পেটিস খাইতাম


মাহবুব স্যার, বোটানি। চরম তার ব্যক্তিত্ব। সারাক্ষণ একটা ভাব নিয়েই থাকেন কিন্তু কথা বলার সময় বেশ মজা করে কথা বলেন। ওনার একটা কাহিনী। হাউস ফাংশানে ছেলেকে নিয়ে এসেছে উনি। (প্রসংগত উনি সিলেটি এবং কথাবার্তায় সিলেটি টান বিদ্যমান)। হাউস ফাংশান গুলাতে প্রায়সময়ই একই ধরণের মেনু থাকে। টি এর সবচেয়ে ভালো মেনু পেটিস হয়তবা একটা মিষ্টি আর চা। সাথে হয়তবা কোক। স্যার ছোট ছেলে কিছুক্ষণ ধরেই ফাংশানের অপরিহার্য অংশ বক্তৃতা শুনছে। কিছুক্ষণ পরে আর থাকতে না পেরে মজাদার খাবার এর দিকে ইশারা করে স্যারকে বলছে ” আব্বা পেটিস খাইতাম”। স্যার তো চোখ বড় করে একটা ইশারা ঝাড়ি দিল। কিছুক্ষন চুপচাপ। আবার ছেলের খাওয়ার বায়না। “আব্বা আমি পেটিস খাইতাম” । স্যার এইবার একটু লজ্জিত কারণ অনেকেই ওইটা শুনে ফেলেছে এইবার একটা হালকা গলায় “চুপ”। ছেলে আবার কিছুক্ষণ চুপচাপ। কিছুক্ষণ পরে আবার তার আবদার। তার অবশ্য দোষ নেই। আর কতক্ষণ বক্তৃতা শোন যায়। এইবার স্যার চরম বিরক্ত ” shut up, you will be given”। এইবার ছেলের তড়িৎ উত্তর ” আব্বা given খাইতাম না তো, পেটিস খাইতাম।
পেটিস এর কাহিনী বলতে গিয়ে আমার খুব পেটিস খেতে ইচ্ছা করছে। বহুদিন খাইনা। কলেজের এই টি টা খুবই মজাদার ছিল।

এইবারের কাহিনীটা আমার ছোটভাইদের। (ওর পিসিতে বাংলা এখনো নাই তাই আমাকে বলছে ওর হয়ে লিখে দিতে)। ওর বর্ণনাতেই বলিঃ আমরা তখন নতুন ইলেভেন এ আসছি। এসএসসিতে রেজাল্ট খুব ভালো হয়েছে তাই পাঙ্খা নিয়ে চলি। পড়ালিখার কোন ধারে কাছে নাই। আর আমাদের সুরমা হাউসের পোলাপানদের তো কথাই নাই। সারাদিন বাদরামির মধ্যেই থাকে। এরই মধ্যে প্রথম টার্মএন্ড চলে আসল। পরীক্ষার পর খাতা দেওয়া শুরু হয়েছে। হঠাৎ এক দিন রসায়ন এর রাখাল স্যার এসে বলতেছেন তোদের মাঝে একটা বিশাল পন্ডিত পাওয়া গেছে। ও পরীক্ষার খাতায় কি উত্তর দিছে শোন। প্রশ্ন ছিল “এলকোহল পানিতে দ্রবণীয় ? কেন?”। উত্তর টা এইরকম …। হ্যা, এলকোহল পানিতে দ্রবণীয়। কারন এলকোহল পানিতে দ্রবণীয়। এলকোহলের মধ্যে পানিতে দ্রবণীয় হবার মত গুণাগুণ আছে তাই এলকোহল পানিতে দ্রবণীয়। এবং যেমন তেমন ভাবেই দ্রবণীয়। উদাহরণঃ এলকোহল পানিতে দিলে দ্রবীভূত হয় তাই এলকোহল পানিতে দ্রবণীয়।
(লিখতে গিয়ে আমি নিজেই হাসতেছি) এখানেই তেনার পন্ডিতি শেষ হয়নাই। তারপরের প্রশ্ন হল ” বিরল মৃত্তিকা ধাতু কাকে বলে?” উত্তরঃ “যেই সকল ধাতু সমূহ পৃথিবীতে অতি বিরল তাদেরকেই বিরল মৃত্তিকা ধাতু বলে। উদাহরণঃ বিরল মৃত্তিকা ধাতু।

এই কাহিনী লিখতে গিয়ে আমাদের একটা কাহিনী মনে পড়ল। ক্লাস নাইনে উঠেছি। আর্টস পার্টির কাছে জেনারেল ম্যাথ হল জীবন্ত বিভীষিকা। তো পরীক্ষায় প্রমাণ এসেছে sin(2)+cos(2)=1. আমাদের ওই ফ্রেন্ড প্রমাণ করেছে এইভাবে-
যেহেতু আমরা জানি,
1-cos(2)=sin(2)
so,
sin(2)+cos(2)=1
(proved)

৩৪ টি মন্তব্য : “পেটিস খাইতাম”

  1. লুবজানা (২০০৫-২০১১)

    =)) =)) =)) =)) =)) =)) =)) =)) =)) =)) =)) =)) =)) =)) =)) =)) =)) =)) =)) =)) =)) =)) =)) =)) =)) =)) =)) =)) =)) =)) =)) =)) =)) =)) =)) =)) =)) =)) =)) =)) =)) =))
    এত্ত মজা জীবনেও পাইনাই! আল্লাগো! কী অবস্থা! আম্মু!


    নিজে যেমন, নিজেকে তেমনি ভালবাসি!!!

    জবাব দিন
  2. লুবজানা (২০০৫-২০১১)

    আমার একটা কথা মনে পড়ে গেল...ক্লাস এইটে থাকতে একবার আমার ক্লাসমেট সিতারা ম্যাডামের খাতায় লেখসিল,"মাই নেম ইজ (না বলাই ভাল)"যদিও সেটা বড় প্রশ্নের উত্তরের মাঝে ছিল!

    ম্যাডাম সেটাও দেখেন নাই এবং সে এ+ পাইসিল!


    নিজে যেমন, নিজেকে তেমনি ভালবাসি!!!

    জবাব দিন
  3. রুম্মান (১৯৯৩-৯৯)

    মেহেদীর কথা মনে পইরা যায়।লিখুম লিখুম একদিন আমিও..............


    আমার কি সমস্ত কিছুই হলো ভুল
    ভুল কথা, ভুল সম্মোধন
    ভুল পথ, ভুল বাড়ি, ভুল ঘোরাফেরা
    সারাটা জীবন ভুল চিঠি লেখা হলো শুধু,
    ভুল দরজায় হলো ব্যর্থ করাঘাত
    আমার কেবল হলো সমস্ত জীবন শুধু ভুল বই পড়া ।

    জবাব দিন

মওন্তব্য করুন : লুবজানা (২০০৫-২০১১)

জবাব দিতে না চাইলে এখানে ক্লিক করুন।

দয়া করে বাংলায় মন্তব্য করুন। ইংরেজীতে প্রদানকৃত মন্তব্য প্রকাশ অথবা প্রদর্শনের নিশ্চয়তা আপনাকে দেয়া হচ্ছেনা।