স্বাভাবিক সৌজন্যের বৈপরীত্য

অনুকূল ভাবনাঃ

আমাদের জীবনের কিছু অদৃশ্য ছাতার কথা ভেবে গত ০৯ মার্চ ২০১৯ তারিখে একটা কবিতা লিখেছিলাম। সেটা একটি ইংরেজী কবিতার ওয়েবসাইটে প্রকাশিত হয়েছিল। গতকাল একজন আমেরিকান গল্পলেখক আমাকে জানালেন যে তিনি একটি গল্প লিখছেন, সে গল্পের জন্য তিনি একটি ‘ছাতা’ বিষয়ক কবিতা খুঁজছিলেন। সার্চে তিনি আমার ‘An Invisible Umbrella’ শীর্ষক কবিতাটির সন্ধান পেয়েছেন, যেটা তার গল্পের সাথে সম্পূর্ণ সাযুজ্যপূর্ণ (তার ভাষায়, ‘it fits perfectly into my story’)। তিনি তার গল্পে আমার এ কবিতাটি সংযোজন করার জন্য অনুমতি চেয়েছেন। তার গল্পের কাঠামোটি অনুধাবন করার জন্য তিনি গল্পের ২৫ টি পৃষ্ঠাও কপি করে পাঠিয়েছেন। ভেবে অবাক হ’লাম, কিভাবে বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তে ছড়িয়ে থাকা মানুষের ভাবনাগুলো একজনেরটার সাথে অপরজনেরটা বছর বছরান্তর পরে হলেও মিলে যেতে পারে! আর Internet Connectivity এ অনুসন্ধানের কাজটাকে কত সহজ করে দিয়েছে!

ডিজিটাল ব্যস্ততা সত্ত্বেও মানুষ এখনো বই পড়ে, কবিতা পড়ে- বই লেখে, গল্প লেখে, কবিতা প্রবন্ধ ছড়া কথিকা সবই লেখে, এবং পড়েও, কথাটা ভাবতেও কত ভাল লাগে!

আমার সে কবিতাটাঃ

An Invisible Umbrella

She put her small umbrella in the side of her bag,
Folded, flap wrapped and buttoned.
The umbrella’s handle protruded out,
As its length was a bit bigger than the bag’s.
She left a few inches gap at one side of the zip
To allow for this clearance.

There was no rain forecast, yet she carried the umbrella.
‘Twas, as if, an assurance of security,
Against rain, against sun. She kept the bag beside her seat.
As she gently held the protruding handle,
She gratefully remembered another umbrella of her life;
Her dad, her best friend, who still invisibly hovers overhead.

Dhaka
09 March 2019

সুচতুর ভাবনাঃ

বেশ কিছুদিন আগে আমি ফেসবুকে এই স্ট্যাটাসটা দিয়েছিলামঃ

The family is a source of strength, a treasure we inherit by birth. It’s a wheel that takes us forward; usually the mom being the kingpin of the wheel, dad the driving gear and ‘love’ the driving force.

