১৬ বছর বয়সী নিজেকে লেখা চিঠিঃ পিট স্যাম্প্রাস

প্রিয় ১৬ বছর বয়সী পিট,
কয়েকদিনের মধ্যেই তুমি পেশাদার হিসেবে আত্মপ্রকাশ করতে চলেছ এবং আমি জানি-এটা নিয়ে তুমি অনেক রোমাঞ্চিত! নিজের সামর্থ্যের ব্যাপারে তুমি যথেষ্ট অবগত আছো বলে মনে মনে নিশ্চিত জানো যে-ঠিকমত পরিশ্রম করলে, খেলাটার প্রতি সৎ থাকলে সাফল্য তুমি পাবেই। বিশ্বাস কর, যতটা আশা করছ-তারচেয়ে অনেক আগেই তুমি সাফল্যের স্বাদ পাওয়া শুরু করবে! শুরুতে কিছুটা উত্থান-পতন থাকবে, তবে বছর দুয়েকের মধ্যে তুমি বিশ্বের প্রথম পাঁচ জনের মধ্যে চলে আসবে এবং ইভান লেন্ডল, জন ম্যাকেনরো, আন্দ্রে আগাসির মতন গ্রেটদের হারিয়ে তুমি ইউ এস ওপেন জিতবে! ১৯ বছর বয়সে সর্বকনিষ্ঠ খেলোয়াড় হিসেবে ইউ এস ওপেন জেতার গৌরব তুমি অর্জন করবে!

1

আর এরপরই সবকিছু বদলে যাবে।

ইউ এস ওপেন জেতার পর তোমার জীবন আর আর দশটা সাধারণ আমেরিকান টিনেজারের মতন রইবে না। শিরোপা জেতার পরদিন সকাল থেকেই তুমি হবে টক শো এর মূল আকর্ষণ। সবার চোখ থাকবে তোমার উপর এবং এই লাখো-কোটি মানুষের আগ্রহের কেন্দ্রে থাকার চাপের সাথে মানিয়ে নিতে তোমার সময় লাগবে। সত্যি কথা বলতে কি, তোমার চাপা স্বভাবের কারণে এটি হয়ত কখনোই পুরোপুরি মানিয়ে নিতে পারবে না!

শখের টেনিস খেলার সাথে পেশাদার টেনিসের আকাশ-পাতাল পার্থক্য! তুমি যত বেশি সাফল্য পাবে, তোমাকে নিয়ে তত বেশি টানাটানি শুরু হবে। তুমি যেমন চাও তেমনটি সবসময় হবে না এবং তিক্ত সত্য হচ্ছে, সবসময় খেলার অভিজ্ঞতাটাও মজার হবে না। ভাল করার সার্বক্ষণিক চাপটিই হবে তোমার জীবনের সবচেয়ে শক্ত প্রতিপক্ষ। তবে, একজন চ্যাম্পিয়ন হিসেবে এটাকে তুমি নিজেও এড়াতে চাইবে না। তুমি টেনিস ভালবাস খেলাটির সৌন্দর্যের জন্যই, এজন্য না যে তুমি অর্থ-যশ-খ্যাতি পছন্দ কর! কিন্তু, মিডিয়ার আকর্ষণ তোমাকে ঘিরে তৈরি হবেই। ফলে, নিজেকে মিডিয়ার সামনে প্রেজেন্টেবল করে তোল। পারলে ছোট-খাট মিডিয়া ট্রেনিংও নিতে পার-ভবিষ্যতে খুব কাজে লাগবে। তোমার ভাগ্য ভাল যে টুইটার বা ফেসবুক আসার অনেক আগেই তুমি অবসর নিয়ে নেবে। এজন্য নিজেকে চরম সৌভাগ্যবান ভাবতে পার। আজ হয়ত আমার কথা বুঝতে পারছ না, তবে একদিন ঠিকই বুঝতে পারবে আমি কি বোঝাতে চেয়েছি!

