কোর্টের রাণীঃ স্টেফি গ্রাফ!


১৯৯৫ সাল। উইম্বলডন,লন্ডন। প্রমীলা টেনিসের দারুণ উত্তেজনাপূর্ণ খেলা চলছে! সার্ভ করার জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছেন স্টেফি গ্রাফ।

-স্টেফি, আমাকে বিয়ে করবে?
দর্শকের সারি থেকে কে যেন হঠাৎ চিৎকার করে উঠল।

কয়েক সেকেন্ডের জন্য নীরবতা। প্রতিপক্ষের উপর থেকে চোখ না সরিয়েই স্টেফি গ্রাফ প্রশ্নকর্তার দিকে পালটা প্রশ্ন ছুঁড়ে দিলেন,
-কত টাকা আছে তোমার??!!

দর্শক থেকে শুরু করে উপস্থিত সবাই অট্টহাসিতে ফেটে পড়ল! পুরো ঘটনাটি উইম্বলডন বা স্টেফি গ্রাফের সাথে একেবারেই বেমানান। কেননা, উইম্বলডনের দর্শকদের বরাবরই ভাব-গম্ভীর এবং ‘ভেরি মাচ ব্রিটিশ’ হবার ‘সুনাম’ রয়েছে। স্টেফি গ্রাফকেও সবাই শান্ত, সৌম্য এবং খেলা চলাকালীন প্রচণ্ড সিরিয়াস হিসেবে দেখতেই অভ্যস্ত। এই প্রথমবারের পৃথিবীর মানুষ তার হাস্যোজ্জ্বল, কৌতুকপ্রিয় রূপটিও দেখতে পেল! উল্লেখ্য, সে সময় স্টেফি পেশাদার রেসিং ড্রাইভার মাইকেল বার্টেলস এর সাথে ডেটিং করতেন। অবশ্য, এই সম্পর্কটি শেষ পর্যন্ত বেশিদূর গড়ায় নি…

শুধু টেনিস নয়, যে কোন খেলাতেই এমন খেলোয়াড় খুব কমই আছেন- যাকে সব দেশের, সব ধরণের দর্শকই পছন্দ করে। জীবন্ত কিংবদন্তী স্টেফি গ্রাফ সেই ছোট্ট গ্রুপের একজন অন্যতম সদস্য! তাঁকে বলা হয় টেনিসের রাণী- সর্বকালের সেরা চ্যাম্পিয়ন (বিতর্ক সাপেক্ষ, কেননা ‘সর্বকালের সেরা’ টার্মটি নিজেই প্রশ্নবিদ্ধ। এক প্রজন্মের সাথে অন্য প্রজন্মকে তুলনা করা আপেল, কমলা তুলনা করার মতই অযৌক্তিক)! তিনি পেশাদার টেনিস শুরু করেন মাত্র ১৩ বছর বয়সে, ১৯ বছর বয়সেই অর্জন করেন গোল্ডেন স্ল্যাম, অর্থাৎ একই ক্যালেন্ডার ইয়ারে চারটি গ্র্যান্ড স্ল্যাম সহ অলিম্পিক স্বর্ণ পদক। টেনিসের ইতিহাসে এই অর্জন পুরুষ বা মহিলা এককে অন্য কারও নেই!

