখন ভয়ে আর রুমে ঢুকতে পারতেছে না, কারণ ওই রুমে গানটা বাজতেছে! আমি শুইনা পুরাই টাস্কি! পরে বুদ্ধি দিলাম, কোনমতে কান চাপা দিয়া গানটা শেষ হওয়া পর্যন্ত এই রুমেই কাটিয়ে দে, শেষ হলে পরে ঐ রুমে যাস।
ও তাই করছিলো।

তো, যা বলছিলাম, এই ভুলভুলাইয়া দেখার কথা আমার এক তামিল সহকর্মীকে বলতেই ও রীতিমতন নাক সিঁটকালো! বলল, ধুর, ঐসব বলিউডের চোর-চুট্টার কথা বইলো না। আমাদের মুভি নকল করে বানায়, বানায় তো না, আসলে বারোটা বাজায়! আমি তো অবাক, বললাম, তাই নাকি? কোনটার নকল এইটা?
ও পরেরদিন আমার হাতে চন্দ্রমুখী ধরিয়ে দিয়ে বললো, দেখো।

সেদিন বাসায় ফিরে আবার দুইজনে বসে দেখলাম সেই সিনেমা। সাংঘাতিক সব ব্যাপার। জ্যোতিকা মারাত্মক অভিনয় করছে। তবে, পুরা মুভিটায় ভয়ের আমেজ ধরে রাখা যায় নাই সারাক্ষণ, কারণ হইলো তামিলদের নায়ক রাজ রজনীকান্ত! এই ভদ্রলোক বয়েস হবার সাথে সাথে পুরাই একটা চিজ হয়ে দাঁড়িয়েছেন। পর্দায় রজনীকান্ত আসা মানেই এতক্ষণের আবহাওয়া পালটে যাওয়া। সিনেমাটা ভয়ের নাকি প্রেমের, সব ওলটপালট করে শুধু শুধুই রজনীকান্তকে পর্দায় দেখানো হয় অনেক্ষণ। আর তারচেয়ে বিরক্তিকর হলো, যতক্ষন এই ব্যাটা পর্দায় থাকে, সারাক্ষণ ব্যাকগ্রাউন্ড থেকে ভেসে আসে, সুপারস্টার, সুপারস্টার! পুরাই কমেডি!

চন্দ্রমুখীর কিছু দৃশ্য আসলেই ভয়ের। তবে ভুলভুলাইয়ার মেকিং অনেক বেটার। আমার ঐ তামিল সহকর্মীরে সিডিটা ফেরত দেয়ার সময় ও পুরা উদ্ভাসিত হয়ে উঠছিলো। আমাকে প্রায় গদগদ হয়ে জিজ্ঞেস করলো, কেমন লাগলো? ভুলভুলাইয়ার চেয়ে ভালো না??
আমি আমতা আমতা করে বললাম, হু, তা ভালো, শুধু যদি রজনীকান্ত না থাকত তাহলে আরও…!
এই নাম শুনেই সে ব্যাটার চোখ আরও উজ্জ্বল হয়ে গেলো। বললো, হু হু, কেমন দেখলা রজনীকান্তরে, আসলেই সুপারস্টার, তাই না?
স্টার নাকি ভাঁড়, সে আলাপে যাওয়াটা আর নিরাপদ মনে হলো না। শুধু বুঝলাম, এই লোকের নামেই নাকি তামিল সিনেমা কোটি টাকা আয় করে ফেলে, ব্যাপারটা সত্যিই তাহলে!

যাকগে, লেখা শুরুর সময় ভাবছিলাম কদিন আগে দেখা টোয়াইলাইট সিনেমার নতুন পার্টটা নিয়ে লিখবো। অলরেডি অনেক কথা বলে ফেলেছি, তাই আজকে আর না, ওই প্রসঙ্গে লিখবো পরের পোস্টে।
এইটা না হয় আপাতত ট্রেলার হিসেবেই ঝুলে থাকুক। 🙂

৪,৮৩৬ বার দেখা হয়েছে

৭৩ টি মন্তব্য : “টিউবলাইট ছ্যাঁকা- দ্য নিউ মুনমুন”

  1. দুনিয়ার সব মাইয়া টোয়াইলাইটের নামে পাগল ক্যান? এইডার ফাস্ট পার্ট দেইখা মোটামুটি লাগছিল। মাগার এত লাফানের মত উঁচুমানের মনে হয় নাই। মাইয়াগুলা মনে হয় ভ্যাম্পায়ার এডওয়ার্ডের সাদা চামড়া আর লাল ঠোঁটের প্রেমে পইড়া কয়, টোয়াইলাইট বস বস বস...ওরে কি মুভি...
    রাগের চোটে ভাবতাছি সেকেন্ড পার্ট আর দেখুমই না ....

    ওয়াক থুহ...
    :gulli2: Twilight

    জবাব দিন
  2. রকিব (০১-০৭)

    টোয়ালাইট অসাধারণ একটা ছবি। যারা এখনো দেখেন নাই, দেইখা ফেলান। :grr: :grr:
    রজনীকান্তের অ্যাকশন সিরাম। এইটা দেখতে পারেন


    আমি তবু বলি:
    এখনো যে কটা দিন বেঁচে আছি সূর্যে সূর্যে চলি ..

