নতুন বন্ড

ক্যাসিনো রয়াল দেখা শুরু করার সময় চোখ মুখ শক্ত করে বসেছিলাম।
ব্রসন্যানকে রিপ্লেস করছে যেই ব্যাটা, তাকে কিছুতেই ভাল লাগা চলবে না, মোটামুটি এইরকম মারদাঙ্গা টাইপ ছিলো আমার মনোভাব। পিয়ার্স ব্রসন্যানের পরে অনেকেই শ্যন কনারিকে সবচেয়ে মানানসই বন্ড বলে থাকেন। আমার কিন্তু বুড়া কনারিকেই বেশি স্মার্ট লাগে, বন্ড কনারির চেয়ে। তার চেয়ে বরং রজার মুর অনেক বেশি ‘ঠিকাছে’।

তো, সিনেমা শুরুর পর থেকে দেখি আমার মন খানিকটা গলতে শুরু করেছে। তারপর ছবির মাঝামাঝি এসে টের পাই, ড্যানিয়েল ক্রেইগকে আর ততটা ‘খারাপ লাগছে না’। এবং আরো কিছুক্ষণ পর যখন গুন্ডাদের মার টার খেয়ে নায়কসাহেব রীতিমতন নাস্তানাবুদ, এবং এতক্ষণের পারফরমেন্সের কল্যাণে তিনি অতিমানবদের কাতার থেকে সরে এসে আমাদেরই চেনা জানা পাশের বাড়ির মাসুদ রানার পর্যায়ে এলেন, সেই মুহুর্তগুলোয়, খুব আরামপ্রদ একটা অনুভূতি হল মনে, আর মনে হল, এই বেড়াল চোখা পাথুরে চেহারার শক্ত-পোক্ত ক্রেইগের মুখেই আসলে মানায় সেই চিরন্তন সংলাপ- মাই নেম’জ বন্ড। জেমস বন্ড।

ক্যাসিনো রয়্যালের জটিলস্য প্লট এবং মাঝে মাঝেই ধীর গতির কারণে খানিকটা উশখুশের পরেও এই মনুষ্য-বন্ডকে দেখে অন্তত এই ভেবে আশাবাদী হয়েছি, আরো কিছু বছর হয়ত আমরা এর কাছ থেকে আরো কিছু ভাল বন্ড-মুভি দেখার আশা করতে পারি।
সেই সুবাদেই, ড্যানিয়েল ক্রেইগকে স্বাগতম জানাই।
ওয়েলকাম টু আওয়ার নিউ মি. বন্ড।

*
আপাতত অপেক্ষায় আছি কোয়ান্টাম অব সোলেস দেখার জন্যে। এর মধ্যেই প্রথম আলো এটা নিয়ে প্রিভিউ করতে গিয়ে লিখেছে- আসছে নতুন বন্ড মুভি- কোয়ান্টাম মেথড! ঐ পড়ে হাসতে হাসতে শ্যাষ!
নতুন বন্ডে নাকি অনেক কিছুই থাকবে না। বন্ডের সেই বিখ্যাত ডায়লগ থাকবে না, নেম়জ বন্ড, জেমস বন্ড। অথবা মার্টিনির অর্ডারের সময় ঝাকাঝাকি নিয়ে পরিচিত সংলাপও থাকবে না। পরিবর্তন আসবেই, কিন্তু এই ব্যাপারগুলো পুরোপুরি পছন্দ হয় নি। কিছু কিছু জায়গায় পুরনো ট্রাডিশনের সাথেই যাওয়া ভাল মনে হয়।
এমনকি কিউ চরিত্রও নাকি এই পর্বে অনুপস্থিত!
যাকগে, আপাতত অপেক্ষায় আছি। অস্ট্রেলিয়ায় এখনো মুক্তি পায়নি এ ছবি। পেলেই দেখে ফেলবো। টরেন্ট খুঁজলে হয়তো পাওয়া যাবে, কিন্তু ছোট স্ক্রীণে এই জিনিস দেখে খায়েশ মিটবে না বলেই মনে হচ্ছে।
দেখা যাক!