স্ট্যাটাসটা দেয়ার কিছুক্ষণ পরেই সেখানে একজন পাঠক তার একটি প্রতিক্রিয়া জানিয়ে গেলেন ‘লাভ’ চিহ্নের মাধ্যমে। স্ট্যাটাসটা যেহেতু ‘পাবলিক’ করা ছিল, সেহেতু তিনি আমার বন্ধু তালিকায় না থেকেও সেখানে তার ভাল লাগার প্রতিক্রিয়াটি জানাতে পেরেছিলেন। খানিক পরে তার ওয়ালে গিয়ে দেখি আমার পোস্টটাকে তিনি হুবহু কপি-পেস্ট করে সেখানে ঝুলিয়েছেন এবং নিমেষেই তার কিছু গুণমুগ্ধ পাঠকের কাছ থেকে লাইক, লাভ ইত্যাদি প্রতিক্রিয়া এবং ক’টি এ্যাপ্রিশিয়েটিভ মন্তব্যও পেয়েছেন। কারো মন্তব্যের উত্তরে তিনি কৃতজ্ঞতাও জানিয়েছেন কিন্তু ভুলেও উল্লেখ করেন নাই যে সে কথাগুলোর মূল রচয়িতা তিনি নন। যেহেতু কথাগুলো আমারই ছিল, সেহেতু আমিও সেখানে একটা লাইক দিয়ে মন্তব্য করলাম, ‘আমার পোস্টটাকে আপনি কপি-পেস্ট করে এখানে লিখেছেন, অথচ আমার নামোল্লেখ করেন নি। আমি আপনার প্রতিক্রিয়াসহ আমার পোস্টের স্ক্রীনশট রেখেছি। আপনি যদি অনতিবিলম্বে এখানে মূল রচয়িতার ক্রেডিট কার্টেসী উল্লেখ না করেন, তবে আমি সেটা এখানে পোস্ট করে দিব’। তিনি ঢাকার অনতিদূরে একটি জেলার অধীনস্থ উপজেলা শহরের কলেজে ইংরেজীর প্রভাষক হিসেবে নিয়োজিত আছেন। এজন্য তার প্রতি কিছুটা সম্মান দেখিয়ে স্ক্রীনশটটা আমি সরাসরি না পোস্ট করে তাকে একটি সুযোগ দিয়েছিলাম। পরমুহূর্তেই দেখি তিনি আমার মন্তব্যটা মুছে দিয়েছেন এবং ছোট্ট করে এক কথায় আমার নামোল্লেখ করেছেন, কিন্তু নামটা তিনি ট্যাগ করেন নি। ওনার সদিচ্ছা থাকলে উনি আমার সৌজন্যের প্রত্যুত্তরে আমাকে ইনবক্সে ভুল স্বীকার করতে পারতেন। এখন একজন কলেজ প্রভাষকও যদি এমন একটা কাজ করে বসতে পারেন, তবে আমরা আর কার কাছে কী আশা করতে পারি?

ঢাকা
২৫ এপ্রিল ২০২১

৯১৩ বার দেখা হয়েছে

৬ টি মন্তব্য : “স্বাভাবিক সৌজন্যের বৈপরীত্য”

    • খায়রুল আহসান (৬৭-৭৩)

      ধন্যবাদ টিটো, কবিতার প্রশংসায় এবং অভিনন্দনে প্রাণিত হ'লাম।
      কুম্ভীলকদের কোন আত্মসম্মানবোধ নেই। সামাজিক ঘৃণাই ওদের প্রাপ্য, যেমন প্রাপ্য অন্যান্য চোরদের। কিন্তু পরিহাস এই যে এ দেশে চোরেরা দাপটের সাথে ভদ্রসমাজকে শাসিয়ে চলে। ,

      জবাব দিন
    • খায়রুল আহসান (৬৭-৭৩)

      ওয়া আলাইকুম আসসালাম!

      এ মন্তব্যের তারিখটা দেখাচ্ছে ২৯শে জুন ২০২১, কিন্তু এটা এখানে প্রকাশিত হয়েছে বোধহয় গতকাল মাত্র। আমি নিয়মিত নোটিফিকেশন চেক করি। দু'দিন আগেও কোন নোটিফিকেশন দেখায় নাই।

      আমি যতদূর জানি, এক্স ক্যাডেট না হয়েও যে কোন পাঠক এ ব্লগে মন্তব্য করতে পারেন। কিন্তু রেজিঃ করতে পারেন কিনা, সে ব্যাপারে আমি ঠিক নিশ্চিত নই।
      মন্তব্যের জন্য ধন্যবাদ।

      জবাব দিন

মওন্তব্য করুন : খায়রুল আহসান (৬৭-৭৩)

জবাব দিতে না চাইলে এখানে ক্লিক করুন।

দয়া করে বাংলায় মন্তব্য করুন। ইংরেজীতে প্রদানকৃত মন্তব্য প্রকাশ অথবা প্রদর্শনের নিশ্চয়তা আপনাকে দেয়া হচ্ছেনা।