    জবাব দিন
  3. তানভীর (৯৪-০০)

    রজনীকান্তরে নিয়া একটা মেইল পাইছিলাম, এখানে দিয়া দিলামঃ

    -Rajnikant makes onions cry.
    -He can delete the Recycling Bin.
    -He can build a snowman… out of rain.
    -He can strangle you… with a cordless phone.
    -He can drown fish.
    -He can play the violin... with a piano.
    -When Rajnikant enters a room, he doesn't turn the lights on… he turns the dark off.
    -Rajnikant once had a heart attack… his heart lost.
    -Brett Favre can throw a football over 50 yards. Rajnikant can throw Brett Favre even further.
    -A Handicap parking sign does not signify that this spot is for handicapped people. It is actually in fact a warning, that the spot belongs to Rajanikanth and that you will be handicapped if you park there.
    -Once a cobra bit Rajanikanth’ leg. After five days of excruciating pain, the cobra died.
    -There is no such thing as global warming. Rajanikanth was cold, so he turned the sun up.
    -Behind every successful man, there is a woman. Behind every dead man, there is Rajanikanth.
    -The square root of Rajanikanth is pain. Do not try to square Rajanikanth, the result is death.
    -When you say “no one’s perfect”, Rajanikanth takes this as a personal insult. So BEWARE.
    -The last digit of pi is Rajnikant. He is the end of all things.
    -Bullets dodge him.
    -His calendar goes straight from March 31st to April 2nd. No one fools Rajnikant.
    -If you spell Rajnikant wrong on Google it doesn't say, "Did you mean Rajnikant?" It simply replies, "Run while you still have the chance.."
    -He can do a wheelie on a unicycle.
    -Rajnikant can kill two stones with one bird.
    -It takes RajniKant 20 minutes to watch 60 Minutes.
    -Rajnikant counted to infinity - twice.
    -Outer space exists because it's afraid to be on the same planet with Rajnikant.
    -Rajnikant can sneeze with his eyes open.
    -There is no theory of evolution. Just a list of creatures Rajnikant has allowed to live.
    -When Rajanikanth gives you the finger, he’s telling you how many seconds you have left to live.
    -Leading hand sanitizers claim they can kill 99.9 percent of germs. Rajanikanth can kill 100 percent of whatever he wants.
    -Rajanikanth can set ants on fire with a magnifying glass. At night.
    -Rajanikanth got his drivers license at the age of 16 Seconds.
    -When Rajanikanth looks in a mirror the mirror shatters, because not even glass is stupid enough to get in between Rajanikanth and Rajanikanth.
    -Rajnikant’s house has no doors, only walls that he walks through.
    -Newton's Third Law is wrong: Although it states that for each action, there is an equal and opposite reaction, there is no force equal in reaction to a Rajnikant punch
    -Rajnikant is responsible for China's over-population. He was shooting in Beijing and all women within 1,000 miles became pregnant instantly.

    শুধু ট্রেইলার দিলে হবে না, পুরাটা লিখতে হবে। x-(

    জবাব দিন
  4. দিহান আহসান

    টোয়াইলাইট ম্যূভিটা হিটের মূল কারন নাকি মেয়েরা,
    মনে হয় বাচ্চা-কাচ্চা'রা হবে, কারন আমার ভালো লাগেনি নাকি আমিই বুড়ি হয়ে যাচ্ছি 😕

    তারেক ভাই ট্রেইলার শেষ, এখন ছবি শুরু করো জলদি জলদি :grr:

    দেশে যাচ্ছো কবে?? তিথিকে শুভেচ্ছা দিও 🙂

    জবাব দিন
  5. কামরুল হাসান (৯৪-০০)

    ছোট বেলায় একটা ছবি দেখেছিলাম- 'গ্রেফতার'। অমিতাভ বচ্চন, রজনীকান্ত, কমল হাসান।
    ঐ ছবিতে রজনীকানের সিগারেট ধরানোর স্টাইল দেখে আমি সিদ্ধান্ত নিছিলাম বড় হইলে আমি সিগারেট খামু। 😛


    ---------------------------------------------------------------------------
    বালক জানে না তো কতোটা হেঁটে এলে
    ফেরার পথ নেই, থাকে না কোনো কালে।।

    জবাব দিন
  6. মিশেল (৯৪-০০)

    অনেক আগে একটা ছবি দেখছিলাম। রজনীকান্তের ব্রেন টিউমার হইছে। ডাক্তার কইছে আর বেশিদিন নাই। শেষ সিনে মেইন ভিলেন একটা গুলি করছে। গুলি রজনীকান্তের এক কান দিয়া ঢুইকা টিউমার নিয়া আরেক কান দিয়া বাইর হইয়া গেছে। সুস্থ হইয়া সুপারস্টার ভিলেনরে কি করছে এইটা আর নাইবা কইলাম।

    আচ্ছা সিসিবির স্পন্সরে রজনিকান্তরে লইয়া একটা সিনেমা বানাইলে কেমন হয়? আজকাল তো অনেক সিনেমাই হয় না যেমন "অ্যানাকোন্ডা vs বোয়া" "কিংকং vs হংকং" ওরম আরকি রজনীরে লইয়া
    "রজনীকান্ত vs মাস্ফু"

    জবাব দিন

মওন্তব্য করুন : তারেক (৯৪ - ০০)

জবাব দিতে না চাইলে এখানে ক্লিক করুন।

দয়া করে বাংলায় মন্তব্য করুন। ইংরেজীতে প্রদানকৃত মন্তব্য প্রকাশ অথবা প্রদর্শনের নিশ্চয়তা আপনাকে দেয়া হচ্ছেনা।