অথচ তাঁর পেশাদার ক্যারিয়ারের শুরুটা খুব বাজে-ভাবে হয়েছিল। ১৯৮২ সালে জার্মানির স্ট্যুটগার্টে অনুষ্ঠিত তাঁর প্রথম পেশাদার ম্যাচটি হয়েছিল যুক্তরাষ্ট্রের ট্রেসি অস্টিনের বিরুদ্ধে। তিন বছর আগে ইউ এস ওপেন জেতা ১৯ বছর বয়সী ট্রেসি তাঁকে হারায় ৬-৪, ৬-০ ব্যবধানে। ম্যাচ শেষে অবজ্ঞার সাথে ট্রেসি বলেছিল, ‘স্টেফির মতন খেলোয়াড় আমেরিকাতে শ’য়ে শ’য়ে আছে’!! সেদিন ট্রেসি নিজেও বুঝতে পারে নি কি মারাত্মক ভুল মূল্যায়ন সে করেছিল! কেননা গ্রাফের মতন কেউই ছিল না, না আগে কিংবা পরে! অস্টিন বা জেগার, সাবাতিনি বা সেলেস, ক্যাপ্রিয়াতি বা হিঙ্গিস… এরকম অনেকেই এসেছে! কিন্তু স্টেফি গ্রাফের মতন উচ্চতায় কেউই পৌঁছতে পারে নি। ভাগ্যের কি নির্মম পরিহাস! ঐ ম্যাচের ঠিক বার বছর পর স্টেফি দ্বিতীয় ও শেষবারের মতন ট্রেসি অস্টিনের মুখোমুখি হয়েছিলেন। ক্যালিফোর্নিয়ার ইন্ডিয়ান ওয়েলস এ অনুষ্ঠিত এভার্ট কাপের দ্বিতীয় রাউন্ডের সেই ম্যাচে অস্টিন হেরেছিল ৬-০, ৬-০ ব্যবধানে!!

টেনিসের জন্য ভালবাসার শুরুটা হয়েছিল একেবারে ছোটবেলা থেকেই। মাত্র তিন বছর বয়সেই হাতে তুলে নিয়েছিলেন কাঠের তৈরি র‍্যাকেট! যদিও তাতে বাবার অবদানই বেশি ছিল। যাই হোক, শুরুর দিকে তাঁর প্রধান অস্ত্র ছিল শক্তিশালী ফোরহ্যান্ড, ক্রিস এভার্টের মতে যা ছিল ‘মেয়েদের টেনিসের সেরা’। পরবর্তীতে তিনি ব্যাক-হ্যান্ডেও দক্ষ হয়ে ওঠেন, বিশেষ করে তাঁর স্লাইস করে মারা ব্যাক-হ্যান্ড শট ছিল প্রতিপক্ষের অন্যতম মাথাব্যথার কারণ! স্টেফি গ্রাফ সার্ভও করতেন দুর্দান্ত! সার্ভের গতি ছিল ১১০ মাইল/ঘণ্টার মতন, যা ছিল তৎকালীন সময়ের অন্যতম দ্রুতগতির! তিনি ছিলেন অত্যন্ত ক্ষিপ্র এবং দারুণ অ্যাথলেটিক। অনেকে হয়ত চেষ্টাও করবে না, এমন অনেক বল স্টেফি অবলীলায় ফেরত পাঠাতেন। টেনিস খেলোয়াড় না হয়ে স্প্রিন্টার হলেও নিঃসন্দেহে তিনি দারুণ সফল হতেন। বিভিন্ন সময়ে মারাত্মক ইনজুরি আক্রান্ত হওয়া সত্ত্বেও ফিটনেসের কারণে তিনি প্রতিবারই মাঠে ফিরে আসতে সক্ষম হয়েছিলেন।

