স্মৃতিটুকু রয়ে যায়….

বালকেরা ভুলে যায়, বালিকারা নয়।
পুরুষেরা ভুলে যায়, রমণীরা নয়।
প্রথম চিঠির, প্রথম পরশের স্মৃতিটুকু,
বালকের, পুরুষের উড়ুউড়ু মন থেকে
যত দিন যায়, তত ক্ষয়ে ক্ষয়ে যায়।

বালিকারা, রমণীরা মনের তোরঙ্গতলে
সযতনে সেসব স্মৃতি ভাঁজ করে রাখে।
অলস সময়ে আকাশে কালো মেঘ হলে
তারা আপন মনে সে তোরঙ্গ খুলে বসে।
পরতে পরতে সযতনে ভাঁজ করে রাখা
স্মৃতির সে সম্ভারগুলো খুলে খুলে দেখে,
নিবিড় আবেশে বুকে মুখে মেখে রাখে।
প্রথম চুম্বনের পরশটুকু পুরুষের ওষ্ঠ থেকে
বেখেয়ালে কবে যেন টুক করে ঝরে যায়,
নারীর অধরতলে তা চিরতরে রয়ে যায়।

ঢাকা
০৬ ফেব্রুয়ারী ২০১৬
সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত।

৩,৮৮১ বার দেখা হয়েছে

৬ টি মন্তব্য : “স্মৃতিটুকু রয়ে যায়….”

  1. খায়রুল আহসান (৬৭-৭৩)

    "কবিতা পড়িনা, কবিতা বুঝিনা, কবিতা দেখলে এড়িয়ে যাবার চেষ্টা করি, দেশে কাকের চেয়ে কবির সংখ্যা বেশী, ইত্যাদি শুনে শুনে নিজে খুব আড়ষ্ট বোধ করি। অন্যকে আর কবিতা পড়তে কেমন করে বলবো!
    এই আড়ষ্টতার মাঝেই, সেদিন এক চশমাধারী উচ্ছ্বল তরুণকে বইমেলার এক স্টলে দাঁড়িয়ে বলতে শুনলাম, "কবিতা মানব মনের শুদ্ধতম অনুভূতি। যিনি কবিতা লিখেন, আমার মনে হয় তিনি কোন কুকর্ম করতে পারেন না। কবিতা কখনো মিথ্যে হয় না, কবিতা মিথ্যে বলেনা।"
    জানিনা, কবিতা সম্পর্কে সেই স্মিতহাস্য তরুণের এত উচ্চমানের ধারণার কারণ বা উৎস কী হতে পারে! তবে তার কথা শুনে আমি খুবই উৎসাহিত বোধ করেছি। সে তরুণ জানতোনা যে আমিও কবিতা লিখতে চেষ্টা করে থাকি।"
    আমার ফেইসবুক স্ট্যাটাস থেকে, তারিখ ২৬ ফেব্রুয়ারী ২০১৬

    জবাব দিন
  2. পারভেজ (৭৮-৮৪)

    খায়রুল ভাই, কবিতার বক্তব্য আর আমার অভিজ্ঞতায় বেশ ভালই অমিল পেলাম।
    যাদের যাদের সাথে আমার সম্পর্ক হয়েছে বা আছে, আমি দেখি, আমি কিন্তু সারাক্ষনই সেগুলোর সুখসৃতিই বয়ে বেড়াই।
    সেগুলার জয়গান গাই।
    অথচ, কখনো তাঁদের কারো সাথে যোগাযোগ হলে দেখি, কত কত তুচ্ছ ব্যাপারেও আমার বিরুদ্ধে গাদা গাদা অভিযোগই কেবল তাঁরা বয়ে বেড়াচ্ছেন না, তা উগড়ে দিয়ে সীমাহীন উল্লাসে মেতে উঠছেন।
    আর এক একটা সুযোগ পেলেই সেইসব অভিযোগের তীরগুলো ছুড়ে মারছেন আমার দিকে, অব্যার্থ নিশানায়।
    শুধু স্মৃতিই না, স্মৃতির নিদর্শনগুলাও আমি সযত্নে লালন করি সেটা ইলেকট্রনিকালিই হোক বা রিয়েল অবজেক্টেই হোক।
    অথচ, তাদের দেখি যাবতিয় নিদর্শন কে কত দ্রুত, কত নিষ্ঠুরভাবে ধ্বংস করবেন, তার প্রতিযোগিতায় নেমে পরেন তাঁরা।
    খুবই অবাক হই, এমনটা দেখে।
    আপনার কবিতার কথা যদি ঠিক হয়, তাহলে তো এরকম হওয়াটা ভুল, তাই না?
    আর এগুলো ঠিক হলে, কবিতাটা ভুল।
    এমন কি হতে পারে, যে তাঁরা আসলে কিছুই ভোলে না, কিছুই নষ্ট করে না, কেবলি আমাকে দেখানোর জন্য একাজগুলো করে?
    তাই বা কেন হবে?
    এসব দেখলে যে আমার কষ্ট হবে, সেটা কি তাঁরা বোঝে না?
    নাকি অন্য কোনো বেশি কষ্ট থেকে বাচাতে এই ছোট্ট কষ্ট দেয়াটা বেছে নেন তাঁরা?
    কিছুই বুঝি না।
    আসলেই মানব চরিত্র, মতান্তরে নারীর মন বোঝা বড়ই দায়!!!!!!


    Do not argue with an idiot they drag you down to their level and beat you with experience.

    জবাব দিন
  3. খায়রুল আহসান (৬৭-৭৩)

    কবিতাটা পাঠ করে তোমার এ দীর্ঘ মন্তব্য প্রকাশ করার জন্য ধন্যবাদ, পারভেজ। ব্যক্তিগত অভিজ্ঞতা শেয়ার করেছো, সেজন্যেও ধন্যবাদ।
    কবিতাটা গাড়ীতে বসে একটানে লিখেছিলাম। যখন লিখেছিলাম, তখনই ভেবেছিলাম, পুরুষ পাঠকদের কাছ থেকে কবিতার বক্তব্য নিয়ে দ্বিমত আসবে। পরক্ষণেই মনে হলো, দ্বিমত আসলেই তো ভালো। যত বেশী দ্বিমত, ততই ভালো কথা। কাজেই তোমার দ্বিমত পোষণ বা কবিতার সাথে তোমার অভিজ্ঞতার অমিলের কথা জানতে পেরে খুশীই হ'লাম, কারণ মনে হলো, তুমি একজন উজ্জ্বল ব্যতিক্রম।
    অথচ, তাদের দেখি যাবতিয় নিদর্শন কে কত দ্রুত, কত নিষ্ঠুরভাবে ধ্বংস করবেন, তার প্রতিযোগিতায় নেমে পরেন তাঁরা --
    স্মৃতির নিদর্শনগুলো ধ্বংস করলেই স্মৃতি বিলুপ্ত হয়না, বরং স্মৃতি তখন আর কোথাও জায়গা না পেয়ে মনেই গেঁথে থাকে।

    জবাব দিন

মওন্তব্য করুন : খায়রুল আহসান (৬৭-৭৩)

জবাব দিতে না চাইলে এখানে ক্লিক করুন।

দয়া করে বাংলায় মন্তব্য করুন। ইংরেজীতে প্রদানকৃত মন্তব্য প্রকাশ অথবা প্রদর্শনের নিশ্চয়তা আপনাকে দেয়া হচ্ছেনা।