ওহ! আরেকটি কথা-পত্রিকা এড়িয়ে চলবে। লোকে তোমার ব্যাপারে কি লিখছে, কি ভাবছে- এসব পড়ার কোন দরকার নেই, এসব পড়ে কখনোই কোন লাভ হবে না। আর যদি নেতিবাচক কিছু চোখে পড়েই- সেটা নিয়ে সময় নষ্ট করার কোন মানে নেই। যে কোন সমালোচনার জবাব দেবে তোমার খেলার মাধ্যমে, অন্য কোন ভাবে নয়!

এবার তোমার খেলা নিয়ে কিছু কথা বলা যাক। তোমার আমলেই নতুন রক ধরনের স্ট্রিং (String) এর চল শুরু হবে যা তোমাকে বাড়তি গতি এবং স্পিন যোগাবে। গুস্তাভো কোয়ের্তেন প্রথম এটি ব্যবহার করেই ক্লে কোর্টে সাফল্য পাবে। শুধু তাই নয়, তোমার কোচ এবং অন্যান্য খেলোয়াড়গণও তোমাকে নতুন স্ট্রিং ব্যবহার করার পরামর্শ দেবে, অথচ শুরুতে তুমি হয়ত মানতে চাইবে না। এটা অবশ্য নতুন কিছু নয়, অনেক টেনিস খেলোয়াড়েরই নিজ নিজ সরঞ্জামাদির ব্যাপারে বাতুলতা থাকে। তবে, তুমি যদি ফ্রেঞ্চ ওপেন জিততে চাও এবং ক্যারিয়ার গ্র্যান্ড স্ল্যাম সম্পন্ন করতে চাও- তোমাকে নতুন নতুন পন্থা অবলম্বন করতে হবে। নতুন প্রযুক্তির ব্যাপারে সব সময়ই তোমাকে খোলামন বজায় রাখতে হবে।

Pete Sampras from Tampa, Fl, USA holds his trophy above his head in front of a mass of photographers after he won the final of the  Australian Open Tennis Championships in Melbourne, Sunday, January 26, 1997. Sampras defeated Carlos Moya of Spain 6-2, 6-3, 6-3, to win the tournament. (AP Photo/Russell McPhedran)

প্রযুক্তির পাশাপাশি তোমাকে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হাতিয়ারের যত্ন নেয়াও শিখতে হবে- তোমার শরীর! কি ধরনের খাবার খাচ্ছ তা সবসময় খেয়াল রাখবে। এমন হতে পারে কোন গভীর রাতে হঠাৎ করে হ্যামবার্গার বা পিৎজা খেতে ইচ্ছে করবে। এর মানে হচ্ছে তোমার শরীর কোন কিছুর অভাব বোধ করছে। তুমি যদি শরীরের সে সব চাহিদা (অবশ্যই হ্যামবার্গার বা পিজ্জা নয়!) পূরণ না কর, পরেরদিন টেনিস কোর্টে গিয়ে খেলার মধ্যে অজ্ঞান হয়ে পড়ে যেতে পার! ১৯৯৬ সালের ইউ এস ওপেনের সময় এই শিক্ষাটি তুমি হাড়ে হাড়ে বুঝবে। কোয়ার্টার ফাইনালে তোমাকে মোকাবেলা করতে হবে আলেক্স কোরেইৎজা’র বিরুদ্ধে। চতুর্থ সেটে গিয়ে তোমার শারীরিক দুর্বলতা দেখা দেবে, কেননা ম্যাচের আগে তুমি ঠিকমত খাওয়া-দাওয়া কর নি। সাময়িক ‘বুস্ট আপ’ এর জন্য তুমি এক ক্যান কোকাকোলা খাবে, কিন্তু তাতে হিতে বিপরীত হবে। পঞ্চম সেটের টাইব্রেকারের সময় তুমি সবার সামনে কোর্টের মধ্যেই বমি করে দেবে! শেষ পর্যন্ত ম্যাচটি তুমি জিতে যাবে, তবে বিশ্বাস কর, ব্যাপারটা মোটেই সুখকর হবে না (অবশ্য দর্শকদের অনেকেই এই ‘ড্রামা’ দেখে মজা পাবে!)। কালের বিবর্তনে প্রায় সব খেলোয়াড়ই একদিন ‘নিউট্রিশন ফ্রিক’ এ পরিণত হবে। তুমি অন্যদের চেয়ে আগে শুরু করে কেন এগিয়ে থাকতে চাইবে না?

