কিংকু ইবনে কুদরতে এলাহী

একদিন ইনবক্স খুলে দেখি মেসেজে লেখা, বস আসতেছি। এমনিতেই পক্ক বয়সে বন্ধুবান্ধব খুঁজে পাওয়া খুব মুশকিল। তার উপ্রে খোট্টারদেশে হইলে তো কথাই নাই। জুন মাসের ছয় তারিখে অটোয়ার মুখ উজ্জ্বল করে এসে হাজির হইলেন তিনি নোভা স্কোশিয়ার শিয়াল গ্রাম থেইকা। ওইদিন আবার অটোয়ায় এক্স-ক্যাডেট গেট-টুগেদার আছিল। তারে নিয়ে গেলাম সেইখানে। লকিভুলও (রকিব) তারে দেইখা এক্কেরে গদগদ। তারপর সে ভাবী আর বাচ্চাদের একগাদা ছবিটবি তুইলা এলাহি কান্ডকারখানা। পার্লামেন্টের সামনে গিয়া পাপ্পারাজি ক্যামনে করতে হয়, এইসব টুকিটাকি নিয়া ক্যামেরাবাজির উপ্রে একটা টেকনিক্যাল লেকচারও দিয়া ফেললো আমারে। চাকরি নিয়া অটোয়ায় আসছে, পরদিন থেকেই দৌড়ঝাপ। তারপর থেইকা মাঝেমাঝে দেখা হয় আর টুকটাক কথা। ফেইসবুকে মাঝেমইধ্যে হাসিঠাট্টা কেলানি চলতে থাকলো একটু-আধটু। এরমইধ্যে একদিন দেখি পুরাই সুঁই হয়ে আইসা ফাইল হয়ে বাইর হইতেছে। আমার সব বন্ধু-বান্ধব তার বগলদাবা হয়ে গেছে। ব্যাপারটা খুব একটা সুনজরে না দেখলেও বৃহত্তর শান্তির জন্যে মাইনা নিলাম। তবে আমার আর কিছু বলতে হয়নি কাউকে, পোলাটা বকবক বকবক কইরা মুটামুটি মানুষজনের কানের খৈল নাড়ায় দিসে।

জুলাই মাসে একদিন রাত এগারোটার দিকে ফোন, বস একটু ঝামেলা হইছে। প্রিন্টার নষ্ট। কাল আম্রিকার ভিসার ইন্টারভিউ। অনলাইন এ্যাপোয়েন্টমেন্টটা প্রিন্ট নেওন লাগবো। চইলা আসতে বললাম। সেদিন তার কপাল ভাল আছিলো, আমরা সবাই তখনো ক্যাম্পাসে। ইউনিভার্সিটিতে ইউনিসেন্টারের (মানে টিএসসি টাইপ) দোতলায় গ্রাড স্টুডেন্টদের জন্য একটা শুদ্ধি ঘর আছে। সেইখানে পাক্ষিক শুদ্ধি আসর বসে, বইসা দুই সপ্তাহ ধরে যে যা পাপ করে সেগুলো ধুইয়া পরিষ্কার করা হয়। তো সে আইসাই কিসের প্রিন্ট কিসের কি, গোস্বা কইরা কয়, আমারে ডাকলেন না ক্যান আপনারা? কইলাম, তোর তো অফিস কাল। কয়, তাতে কি? আমি রাইত ২টা পযর্ন্ত জাগি। ততোক্ষনে রাত বারোটা বাজে, শুদ্ধিঘর বন্ধ। তারপর প্রিন্ট নিতে আমার এক বন্ধুর ল্যাবে নিয়ে গেলাম প্রথমে, স্টেইসি বিল্ডিং। কাজ হইলো না, আমার বন্ধুর ভাল প্রিন্টার থেকে হটাৎ কইরা প্রিন্ট বাইর হয় না। কুদরতে এলাহীর প্রিন্ট হইতেছে না, সেইটা ব্যাপার না। এইটা হইলো ইউনিভার্সিটির ইজ্জতের ব্যাপার। সে আবার ঠেস দিয়ে কয়, কানাডার ক্যাপিটাল ইউনিভার্সিটির এই দশা?! শুনলে ক্যামন লাগে মিজাজটা, তাও চাইপা গেলাম! নিয়ে গেলাম ল্যোব বিল্ডিং-এ আমার অফিসে। সেইখানেও প্রিন্টার মোড়ামুড়ি কর্তে কর্তে প্রিন্টার কাইত হইয়া পড়লো, কেস প্রায় ফাইনাল। ইজ্জ্বতের ফালুদা হইতে আর মাত্র এক সিকি বাকি। তারপর অনেক গুতাগুতি কইরা ঠিক হইলো। কিন্তু গুনে গুনে ঠিক চার বা পাঁচটা পেইজ আছে। শেষমেষ কাজ হইলো। কিন্তু এইখান থেইকা তারে নিয়া ভেজালের শুরু।

