আমার অসুস্থতা ( একটি সাময়িক পোষ্ট )

সিসিবিতে অনেক বড় ভাই ছোট ভাই কমেন্টে আমাকে অনেক বার জিজ্ঞেস করছেন আমার শরীর এখন কি অবস্থা। কমেন্টে উত্তর দিতে চেয়েছিলাম কিন্তু অনেক মানুষকে একসাথে জানাবার জন্য এই সাময়িক পোষ্ট। সবার প্রথমে সবাইকে অনেক অনেক ধন্যবাদ ব্লগে কমেন্টে কিংবা পার্সোনালি মেইল করে আমার খবর নেওয়া, উপদেশ, সাহস দেওয়ার জন্য।
আমি আজ গিয়েছিলাম সিলেক্টিভ নার্ভ ব্লক করার জন্য। আমার ডিস্ক প্রোলাপস হচ্ছে L5-S1 ডিস্কে মূলত, আর L4-L5 এ সামান্য ( এগুলা ভার্টেব্রা নাম্বার বিস্তারিত এখানে ) । আজ যেটা করার কথা ছিল সেটা হল সেই জায়গার নার্ভ কিভাবে যেন ব্লক করে দিবে। যাই হোক ২টা থেকে ২০ মিনিট লাগিয়ে যা তা ব্যাথা দিয়ে আমাকে সেই কাজ করে ফেলল। এরপর আমার বাম পা পুরাই অবশ হয়ে গেল (তাই হওয়ার কথা)। কিন্তু অনুভূতিটা একেবারেই নতুন আর অন্যরকম ছিল। আমার নিজের পা আমি নিজে বিন্দুমাত্র নাড়াতে পারছিলাম না তখন বুঝতে পেরেছি প্যারালাইজ হলে কি হয়। সাধারণত ১ ঘন্টার মধ্যে নাকি আবার পায়ে বোধ চলে আসে। আমার আসছিল না। যখন ভাবছি আর আসবে না নাকি তখনই দেখলাম আস্তে আস্তে আসল। ৩ ঘন্টা পর আমি নিজের পা নাড়ানো এবং পায়ে ভর দিয়ে দাঁড়াতে পেরেছি। তখনো হাটতে গেলে ব্যালেন্স হারিয়ে ফেলছিলাম। ওরা আমাকে হাঁটতে পারার আগে হাসপাতাল থেকে ছাড়ছিল না। আরো এক ঘন্টা পরে একটু একটু ভর দিয়ে হাঁটাহাঁটি করতে পারার পর এক বন্ধুর গাড়িতে করে বাসায় চলে এসেছি। এসে খেয়ে ঘুম দিলাম। ঘুম থেকে উঠে নিজের পা কে ফিরে পেয়েছি। এখন আমি হাঁটতে পারছি। একটু ব্যালেন্সলেস অবস্থায় যদিও তাও ঠিক আছি।
আর আসল যেই ব্যাথার জন্য ইঞ্জেকশনটা নিলাম সেটার সাথে এখনো বোঝাপড়া বাকি আছে। এখনো উনার আওয়াজ পাচ্ছি না। কিন্তু ব্যাপার হল শুয়ে থাকলে এমনিতেই আমার ব্যাথাটা করে না তাই অপেক্ষায় আছি হাঁটলে উনি ফিরে আসেন কিনা। নূপুর ভাই ঠিকই বলেছিল এই ইঞ্জেকশন কোন মতেই আমার আসল প্রবলেম সারানোর জন্য না। যেই অসহ্য ব্যাথাটা ছিল সেটাকে কমানোর জন্য। আর আমার ডিস্কে যেই সমস্যা সেটা ঠিক করার জন্য অপারেশন করা ছাড়া কোন উপায় নাই। এখন যেটা করা হচ্ছে ব্যাথা কমিয়ে রাখা হচ্ছে আর অপেক্ষা করা হচ্ছে এমনি এমনি ঠিক হয় কিনা। এই ডিস্কের বাড়তি অংশ নাকি আবার নিজে নিজেই ভিতরে ঢুকে যায় অনেক সময়। আর এই ইঞ্জেকশন দেওয়ার কারণে আশা করা যায় আগামী ৩-৪ মাস আমার ব্যাথা সহনীয় পর্যায়ে থাকবে। এইভাবে কিছুদিন দেখার পর যদি ঠিক না হয় তাহলে শেষ পর্যন্ত অপারেশন করানো হতে পারে। এগুলো সবই ডাক্তারের কথা । ককর নামে একজন রংপুর এর ভাইয়া আমাকে মেইল করেছিল। ওনার একটা কথা খুব মনে পড়ছে সুস্থ থাকাটাই আসলে সবচেয়ে বড় ব্যাপার যেটা আমরা সুস্থ থাকা অবস্থায় বুঝি না।
সিসিবির সবাইকে অনেক অনেক ধন্যবাদ। কারো নাম আর বললাম না । অপেক্ষা করছি খুব শীঘ্রই একটা সাময়িক পোস্ট দিতে পারব যে আমি আজ ফুটবল খেলতে যাচ্ছি।

