মেসার্স চেতনা ব্রাদার্স

খুব বেশি কথা নেই। কথাগুলো সবারই জানা।

শাহবাগ আন্দোলন একটা মাইলফলক। স্বাধীন চিন্তার এবং স্বাধীন অবস্থানের। সবার জন্য উন্মুক্ত ছিল/আছে। দলমত নির্বিশেষে। শুধুমাত্র জামায়াত কর্মী-সমর্থক এবং যুদ্ধাপরাধী বাদে। প্রধান রাজনৈতিক দলগুলো শাহবাগকে সমর্থন দিয়ে এবং বিরোধিতা করে তাদের জাতীয় দায়িত্ব পালনের মাধ্যমে সুবিধা খুঁজে নিয়েছে। জামায়াত এই আন্দোলনকে নাস্তিকদের আন্দোলন বলে প্রোপাগান্ডা চালিয়েছে এবং সাধারণ মানুষকে সংশয়ী করতে অনেকাংশে সফল হয়েছে। তারপর অনেক সহিংসতা, হত্যা এবং নজীরবিহীন নাশকতা-নৈরাজ্য-অরাজকতা।

এরপর শহীদ রুমি স্কোয়াডের অনশন কর্মসূচী। সেটাই শাহবাগের পর মুক্তিযুদ্ধের চেতনার ধজ্জ্বাধারীদের জন্য আরেকটা ধাক্কা। মেসার্স মুক্তিযুদ্ধের চেতনার দল এন্ড বাদার্স এদের পাত্তা দেয়নি। মূলধারার মিডিয়ায়ও এদের কর্মসূচিটা খবর হিসেবে ভারে কাটেনি তেমন। কিন্তু এই অনশনটা আর দশটা অনশনের চেয়ে আলাদা ছিল। মেধাবী মানুষগুলো কোন ব্যক্তিগত স্বার্থের জন্য না খেয়ে কয়েকটা দিন কাটায়নি। কোন দলের জন্যও না। তারা এটা করেছে দেশের জন্য। তাদের দাবি জামায়াত নিষিদ্ধ করার জন্য ট্রাইবুনাল করতে হবে।

সময়টা বদলে গিয়েছে। সংকেতটাও স্পষ্ট – মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে দলাদলি, যুদ্ধাপরাধীদের নিয়ে আঁতাত এবং রাজনৈতিক ফায়দাবাজির গুষ্ঠি কিলাই। মুক্তিযুদ্ধের চেতনা নিয়ে মারফতি রাজনীতি সাধারণ মানুষের কাছে জলবৎ তরলং। মানুষ যেখানে একটু আশার আলো দেখে সেখানে দুদন্ড জমায়েত হয়। সেজন্যই আন্দোলনগুলোর পিছনে সাধারণ মানুষ দাড়ায় আবার সেগুলোর পিছনে চেতনা ব্যবসায়ীদের ছায়া দেখে সরে পড়ে।

দেশের ইন্টারনেটের ব্যবহার বেড়েছে ঠিকই। কিন্তু ঠিক কত শতাংশ মানুষ ব্লগ লেখেন বা পড়েন? সঠিক পরিসংখ্যান আমার জানা নেই। হয়তো সেটা করাও হয়নি। কিন্তু সেটা যে মোট জনসংখ্যার তুলনায় খুব নগন্য সেটা নিয়ে কারো দ্বিমত থাকার কথা না। একটা বাস্তব-সম্মত প্রশ্ন তুলি না কেন? তিনজনের, রাসেল, শুভ্ এবং বিল্পবের ব্লগ আসলে কত শতাংশ মানুষকে উসকে দিয়েছে? নাকি – হেফাজত, জামায়াত এসব ব্লগ/ফেসবুক পেজকে ব্যবহার করে উসকানির বার্তা পৌছে দিচ্ছে? আসলেই কি উসকানিমূলক ব্লগ কার্যকরী নাকি সেই ব্লগ ব্যবহার করে রাজনীতি করছে ইসলামী দলগুলো সেটা বেশি কার্যকরী? সেখানেই আসল ‘খেলা’। এবং খুবই আন-ফেয়ার গেম কারণ এতদিন ইসলামের নামে তথাকথিত ব্লগ চালিয়ে র‌্যাডিকেল ইসলামকে প্রমোট করা হয়েছে, উস্কানি দেওয়া হয়েছে, তখন তাদের কাউকে কখনো আইনি প্রকিয়ার আওতায় নেয়া হয়নি।