Steffi-Graf-img6062_668

স্টেফি গ্রাফ প্রথম গ্র্যান্ড স্ল্যাম টুর্নামেন্টটি জেতেন ১৯৮৭ সালে, ফ্রেঞ্চ ওপেন। সেই বছরের আগস্ট মাসে প্রথম বারের মতন WTA এর ১ নং র‍্যাংক দখল করেন। টানা ১৮৬ সপ্তাহ ১ নম্বরে থাকার রেকর্ড আছে তাঁর! ১৯৯৯ সালে তিনি যখন অবসর নিলেন, ততদিনে ঝুলিতে পুরেছেন ২২ টি মেজর (আরেক গ্রেট মার্গারেট কোর্টের চেয়ে মাত্র ২টি কম)। তিনি অন্যদের থেকে কতটা এগিয়ে ছিলেন তা তার জয়-কৃত গ্র্যান্ড স্ল্যাম দেখেই বোঝা যায়। অনেকেই আছেন নির্দিষ্ট একটি বা দুই ধরণের কোর্টে দারুণ পারদর্শী! কিন্তু স্টেফি ছিলেন সব ধরণের কোর্টেই সমান দক্ষ ও প্রতিপক্ষ হিসেবে ভয়ংকর। এ কারণেই তিনি অস্ট্রেলিয়ান ওপেন জিতেছেন ৪ বার, উইম্বলডন ৬ বার, ফ্রেঞ্চ ওপেন ৭ বার এবং ইউ এস ওপেন ৫ বার! সারা জীবনে শিরোপা জিতেছেন সর্বমোট ১০৭টি যা কিনা নাভ্রাতিলোভা (১৬৭) এবং এভার্ট (১৬৪) এর পর তৃতীয় সর্বোচ্চ। তিনি ক্যারিয়ারে রেকর্ড সংখ্যক ৩৭৭ সপ্তাহ এক নম্বর র‍্যাংকিং এ ছিলেন।

স্টেফানি মেরি গ্রাফের জন্ম ১৪ জুন ১৯৬৯। তৎকালীন পশ্চিম জার্মানির ম্যানহেইম শহরে। তাঁর বাবা ছিলেন মোটর গাড়ি ও বীমা বিক্রেতা। বাবার প্রচণ্ড আগ্রহের কারণে ছোটবেলাতেই ঘরের লিভিং রুমে টেনিস র‍্যাকেট ঘুরানো শুরু করেন। চার বছর বয়সে কোর্টে যাওয়া শুরু করেন এবং পাঁচ বছর বয়সে প্রথম টুর্নামেন্ট খেলেন। ছয় বছর বয়স থেকে শুরু হয় সত্যিকারের টেনিস শেখা। দ্রুত খেলাটাকে ভালবেসে ফেলেন তিনি। বেশিরভাগ সময় বয়সে বড়দের সাথে খেলতেন তিনি। মাত্র ১৩ বছর ৪ মাস বয়সে পেশাদার টেনিস খেলোয়াড় হয়ে যান। ১৯৮৩ সালে তাঁর প্রথম মৌসুম শুরু হয় ১২৪ র‍্যাংকিং দিয়ে। মৌসুমের শেষে তিনি উঠে আসেন ৯৮ তম অবস্থানে,পরের বছর যেটি ছিল ২২ তম এবং কোন শিরোপা জেতা ছাড়াই ১৯৮৫ সালে তিনি চলে যান ৬ নম্বর অবস্থানে!

বাবা পিটার গ্রাফ মেয়ের খেলার সংখ্যা এবং শিডিউল ঠিক করতেন। মেয়ের উপর যেন কোন চাপ না পড়ে, সে ব্যাপারে তিনি যথেষ্ট সতর্ক ছিলেন! উদাহরণ স্বরূপ সাবাতিনির কথা বলা যেতে পারে। ১৯৮৫ সালে সাবাতিনি এক বছরের ছোট হওয়া সত্ত্বেও ২১টি টুর্নামেন্ট খেলেছিল। অথচ ১৬ বছর বয়সী স্টেফি খেলেছিলেন মাত্র ১০টি টুর্নামেন্ট! বাবার হস্তক্ষেপের কারণে সামাজিক জীবন হয়ে পড়েছিল সংক্ষিপ্ত। বন্ধু-বান্ধবদের জন্য সময় ছিল না বললেই চলে। ‘আমার চিন্তা-ভাবনায় ছিল শুধুই টেনিস,টেনিস আর টেনিস’ সে সময়ের কথা এভাবেই স্মরণ করেন তিনি!