২,৩০০ বার দেখা হয়েছে

১৯ টি মন্তব্য : “নতুন বন্ড”

    • তারেক (৯৪ - ০০)

      কস কী! সিরিয়াস???
      অনেক ছোট থাকতে হলে গিয়ে টাইটানিক দেখার সময় খুব আশাহত হইছিলাম। কেটের বুকের ওপরে তেলাপোকার হাটাহাটি! আজিব সেন্সরের স্টাইল। সিন কাটে না, কিন্তু জায়গা মতো কালো কালো কি-সব দাগ দিয়ে দেয়, পুরাই তেলাপোকা!
      আলদীন, তুই এক কাজ কর, টরেন্ট থেকে নামাইয়ে দেইখা ফেল।


      www.tareqnurulhasan.com

      জবাব দিন
  1. কাইয়ূম (১৯৯২-১৯৯৮)

    ক্যাসিনো রয়াল কিছুটা ধীরগতির হলেও, সেই আমলের বন্ডের একটা ছায়া থাকায় দুর্দান্ত লেগেছিলো। ব্রসনান এর গুলো অনেক বেশি বেশি হয়ে যেতো একশনগুলা, সায়েন্স ফিকশন টাইপ।


    সংসারে প্রবল বৈরাগ্য!

    জবাব দিন
  2. টিটো রহমান (৯৪-০০)

    ক্যাসিনো রয়াল আমার ভাল লাগেনি। 🙁

    আমার টিপিক্যাল একটি ব্রিটিশ সোস্যাল একশন মুভি মনে হয়েছে। x-(

    বন্ড পড়ে( পুরানো নায়কদের মুভি দেখেও) যে রকম পার্সোনালিটি বা চেহারা মনে ভেসেছিল তা কেবল পিয়ার্স ব্রসন্যানের মধ্যেই পেয়েছি :boss:

    ড্যানিয়েল ক্রেইগকে বরাবর হলিউডের দ্বিতীয় সারির নায়ক হিসেবে দেখেই অভ্যস্ত ছিলাম। 😮

    আর একটা ব্যাপার বন্ড মুভি সবসময়ই সময়ের চেয়ে প্রযুক্তি ও চিন্তায় এগিয়ে ছিল। সেটা এই ছবিতে একদমই অনুপস্থিত। ~x(

    জানিনা পরেরটা কেমন হবে। ট্রেলার তো ভালই মনে হইল :dreamy:


    আপনারে আমি খুঁজিয়া বেড়াই

    জবাব দিন
  3. ফয়েজ (৮৭-৯৩)

    ড্যানিয়েল ব্যাটা ঠিকই আছে, কিন্তু ভিলেনটা হইছে পুরা ম্যান্দা মারা, বলসে পিটায়, আরে এইটা পিটানোর কোন জায়গা।

    পুরান মানে আপটু ব্রনসন, বন্ডের ছবিতে ভিলেনের যে ইজ্জত ছিল, পুরাই ডুবাইছে ওই জুয়াড়িটা।

    ভাল লাগে নাই, বন্ড ওর ক্যাটাগরি লুজ করছে।


    পালটে দেবার স্বপ্ন আমার এখনও গেল না

    জবাব দিন
  4. সামিয়া (৯৯-০৫)

    :shy: যদিও আমি এই ব্লগটা পড়ি নাই(মুভি তে ধৈর্য্য থাকে না, মারামারির মুভি আরো না, আর রিভিউ পড়ার আগে আমার দুইবার মৃত্যু হয়ে যায় :shy: :shy: ), তাও কমেন্ট দিতেসি, আপনে কিসু একটা লিখসেন এইটাতেই আমি খুশি 😀

    জবাব দিন
  5. যাউগ্গা, অনেক গুলা বন্ড ভক্ত পাওয়া গেল। পুলাপান ক্যান জানি বন্ড মুভি গুলা খুব একটা দেখে না। আমার কাছে বেস্ট বন্ড রজার মুর>ব্রসন্যান>ক্রেইগ।

    পরেরটায় ওলগাকে দেখার আশায় হা করে বসে আছি কত দিন!!!

    জবাব দিন
  6. তাইফুর (৯২-৯৮)
    আসছে নতুন বন্ড মুভি- 'কোয়ান্টাম মেথড'!