ভাল কথা তোমার ঔষধ-পত্রের ব্যাপারেও সাবধান থাকবে। জেট-ল্যাগ কাটাবার জন্য তুমি যদি কোনদিন স্লিপিং পিল খাওয়া শুরু কর, কিছু বুঝে ওঠার আগে দেখবে তাতে তুমি নির্ভরশীল হয়ে পড়েছ! হাতের ব্যথার কারণে কেউ যদি তোমাকে কখনো কড়া কোন ঔষধ দেয়, বোতলটি জানালা দিয়ে ছুঁড়ে ফেলে দেবে। কেননা, ঐ ঔষধ খেয়েই ভবিষ্যতে তোমার প্রচণ্ড যন্ত্রণাদায়ক ও দীর্ঘমেয়াদী আলসার হবে। এজন্য, শরীরে কি কি যাচ্ছে তা খুব সাবধানতার সাথে খেয়াল রাখবে।

তুমি তোমার নায়কদের বিরুদ্ধে খেলার সুযোগ পাবে, যেমন-ইভান লেন্ডল, জিমি কনর্স…যাদেরকে দেখে তুমি বড় হয়েছ! এমনকি জন ম্যাকেনরো’র সাথে ডাবলস খেলার সুযোগ পাবে, যা অনেকের কাছেই বৈসাদৃশ্যপূর্ণ মনে হতে পারে! কেননা, তুমি ঠাণ্ডা মাথার ধীর-স্থির স্বভাবের ডানহাতি খেলোয়াড়। অন্যদিকে ম্যাকেনরো আবেগপ্রবণ, পরিশ্রমী এবং অত্যন্ত চঞ্চল স্বভাবের বামহাতি খেলোয়াড়! তোমরা একে অপরকে দারুণভাবে ভারসাম্য অবস্থায় রাখবে। ম্যাকেনরো ক্ষেপে গেলে তুমি তাকে বুঝিয়ে ঠাণ্ডা করবে, অপরপক্ষে তোমার মধ্যে অবসাদ এলে ম্যাকেনরো তোমাকে চার্জিত করে ফেলবে! তোমরা একসাথে ডেভিস কাপ জিতবে এবং ক্যারিয়ারের অন্যতম মজার সময় এই গ্রেট তারকার সাথে খেলার সময় পার করবে।

তবে, তুমি যখন অবসর নেবে তখন ওঁদের সবার নাম ছাপিয়ে একজনের নাম তোমার সাথে চির জীবনের সাথে জুড়ে যাবে- আন্দ্রে আগাসি!

আমি জানি, তুমি এখন এটা উপলব্ধি করতে পারছ না। তবে, আন্দ্রে আগাসি সাথে তোমার অত্যন্ত শক্ত এবং স্পেশাল প্রতিদ্বন্দ্বিতা গড়ে উঠবে। তোমার সমগ্র ক্যারিয়ারে মোকাবেলা করা সবচেয়ে সেরা প্রতিপক্ষ হবে সে, এবং তাঁর সাথে খেলার সময়েই তুমি তোমার সেরাটা দেখাবে। তোমরা প্রায় একই সাথে পৃথিবীর সেরাদের কাতারে উঠে আসবে এবং তোমাদের খেলা ঘিরে সারা পৃথিবীর মধ্যে উন্মাদনা তৈরি হবে। প্রতিটি ম্যাচই ‘হেভিওয়েটের’ আখ্যা পাবে। তুমি সর্বমোট পাঁচটি গ্র্যান্ড স্ল্যাম ফাইনালে আগাসি’র মোকাবেলা করবে, সৌভাগ্যক্রমে এদের মধ্যে চারটিতেই জয়লাভ করবে! যদি পঞ্চমটিও জিততে চাও-আমি কিছু টিপস দিতে পারি!!