মৌরিন কনৌলি (১৯৫৩) এবং মার্গারেট কোর্ট (১৯৭০) এর পর তৃতীয় প্রমীলা খেলোয়াড় হিসেবে ১৯৮৮ সালের চারটি গ্র্যান্ড স্ল্যামই জেতেন তিনি। শুধু তাই নয়,একই সাথে জেতেন ঐ বছর সিউল,দক্ষিণ কোরিয়াতে অনুষ্ঠিত হওয়া অলিম্পিক স্বর্ণ পদকও,ফাইনালে গ্যাব্রিয়েলা সাবাতিনিকে হারিয়ে! এরই সাথে টেনিসের ইতিহাসে প্রথমবারের মতন (এবং এখন পর্যন্ত একমাত্র) কেউ ‘গোল্ডেন স্ল্যাম’ অর্জন করলেন!

graf

বছরটা শুরু হয়েছিল দারুণভাবে! ক্রিস এভার্টকে ৬-১, ৭-৬ ব্যবধানে হারিয়ে জিতেছিলেন অস্ট্রেলিয়ান ওপেন। কয়েক মাসের ব্যবধানে প্যারিসে নাতালিয়া জোভারেভাকে ৬-০, ৬-০ ব্যবধানের লজ্জা দিয়ে জিতলেন ফ্রেঞ্চ ওপেন। এরপরের স্ল্যামটি ছিল ঘাসের কোর্ট উইম্বলডনে, যেখানে এর আগের প্রতিটি টুর্নামেন্টেই তাঁর সমস্যা হচ্ছিল। সবচেয়ে বড় কথা ফাইনালে প্রতিপক্ষ ছিলেন টানা ছয় বারের শিরোপা জয়ী মার্টিনা নাভ্রাতিলোভা! প্রথম সেটে গ্রাফ হেরে গেলেন ৫-৭ ব্যবধানে, দ্বিতীয় সেটেও পিছিয়ে ছিলেন ০-২ গেমে। এরপর যা হল, যাকে বলে ইতিহাস! ঐ অবস্থান থেকে শেষ পর্যন্ত ম্যাচটি জিতলেন ৫-৭, ৬-২, ৬-১ ব্যবধানে! ম্যাচ শেষে নাভ্রাতিলোভা স্বীকার করলেন এভাবে, ‘আসলে কোন প্রকার চাপ নয়, আমি হেরেছি একজন শ্রেয়তর প্রতিপক্ষের কাছে’! বছরের শেষ করলেন অর্থাৎ গ্র্যান্ড স্ল্যাম সম্পূর্ণ করলেন সাবাতিনিকে আরেক বার ফাইনালে হারিয়ে। ইউ এস ওপেন ফাইনালে তাকে হারালেন ৬-৩, ৩-৬, ৬-১ ব্যবধানে!

খেলার মান ও বয়স বাড়ার সাথে সাথে তিনি আরও অপ্রতিরোধ্য হয়ে উঠতে থাকলেন। যে কারণে এক নম্বর স্থানটি ধরে রাখলেন ১৯৯১ সালের মার্চ পর্যন্ত! এ সময়ে মনিকা সেলেস তাঁকে টপকে শীর্ষস্থান দখল করে। অবশ্য ঐ বছর আরও কয়েকবার দুজনের মধ্যে জায়গা বদল হয়, অনেকটা মিউজিক্যাল চেয়ারের মতন! ধীরে ধীরে মনিকা সেলেস হয়ে ওঠেন স্টেফির এক নম্বর ও সবচেয়ে শক্ত প্রতিদ্বন্দ্বী! কিন্তু ৩০ এপ্রিল, ১৯৯৩ সালে ঘটে যাওয়া একটি অপ্রীতিকর ঘটনায় মনিকা সেলেসের জীবন ওলট-পালট হয়ে যায়। জার্মানির হ্যামবুর্গ এ এক দুষ্কৃতকারীর হাতে তিনি ছুরিকাহত হন! এরপর প্রাণে বেঁচে গেলেও সেলেসকে ২৭ সপ্তাহের জন্য মাঠের বাইরে চলে যেতে হয়। দুর্ভাগ্যজনকভাবে ফিরে আসার পর আর কখনোই নিজের আগের ফর্ম ও খেলার মানে তিনি ফিরতে পারেন নি! ব্যাপারটা স্টেফির জন্যও কষ্টের ছিল, কেননা সেলেসকে আক্রমণকারী নিজেকে স্টেফি গ্রাফের ‘ভক্ত’ হিসেবে দাবী করেছিল!