টুকটাক দেখা হয় মাঝে মাঝে। সে তখন সিসিবি নিয়া কথা কয়। চাওয়ালা, ঠোলা, হতাহত, কনফু, দিহান, মেলিতা. সাইফ ভাই, লাবলু ভাই, ফয়েজভাই, কাম্রুলাসান, সেন্ট জোনসবাসী, গুহাবাসী থেকে শুরু করে বিখ্যাত, কুখ্যাত, পপুলার সব ব্লগারের নামঠিকুজি নিয়া কথা কয়। এমন কি দাজ্জাল-গাজ্জাল কিছুই বাদ রাখেনা! ইনফ্যাক্ট, কুদরতে এলাহি সিসিবির জন্ম থেইকাই নিয়মিত এইটারে ফলো কইরা যাইতেছে। যাইহোক, আবার একদিন হটাৎ ফোন। বস, আপ্নের কম্পুটারটা ইকটু লাগবে। অপারেটিং সিস্টেম ক্রাশ করছে। সেইদিন আমার এক ডিনারের দাওয়াত ছিল। তারে আমার কম্পুটার দিয়া সেইখানে যাবো বইলা রিড্যু সেন্টারে আসতে কইলাম। আমি তার দিকে আমার ল্যাপটপ আগায়া দিতেই কইলো, আমি ভাবছিলাম আপ্নের সামনে বসে কাজ সাইরা ফেলবো। ল্যাপটপ তো একটা পারসোনাল জিনিস। আপনি এমনে দিতেছেন দেইখা খুব অবাক হইলাম। তবে আমি ভিত্রের কিছু ঘাটাঘাটি করবো না, টেনশন নিয়েন না। আমি বললাম, ঘাটাঘাটি করলেও কোন প্রব্লেম নাই। সে হেঃ হেঃ হেঃ করে হাসতে থাকলো। বুঝলাম বাঙ্গালি মুসলমানের মন ময়লা। আর কিছু না বইলা আমি দাওয়াত খাইতে গেলাম। ডাউসলেকের কোলে ম্যাক্সিকালি রোজা নামের একটা রেস্টুরেন্টে। বইসা ফাহিতাস আর আখের রস খাইতেছি। আবার ফোন – কি অবস্থা, কি করতেছি। একটু বিরক্ত হইলেও ভাল করে কইলাম, মাইনসে রেস্টুরেন্টে আইসা কি করে? সে কয় – না, না, খান আপনে। খাওয়া শেষ হইলে একটা ফোন দিয়েন। কাজ আজকের মতো শেষ। … আমি খাওয়া শেষ করে আবার তার সাথে দেখা করতে রিড্যূ সেন্টারে গেলাম। দেখি অন্য চেহারা। কয় আমার কম্পুটারও নাকি ইন্তেকাল ফরমাইছে, সিস্টেম ক্রাস করছে। ভাবছিলো আমি ছাইড়া দিবো। আড়েধ্যাড়ে বুঝায় দিলাম যে তুমি টেকি মানুষ। তোমারে ভাল ল্যাপি দিসি। এখন ভেজাল হইছে, ড্যাটা সব উদ্ধার কইরা নতুন অপারেটিং সিস্টেম ইনস্টল কইরা তাপ্রর যেমন নিসিলা তেমনে ফেরত দিবা। সে একটু মোড়ামুড়ি করলেও মাইনা নিল। তার একদিন পর ল্যাপি ঠিক হইলো কিন্তু সে আরেক কাহিনি। তার ভাষায়, “সে এক বিশাল ইতিহাস, ঘরে ছিলনা কেরাসিন …” বোনাস হিসাবে আমার পোর্টেবল এক্সট্রা হার্ড ড্রাইভটা দুই সপ্তাহের জন্য হারায় ফেললাম তার সাথে সাক্ষাতের সময়। যাইহোক, তার্পর থেকে আমার ল্যাপির ব্যারাম আর যাইতেছে না।

আমাদের এক বন্ধু আছে। খুব ভাল লোক, মেধাবী ছাত্র। গাঞ্জার উপ্রে একটা ফাইনাল পেপার লিখে তার পিএইচডির একটা কোর্সে এ-প্লাস পাইছে গতবছর। অনেক কোর্সেই সে এ-প্লাস পাইছে, কিন্তু সেই কোর্সটা নিয়েই তার গর্ব সবথেকে বেশি। দিনরাত ল্যাবে পইড়া থাকে। রসায়নশাস্ত্র নিয়া গবেষনা করে। আমাদের শুনায় যে কয় হাজার রিএ্যাকশন কইরা নাকি পাঁচটা না সাতটা রেজাল্ট পাইছে মাত্র। আমরা সেইসব গল্প শুনি। তার সাথে দেখি কুদরতে এলাহীর ব্যাপক মাখামাখি, তুমুল গুলতানি মারা। কি কি সব যানি কয়, পিংক-ফ্লয়েড, রজার ওয়াটারস, ডেভিড গিলম্যুর, দ্য ওয়াল, উইশ ইউ ওয়্যার হিয়ার, দ্য ডিভিশন বেল, নফলার, মেটালিকা, জিএনআর, ব্লা ব্লা কি সব কয়। তার দুইতিনদিন পর আমার সেই রসায়ন বন্ধু শয্যাশায়ী। তারপর রাজ্যের সব ডাক্তার কোবরেজ তাবরেজ ঝাড়ফুক কইরা দেখা গেলো কোন কারণ ছাড়াই নগদের উপ্রে ফুসফুসে একটা ফুটা বাইর হইলো, চিকনা টিনটিনা মানুষটার নাকি কোলস্টরেল বাইড়া গেছে, ইত্যাদি, ইত্যাদি ম্যালা ব্যারাম। তারপর আমার রসায়ন বন্ধু আমারে একদিন ডাইকা কয় তোর ওই ছাগলাদাড়ি বান্দরমার্কা ফ্রেন্ডরে যদি কার্লটনের আশপাশে আর দেখি তাইলে তোর কপালে খারাবি আছে, অসুখের মায়েরেবাপ! কোবরেজ নাকি বলছে যে ওই ছাগলা দাড়ির সাথে গুজুরগুজুর ফুসুরফুসুরই তার জীবনে নিয়ামত হিসাবে আইসা পড়ছে।

একদিন ঠিক করা হইলো। ফল সিজন চইলা যাইতেছে। চারদিকে গাছপালায় এতো সুন্দর রঙ। সবুজ, হলুদ, কমলা, লাল। আমরা মন্ট-ট্রামব্লাহ বইলা একটা পাহাড়ি জায়গা আছে সেইখানে বেড়াইতে যাবো। সারাদিন সেইখানে থাকবো। গাড়িতে একটা সিট ফাঁকা ছিল। কারে নেয়া যায়, কারে নেয়া যায় – তার্পর কয়েকজন বললো যে কুদরত-এ-এলাহী একা থাকে, ওরে নিয়ে যাই। পরদিন সকালে আমরা যাবো নয়টায়। ঘন্টা তিনেকের জার্নি। তিনটা গাড়ি। সবাই ঠিকঠাক মতো উপস্থিত। রওনা দিলাম। কিছুদূর যাবার পর একটা গাড়ির স্টিয়ারিং লক হয়ে গেল চলতে চলতে। ডাইনে বায়ে কোনদিকে যায় না। কোনরকমে সেই গাড়ি থামায়ে তার্পর গাড়ির ডাক্তার-কোবরেজ সব কইরা গাড়িটারে সুস্থ কইরা রওনা দিতে দিতে দেখি যে দুপুর গড়ায়ে গেছে। আমরা কত জায়গায় বেড়াতে গেছি কোনদিন এমনতরি হয়নাই। একজন বললো যে, শালারে ধইরা নামায় দেই গাড়ি থেকে। এরে নিয়ে সবসময় একটা ভেজাল হয়। কথা পাক্কা। খালি সেদিন জন লেননের জন্মদিন ছিল বইলা মাফ কইরা দিলো সবাই।