আমাদের ধৈর্য্য সহিষ্ণুতা কি এতোই কম? একটা সাট্যায়ার পেজে কিংবা স্যাটায়ার ‘নিকে’ কে কি বলেছে তার জন্য “উইচ হান্ট” করতে হবে? মানুষ বড় না ধর্ম বড়? তাহলে সরকার এটা কেন করছে? অবশ্য আমাদের দেশে খুন, ধর্ষন, এসিড নিক্ষেপকারী থেকে গনহত্যা এবং যুদ্ধাপরাধের মতো দাগি অপরাধীরা দিব্যি থাকে, যত রাজনৈতিক গাত্র-দাহ কেউ বিশ্বাস নিয়ে কথা করলে। নাস্তিক স্যাটায়ার ব্লগারকে খুন করা হলে – এক ধরনের লোকরা “খুব কাজের কাজ” হয়েছে বলে বাহবা সমর্থন হাততালি দেয়। গেল গেল রব তোলে। এই কাজটা কি ইসলামিক নাকি মানবিক?

একজন ব্লগার এবং একজন খুনী-অপরাধী কি এক হলো? ব্লগারদের যেভাবে এবং যে কায়দায় মিডিয়ার সামনে হাজির করা হয়েছে সেটা কি তারা প্রত্যাশা করে। না সেটা তাদের প্রাপ্য। তাদের অপরাধ তো প্রমাণ সাপেক্ষ এখনো। তাদের কথিত ব্লগ ছাড়া তাদের লেখালেখি কোন সহিংসতায় আগুন যুগিয়েছে এমন কোন প্রমান কি আছে? ল্যাপটপ আর হার্ডডিক্স দিয়ে কি ছাতার-মাথা প্রমাণ হয়? তাদের পরিচয়টা চোর, ডাকাত বা খুনীর মতো করে উপস্থাপন করাটা কি জরুরী ছিল? ব্লগে লেখালেখি একটা উন্মুক্ত মাধ্যম, কারো মত গ্রহনযোগ্য নাহলে লিখেই সেটা প্রতিহত করা হোক। বিষয় হলো, ‘স্যাটায়ার’ আর ‘উস্কানি’ তো এক না। কিভাবে এই লেবেলিংগুলো করা হচ্ছে? ব্লগ আসলে কতজন পড়ে দু’একটা ‘জাতীয়-ব্লগ-টাইপ’ ছাড়া? সেগুলোও তো মাত্র পাঠক সংখ্যা হাজার গড়ায়, সেটাও সবসময় না। হীরকের রাজারা এতেই কুপোকাত?! সেটা নিশ্চয়ই না। এটা কন্ঠরোধের রাজনীতি।

ব্যাপারটা ইসলামের অনুভূতির আঘাত নিয়ে কিনা সন্দেহ হয়, কারণ মূল ঘটনা হলো “ইসলামের অনুভূতির রাজনীতি” এবং তার দলীয় স্বার্থোদ্ধার। এতে অনেক নেকি। অনেক ভোট। হাটহাজারীর কোন ভুঁইফোড় এক হেফাজত নেতা হুমকি দিচ্ছে। তাতে মেসার্স চেতনার দল এবং ব্রাদার্স প্যান্ট ভিজিয়ে একসার। ক্ষমতার পালা বদলের মাঠে এসব স্টান্টবাজি রাজনীতি খুব চলে। তবে ফলাফল ২০০১এ ভাল ছিল না। উল্টো ছিল। তারপরও মেসার্স চেতনা ব্রাদার্স একটা বাজে ন্যাক্কারজনক কাজ করছে, পপুলার ইস্যু ধর্মকে ব্যবহার করে সহজ শর্টকাট সুবিধাবাধী রাজনীতি – সহজ সমর্থন আদায়ের লোভ ভোটের জন্য। এটা অন্যায়। বাস্তবতা তো এটা না। চেতনার ব্যবসায়ীরা তাদের ধান্ধার আপোষকামী অবস্থান শাহবাগের পর আবারো স্পষ্ট করলো। রাজনৈতিক হিসেব এবং প্রতিপক্ষ রাজনৈতিকভাবে মোকাবিলার মুরোদ তথৈবচ।