এই সময়ে স্টেফি গ্রাফকে আরও বেশ কিছু ‘মাঠের বাইরের ঝামেলা’ পোহাতে হয়। ১৯৯০ সালে তাঁর বাবার বিরুদ্ধে প্লেবয়ের সাবেক এক মডেল সন্তানের পিতৃত্বের দাবী করে মামলা করেন। জার্মান মিডিয়া ফুলিয়ে ফাঁপিয়ে সেই স্ক্যান্ডালকে অনেক রগরগে রূপ দেয়। যা ছিল পুরো পরিবারের জন্যই বেশ বিব্রতকর! পরে অবশ্য বিভিন্ন পরীক্ষা করে দেখা যায় পিটার গ্রাফ ঐ মডেলের সন্তানের বাবা ছিলেন না!

১৯৯৫ সালে স্টেফি গ্রাফের বাবা আরেক ঝামেলায় জড়িয়ে পড়ে। মেয়ের টাকা-পয়সার ব্যাপারটি নিজেই দেখতেন, ফাইনান্সিয়াল ম্যানেজার হিসেবে! ট্যাক্স ফাঁকি দেবার অজুহাতে তার ৪৫ মাসের জেল হয়ে যায়। অবশ্য ২৫ মাস কারাভোগ করার পর মুক্তি পান তিনি। এজন্য স্টেফি গ্রাফকে সরকারী কোষাগারে এবং বিভিন্ন চ্যারিটিতে ১.৩ মিলিয়ন মার্ক (৭,৭৫,০০০ মার্কিন ডলার) অর্থ প্রদান করতে হয়।

এত কিছু সত্ত্বেও ১৯৯০-৯২ পর্যন্ত প্রতি বছর একটি করে স্ল্যাম জেতেন! ১৯৯৩ সালে সেলেসের অনুপস্থিতিতে এক নম্বর র‍্যাংকিংটি খুব সহজেই নিজের করে নেন এবং ঐ বছর তিনটি মেজর শিরোপা জেতেন। পরবর্তী চার বছরের বেশিরভাগ সময় ধরে শীর্ষস্থানটি দখল করে থাকেন তিনি। ১৯৯৪ সালে অবশ্য উইম্বলডনে অঘটনের শিকার হন। অখ্যাত লোরি ম্যাকনিলের কাছে প্রথম রাউন্ডেই হেরে বিদায় নেন। উইম্বলডনের নানা সাফল্যের পাশাপাশি এই অঘটনটি তার বর্ণাঢ্য ক্যারিয়ারে একটি কালিমা হয়ে আছে।

26 May 1999:  Steffi Graf of Germany in action during the French Open at Roland Garros in Paris. Mandatory Credit: Clive Brunskill /Allsport

১৯৯৭ সালে অবশেষে ইনজুরির কাছে দারুণভাবে পরাস্ত হয়ে পড়েন তিনি। বিশেষ করে হাঁটুর ইনজুরি খুব মারাত্মক আকার ধারণ করে ওঠে। এ সময়ে দুইবার অপারেশন করতে হয় এবং কয়েকমাসের জন্য তিনি মাঠের বাইরে চলে যান। দীর্ঘ বিরতির ফলে মার্টিনা হিঙ্গিসের কাছে শীর্ষস্থান হারিয়ে ফেলেন। বছরের শেষে গিয়ে যা হয়ে যায় ২৮ তম!