বিভিন্ন সময়ে বন্ধুবান্ধবদের অনুরোধ চাপে তাদের সুন্নতি খৎনা, জাতীয় দাম্পত্য দিবস, অফার দিবস, খালা শাশুড়ির জন্মদিন, হ্যানাত্যানা প্রভৃতিতে ডাকা হইছে আমারে ছবি তুইলা দিতে। আমি হাসিমুখেই যাই। তো এই ছাগলাদাড়িটারেও নিয়া যাই। মেইনলি একা ছবি তুলতে একটু বোরিং লাগে প্লাস খানাপিনা পাইলো পুলাটা। এ্যারে যাবার কথা বললে সে খাড়ার উপ্রে ইয়েস কইরাই বলে, কখন যাইতে হবে? তারপর আবার একটু ভাব নিয়া বলে, আমিতো তখন ঘুমাবো, আমাকে ফোন করে উঠাইয়া দিতে হইবো। আবার একটু মুড়ামুড়িও করে – কনফার্ম কইতে পারতেছি না। আচ্ছা দেখি। জানাবো। … এরপর ঠিকই যায়। আমি ভাবি হয়তো লজ্জা পায়, তাই এমন করে। একদিন দেখি এইসব সামাজিক অনুষ্ঠান থেইকা টুকাইয়া টুকাইয়া তিনটা সখের মডেলকন্যা বাইর কইরা দিনব্যাপি ফটোশুট করে বেড়াচ্ছে অটোয়ার রাস্তায়, পার্কে, নদীর পাড়ে, যাদুঘরের লনে। জিঞ্জেস করলাম, কেম্মে কি? কয়, আরে এইটা কোন ব্যাপার না, কোন অনুষ্ঠানে যাইয়া খালি একটা পোট্রেইট ছবি তুলবেন একটু ব্রাইট ধরনের, তার্পর যাইয়া সেই ছবি দেখাইয়া কইবেন যে, আপনার পোট্রেইটে একটা দারুন এ্যাসথেটিক পারসপেকটিভ আছে, দিস ইজ ভেইরি রেয়ার। বইলা একটু ভাব নিয়া অন্যদের ছবি তুলা শুরু করবেন এ্যাজ ইফ সেই বালিকারে আর দেখতেছেন না। তার্পর কাজ অটোমেটিক হয়ে যাবে। আমি শুইনা পুরা তব্দা খাইয়া গেলাম। এইসব বুদ্ধি আমার মাথায় খেলে নাই ক্যান!

একদিন আমারে কয়। আমার আর চাকরি ভাল্লাগে না। আমি যামুগা। জিগাইলাম, কই যাবি? কয়, যার দিকে দুই চোখ যায় সেদিকে। কইলাম, মানে? কয় যে, নাহ, আর কই যামু। স্কুলে ব্যাক করবো। পিএইচডি করবো। চাকরি হাশফাস লাগে এক্কেরে। স্কুলই ভাল। কইলাম, ভালোই তয় মিনিমাম পাঁচ-ছয় বছর, অনেকেরই বোরিং লাগতে শুরু করে। কয়, আমার লাগবো না, স্কুলে অনেক মোরাল আছে, বিনোদনও আছে …। তারপর ঘটা কইরা গত ফ্রাইডেতে হ্যালুইন এন্ড ফেয়ারওয়েল পার্টি একসাথে দেয়া হইলো কুদরত মিয়ার যাওয়া উপলক্ষে। অনেক মজাও হইলো। এরপর শোনা গেল অনেকেরই পেটে মোচড় দিয়ার পর ছোটঘরে দৌড় লাগাইতে হইছে। এন্মেতে সাধারনত খাবারে এখানে তেমন প্রবলেম হয়না। কিন্তু ওইদিনই হইলো। কেউ আর ওরে দোষ দেয়নাই এইদফায়, চইলাই যাইতেছে যখন।

শেষে কাল বিকালে আমি আর আমার এক বন্ধু উচ্ছ্বাস ওর বাসায় যাইয়া বললাম, অনেক হইছে। এইবার মাফ কইরা দে, ভাই। বিদায় হ এইখান থেইকা। হাসিহাসি মুখে কুদরতে এলাহী সব লাগেজ এক এক করে গাড়িতে তুললো। তারপর বলে যে একটু চেক কইরা দেখি বাসায় কিছু রাইখা যাইতেছি কিনা। চেইক কইরা আইসা বলে, এভরিথিং ইজ সো ফার সো গুড, চলেন। তারপর বিসমিল্লাহে মাজরাহা … বইলা এয়ারপোর্টে রওনা দিলাম একসাথে। কুদরতে এলাহী গাছ দেখে, রিড্যু নদী দেখে, রাস্তায় বালিকা দেখে। মুগ্ধ হয়। কাঁচ তোলা গাড়ির ভিতরেই হাত নাইড়া নাইড়া বলে, বিদায় সুন্দরীরা। বিদায় অটোয়াবাসী। আমরা তার কারবার দেখি আর হাসি। ফ্লাইট বিকাল ৬:১০ মিনিটে। সাড়ে চারটায় তারে নামানো হয়। সব ঠিকঠাক। কিন্তু এয়ারপোর্টে আইসা দেখা গেলো যে কুদরত-এ-এলাহির পাসপোর্ট, ল্যাপটপসহ সব দরকারি কাগজপত্রের ব্যাগ বাসায় রাইখা চইলা আসছে। ফ্লাইট ছাড়তে বাকি এক ঘন্টা চল্লিশ মিনিট। আবার যাওয়া আসা পাক্কা এক ঘন্টা দশ মিনিট।

