অনুঘটনা-২

ছোটখাট কিছু ঘটনা নিয়ে আগে একটা লেখা দিয়েছিলাম। অনুঘটনা-১ আজ কিছু লেখতে গিয়ে দেখি কিছু মনে পড়ছেনা।ক্যাডেট কলেজের সব কাহিনী বলা হয়ে গেছে। ছোটখাট ২/১ খানা বাকি আছে।

আমরা কলেজে ঢুকেছিলাম ৪ঠা জুন।সেদিন ছিল মঙ্গলবার। আমাদের কলেজে মঙ্গলবার রাতের মেনু ছিল রুটি আর সাথে গরুর মাংস।আমরা প্রথমদিন ডিনারে ডাইনিং হলে গিয়ে দেখি ভাত নাই। বাসায় থাকতে দিনে দুইবার ভাত খাওয়া হবে না সেটা কখনো চিন্তা করিনি। এমনিতেই কলেজে পেরেন্টস চলে যাবার পর থেকে যেদিকেই তাকাই খালি অমিল ধরা পড়ে ডাইনিং এ ঢুকে তো অবাক। তখন আমাদের এক ক্লাসমেট তার গাইড কে
“ভাইয়া ক্যাডেট কলেজে রাতে ভাত খেতে দেয়না?”


একই দিনের ঘটনা আমাদের এক ছেলেকে সিনিয়র সুইট পাঠিয়েছে। জুনিয়র প্রথম আসলে বিভিন্ন দিক থেকে সিনিয়র রা নতুন ক্যাডেট কে সুইট পাঠিয়ে বরন করে নিত। আমার ছোট ভাই যেদিন এসেছে ও মনে হয় ৮ টা সুইট পেয়েছে। আমি তার দিকে তাকিয়ে দেখছিলাম বেচারা এত কিছু তার সামনে দেখে ভড়কে গিয়েছিল।তখন এক সিনিয়র বলছিল রায়হান (আমার ভাই এর ক্যাডেট নাম) তুমি তো এতগুলা পারবা না তোমার ভাইকে একটা পাঠিয়ে দাও। যাই হোক আমাদের এক ক্লাস মেটের গাইড তাকে বলছে , অমুক ভাইয়া তোমাকে সুইট দিয়েছে তাকে থ্যাঙ্কু বল। ও বেচারা আশেপাশে তাকিয়ে সুইট দেখে না। বলে ভাইয়া কোথায় সুইট। তখন বিরক্ত গাইড ভাইয়া প্লেট বাড়িয়ে দিলেন তার দিকে। তখন সে বলল
“ও এইটারে সুইট বলে ক্যাডেট কলেজে ? আমি তো ভাবছি মিষ্টি। এ তো দেখি পায়েস ”
আমাদের কলেজে পায়েস কে সুইট বলা হত।


একবার আমরা এক কালচারাল ফাংশন করার পর এক স্যার যিনি আমাদের তবলা বাজিয়ে সাহায্য করেছেন তার মন্তব্য, ” আমি আজীবন দেখলাম রবীন্দ্রসংগীত গাইতে গিয়ে সবাই তালের আগেই শুরু করে দেয়, তোমাদের এখানে বাজাতে এসে ফার্ষ্ট দেখলাম কেউ রবীন্দ্রনাথের থেকেও স্লো সুরে গান গাইতে জানে।”

১,৬৭২ বার দেখা হয়েছে

১৩ টি মন্তব্য : “অনুঘটনা-২”

  1. মরতুজা (৯১-৯৭)

    আমগো পরথম দিনে ছিল ইম্প্রুভ ডিনার, মাইনে বেস্পতিবার। আমি তো ভাবসিলাম কলেজে প্রত্যেকদিন রাইতে পোলাও খাইতে দ্যায়। কি খুশি! হালায় পরদিন শুক্রবার রাইতে দেহি দিল হুকনা রুটি। আহারে কলেজের রুটি!!

    জবাব দিন
  2. প্রথম দিন তো শালার চামচ ধরা শিখতে শিখতে টাইমে চইলা গেছিলো। :grr: :grr:

    আমার টেবিলে সব পোংটা বড় ভাই বসতো। মুরগীর একটা হেলিকাপ্টার পিস ধরাইয়া দিসিলো। ওইটার আগা মাথা খুইজা পাইতে পাইতে আমার ডিনার শেষ। :)) :))

    জবাব দিন
  3. সায়েদ (১৯৯২-১৯৯৮)
    ভাইয়া ক্যাডেট কলেজে রাতে ভাত খেতে দেয়না?

    আহারে!!

    আমি একটা ধাক্কা মতোন খাইছিলাম নতুন নতুন ইউনিটে জয়েন করার পর - রেজিমেন্টেশনের সময়। ওখানে দুপুরে ভাতের সাথে থাকে শুধু লাবড়া মতোন একটা সব্জি আর ডাল। দুপুরে ঘুণাক্ষরেও ডিম, মাংস বা মাছের নাম গন্ধও থাকে না। প্রথম প্রথম খারাপ লাগলেও পরের দিনগুলোতে প্রচন্ড ক্ষুধার কাছে হার মেনেছিলাম। তারপর ভালোই লাগত।


    Life is Mad.

    জবাব দিন
  4. মুহাম্মদ (৯৯-০৫)

    আমার হৈছে উল্টা। যেদিন কলেজে গেছি ঐদিন বোধহয় ভাত-টাত সহ ভারী কোন খাবার ছিল। আমি কইছিলাম, মানুষ এত্ত কিছু খায় ক্যাম্নে? এই কথা নিয়া এখনও মাঝে মইধ্যে টিজ খাইতে হয়।

    জবাব দিন
  5. কাইয়ূম (১৯৯২-১৯৯৮)

    অসুবিধা নাই…। চুটকি কাহিনী ই চলবে…। তবে “মাঝে মাঝে” টার রেইট যেন একটু “ঘন ঘন” হয়…।

    তপু কোনো ফাঁকিবাজি না। বসের কথাটা মাইনা চলবা 😀


    সংসারে প্রবল বৈরাগ্য!

    জবাব দিন

মওন্তব্য করুন : সায়েদ উল হাসমত (৯২-৯৮)

জবাব দিতে না চাইলে এখানে ক্লিক করুন।

দয়া করে বাংলায় মন্তব্য করুন। ইংরেজীতে প্রদানকৃত মন্তব্য প্রকাশ অথবা প্রদর্শনের নিশ্চয়তা আপনাকে দেয়া হচ্ছেনা।