ব্লগ নিয়ন্ত্রনে সরকার, বিরোধীদল এবং তথাকথিত ইসলামিক দল সব একাট্টা। এটা একটা অভাবনীয় ব্যাপার। সংসদ সদস্যদের ভাতা বাড়ানো কিংবা শুক্লমুক্ত গাড়ি সুবিধা জাতীয় আর কোন ইস্যুতে এমন একমত হতে কখনো কি দেখেছি? তার অর্থ হচ্ছে ব্লগের অদৃশ্য শক্তিতে এরা ভীত। কারণ তাদের এতো দিনের তাসের ঘরের রাজনীতি এবং বিবিধ চেতনা ব্যবসায়ে ক্ষতিগ্রস্থ হবার ঝুঁকি তৈরি হয়েছে। মত প্রকাশ করতে দিলেই সমস্যা। সত্য বেরিয়ে আসবে। তাই কন্ঠ রোধ করতে হবে। এমন তো না যে ব্লগই একমাত্র মাধ্যম যেখানে বঙ্গ-ইতিহাসে প্রথমবারের মতো নাস্তিক কেউ লেখার সুযোগ পেয়েছে এবং তথাকথিত “উস্কানিমূলক” লেখা লিখছে। তাহলে এই ঘটা করে “নাস্তিক” এবং “উস্কানীমূলক” বলে রাজনীতি করাটা কেন? এই রাজনীতিগুলি সবাই বোঝে।

যে তিনজন ব্লগারকে ইসলাম রক্ষার নামে গ্রেফতার করা হয়েছে ঘটনাক্রমে তারা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাথে সম্পৃক্ত। এটা চেতনা ব্রাদার্সের একটা স্ট্রাটেজিক ভুল। তাদের গ্রেফতার ইসলাম ধর্ম কি কতটুকু রক্ষা করবে জানিনা, তবে আঘাতটা বাক-স্বাধীনতার। কণ্ঠরোধের রাজনীতি। লেখালেখির জন্য ২০১৩ সালে চোর-ডাকাত-খুনীর মতো গ্রেফতার কখনোই গ্রহনযোগ্য হতে পারে না। তারওপর পুরোটাই মেসার্স চেতনা ব্রাদার্সের রাজনৈতিক ফায়দার প্রজেক্ট যেখানে কয়েকজনকে বলির পাঠা করা হয়েছে। তবে ইতিহাস বলে, যখন মত-প্রকাশের-স্বাধীনতা রোধ করা হয় এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কোনভাবে সর্ম্পৃক্ততা থাকে – সেই ৫২’ থেকে আজ পর্যন্ত কোন সরকার বাহাদুর জয়লাভ করেন নাই। এটাই একমাত্র আশার ইঙ্গিত।

তারপরও বিক্ষুদ্ধ। যা চলছে মেনে নেয়া যায় না।

১,৯৬৮ বার দেখা হয়েছে

১৭ টি মন্তব্য : “মেসার্স চেতনা ব্রাদার্স”

  1. মাহমুদ (১৯৯০-৯৬)

    যা চলছে মেনে নেয়া যায় না

    - পুরো একমত।

    শাহবাগের এই মাইলফলক আন্দোলনের এই পরিণতির জন্য সেখানে হঠাৎ করে গজিয়ে ওঠা নের্তৃত্বের 'আওয়ামী প্রীতি' সবথেকে বেশি দায়ী [এরসাথে কতিপয় ব্লগারের দায়িত্বহীন ধর্মবিদ্বেষী ভূমিকা]।- কিচ্ছু করার নাই, যেই নৌকায় উঠে তারা বিজয়ী হতে চেয়েছে, সেই নৌকার মাঝি আসন্ন ভোটের হিসেব করে তাদেরকে নামাই দিছে।