শুরু হইলো ফিরতি যাত্রা। আমি কইলাম, আলহামদুর সুরা তিনবার, দুয়া কুনুত তিনবার আর আইতালকুরছি চাইরবার পড়। কুদরকে এলাহী কয়, আইতালকুরছি তো এখন মুখস্থ নাই। ফিসফিস কইরা আওড়াতে থাকলাম, “লাইফ রিভিলস ইটসেলফ রাদারদ্যান বিয়িং এ্যাংশাসলি কোরিওগ্রাফড” … আমরা যতো তাড়াতাড়ি করি, রাস্তায় একটু পরপর খালি লালবাতি জ্বইলা ওঠে। এট লাস্ট, ওর বাসায় আসার পর পাওয়া গেলো সেই ব্যাগ। এখন এয়ারপোর্ট পৌছাইতে হবে। চেইক ইন করাইতে হবে। উচ্ছ্বাসের আইফোনে এয়ার কানাডা চেইক ইন করতে গিয়ে দেখা গেল ফোনের চার্জ আছে মাত্র ৯%। এদিকে আবার ফ্লাইটের অনলাইন চেইকইন ক্লোজ কইরা দিসে। তারমধ্যে আবার গাড়ির তেলের মিটার লালবাতি দেখানো শুরু কইরা দিলো। রিজার্ভ দিয়ে চলতেছে। প্রতিটা সেকেন্ডের মূল্য বিশাল। এক্কেরে যেখানে গেলে বাঘের ভয়, সেইখানেই রাত পোয়ায়।

কুদরত-এ-এলাহী ছটফট করা শুরু কইরা দিলো। আমরা তারে অভয় দিয়ে যতোই কই, ভয় পাইস না। এইখানে যদিবা ফ্লাইট মিস হয়, আমরা তোরে মনট্রিয়াল নিয়া নামায়া তার্পর লন্ডন ফ্লাইটটা ধরায়া দিবো। কিছুতেই কিছু হয়না। যে মানুষ জোরে জোরে চিৎকার করে চিন্তা করে, তারে এসব সময় ঠেকায় রাখা মুশকিল, স্বান্তনা দেয়া খুবই কঠিন কাজ। তারপর সে প্যানিকের ঘাপানে একসময় বইলা বসলো যে, এইবার যদি ফ্লাইট ধরতে পারি, খুদাতালা আমি অর্ধেক ভাল হয়ে যাবো। নামাজ-কালামও ঠিকঠাক মতো পড়বো। এইসব কর্তে কর্তে আবার পৌছলাম এয়ারপোর্ট। ট্রলি টাইনা, ব্যাগ উঠায়া, হ্যান্ডসেক কইরা কুদরত দিলো দৌড়। পুরা টান টান উত্তেজনা। প্লেইন উড়তে আর ঠিক ২৫ মিনিট বাকি। চেইক ইন করা হয়নাই। আমরা দুই বন্ধু গাড়িতে উইঠাই কইলাম, শালার ভাই একটা মাল। যেইখানে যায় একটা কারবার কইরা ছাড়ে। এরপর আমরা প্রথমে গ্যাস স্টেশনে যাইয়া গাড়ির গ্যাস ভরলাম, যদি আবার মনট্রিয়াল যাওয়া লাগে। সময় হিসাব করতে থাকলাম যদি অটোয়ার ফ্লাইট মিস করে তাইলে কেম্মে কি করবো। তারপর কুদরতরে ফোন লাগাইলাম। কয়, ১০ মিনিট পর কল দিতে। ফ্লাইট ছাড়তে পাঁচ মিনিট বাকি। আমরা এয়ারপোর্টের পাশের একটা টিম হর্টনসে যাইয়া বইসা আবার কল দিলাম। এইবার কয়, ডান! আমি ফাইনালি যাইতেছি। তয় কাহিনি আছে। টেকনিক্যাল ডিফিক্যালটির জন্য আমার মন্ট্রিয়াল ফ্লাইট ক্যানসেল হইছে। তাই আমারে লাস্ট মোমেন্টে চেক ইন করতে দিসে। কাউন্টারের বেটি খুব কড়া কড়া কথা শুনাইছে প্রথমে, তার্পর মারাত্মক হেল্প করছে অবশ্য। তয় ফ্লাইট চেঞ্জ কইরা দিসে। এখন যাবো টরোন্টো, তার্পর সেখান থেকে লন্ডন। সস্তির নিঃশ্বাস ছাইড়া কইলাম, সাউন্ডস গুড! কিন্তু অন্টারিওর মাটিতে আর পা দিলে তোর টেঙ্গি ভাইঙ্গা হাতে ধরায় দিবো। এইবার কুদরত-এ-এলাহী খ্যাক খ্যাক কইরা হাসা শুরু কইরা দিলো। তারপর এয়ারপোর্টের ফ্রি ইন্টারনেট পাইয়া আমাদের ট্যাগাইয়া স্ট্যাটাস দিল, “দ্যাট ওয়াজ কাইন্ড অফ ফান, নো?” আমরা কইলাম, ফান ইনডিড! এরপর টরোন্টোর পিয়ারসন এয়ারপোর্ট থেইকা আবার আপডেট, এক সুন্দরী নীলনয়নার পাশে মাটিতে বইসা ফেইসবুকিং কর্তেছি আর বোর্ডিং-এর জন্য অপেক্ষা করি। তার্পর আবার লিখলো, প্লেনে উঠতে ডাকতেছে, যাইগা।

কুদরতে-এ-এলাহীরে শেষ পর্যন্ত পয়লা নভেম্বের অটোয়া থেকে খেদানো গেল। তবে নেক্সট টাইম এর সাথে দেখা হইলে তাবিজ দিয়া শরীল বাইন্ধা তার্পর বাকি কথা। এইরকম রদ্দি আইটেমের পাল্লায় আমি জীবনে পড়িনাই। আপাততঃ ঢাকাবাসী সাবধান দুই মাসের জন্য!

