পুষ্প, বিহঙ্গ এবং বসন্তদিন

ক’দিন থেকেই মন ও তার কারখানার যাচ্ছেতাই অবস্থা। কিছুই ভাল লাগে না। সেমিষ্টার শেষ হইয়াও হইল না শেষ – ধরনের একটা অবস্থায় ঝুলছে। স্কুলে এখন সেমিষ্টার ফাইনাল। গমগম করা ল্যোব বিল্ডিং, ইউনিসেন্টার, অট্রিয়াম অনেকটাই ফাঁকা গড়ের মাঠ। টিমহর্টনস কিংবা ষ্টারবাকস কফিশপে লম্বা সেই একপ্রস্থ লাইন আর নেই। ফিল্ড হাউস, অ্যালামনাই হলসহ যেসব জায়গায় পরীক্ষা চলে, সেখানে ঝাঁকে ঝাঁকে চিন্তাক্লিষ্ট মুখ। কেউ কেউ নোটে বা বইয়ে চোখ বুলিয়ে নিচ্ছে শেষবারের মতো। যাদের পরীক্ষা শেষ তারা ইয়ার এন্ড (একাডেমিক) পার্টি করে বাস স্ট্যান্ড নয়তো এয়ারপোর্টে ছুটছে। যারা সামার করবে তারা নিরুপায়। আমার এই শহরেই থাকতে হচ্ছে। অগত্যা বন্ধুদের একে একে বিদায় দিচ্ছি।

এখন আবহাওয়া বেশ ভালোর দিকে। বরফ নেই, মাঝে মাঝেই চিক্‌চিক্‌ করা সোনা রোদে সকাল জানান দেয় আমার জানালা দিয়ে। আবার দুই একদিন আকাশ গোমড়া মুখ করে থাকে। বৃষ্টি হয় ঝিরঝির। অফিসিয়ালি এখন বসন্ত। উত্তরের এই খোট্টার দেশে যারা পড়ে আছে তাদের জন্য এই সময়টা অনেক বর্ণিল। আমার ঘরের সাথে লাগোয়া ডেকটায় চেয়ার পাতা আছে দুটো, রোদেলা উষ্ণ দিনে সেখানে বসে ধোয়া ওঠা কাপে চুমুক দেই আলস্যে। বাড়ীর পাশের ম্যাপল গাছটায় কচিকচি পাতা জেগে উঠছে। হরেক গাছে নতুন পাতা আর ফুল আসতে শুরু করেছে। এতদিন বরফে ঢেকে থাকা বর্ণহীন ঘাসগুলো সবুজ স্বাস্থ্যবতী অপরূপা হয়ে উঠছে। পার্কে, রাস্তার পাশে, লেকের ধারে টিউলিপের চারা মাথা উচিয়ে পৃথিবীর রূপ রঙ দেখা শুরু করেছে। রঙ-বেরঙের কত যে ফুল ফুটতে শুরু করেছে। নাম না জানা নানা জাতের পাখি আবার শহরের বুকে গ্রীষ্মের উষ্ণতা উপভোগ করতে ফিরে আসছে। সেইসব পাখিদের কিচিরমিচির শব্দে বিকেলটাকে ছোটবেলার খেলার মাঠের মিষ্টি কোলাহল বলে মনে হয়। ভারি মিষ্টি ও প্রাণ জুড়ানো তাদের ডাক। তাপমাত্রা এখন অনুকূলে তাই অনেক মানুষ এখন রাস্তায় হাঁটতে বের হয়। এক দঙ্গল মানুষ মে মাসের ম্যারাথন আর ক্রস কান্ট্রিতে দৌড়াবে তাই তুমুল উৎসাহে শহরময় দৌড়ে বেড়াচ্ছে। এছাড়া ইয়োগা, ফিটনেস ডান্স, বাইকিং এসব তো আছেই। রেস্তোরাগুলো তাদের আউটডোর টেবিল লাগিয়ে দিয়েছে। সেখানেও অনেক লোক সমাগম হয়। খাবার, পানীয়, গান-বাজনা – বেশ উৎসবময় পরিবেশ।

সকালে স্কুলে যাবার সময় প্রতিদিন দেখি প্রতিবেশী মিসেস নিকোলীনা চেয়ারে সানগ্লাস চোখে তার টেরাসে বসে থাকেন। নানা ছুতোয় কথা বলতে চায় বৃদ্ধা। বেশিরভাগ দিন ট্রেন মিস হবে বলে কেটে পড়ি, দু’এক দিন ভদ্রতা করে দাঁড়াতে হয়। যেদিন বাসায় বসে পেপারের কাজ করি, কখনো কখনো খুব অসহিষ্ণু হয়ে পড়ি। কিছুতেই মন স্থির থাকতে চায় না এই কাঠের বাক্সের চারদেয়ালের ভিতর। গত সপ্তাহে তেমনই এক বিকালে কুইন এলিজাবেত ড্রাইভ‌‌ওয়ে বরাবর ডাউজ লেকে হাঁটতে চলে গেলাম। কথা আর না বাড়িয়ে সেখানে কি দেখলাম সেই ছবিতে চলে যাই।

পুষ্প কথা - এক

পুষ্প কথা - এক

পুষ্পকথা - দুই

পুষ্পকথা - দুই

পুষ্পকথা - চার

পুষ্পকথা - চার

পুষ্পকথা - চার

পুষ্পকথা - চার

পুষ্পকথা - পাঁচ

পুষ্পকথা - পাঁচ

পুষ্পকথা - ছয়

পুষ্পকথা - ছয়

পুষ্পকথা - সাত

পুষ্পকথা - সাত

বিহঙ্গকথা - পাখি উড়িয়া উড়িয়া ... উড়িয়া যায়

বিহঙ্গকথা - পাখি উড়িয়া উড়িয়া ... উড়িয়া যায়

বিহঙ্গকথা - নীল আকাশের বুকে উড়ন্ত সুখ...

