উজ্জ্বল পিঙ্গল কৈশোর

যে দুরন্ত বালকটি আজ দাপিয়ে দাপিয়ে
বন্ধুদের সাথে পাড়াময় খেলে বেড়াচ্ছে,
নোংরা ডোবায়, নালায় অনায়াসে নেমে
দু’হাত ভরে উল্লাসে ডানকানা মাছ ধরছে,
হৈচৈ করে কর্দমাক্ত হয়ে বাড়ী ফিরছে,
হায়! সে মোটেও জানেনা- এর পর
কিশোর বয়সে এসে সে একা হয়ে যাবে!
বন্ধুরা যদিবা থাকে আশে পাশেই, তবুও-
সে একা হয়ে যাবে, একা রয়ে যাবে!
একা পথ চলতে সে অভ্যস্ত হয়ে যাবে।

কোন এক সোনালী সময়ে-
তার চোখ খুলে যাবে,
জগতের সৌন্দর্য, ঈশ্বরের সৌন্দর্য,
প্রকৃতির সৌন্দর্য, নারীদের সৌন্দর্য,
সব একে একে এসে তার দুটো চোখে
বসত গড়ে যাবে দিনের পর দিন ধরে।

তার নিজের কন্ঠস্বর ভারী হয়ে যাবে, তবে-
কান দুটো খুঁজে বেড়াবে কোন কিন্নরী কন্ঠ,
কিংবা মোহনীয় কোন বাঁশির সুর, যা শুনে-
ভাবনারা পত্রপল্লবে বিকশিত হতে থাকবে।
বসন্ত বাতাসে সেসব অনুপম ভাবনাগুলো
বছর বছরান্তর ধরে আন্দোলিত হয়ে যাবে।

তারপর একদিন…..
কোন এক পাখি এসে তাকে বলে যাবে-
জীবনটা শস্যভূমির মত, যত কর্ষিত হবে,
সোনালী ফসলে তত ঘর ভরে যাবে।
সুতরাং হে যুবক, জীবন কর্ষণে লিপ্ত হও!
এর পর সে যুবক প্রৌঢ় হবে, বৃদ্ধ হবে,
কিন্তু তার মনে রয়ে যাবে কৈশোরের সেই
হিরন্ময় দিনগুলির অনুপম ছবি। মনে হবে,
সেই উজ্জ্বল পিঙ্গল কৈশোরই ছিল
তার জীবনের শ্রেষ্ঠ সময়।

ঢাকা
০৬ মার্চ, ২০১৮
সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত।

৭,৪৭৯ বার দেখা হয়েছে

৩ টি মন্তব্য : “উজ্জ্বল পিঙ্গল কৈশোর”

  1. খায়রুল আহসান (৬৭-৭৩)

    যৌবনের প্রারম্ভে কৈশোর কালেই বোধকরি মানব মানবীর মনে প্রথম প্রেমানুভূতির সৃষ্টি হয়। এ সময় থেকেই তাদের মন, মনন এবং দৃষ্টি অনুভূতিপ্রবণ এবং সংবেদনশীল হতে শুরু করে। শৈশবকালে তারা যে বর্ণিল প্রজাপতির পেছনে ছুটতো শুধুই রঙের মোহে, আনন্দে আর উচ্ছ্বাসে ওকে ধরতে, কৈশোরে এসে সে প্রজাপতিটারই দিকে তারা তাকিয়ে তাকিয়ে ওর উড়ে চলা দেখে, ওর ওড়াউড়ি দেখেই আনন্দিত হয়, ওকে আর তারা ধরতে যায় না। তারা প্রকৃতির মাঝে সুর ও ছন্দ খুঁজে, গান শোনে, গল্প বোঝার চেষ্টা করে, গল্পের ভেতরের গল্প খুঁজতে শুরু করে। জননীর ভালবাসা তাদের বুকে আজীবন মাস্তুল হয়ে রয়, কিন্তু এ বয়স থেকেই তারা সেই মাস্তুলে অন্য নানাবিধ ভালবাসার পাল ওড়াতে থাকে।

    জবাব দিন

মওন্তব্য করুন : মাহমুদুল (২০০০-০৬)

জবাব দিতে না চাইলে এখানে ক্লিক করুন।

দয়া করে বাংলায় মন্তব্য করুন। ইংরেজীতে প্রদানকৃত মন্তব্য প্রকাশ অথবা প্রদর্শনের নিশ্চয়তা আপনাকে দেয়া হচ্ছেনা।