কলেজের প্রথম দিন মে ২০, ১৯৯৩। (পাবনা ক্যাডেট কলেজ)

সকাল থেকেই অস্থিরতার শুরু।ব্যাগ গুছিয়ে চলেছি।কি বাদ পড়ল  আর কি বাদ পড়লো না তা দেখছি যেন বার বার। আমার মনে হয় ব্যাগ টা ২ কি ৩ বার গুছিয়েছি। সকালেই চুল কাঁটিয়ে আসলাম। গোসল করে নিলাম । সকাল গড়িয়ে দুপুর। টেবিলে মা তার ছেলের জন্য নানান পদের খাবার রান্না করে ভরে ফেলেছে। কোনটা রেখে কোনটা খাব? এই ক’দিন চামচ দিয়ে খাওয়ার অভ্যাস করেছি। আজ আর না । আজ হাত দিয়ে খাব। আবার কবে খেতে পারবো তার তো ঠিক নাই।
খাওয়া দাওয়া শেষ করে একটু ঘুমিয়ে নিলাম। বিকাল ৩ টা বাজে। ৪ টা বাজার জন্য অপেক্ষা। মা কি কি যেন খেতে দিয়েছিল মনে পরছে না। তবে মায়ের ইচ্ছাতে পেট ভরে গলা পর্যন্ত ঠেসে ঠেসে খেয়েছিলাম। ৪ বাজার আগেই বের হলাম। সবার সাথে দেখা করলাম। সবাইকে পায়ে হাত দিয়ে সালাম করলাম। সবাই আমার জন্য দোয়া করল।
৪ টার পরপর ই কলেজে প্রবেশ করলাম। আমার ব্যাগ চেক করল। তারপরে একজন আরিফ আমাকে নিতে আসল। আরিফ তখন আমার গাইড। না সে তো আর আরিফ না আরিফ ভাই তখন। তো আরিফ ভাই আমাকে নিয়ে গেল shiraji house এ । শুরু হল আমার কলেজ জীবনের পথচলা।
কলেজ জুড়ে সবাই সাদা পোশাক পরে ঘুরে বেড়াচ্ছে। আমাকে নিয়ে যাওয়া হল ৩০৪ নাম্বার রুমে। কলেজ জীবনে আমার প্রথম রুম। মাগরিবের আগে আগে সবার বাবা মা বিদায় নিয়ে চলে গেলেন। আরিফ ভাই ততক্ষণে কলেজের নিয়ম কানুন সেখান শুরু করে দিয়েছেন। রুমের সবার সাথে পরিচয় পর্ব এর মধ্যে শেষ। আমি আশিক আর শাহিন। পরে রিপন যে আমার ছোটবেলা বন্ধু সেও আমাদের রুমে চলে আসেছিল।
Tea break হবে মাগরিবের আগে। সাদা পায়জামা পাঞ্জাবি পরে লাইন ধরে করিডরে দার করিয়ে দিলেন গাইডরা। আমরা ১৯ জন। মোট ছিলাম ৫৬ জন। তখনও পর্যন্ত সবচেয়ে বড় ব্যাচ।  Tea break শেষে মাগরিবের নামাজ পরে আবার হউসে । সবার সাথে পরিচয় পর্ব শুরু । দুরু দুরু বুক। ভয় ভয় নিয়ে পথচলা। বড় ভাইয়াদের সাথে পরিচয়। রাতের খাবার সময় হয়ে গেল । রাতের খাবার শেষ করে আসে বিদায়ী ব্যাচের ভাইয়াদের সাথে পরিচয়। ১০ম ব্যাচ। যাদের কে আমরা ৭ দিনের জন্য পেয়েছিলাম।
১০ঃ৪৫ । লাইট’স  অফ। ইচ্ছা হোক আর অনিচ্ছাই হোক লাইট’স  অফ।
অনেক কথা বাদ পরে গেছে। আরেক দিন লিখব।

১,০০০ বার দেখা হয়েছে

৪ টি মন্তব্য : “কলেজের প্রথম দিন মে ২০, ১৯৯৩। (পাবনা ক্যাডেট কলেজ)”

  1. রাজীব (১৯৯০-১৯৯৬)

    :thumbup:
    বলোগে স্বাগতম।
    এখন ১০ টা দিয়া দাও।
    আর কষ্ট করে নামটা বাঙলা।
    এখন :teacup: খাও।


    এখনো বিষের পেয়ালা ঠোঁটের সামনে তুলে ধরা হয় নি, তুমি কথা বলো। (১২০) - হুমায়ুন আজাদ

    জবাব দিন

মওন্তব্য করুন : ওয়াহিদা নূর আফজা (৮৫-৯১)

জবাব দিতে না চাইলে এখানে ক্লিক করুন।

দয়া করে বাংলায় মন্তব্য করুন। ইংরেজীতে প্রদানকৃত মন্তব্য প্রকাশ অথবা প্রদর্শনের নিশ্চয়তা আপনাকে দেয়া হচ্ছেনা।