১৯৯৯ সালে ফ্রেঞ্চ ওপেনে ফর্মের তুঙ্গে থাকা হিঙ্গিসকে হারিয়ে জীবনের শেষ স্ল্যামটি জিতে নেন। দুই মাস পর মাত্র ৩০ বছর বয়সে র‍্যাকেট তুলে রেখে চিরদিনের জন্য টেনিসকে বিদায় জানান তিনি। পাঁচ বছরের মাথায় তাঁকে আন্তর্জাতিক টেনিসের ‘হল অব ফেম’ এ অন্তর্ভুক্ত করা হয়।

২০০১ সালের ২২ অক্টোবর আন্দ্রে আগাসির সাথে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হন স্টেফি গ্রাফ। বিয়ের সাক্ষী হিসেবে শুধুমাত্র উভয়ের মা উপস্থিত ছিলেন, আর কেউ ছিলেন না! টেনিসের এই দুই জীবন্ত কিংবদন্তীর দু’টি সন্তান রয়েছে- একটি ছেলে ও একটি মেয়ে! তাঁরা বর্তমানে যুক্তরাষ্ট্রের লাস ভেগাস ভ্যালিতে বসবাস করেন।

———————————-

বিঃ দ্রঃ ১। ইন্টারনেটের বেশ কয়েকটি সাইট ও আর্টিকেল ঘেঁটে লেখাটি তৈরি করেছি
২। একই সাথে ক্যাডেট কলেজের ছোট ভাইদের খেলাধুলা বিষয়ক সাইট ‘খেলাধুলা ডট কম‘ এ প্রকাশিত। আশা করি সিসিবির সদস্যরা এতে কিছু মনে করবেন না। ছোট ভাইদের যদি প্রমোট না করি, তাহলে কাকে করব?

৩২ টি মন্তব্য : “কোর্টের রাণীঃ স্টেফি গ্রাফ!”

  1. আহসান আকাশ (৯৬-০২)

    দারুন লেখা জুনাদা, স্টেফি গ্রাফের খেলা লাইভ দেখা খুব কম হয়েছে, তবে যতটুকু দেখেছি আর পরবর্তীতে বিভিন্ন হাইলাইটস এ যা দেখেছি তাতে ওর খেলার আলাদা একটা সৌন্দর্য সবসময়ই চোখে পড়েছে।


    আমি বাংলায় মাতি উল্লাসে, করি বাংলায় হাহাকার
    আমি সব দেখে শুনে, ক্ষেপে গিয়ে করি বাংলায় চিৎকার ৷

    জবাব দিন
  2. সাবিনা চৌধুরী (৮৩-৮৮)

    :clap: :clap: :clap: :clap:

    খেলাধূলোর লেখালেখিও কুড়মুড়ে করে যে লেখা যায় সেটি তুমি প্রমাণ করো ভাইয়া! বরাবরের মতোই মুখরোচক! :boss:

    একটি ফান ফ্যাক্টঃ

    আন্দ্রে আগাসি এবং স্টেফি গ্রাফ হলেন টেনিস ইতিহাসের এমন দুজন প্লেয়ার যারা এক অলিম্পিকের সর্বমোট চারটে গ্র্যান্ড স্ল্যাম সিংগেলে সোনার পদক পেয়েছেন!

    জবাব দিন
  3. সাইদুল (৭৬-৮২)

    এত পূর্ণাঙ্গ ( বানান মনে হয় ভুল) স্টেফিকে আর কোন লেখায় পাই নি।
    ধন্যবাদ জুনায়েদ। অসাধারণ


    যে কথা কখনও বাজেনা হৃদয়ে গান হয়ে কোন, সে কথা ব্যর্থ , ম্লান

    জবাব দিন
  4. আহমদ (৮৮-৯৪)