    প্রথম আলো যেহেতু, হইতেও পারে কোয়ান্টাম অব সোলেস-এর পরের মুভি 😀


    পথ ভাবে 'আমি দেব', রথ ভাবে 'আমি',
    মূর্তি ভাবে 'আমি দেব', হাসে অন্তর্যামী॥

    জবাব দিন
  7. মান্নান (১৯৯৩-১৯৯৯)

    বন্ডের নতুন রিলিজ দেখলাম হলে গিয়ে। বন্ড সিরিজে অনেক কিছুই চেন্জ্ঞ হচ্ছে । কাহিনীর প্যাটার্নের কিছুটা চেন্জ্ঞ মনে হলো। স্পেশালি কাহিনীগুলো ধারাবাহিকতা মাঝেমাঝেই নষ্ট হচ্ছে তবে সবচেয়ে যেটা আমি বেশি মিস করছি বন্ড সিরিজে তা হলো "কোল্ড-ওয়ারের উত্তেজনা"। আমার মনে হয় এইজিনিসটাই বন্ড সিরিজের কাহিনীর প্যাটার্ন বদলে দিয়েছে। শন'কনরি বন্ডকে যে আমেজ দিয়েছে তাতে পূর্ন আধুনিকতা এনেছিল পিয়ার্স ব্রসনান।পিয়ার্স ব্রসনানের লেডিকিলার ইমেজটার ধারে কাছেও যেতে পারেনি ড্যানিয়েল ক্রেইগ। ক্রেইগকে বেশিরভাগ সময়ই স্রেফ একজন খুনীই মনে হয়। বন্ড চরিত্রের সবচেয়ে দূর্বল ও আকর্ষনীয় অংশটাই (নারীর প্রতি দূর্বলতা) ক্রেইগের মধ্যে মিসিং। ক্রেইগের এই ঘাটতির জন্য কলিন ফেরেল আমার কাছে আরো ভালো চয়েস ছিল। মজার ব্যাপার হলো শুধুমাত্র ক্রেইগের এই ঘাটতিই এখনকার বন্ডগার্লগুলোকে কম সেক্সি ও বেশি অ্যাকশন নির্ভর করেছে। অ্যাকশন চরিত্রে ক্রেইগকে ফুলমার্ক দেয়াই যায়। তবে বন্ড সিরিজে সবচেয়ে বড় ঘাটতি হলো একজন ক্লাসিক ভিলেন এর।

    জবাব দিন
  8. পিয়ার্স ব্রসনান আর ড্যানিয়েল ক্রেইগ এ দুজনের মধ্যে একজন বেছে নিতে হলে আমি ক্রেইগকে নিবো।

    আর সবার মধ্যে আমার পছন্দ রজার মুর,শুধু বন্ড চরিত্রের জন্যে। অভিনেতা হিসেবে শ্যন কনারি অনেক এগিয়ে।

    জবাব দিন
  9. তৌফিক (৯৬-০২)

    প্রথম আলোর আলুগিরি আরো আছে। একবার ইউরোপের কোন মেজর সকার লীগে এপ্রিল ফুল বানানোর জন্য ওয়েবসাইটে হুদাই নিউজ ছাপছিল। প্রথম আলো পরদিন খেলার পাতায় বড় কইরা সেই নিউজ দিছে, তারপরের দিন দুঃখ প্রকাশ কইরা নোটিশ দিছিল। 😀

    ড্যানিয়েল ক্রেগকে আমারো খুব ভালো লাগে। :hug:

    তারেক ভাই, নিয়মিত লেখবেন কিন্তু। আপনার ফ্যানদের একটা দাবী আছে না আপনার উপর?

    জবাব দিন

মওন্তব্য করুন : টিটো রহমান (৯৪-০০)

জবাব দিতে না চাইলে এখানে ক্লিক করুন।

দয়া করে বাংলায় মন্তব্য করুন। ইংরেজীতে প্রদানকৃত মন্তব্য প্রকাশ অথবা প্রদর্শনের নিশ্চয়তা আপনাকে দেয়া হচ্ছেনা।