***

[যারা কিংকু এবনে কুদরতে এলাহী – কে চিনেন না, তাদের জন্য বলছি। কিংকু সিসিবি’র প্রথম থেকেই একজন নিয়মিত পাঠক। আগে কমেন্ট করলেও এখন শুধুই পাঠক। তবে সে এক্স-ক্যাডেট না হয়েও সিসিবির সাথে আছে এবং সমালোচক। সে লোক খারাপ হলেও মানুষ ভাল। … অটোয়া উইল মিস ইউ, কিংকু। পিএইচডির বাঁশ আশাকরি মজাদার হবে। শুভকামনা।]

***

ছবি: কিংকুর ছবি সুজন চৌধুরীর আঁকা।

***

পরিশিষ্ট:

অনেকই মনে করতে পারে কিংকু কেডা না কেডা তারে নিয়া এতো মাতামাতি করার কি আছে? ইনফ্যাক্ট আমি লেখার সময় মনে করতেছিলাম যে আপদ বিদায় হইছে এ্যারে নিয়া আবার লিখতেছি ক্যান? তারপর কিংকুর ঢাকা থেইকা মেইল পাইয়া নিশ্চিত হইলাম ব্যাপারটা মোটেও হ্যালাফেলার না। এইটা দেশপ্রেমের অংশ, কারণ কিংকু এখন ঢাকায়। যাইহোক, বাকিটা কিংকুর বয়ানে শুনলে আরো কিলিয়ার হবে –

“কাহিনি কিন্তু ঐখানেই শেষ হয় নাই, কুয়েতে আরো বিশাল মজা হইসে … খাড়ান বলি …

আমার কুয়েতে ট্রাঞ্জিট ছিল চল্লিশ মিনিটের, বর্ডিং লন্ডন থেকেই নেয়া, সো চল্লিশ মিনিট শূড হ্যাভ বিন এনাফ …

প্লেন টাইমেই নামলো, টার্মিনালে ঢুকে দেখলাম পচিশ মিনিট আছে তখনো … ইনফো বোর্ড খুঁজে বের করে দেখি টাইম বিশ মিনিট পিছাইসে, সো আমার হাতে
একচুয়ালি পাচচল্লিশ মিনিট আছে … গেট খুঁজে বের করলাম, দেখি সেখানে শ্রীলংকার একটা ফ্লাইটের বর্ডিং চলে, সব লোকজন ভীড় করে ঢুকতেসে … নোটিস বোর্ডে লেখা “কলম্বো-> বোর্ডিং; ঢাকা -> রিস্কেজুয়েল” … আমি ধরে নিলাম কলম্বোরটা শেষ হওয়ার পর ঢাকারটা ডাকবে, গতবার আমার বাহরাইনেও এই টাইপ অভিজ্ঞতা হইসিলো, আমি জানি এইখানে একটু দেরি হয়েই থাকে, ব্যাপার না … আমি খুঁজতে খুঁজতে একটা ভ্যাকুয়াম ক্লিনার লাগানোর পাওয়ার পোর্ট পেয়ে গেলাম, গেট থেকে বেশ দূরে … ঐখানে ল্যাপটপ লাগায়ে মাটিতে বসে ওয়ারলেস খুঁজে বের করে ফেসবুকে ঢুক্লাম …

এর মাঝে দেখি ফ্লাইটের টাইম প্রায় হয়ে গেসে, তাও রিস্কেজুয়েল লেখা বদলায় না, বোর্ডিংয়ের কথাও কয় না … মনে মনে ব্যাটাদের মুন্ডুপাত করতেসি, এইসময় দেখি এয়ারপোর্টের এক বেটি খালি গলায় গেটের সামনে এসে আমার নাম ডাকে … কাহিনী কি?

জিনিস্পত্র গুটায়ে দিলাম দৌড় … কাছে এসে শুনি প্লেন নাকি ছেড়ে দিতেসে … তড়িঘড়ি করে ঢুকতে নিসি, দেখি ঐখানে জিনিস্পত্র স্ক্যানিং হবে … আমি ল্যাপটপ বের করতে নিসি, সিকিউরিটির ব্যাটা কেইস বুঝে বললো তোমার চেকিং লাগবে না, তুমি ঐ কাউন্টারে যাও তাড়াতাড়ী … দিলাম দৌড় … গেটে গিয়া পাসপোর্ট দেখাইতেই মহিলা কয় তুমি ছিলা কই? প্লেন তো চলে যাচ্ছে …

আমি গল্প বানাইতেসি, এর মাঝে মহিল ওয়ারলেসে যোগাযোগ করে বললো লাস্ট যাত্রীরে পাওয়া গেছে, নেয়া যাবে? তারপর কি সব শুনে আমারে বললো এদিক দিয়া যাও …

টানেলে ঢুকলাম, শেষ মাথায় দেখি বিমান নাই, বাস … সেই বাসে উঠলাম, সাথে এক ইন্ডিয়ান ড্রাইভার … সে রানওয়ের উপর দিয়ে বাস ছোটাইলো, তারপর আমারে কয় কাঁহা খো গ্যায়া থা তুম? 😀

যাই হোক, প্রায় মিনিট পাঁচকে ফুল স্পীডে ছুটে রানওয়ের শেষ মাথায় প্লেন পাওয়া গেল, সেটার দরজা খোলা, সিঁড়ি লাগানো, এক স্টূয়ার্ড কোমরে হাত দিয়া খাড়ায় আছে … আমারে কয় ছিলা কই? যাই হোক, সীট দেখায় দিল, লাগেজ রেখে বস্লাম, প্লেন ছাড়লো, বিশ মিনিট লেটে 😀

পরে কাহিনী শুনলাম, [এইটা বাংলাদেশের ফ্লাইট বলে হেলাফেলা করেই হয়তো] প্লেন টানেলের কাছে নেয় নাই, যাত্রীদের বাসে করে আনছে; এবং সেইটা কলম্বোর বোর্ডিং শুরু হওয়ার আগেই … ইনফরমেশন বোর্ডটা ঠিকমত আপগ্রেড করে নাই, আমি এমনিতেই লেট করে গেটের কাছে আসছি বলে এইসব টের পাই নাই … তাও আমার উচিৎ ছিল গেটের কাছে এসে জিগেস করা, ফেসবুকিং এবং টিপিক্যাল “প্লেন তো আমারে ফালায়ে যাবে না, এত তাড়াহুড়ার কি” এটিচুডের কারণে ধরা খাইতে নিসিলাম …