3

১৯৯৫ সালের অস্ট্রেলিয়ান ওপেন ফাইনালে একটি পর্যায়ে তোমরা ১-১ সেটের সমতায় থাকবে। তৃতীয় সেটের টাইব্রেকারে তুমি ৬-৪ এ এগিয়ে যাবে, সেট জেতার জন্য তুমি সার্ভ করবে, যা জিতলে তুমি ২-১ ব্যবধানে এগিয়ে যেতে পারবে। তুমি সার্ভটা ‘ওয়াইড’ কর না, কোর্টের মাঝা মাঝি রেখ। যদি মনে কর আগাসি থেকে দূরে সার্ভ করলে পয়েন্ট পাবে-ভুল করবে। উলটো ও তোমাকে ফোরহ্যান্ড দিয়ে পরাস্ত করবে এবং সেট জিতে নেবে। এক পর্যায়ে ম্যাচও জিতবে। আমার এই পরামর্শ তোমাকে হয়ত জেতার ব্যাপারে শতভাগ গ্যারান্টি দেবে না, তবে তোমাকে কিছুটা হলেও সুবিধেজনক অবস্থানে নেবে- তাতে কোন সন্দেহ নেই!

জীবনের প্রথম এবং সর্বশেষ গ্র্যান্ড স্ল্যাম তুমি আগাসিকে হারিয়েই জিতবে। এর মাঝে পার হয়ে যাওয়া বছরগুলোর দিকে তাকালে তুমি বুঝতে পারবে- তোমার এবং আগাসির মধ্যকার প্রতিদ্বন্দ্বিতা শুধু নিজেদের জন্যই নয়, যুক্তরাষ্ট্রের টেনিসের জন্যও কতটা গুরুত্বপূর্ণ ছিল! তোমাদেরকে দেখেই লাখো ছেলে-মেয়ে টেনিসের খেলাটার জন্য আগ্রহী হয়ে উঠবে। তোমাদের দুজনের খেলার ধরণ এবং ব্যক্তিত্ব সম্পূর্ণ আলাদা। অথচ পরস্পরের প্রতি শ্রদ্ধাবোধ এবং দুজনের মধ্যকার প্রতিদ্বন্দ্বিতাকে খেলার মধ্যে সীমাবদ্ধ রাখতে পারার কারণে এটি হবে সর্বকালের অন্যতম সেরা এবং সবচেয়ে প্রশংসিত!

তবে, শুধু আগাসি বা ওঁর সাথে গড়ে ওঠা প্রতিদ্বন্দ্বিতার কথা মনে রাখলেই তোমার কাজ শেষ হয়ে যাবে না, তোমার জীবনের আরও অনেক গুরুত্বপূর্ণ মানুষ আসবে যাদের কারণে তোমার খেলা এবং জীবন শ্রেয়তর হয়ে উঠবে। তাদের কথাও মনে রাখতে হবে। এঁদের মধ্যে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ নিঃসন্দেহে তোমার ভবিষ্যতের কোচ, শিক্ষক এবং বন্ধু- টিম গালিকসন!