    যেকোন গণআন্দোলনের মত প্রজন্মের এই আন্দোলনও হতে হবে মানবতাভিত্তিক, চেতনাধারী/ছাগু ক্লাসিফিকেশন ভিত্তিক নয়। আন্দোলনের সাফল্য অনিবার্যভাবেই নির্ভর করবে দেশের ৮৫% 'নামে মুসলমানদের' অংশগ্রহনের উপর। তুমি স্যাটায়ার আর উস্কানি বলতে যা' বোঝ, আনফরচুনেটলি বাংলাদেশের এই অধিকাংশ না-বুঝ মানুষ সেভাবে সেটা বোঝে না। আর না বুঝে কেউ প্রশ্ন করলে তা'কে শুরুতেই 'ছাগু' ট্যাগ দিয়ে ডায়লগের ঐ জায়গাটা বন্ধ করার দায়টা ব্লগগুলোর মধ্যেই। এই জিনিস না বুঝলে মুক্তিযুদ্ধের চেতনার ডাকে মানুষ সাড়া দিবে ঠিকই, কিন্তু বারবারই পিছিয়ে যাবে। কারণ, তারা বাংলাদেশের মুক্তিযোদ্ধা, আবার মুসলমানও। আর যেহেতু ভোটের বাজারে এরাই সংখ্যাধিক, রাজনৈতিক দলগুলোও তাদের এই কনফিউজড অবস্থাকে নিজেদের স্বার্থে ব্যবহার করার জন্য চেতনাকে ইচ্ছেমত ব্যবহার করবে।

    নৈতিক অবস্থানের গোড়ায় মানবতা থাকাটা অনিবার্য। আর সেই মানবতা সার্বজনীন, কোন দল-মত-পক্ষের জন্য সংরক্ষিত মানবতা নয়। শাহবাগের আন্দোলনের প্রেক্ষিতে এইটা আরেকটা মোক্ষম শিক্ষা।


    There is no royal road to science, and only those who do not dread the fatiguing climb of its steep paths have a chance of gaining its luminous summits.- Karl Marx

    জবাব দিন
    • নূপুর কান্তি দাশ (৮৪-৯০)

      কতিপয় ব্লগারের দায়িত্বহীন ধর্মবিদ্বেষী ভূমিকার জন্যই তাহলে শাহবাগ আন্দোলন বিফলে গেলো? এই কতিপয় ব্লগারগণ তো বেশ আগে থেকেই ব্লগে-ফেসবুকে বলছিলো তাদের যা বলার।তারা তো আর জানতোনা, অদূর ভবিষ্যতে শাহবাগে ঐতিহাসিক আন্দোলন ঘটতে যাচ্ছে।তাছাড়া শাহবাগ থেকে কি তারা ইসলাম-বিদ্বেষ ছড়িয়েছে? এসংক্রান্ত কোন তথ্য আমার জানা নেই, তোমার কাছে থাকলে জানিও। ইসলামের সংগে শাহবাগের বিবাদের সূত্র কারা খুঁজে ফিরেছে? পুরো শাহবাগকে নাস্তিক বলে বেড়িয়েছে কারা।তাছাড়া, ইসলাম সমালোচক হোক আর বিদ্বেষীই হোক কি সাচ্চা ইসলামী বান্দা হোক -- যুদ্ধাপরাধের বিচার চেয়ে শাহবাগে যাবার কথা তো সবারই।শাহবাগের সাফল্য-ব্যর্থতার দায়ভার কয়েকজন ব্লগারের দার্শনিক অবস্থানের উপর চাপিয়ে দেয়া হচ্ছে কেন সেটা বোধগম্য হচ্ছেনা।