ব্যাপক ঘটনাবহুল জার্নি :-D”

১২,৭৪৬ বার দেখা হয়েছে

১১৮ টি মন্তব্য : “কিংকু ইবনে কুদরতে এলাহী”

  1. মাসরুফ (১৯৯৭-২০০৩)
    চাওয়ালা, ঠোলা, হতাহত, কনফু, দিহান, মেলিতা. সাইফ ভাই, লাবলু ভাই, ফয়েজভাই, কাম্রুলাসান, সেন্ট জোনসবাসী, গুহাবাসী থেকে শুরু করে বিখ্যাত, কুখ্যাত, পপুলার সব ব্লগারের নামঠিকুজি নিয়া কথা কয়।

    আমার্নামকৈলেন্নাকি?
    :shy: :shy:

    ম্যাক্সিকালি রোজা নামের একটা রেস্টুরেন্টে। বইসা ফাহিতাস আর আখের রস খাইতেছি

    লাভভি ভাই,আমিও আগের রস আর ফাহিতাস খাপো :((

    জবাব দিন
  2. রকিব (০১-০৭)

    লুকটা কতিপয় অটোয়ানদের ভয়ে অবশেষে কানাডা ছাড়িল!!! 🙁 🙁
    অফটপিক-১: আপনার ক্যাম্রাবাজীর গুরু তত্ত্বটা এতদিনে জানলাম। :shy:
    অফটপিক-২: কিংকু ভাইয়ের মডেল্গুলা তাইলে এইবার আপনার খপ্পরে পড়তেছে!!!


    আমি তবু বলি:
    এখনো যে কটা দিন বেঁচে আছি সূর্যে সূর্যে চলি ..

    জবাব দিন
  3. মাসরুফ (১৯৯৭-২০০৩)

    হায়রে,আমি গ্র্যাজুয়েশন কইরাই কান্নাকাটি করতেছি আর কিঙ্কু ভাই পিএইচডি নিয়া দৌড়াইতেছে।ওই মিয়া,আপনেরা মানুষ হইবেননা?সারাজীবন কি ছাত্রই থাকবেন? :((

    জবাব দিন
  4. নূপুর কান্তি দাশ (৮৪-৯০)

    প্রথমে থমকে তারপর দৌড়ে ছুটতে ছুটতে উস্‌ঠা খেয়ে হাদন্ত হয়ে লেখার শেষপ্রান্তে পৌঁছুলাম। কিন্কু ক্যারেক্টারখানা তো কিন্কু করে দেয়ার মতো। বাব্বা!
    সরস গদ্য! ভারী সরস! প্রাণিত হলাম।

    জবাব দিন
  5. আমিন (১৯৯৬-২০০২)

    কিংকং সাহেবকে আমিও ভালো পাই বিশেষ করে তার ক্রীড়ামোদীতার জন্য ( আমার ডোমেইন আবার খুব ছোট তো।)
    খুবই সরস এবং প্রানবন্ত লেখা । একটানে পড়ে গেলাম। তবে এত ভালো লেখক হওয়া সত্ত্বেও কম কম লেখার জন্য রাব্বী ভাইয়ের ভ্যান চামু কিনা ভাবতেসি.... 🙂

    জবাব দিন
    • রাব্বী (৯২-৯৮)

      ফয়েজ ভাই, আমি মনে করছিলাম আপনে লুকটা বুদ্ধিমান। এখন দেখলাম না, আপনে আসলে চালাক। সেইটাই কেউরে ভালা পাইতে হইলে কারণ থাকতে হবে কেন, এন্মেই তো ভালা পাওয়া। খুবই একটা ফিলোসফিক্যাল কথা বলছেন কিন্তু, আমি চিন্তা কইরা একবারে টাক্সি খাইয়া যাইতেছি। 😛


      আমার বন্ধুয়া বিহনে

      জবাব দিন
      • মাসরুফ (১৯৯৭-২০০৩)

        মহামতি ফয়েজ (মাল)সিংহ বলেছেন- "কিংকুরে ভালা পাই, এম্নেই…………"

        বিশ্লেষণঃ
        প্রথমেই আসা যাক "কিংকুরে" শব্দটি দিয়ে।এখানে কিংকু শব্দে লেখক একটি রূপকের প্রতিচ্ছায়া অত্যন্ত কুশলীভাবে ব্যবহার করেছেন।আপনাদের নিশ্চয়ই হলিউডের বিখ্যাত "কিংকং" সিনেমাটির কথা মনে আছে,যেখানে এক অপরূপ সুন্দরী তরুনী কিংকং নামের এক বিশালাকায় গোরিলার প্রেমে পড়ে যায়!যদিও এখানে ভালবাসার ধরণটি ভিন্ন,কিন্তু কিংকং নামের আড়ালে লুক্কায়িত ফাহিম সাহেবের প্রতি লেখকের যে অগ্রজপ্রতিম ভালোবাসা,তার সাথে সেই সিনেমাটির মূল ভাষ্য অর্থাৎ মানবপ্রেমের প্রতিচ্ছবি খুঁজে পেয়ে অতীব আনন্দিত হয়েছি।স্মৃতিকাতরতার রসে ডুবিয়ে লেখক যেন আমাদেরকে এক নতুন স্বাদ আস্বাদনে বুঁদ করতে চেয়েছেন-এবং তাঁর প্রচেষ্টা সার্থক! :boss:

        এবার আসা যাক "ভালা পাই" শব্দযুগল নিয়ে।লেখক এখানে বর্তমানের অসুস্থ ডিজুসীয় বাংলা তথা বাংলা-ইংরেজির গুরুচন্ডালী মিশ্রণে যে অসহ্য মিশ্রতার জনপ্রিয়তা দেখা দিয়েছে,উপরোক্ত খাঁটি কথ্য বাংলার গর্বিত উচ্চারণের মাধ্যমে তার গালে যেন সপাটে চপেটাঘাত করলেন।তাঁর শব্দচয়নে যেন না মানার সুর,বিদ্রোহের ঘনঘটা দেখতে পাই-নজরুল-সুকান্তের পর এত অল্প কথায় এমন সুবিশাল ভাবপ্রকাশ বড় একটা দেখিনি।শুধু এই বিদ্রোহী মনোভাবের জন্যেই লেখক আলাদা সাধুবাদ পাবেন।
        "আমি লাইকাই" এর মত ফেইসবুকীয় জগাখিচুড়ির বদলে "ভালা-পাই"-এই খাঁটি বাংলা কথ্য উচ্চারণ যেন বুনো ঘোড়াকে বশে আনবার জন্যে বাতাসের গায়ে যুগপৎভাবে ভয়ঙ্কর কর্কশ কিন্তু যথোপযুক্ত সুন্দর চাবুকের শব্দ! এর সাথে "ভালা-পাই" দ্বারা চিরাচরিত মানবপ্রেমের যে সরসিজ বহিঃপ্রকাশ,তার কথা ইতোমধ্যেই নিশ্চয়ই আপনারা অনুধাবন করতে পেরেছেন,তাই আলাদা করে উল্লেখ করে আপনাদের ধৈর্যচ্যুতি ঘটালাম না।

        "এম্নেই" শব্দটির বিশ্লেষণও আমরা আগেই পেয়ে গিয়েছি,আর "..............." দ্বারা যে লেখক মানব জীবনের শ্বাশত সত্য অনিশ্চয়তাকে তুলে ধরেছেন সেটাও বলাই বাহুল্য।

        একরাশ মুগ্ধতা নিয়ে বাংলা সাহিত্যের পরবর্তী যুগের নাম শ্রীমালসিংহীয় যুগ( শ্রীচৈতন্যযুগ( ১৪৮৬-১৫৩৩) এর ধারাবাহিকতা বজায় রেখে) দেখার আশায় রইলাম।সেদিন হয়ত আমি থাকবোনা-কিন্তু পরপার থেকে আমার আত্মা ঠিকই সে সন্দেশ আহরণ করবে...।

        জবাব দিন
    • রাব্বী (৯২-৯৮)

      ধন্যবাদ আহসান ভাই। হসন্ত দিতে পারি না। কিছু মনে নিয়েন না।

      কিংকু সাহেব এখন ঢাকায় পৌছায় গেছেন এবং গিরামিনফুন থেকে তার ফেইসবুক আপডেট হইতে ১৫ মিনিট লাগতেছে বলে কিঞ্চিৎ উষ্মা প্রকাশ করছেন।


      আমার বন্ধুয়া বিহনে

      জবাব দিন
  6. সানাউল্লাহ (৭৪ - ৮০)

    রাব্বী ............. ডরাইছি! এই মহাত্মা এখন কোথায়? এবার কি উনার পদভারে ঢাকা প্রকম্পিত হবে?? 🙁

    লেখাটা সরস এবং উপাদেয় হয়েছে। পড়ে তৃপ্তি পেলুম।।


    "মানুষে বিশ্বাস হারানো পাপ"

    জবাব দিন
    • রাব্বী (৯২-৯৮)

      ধন্যবাদ লাবলু ভাই।

      এই মহাত্মা আপনাদের সবার দোয়ায় এখন ঢাকায়। তবে ঢাকা কাঁপানো এতো সোজা না। তারপরও সাবধানের মাইর নাই। ওর সেলফোন নাম্বারটা পাইলে আপনারে জানায় দিবো। আপনার সাথে দেখা করার জন্য যদি কুনুপ্রকার পায়তারা করে তাইলে ফোন করবেন না। যাবার আগে একদিন শুনায় গেছে যে সে এখনো রেডিও এবিসি শুনার চান্স পায়নাই। এইবার শুনবে। একটু সাবধানে থাইকেন। 😀


      আমার বন্ধুয়া বিহনে

      জবাব দিন
  7. কামরুল হাসান (৯৪-০০)

    ফাহিম পুলাডা লুক ভালো। বার্সেলোনার সাপুটাররা খারাপ লুক হইতেই পারে না।
    আমি এই পুলাডারে আমার সিসিবি সদস্যপদ দিয়া দিতে চাই 🙂

    রাব্বী ভাই, লেখার প্রশংসা করতে হবে? জানেনই তো।


    ---------------------------------------------------------------------------
    বালক জানে না তো কতোটা হেঁটে এলে
    ফেরার পথ নেই, থাকে না কোনো কালে।।

    জবাব দিন
  8. সাকেব (মকক) (৯৩-৯৯)

    ভাই, আমার বিশ্বাস যে স্যাটায়ার লেখাটা অন্য যেকোন শাখার চেয়ে অনেক কঠিন...
    এই কঠিন কাজটা আপনি সাংঘাতিক মুন্সীয়ানার সাথে করে দেখাইলেন...একটানে পড়ে ফেলসি এবং হাহাপেগে...আপনি বস! :boss:


    "আমার মাঝে এক মানবীর ধবল বসবাস
    আমার সাথেই সেই মানবীর তুমুল সহবাস"

    জবাব দিন
  9. দিহান আহসান

    মন্তব্য না করে পারলাম না আর 😛
    মারাত্নক ব্যাপক আর বিশেষন খুঁজে পাচ্ছিনা। 😕
    একটানে পড়ে শেষ করেও শেষ হলো না।
    এবার তাড়াতাড়ি করে " শিরোনামহীন কথোপকথন " দাও।
    ভালো থেকো। 🙂

    জবাব দিন
  10. মেলিতা

    এই মহাত্না কে মিস করলাম কিভাবে? তবে তার তোলা বালিকাদের ছবির স্যাম্পল দেখে হিংসিত হইছি এইটা ঠিক।
    আমার ঘরের জন ও একেবারে কম যায় না। গত একমাসে যে কয়দিন অটোয়ায় বৃষ্টি হল সেই কয়দিন ও অটোয়ায় ছিল। আর কিংস্টোনের বৃষ্টির দিন ওর ক্লাস থাকে :grr:
    আপনার লেখা নিয়ে মন্তব্য আর করব না,করব না, করব না। কারন
    প্রথমত হিংসা লাগে,
    দ্বিতীয়ত আপনি আমাকে সালামি+ইনফরমেশন সাপ্লাই চার্জ দেন নাই।

    জবাব দিন
  11. আয়েশা ( মগকক) আয়েশা

    এমন কিংকুর আগমন যেন হয় বাংলার প্রতি ঘরে ঘরে.....তাইলে ডিপ্রেশন বলে আর কুন্ন জিনিস থাকবেনা.....জোড়ে জোড়ে পড়লাম আর পরিবারসহ আমিও হাসলাম =)) =))

    রাব্বি ভাই, শির- ৪ কই?