’৯৫ সালের অস্ট্রেলিয়ান ওপেন চলাকালীন সময়ে, যেটাতে তুমি আন্দ্রে’র কাছে হেরে যাবে (যদি আমার দেয়া টিপস মেনে না চল, আর কি!) টিম রহস্যজনক-ভাবে অসুস্থ হয়ে পড়বে এবং টুর্নামেন্টটি দেখতে পারবে না। তাঁকে এভাবে হাসপাতালে ভর্তি হতে দেখা এবং সেখানে তাঁর ভাইদের ক্রন্দনরত অবস্থায় দেখাটা হবে তোমার জন্য প্রচণ্ড কষ্টকর। তুমি একা এই কষ্ট বহন করতে পারবে না।

এই ব্যাপারটি নিয়ে চুপ করে থেকো না, কথা বলবে। তুমি চাপা এবং অন্তর্মুখী স্বভাবের, কিন্তু এই ঘটনাটি নিজের মধ্যে রাখার মত নয়। তুমি যদি কারও সাথে শেয়ার না কর, এটা তোমার মধ্যে বড় ধরনের মানসিক চাপ সৃষ্টি করবে যা পরবর্তীতে হুড়মুড় করে বেরিয়ে আসবে। বলাই বাহুল্য, কোয়ার্টার ফাইনালে জিম কুরিয়ারের সাথে ম্যাচ চলাকালীন সময়ে তুমি নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে কান্নায় ভেঙ্গে পড়বে!

টিম শেষ পর্যন্ত ব্রেইন ক্যান্সারের কাছে হার মানবে, যাতে সে অসুস্থ হয়ে পড়েছিল। এবং তাঁর মৃত্যু তোমাকে প্রচণ্ড মানসিক ধাক্কা দেবে। একা এটা সামলাবার চেষ্টা কর না। যতক্ষণ টিম বেঁচে আছে তাঁকে মূল্যায়ন কর, মারা যাবার পর সেটা নিয়ে কথা বল। এক সময় এই পরামর্শের জন্য তুমি আমাকে ধন্যবাদ দেবে!

কিছু মানুষ, বিশেষ করে টিম এর মতন মানুষ তোমার জীবনকে সুন্দর করে গড়ে দেবে। তাঁদের প্রত্যেককে সঠিকভাবে মূল্যায়ন করবে, ধন্যবাদ জানাবে!

ধন্যবাদ জানাবে তোমার বন্ধু জন ব্ল্যাককে। ও যখন তোমাকে ব্রিজিত নামের সুন্দরী একজন মেয়ের নম্বর তোমাকে দেবে, ধন্যবাদ জানাবে এবং মেয়েটিকে ফোন করবে! আমি জানি তোমার স্বভাবে সাথে এটি যায় না, তারপরও এই কাজটি কর! পরবর্তীতে সে যখন তোমার সহধর্মিণী হবে তখন তাঁকে ধন্যবাদ দেবে, প্রতিদিন তার সমাদর করবে!

ধন্যবাদ জানাবে তোমার দুই বোন- স্টেলা ও ম্যারিওন, এবং তোমার ভাই গাসকে। তাদের কথা শুনবে। তারা সবসময়ই সদুপদেশ দেবে। সবচেয়ে বড় কথা, বিপদে-আপদে নিশ্চিতভাবে ওরাই তোমার পাশে থাকবে।

ধন্যবাদ এবং কৃতজ্ঞতা জানাবে তোমার অভিভাবককে। তোমার যত রকম কোচিং দরকার- শুরুটা তাঁরাই দিয়েছে! তারা সবসময় তোমাকে সমর্থন দেবে। পেশাদার হতে যাবার এই পূর্ব মুহূর্তে নিজের যতটা সম্ভব স্বাভাবিক শৈশবকালের জন্য তাদেরকে ধন্যবাদ জানাবে। তারা কখনোই তোমার উপর কিছু চাপিয়ে দেয়নি, ভবিষ্যতেও দেবে না! ১৬ বছর বয়সে এসব উপলব্ধি করা কঠিন- তবে, বিশ্বাস কর, তোমার জন্য তাঁরা অনেক ত্যাগ স্বীকার করেছেন। সম্ভব হলে বাবা-মা এর কাজ-কর্ম, উপদেশগুলো নোট করে রাখতে পার। যেদিন তোমার নিজের সন্তান হবে, সেদিন নোটগুলো দারুণ কাজে আসবে!