    খেলাধূলায় তেমন আগ্রহ না থাকলেও স্টেফি গ্রাফকে নিয়ে অসীম আগ্রহ আছে স্বীকার করতেই হয়। লেখাটা অনেক উপাদেয় হয়েছে। সাবলীল ভাষা প্রয়োগ। বেশ উপভোগ করলাম।


    চ্যারিটি বিগিনস এট হোম

    জবাব দিন
  5. মাহমুদ (১৯৯০-৯৬)

    এই লেখাটাই ত' কোন একটা মূলধারার পত্রিকায় ছাপিয়ে দিতে পারো। অনলাইনের পত্রিকার থেকে বেশি পাঠকের কাছে পৌঁছাতো।


    There is no royal road to science, and only those who do not dread the fatiguing climb of its steep paths have a chance of gaining its luminous summits.- Karl Marx

    জবাব দিন
  6. খায়রুল আহসান (৬৭-৭৩)

    চমৎকার তথ্যসমৃদ্ধ লেখা। পড়ে আনন্দ পেলাম।
    "হাউ মাচ মানি ডু ইউ হ্যাভ" - কথাটা শুনে দর্শক অট্টহাসিতে ফেটে পড়লেও স্টেফির মুখে আরেকটু স্মিত হাসি থাকলে ভাল লাগতো।

    জবাব দিন
  7. নাজমুল (০২-০৮)

    চমৎকার তথ্যসমৃদ্ধ এবং ধড়ঝড়ে লেখা। পড়ে আনন্দ পেলাম

    "হাউ মাচ মানি ডু ইউ হ্যাভ" - কথাটা শুনে দর্শক অট্টহাসিতে ফেটে পড়লেও স্টেফির মুখে আরেকটু স্মিত হাসি থাকলে ভাল লাগতো।

    জবাব দিন
  8. মোস্তফা (১৯৮০-১৯৮৬)

    আমাদের ছেলেবেলায় বাসায় তখনও টিভি ছিল না। রেডিওর সংবাদের শেষের দিকটায় খেলার খবর থাকতো। টেনিস খেলার নিয়ম কানুন তখনও জানি না। তবে রেডিওতে প্রায় প্রতিদিনই শুধুই শুনতাম মার্টিনা নাভ্রাতিলোভার নিরঙ্কুশ বিজয়ের ঘোষণা। শুনতে শুনতে আমার কাছে তিনিই যেন হয়ে উঠেছিলেন এই খেলাটির মূর্ত প্রতীক। সেই তিলোভাকে যখন স্টেফি হারালো, খুব কষ্ট পেয়েছিলাম। তারুণের অপ্রতিরোধ্য শক্তির কথা কিয়দ বিস্মৃত হয়ে উপরন্তু কেন জানি আবেগাপ্লুত হয়ে পড়েছিলাম।

    লেখা ভালো লেগেছে, এতবড় তারকার বর্ণিল জীবনের অসংখ্য ঘটনার মধ্য থেকে এত সীমিত পরিসরে এমন সুচারু চয়ন সোজা কাজ নয়।


    দেখেছি সবুজ পাতা অঘ্রানের অন্ধকারে হতেছে হলুদ

    জবাব দিন
  9. রাজীব (১৯৯০-১৯৯৬)

    স্টেফির একটা ছবি ছিলো হেলিকপ্টার থেকে তোলা সেটা দিয়ে দিলে ভালো হইতো। 😀


    এখনো বিষের পেয়ালা ঠোঁটের সামনে তুলে ধরা হয় নি, তুমি কথা বলো। (১২০) - হুমায়ুন আজাদ

    জবাব দিন

মওন্তব্য করুন : খায়রুল আহসান (৬৭-৭৩)

জবাব দিতে না চাইলে এখানে ক্লিক করুন।

দয়া করে বাংলায় মন্তব্য করুন। ইংরেজীতে প্রদানকৃত মন্তব্য প্রকাশ অথবা প্রদর্শনের নিশ্চয়তা আপনাকে দেয়া হচ্ছেনা।