      বাংলা ব্লগগুলোতে ধর্মের কঠিন, মিঠে, কড়া, শ্লীল-অশ্লীল, রুচিবান বা রুচিহীন যা কিছু আলোচনা হচ্ছে খোলাখুলি - তা আরো বহুদূর যাবে।অচলায়তনকে নাড়াবার এই প্রক্রিয়া শুরু হয়ে গেছে, এ আর থামবেনা।বিশ্বাসের নামে 'ডায়ালগের রাস্তা বন্ধ' করার দিন যে ফুরিয়ে আসছে এটা তারাই বুঝেছে আগে, তাই ফুঁসে উঠেছে।ধর্মের নামে যথেচ্ছাচারেই দায়িত্বজ্ঞানহীনতা আসলে বেশি - যার প্রতিবাদ হিসেবে কিছু মানুষের এই অন্তর্জালিক অস্থিরতা, প্রতিবাদ -- ক্ষেত্রবিশেষে অশালীনতার পর্যায়ে পৌঁছায়। কিন্তু অই পর্যন্তই - বিশ্বাসীর মন্দির তাতেই টলে যায়, তাতেই পুড়ে যায় জনপদ, অন্য কারো মন্দির, সম্ভ্রম লুটে যায়, কল্লা নেমে যায়। তো এই ফ্যানাটিসিজমের যাতে উত্থান না ঘটে সেজন্যে তাকে চেপেচুপে গিয়ে, ধর্মকে নমোনমো করার নীতি তো অনেকেই নেবেনা। তারা কথা বলবে, তার ভাষায় 'অসংগতি' নিয়ে কথা বলবেই - সে আমরা যতই মনে করিনা কেন, এসব কথা বলার সময় আসেনি।আসলে সময় কখনো আসেনা, তাকে নিয়ে আসতে হয়। আর ধর্মের সমালোচনার ঘায়ে যে আন্দোলন টেঁসে যায়, সেখানে এই জাতিকে আরো অনেকদিন অপেক্ষা করতে হবে -- হয়তোবা কখনোই তার মুক্তি ঘটবেনা।

      যে মানবতার কথা বলা হচ্ছে, ধর্মের গ্রাস থেকে বার করতে না পারলে তার কোন অর্থই থাকবেনা।

      জবাব দিন
    • জিহাদ (৯৯-০৫)
      এরসাথে কতিপয় ব্লগারের দায়িত্বহীন ধর্মবিদ্বেষী ভূমিকা

      হেফাজতে ইসলাম ডাইরেক্ট বলসে, শাহবাগ নাস্তিকদের আন্দোলন। আপনি একটু ভদ্র ভাষায় বললেন আর কি। যেই লাউ, সেই কদু।


      সাতেও নাই, পাঁচেও নাই

      জবাব দিন
  2. রকিব (০১-০৭)

    "তারপরও বিক্ষুদ্ধ। যা চলছে মেনে নেয়া যায় না।"
    মেনে নেওয়া সম্ভব নয়।
    দুর্ভাগ্যজনক হলেও সত্য যে অনেকেই আশাহত হয়ে পিছিয়ে আসতে শুরু করেছেন। একটা কথা ভুললে চলবে না; এই মুহূর্তে পিছিয়ে আসা যায় না; হার মেনে নেওয়ার পরিণতি খুবই ভয়াবহ হয়ে উঠবে।
    আমরা যে যেখানে যেভাবে আছি, সেখান থেকেই প্রতিবাদ এবং অবশ্যই কার্যকরী প্রতিবাদে যোগ দেয়া জরুরী। সরকার ভোট কেনা বেচার এই দরপত্রে টের পাচ্ছে না যে সমর্থন হারানো শুরু হয়ে গিয়েছে।
    সরছি না, আপাতত এটুকুই বলতে পারি।


    আমি তবু বলি:
    এখনো যে কটা দিন বেঁচে আছি সূর্যে সূর্যে চলি ..

    জবাব দিন
  3. নূপুর কান্তি দাশ (৮৪-৯০)

    সকল ইস্যুতে যে জাতি দেখে তার ধর্মানুভূতি এখনো জাগ্রত আছে কি না, ব্যগ্র হয়ে মাইনসের বেডরুমে, বাথরুমে উঁকি দিয়ে, প্রয়োজনে কাপড় খুলে দেখে নিতে চায় কেউ বা কারা তার ধর্মের বিরুদ্ধে কোন মনোভাব পোষণ করছে কি না -- যখন এসবজনিত অনর্থের জন্যে নিজের মনোভাবকে দায়ী না ক'রে, করে সেই অপরকে --- তখন সেই জাতির চিন্তার অন্তঃসারশূন্যতা নিয়ে কোন সন্দেহ থাকেনা।
    ধর্মানুভূতিতে আঘাত নেবার জন্যে এত ব্যগ্র যে জাতি - তার এই সংবেদনশীলতা দেখে আমার মায়া হয়।বাংলাদেশ নিঃসন্দেহে বাংলাস্তান হবার পথে এগিয়ে গেছে অনেকটা দূর। যে বড়ভাই কইসিলেন, এমনটা হবার অবস্থা হলে নাকি নিজে প্রতিরোধে নেমে পড়বেন, সেই বড়ভাইয়ের কোনই আওয়াজ পাইনা। আফসোস!