৩৬ টি মন্তব্য : “আমার অসুস্থতা ( একটি সাময়িক পোষ্ট )”

  1. কামরুলতপু (৯৬-০২)

    ধন্যবাদ ভাইয়ারা , তোমাদের শুভ কামনায় প্রতিদিন সিসিবিতে এসে টিকে থাকা এবং সহ্য করার রসদ সংগ্রহ করি সেই সাথে সাহস। সত্যি বলতে বেশ ভয় পাচ্ছিলাম কয়েকদিন ধরেই আজকের ব্যাপারটার জন্য। ।

    জবাব দিন
  2. রকিব (০১-০৭)

    তপু ভাই, বাংলাদেশে আন্টি, পার্থ ভাইয়া আর কনক ভাই খুব চিন্তায় আছেন, তাই না?
    ইনশাল্লাহ, আপনি দ্রুত সুস্থ্য হয়ে উঠবেন।


    আমি তবু বলি:
    এখনো যে কটা দিন বেঁচে আছি সূর্যে সূর্যে চলি ..

    জবাব দিন
  3. মোস্তফা (১৯৮৮-১৯৯৪)

    ধ্রুত সুস্থ হয়ে উঠ এই কামনা করি। এসব ক্ষেত্রে মনে হয় অপারেশন করলে ভালো হয়, তোমার ডাক্তার আমার চেয়ে ভালো জানবেন। আমার নিজের কথা বলতে পারি, তাতে যদি তোমার ভালো লাগে। আমার সমস্যা ছিল ঘাড়ের জয়েন্ট এ। সিরিয়াস ব্যাথা হতো। প্রায় আট মাস ভুগলাম। শেষ পর্যন্ত যখন তারা বের করলো সমসস্যা টা, তখন ইমিডিয়েট অপারেশন করলো। বললো আমার ভাংগা জয়েন্ট আমার নার্ভকে যে কোন সময় কেটে ফেলতে পারে। তখন আমার কোর্স চলছিলো, তারপরেও আগে জীবন। অপারেশন এর পর আমি ভাল আছি। এমন কি আবার ফুটবল খেলছি। এই একটি জিনিস মনে হয় মরে গেলেও ছাড়তে পারবো না।

    জবাব দিন

মওন্তব্য করুন : কাইয়ূম (১৯৯২-১৯৯৮)

জবাব দিতে না চাইলে এখানে ক্লিক করুন।

দয়া করে বাংলায় মন্তব্য করুন। ইংরেজীতে প্রদানকৃত মন্তব্য প্রকাশ অথবা প্রদর্শনের নিশ্চয়তা আপনাকে দেয়া হচ্ছেনা।