বিহঙ্গকথা - নীল আকাশের বুকে উড়ন্ত সুখ...

বিহঙ্গকথা - ডাউজ লেক থেকে অন্ন সংগ্রহ

বিহঙ্গকথা - ডাউজ লেক থেকে অন্ন সংগ্রহ

বিহঙ্গকথা - উড়ে যায় বকপক্ষী...

বিহঙ্গকথা - উড়ে যায় বকপক্ষী...

বৃক্ষ - আবারো জেগে ওঠা

বৃক্ষ - আবারো জেগে ওঠা

বৃক্ষ - পুষ্পপত্র চেয়ে থাকে আকাশের পানে

বৃক্ষ - পুষ্পপত্র চেয়ে থাকে আকাশের পানে

বৃক্ষ - সবুজ আলোর ছটা

বৃক্ষ - সবুজ আলোর ছটা

ডাউজলেক - নিসর্গে ভ্রমন

ডাউজলেক - নিসর্গে ভ্রমন

দৌড় - ম্যারাথন কিংবা ক্রস কান্ট্রি

দৌড় - ম্যারাথন কিংবা ক্রস কান্ট্রি

যুগল ও বিহঙ্গ - কি কথা তাহার সাথে

যুগল ও বিহঙ্গ - কি কথা তাহার সাথে

শাখাপ্রশাখা

শাখাপ্রশাখা

বেলা শেষের আগে

বেলা শেষের আগে

২,৫৬০ বার দেখা হয়েছে

৪২ টি মন্তব্য : “পুষ্প, বিহঙ্গ এবং বসন্তদিন”

  1. রকিব (০১-০৭)

    আপনার এই ক্যামেরাটায় দুই চারবার টিপ দিছিলাম। 😀 😀 😀 😀
    আমার সংগ্রহেও একটা ছবি আছে, অনেকটা আপনার শেষ থেকে দুই নাম্বারটার মতো, যদিও ভাঙ্গাচুরা ক্যামেরায় তোলা বলে তেমন ভালো হয় নি।
    বেড়াজাল http://www.flickr.com/photos/37500486@N08/3695696481/in/photostream/
    অফটপিকঃ পুষ্পকথা-৫ টা মনে হলো ফ্রেমে অ্যাডজাস্ট হয় নাই। :-B (সম্পাদিত)


    আমি তবু বলি:
    এখনো যে কটা দিন বেঁচে আছি সূর্যে সূর্যে চলি ..

    জবাব দিন
  2. কাইয়ূম (১৯৯২-১৯৯৮)

    রাব্বী দোস্ত, দারুন সব ছবি! দুর্দান্ত!! পুষ্পকথা এক - সবচে ফ্যান্টাস্টিক!! সাথের লেখাটা মজা আরো বাড়ালো।
    হাতে সময় আছে? থাকলে তোর কাছে দাবী থাকলো ফটোগ্রাফি নিয়ে সিসিবিতে কিছু লেখার। :thumbup:


    সংসারে প্রবল বৈরাগ্য!

    জবাব দিন
    • রাব্বী (৯২-৯৮)

      কাইয়ূম দোস্ত, তোর কমেন্টে সবসময় উৎসাহ পাই।

      সময় তো একটা ব্যাপার আছেই। তারচে বড় কথা, আমি হলাম একদম হাতুড়ে ফটোতোলক। ফটোগ্রাফি নিয়ে কিছু লেখার মতো এলেম নেইরে 🙁 ছবিগুলো দেখতে ভাল লাগছিল বলে পোষ্ট করে দিলাম।


      আমার বন্ধুয়া বিহনে

      জবাব দিন
  3. রুম্মান (১৯৯৩-৯৯)

    বস,
    সিরাম । আলোটাকে চরম ধরছেন । ১ কাম করেন,হাল্কায় ১টা এক্সিবিশন লাগায়ে দেন দেশে আইসা । আল্লাহ ভরসা । আর আমরা তো নিচে আছিই 🙂


    আমার কি সমস্ত কিছুই হলো ভুল
    ভুল কথা, ভুল সম্মোধন
    ভুল পথ, ভুল বাড়ি, ভুল ঘোরাফেরা
    সারাটা জীবন ভুল চিঠি লেখা হলো শুধু,
    ভুল দরজায় হলো ব্যর্থ করাঘাত
    আমার কেবল হলো সমস্ত জীবন শুধু ভুল বই পড়া ।

    জবাব দিন

মওন্তব্য করুন : কচুপাতা (১৯৯২-৯৮)

জবাব দিতে না চাইলে এখানে ক্লিক করুন।

দয়া করে বাংলায় মন্তব্য করুন। ইংরেজীতে প্রদানকৃত মন্তব্য প্রকাশ অথবা প্রদর্শনের নিশ্চয়তা আপনাকে দেয়া হচ্ছেনা।