    জবাব দিন
  12. কাইয়ূম (১৯৯২-১৯৯৮)

    রাব্বী দোস্ত, দারুন মজারু হইসে লেখাটা :salute:
    তোর হাতে কি জাদু আছে? (কপিরাইট মৌসুমী 😛 )

    কিংকং ফাহিমের সাথে কমেন্ট বা অন্য কোথাও ইন্টার‍্যাকশন হয়নাই আগে কখনো। তাও কখনো কেন জানি মনে হয়না পোলাটারে কোনদিন দেখিনাই। আমাদের তারকা ব্লগার তৌফিকের দোস্ত হিসাবে অনেক আগে থেইকাই গতিবিধি নজরে পড়ছিলো :gulli: আর সচলায়তনে ওর প্রবাস থেকে ব্লগগুলার একজন রেগুলার পাঠক হিসাবে ফয়েজ ভাইয়ের কপিরাইট সহ এখানে কইয়া দেই কিংকংরে ভালা পাই, এম্নেই 🙂


    সংসারে প্রবল বৈরাগ্য!

    জবাব দিন
  13. সানাউল্লাহ (৭৪ - ৮০)

    মহাত্মা কিংকু ইবনে কুদরতে এলাহী ওরফে ফাহিমের পদভারে আমাদের পল্লবীর বাসাটা ধন্য হয়েছিল গতকাল। রাব্বী, তুমি তো দেখি লুক বালা না! এইরকম একটা ভোলাবালা ছেলে সম্পর্কে এতো ব্যাপক অপপ্রচার তুমি করেছ? ছেলেটা সন্ধ্যায় চলে যাওয়ার সময় বললো, "লাবলু ভাই দেখেন আপনার বাসার সবকিছু ঠিকঠাক আছে! টিভি চলতাছে, গ্যাস লাইনে কোনো সমস্যা হয় নাই, খাবারেও কারো কোনো অভিযোগ পাওয়া যায়নি। দেখলেন, সবই অপপ্রচার!"

    আমিও ওর সঙ্গে একমত হলাম। বললাম, 'না ফাহিম, সব ঠিকঠাক আছে। আসলেই সব অপপ্রচার।'

    দলবলসহ ওদের বিদায় করে শয়নকক্ষে গেলাম। টিভিটা চালালাম। প্রিয় একটা অনুষ্ঠান দেখা শুরু করতে করতেই চলে গেল বিদ্যুৎ! লোডশেডিং............. পাক্কা এক ঘণ্টা! :no: সম্ভবত কিংকু তখনো আমাদের বাসার চারতলায় জিহাদ, আবীর গংদের সঙ্গে আড্ডা দিচ্ছিল!!

    ভাবছি, আগামী ৩ ডিসেম্বর জিতুর বাসার জিটুজিতে ওকে আমার পক্ষ থেকে নিমন্ত্রন জানাবো!! 😀


    "মানুষে বিশ্বাস হারানো পাপ"

    জবাব দিন
  14. নূপুর কান্তি দাশ (৮৪-৯০)

    কিংকুরে কুফা কেমনে কই।
    এই কিংকুরে নিয়ে লেখা পোস্টটা কেমন হিট! এই কমেন্ট টা হইলো গিয়া ৯৬তম। একটু পরেই এই পোস্ট সেঞ্চুরী কমেন্টের মুখ দেখবে, তা ওই কিংকুর কারণেই তো! 😀

    জবাব দিন
  15. আমিন (১৯৯৬-২০০২)

    যাউক গা সেঞ্চুরি...
    জয়তু কিংকু জয়তু রাব্বি ভাই...
    আর শেষ মেষ জনপ্রিয় জননন্দিত স্বনামখ্যাত স্বনামধন্য ক্যাডেট কলেজ ব্লগের জীবন্ত কিংবদন্তী স্বপ্নে জাতীয় পুরস্কার প্রাপ্ত কীর্তিমান আপন প্রতিভায় ভাস্বর মহামতি ফয়েজ ভাইয়ের গলায় গলা মিলিয়ে বলি,

    "কিংকুরে ভালা পাই, এম্নেই ..."
    জবাব দিন
  16. সাবিহা জিতু (১৯৯৩-১৯৯৯)
    তারপর ঘটা কইরা গত ফ্রাইডেতে হ্যালুইন এন্ড ফেয়ারওয়েল পার্টি একসাথে দেয়া হইলো কুদরত মিয়ার যাওয়া উপলক্ষে। অনেক মজাও হইলো। এরপর শোনা গেল অনেকেরই পেটে মোচড় দিয়ার পর ছোটঘরে দৌড় লাগাইতে হইছে। এন্মেতে সাধারনত খাবারে এখানে তেমন প্রবলেম হয়না।

    আমি মনে হয় একটু ডরাইতেসি 😕


    You cannot hangout with negative people and expect a positive life.

    জবাব দিন

মওন্তব্য করুন : কাইয়ূম (১৯৯২-১৯৯৮)

জবাব দিতে না চাইলে এখানে ক্লিক করুন।

দয়া করে বাংলায় মন্তব্য করুন। ইংরেজীতে প্রদানকৃত মন্তব্য প্রকাশ অথবা প্রদর্শনের নিশ্চয়তা আপনাকে দেয়া হচ্ছেনা।