    জবাব দিন
    • রাব্বী (৯২-৯৮)

      ধর্মের শক্তি এবং নিউক্লিয়ার পাওয়ারের শক্তি একই ধরনের। যে যেভাবে ব্যবহার করে এটা। যথেচ্ছ এবং ভুলভাবে ব্যবহারে সবারই পরাজয় নিশ্চিত। কেউ আসলে জিতবে না। সবজায়গায় "ইসলামিক অনুভূতির" কার্ড ব্যবহারও একই রকম - পরিনতি ভয়াবহ।


      আমার বন্ধুয়া বিহনে

      জবাব দিন
  4. রাজীব (১৯৯০-১৯৯৬)

    ভালো লেখা।
    নীতিগত কারণে অনশনের পুরাটা সময় বিরুদ্ধে বলি নাই।
    এমনকি লাষ্ট সানডেতে ওদের সাথে সংহতি রেখে লন্ডনের আলতাব আলী পার্কে আমরা সারাদিন অনশন করতে চেয়েছিলাম।
    কিন্তু বাস্তবতা হচ্ছে এক লাফে গাছে উঠার চিন্তা করা ঠিক না।
    শূধু আবেগ দিয়া যুদ্ধ হয় না।
    আমরা যারা শাহবাগের চেতনায় বিশ্বাস করি তারা তো আর ভোটে নামি নাই যে কাইন্দা কাইটা ভোট চাবো।

    পুরা আন্দোলনে সমস্যা হইছে বিএনপির।
    প্রত্যেকের কাছা খুইলা গেছে। =)) =)) =))
    না, কিন্তু, যদি ইত্যাদি শুরু করছে।

    যাই হোক আস্তিকতা-নাস্তিকতা নামক স্থুল অবস্থান থেকে বেরিয়ে আসা উচিত।

    তবে বেশি আশা করা ঠিক না আস্তিকদের বেশীরভাগ অংশটাই বর্বর।


    এখনো বিষের পেয়ালা ঠোঁটের সামনে তুলে ধরা হয় নি, তুমি কথা বলো। (১২০) - হুমায়ুন আজাদ

    জবাব দিন
    • রাব্বী (৯২-৯৮)
      আমরা যারা শাহবাগের চেতনায় বিশ্বাস করি তারা তো আর ভোটে নামি নাই যে কাইন্দা কাইটা ভোট চাবো

      সেইটাই নিজের অবস্থান নির্নয়টা জরুরী কাজ।

      বর্বর হবার মতো উপাদান সব মানুষের মধ্যেই থাকে। কারো সেইটার বিকাশ ঘটে, কারো ঘটে না। এখানে কোন নাস্তিক/আস্তিক ভেদাভেদ নেই।


      আমার বন্ধুয়া বিহনে

      জবাব দিন
  5. রাজীব (১৯৯০-১৯৯৬)

    ক্যান যে মুসলমানেরা বলে ইসলাম শান্তির ধর্ম এইটাই বুঝি না।
    জামাত জ্বালাও, পোড়াও করলে তা না হয় রাজনীতি, কিন্তু ইসলামের হেফাযতকারীরা (হেফাযতে ইসলাম) আগুন জ্বালালে সেইটা তো অনৈস্লামিক হতে পারে না!
    http://www.prothom-alo.com/detail/date/2013-04-03/news/341951


    এখনো বিষের পেয়ালা ঠোঁটের সামনে তুলে ধরা হয় নি, তুমি কথা বলো। (১২০) - হুমায়ুন আজাদ

    জবাব দিন

মওন্তব্য করুন : রাব্বী (৯২-৯৮)

জবাব দিতে না চাইলে এখানে ক্লিক করুন।

দয়া করে বাংলায় মন্তব্য করুন। ইংরেজীতে প্রদানকৃত মন্তব্য প্রকাশ অথবা প্রদর্শনের নিশ্চয়তা আপনাকে দেয়া হচ্ছেনা।