Pete Sampras takes a final lap around Arthur Ashe Stadium with his son Christian Charles after he announced his retirement from tennis on Monday, Aug. 25, 2003 at the US Open tennis tournament in New York. (AP Photo/Bill Kostroun)

তোমার বয়স মাত্র ১৬ এবং তোমার জীবন কেবল মাত্র শুরু হচ্ছে, তবে ভবিষ্যতের কথা বেশি চিন্তা করে মাথা খারাপ করার কোন দরকার নেই। প্রতিটি টুর্নামেন্ট এর পর, এমনকি তুমি যদি জিতেও যাও, তবুও দ্রুত পরের টুর্নামেন্ট নিয়ে ভাবনা শুরু করতে হবে-যা অত্যন্ত কঠিন একটি কাজ! এর মাঝেও প্রতিটি জয়, প্রতিটি শিরোপা জেতার পর সেটি উপভোগ কর- বন্ধু-বান্ধব, আত্মীয়-স্বজনের সাথে খুশি ভাগাভাগি করে নাও। নিজের তারুণ্যকে উপভোগ কর। মনে রাখবে, লক্ষ্য অর্জন নয়- পথ চলার আনন্দই সত্যিকারের পুরস্কার!

খেলার সময়ে নিজের শতভাগ দেবে। নিজের প্রতি পুরোপুরি সৎ থাকবে এবং অন্যায় বা ছল-চাতুরীর সাথে কখনোই আপোষ করবে না। কথাগুলো মেনে চল- তোমার সফল না হবার কোন কারণ নেই!

শুভকামনা রইল।
-পিট

গত ২৯ জুন, ২০১৫ প্লেয়ার্স ট্রিবিউন ডট কম সাইটে পিট সাম্প্রাস Letter to My Younger Self নামে একটি লেখা দিয়েছিলেন। লেখাটি নিজের ১৬ বছর বয়সী ব্যক্তিত্বের কথা মাথায় রেখে হলেও বর্তমান উঠতি যে কোন তারকার জন্যও দারুণভাবে প্রযোজ্য।

১৬ টি মন্তব্য : “১৬ বছর বয়সী নিজেকে লেখা চিঠিঃ পিট স্যাম্প্রাস”

  1. সাবিনা চৌধুরী (৮৩-৮৮)

    :clap: :clap: :clap: :clap:

    খেলাধূলোর ব্লগও আনন্দের সাথে পড়ছি আমার জুনা ভাইয়ার জন্য! হ্যাটস অফ, জুনা। লেখা, ছবি সব মিলিয়ে দারুণ!
    আরো অনেক অনেক অনেক লেখা পড়তে চাই।

    ভাল আছিস আশাকরি।

    জবাব দিন
  2. জুনায়েদ কবীর (৯৫-০১)

    এ রকম নিরস ব্লগেও এত আনন্দ নিয়ে পড়ছ দেখে কষ্ট স্বার্থক বলে মনে হচ্ছে, সাবিনাপা।
    অনুবাদ করে ভাল মজা পাচ্ছি।
    আশা করি এই ধারা বজায় রাখতে পারব।

    আমি ভাল আছি, আশা করি তুমিও সপরিবারে ভাল আছো।
    ভাল থাকিও।


    ঐ দেখা যায় তালগাছ, তালগাছটি কিন্তু আমার...হুঁ

    জবাব দিন

মওন্তব্য করুন : খায়রুল আহসান (৬৭-৭৩)

জবাব দিতে না চাইলে এখানে ক্লিক করুন।

দয়া করে বাংলায় মন্তব্য করুন। ইংরেজীতে প্রদানকৃত মন্তব্য প্রকাশ অথবা প্রদর্শনের নিশ্চয়তা আপনাকে দেয়া হচ্ছেনা।