মুভি ব্লগঃ ফিফটিন মিনিট্‌স!!

ফিফটিন মিনিট্‌স ছবিটির শিরোনাম নেয়া হয়েছে এন্ডি ওয়ারহল (Andy Warhol, বিখ্যাত চিত্রকর, চিত্রপরিচালক) এর ‘15 minutes of fame’ নামক এক হাইপোথিসিস থেকে। সেই ১৯৬৮ সালে তিনি বলেছিলেন, ‘ভবিষ্যতে মানুষ ১৫ মিনিটের মধ্যেই বিশ্ব-নন্দিত (বা নিন্দিত) হয়ে উঠবে’। তাঁর কথা বিশেষ করে বিনোদন বা মিডিয়া জগত, যেমন রিয়ালিটি টিভি প্রোগামের ক্ষেত্রে খুবই প্রযোজ্য। এছাড়া ইন্টারনেটের কল্যানেও আজকাল অতি অল্প সময়ের মধ্যে অনেকেই বিখ্যাত বা কুখ্যাত হয়ে যাচ্ছেন। থ্যাংস টু সাইট্‌স লাইক- ইউ টিউব, টুইটার, মাই স্পেস কিংবা ফেইসবুক (উপ্‌স, ব্যান খেয়ে না যাই আবার…! :no: )

15 minutes

কাহিনী সংক্ষেপঃ পূর্ব ইউরোপের দুই অপরাধী, এমিল স্লোভাক (Karel Roden) এবং ওলেগ রাসগাল (Oleg Taktarov), নিউইয়র্ক আসে তাদের ভাগের টাকা পাবার জন্য-যা তারা অবৈধ উপায়ে অর্জন করেছিল। নিউইয়র্ক নেমেই ওলেগ একটি ভিডিও ক্যামেরা চুরি করে এবং তাদের সকল কর্মকান্ড ভিডিও করতে থাকে। তারা জানতে পারে যে আমেরিকান মিডিয়ার কল্যানে কোন ঠান্ডা মাথার খুনীও নিজেকে উলটো ভিক্টিম প্রমান করতে পারে (মানসিক ভারসাম্যহীনতার দোহাই দিয়ে), শুধু তাই না রাতারাতি অনেক অর্থের মালিকও বনে যেতে পারে। চতুর এমিল তার সহযোগী ওলেগের করা ভিডিও স্থানীয় ট্যাবলয়েড টিভি শো ‘টপ স্টোরি’র কাছে চড়া মূল্যে বিক্রি করার সিদ্ধান্ত নেয়, যেখানে দেখা যায় সে একাধিক খুন করছে। এদিকে নিউইয়র্ক পুলিশের হোমিসাইড ডিটেকটিভ এডি ফ্লেমিং (Robert De Niro) এবং নিউইয়র্ক ফায়ার ডিপার্টমেন্টের মার্শাল জর্ডি ওয়ার’শ (Edward Burns) তাদের খোঁজে মাঠে নেমে পড়ে।

ছবির কাহিনী এত সংক্ষেপে বললাম, যাতে এখনো যারা দেখেন নি তারা বিরক্ত না হন। এর চেয়ে বরং আসুন এই মুভি সম্পর্কে একটি রিভিউ এর অংশ বিশেষ পড়িঃ
“…ছবিটি আমেরিকার বিচার ব্যবস্থার অনেকগুলো দুর্বলতা এবং অযৌক্তকতার একটিকে অত্যন্ত সুনিপুনভাবে তুলে ধরেছে। এছাড়াও এই ছবির উপজীব্য হিসেবে রয়েছে লোভ, ক্ষমতা, জনপ্রিয়তা, মিডিয়ার প্রভাব, মাধ্যম হিসেবে টিভির ক্ষমতা ইত্যাদি। ফিফটিন মিনিট্‌স কোন গতানুগতিক ধুমধারাক্কা হলিউড একশন ছবি নয়, বরং এতে আছে অনেক টুইস্ট এবং সারপ্রাইজ…।”

রবার্ট ডি নিরো এবং এডওয়ার্ড বার্নস ছাড়াও এই ছবিতে রয়েছেন কেলসে গ্রামার (Kelsey Grammer), মেলিনা কানাকারেদেস (Melina Kanakaredes) এবং অতি অল্প সময়ের জন্য হলেও মোহনীয়া শার্লিজ থেরন 😡 (Charlize Theron) , কিম কাট্রাল (Kim Catrall) প্রমুখ।

ছবিটি আপনারা এখান থেকে ডাউনলোড/অনলাইনে দেখতে পারবেন।

সবশেষে এই ছবির একটি বিখ্যাত ডায়লগ দিয়ে শেষ করি, যেখানে এমিল স্লোভাক বলছে,

I love America. No one is responsible for what they do.

ছবির সমাপ্তি কিছুটা নাটকীয়ভাবে হলেও আশা করি আপনাদের ভাল লাগবে।

৩,০২১ বার দেখা হয়েছে

২৩ টি মন্তব্য : “মুভি ব্লগঃ ফিফটিন মিনিট্‌স!!”

  1. মাসরুফ (১৯৯৭-২০০৩)

    এই ১৫ মিনিটস মুভিটা দেখে আমেরিকার জীবন ব্যবস্থা এবং তার উপর মিডিয়ার প্রভাবের ভয়াবহ দিকটা দেখতে পেয়ে তাদের উন্নত জীবনের প্রতি মোহ অনেকটাই দূর হয়ে গিয়েছিল।এই সিনেমায় একটা দৃশ্য মনে আছে- একটা টকশোতে এমন একটা পরিবার এসেছে যেখানে বাবা তার ছেলের স্ত্রীর সাথে অবৈধ সম্পর্কে জড়িয়ে পড়ে।টকশোতে বাবা,ছেলে, মা আর ছেলের স্ত্রী সব্বাই উপস্থিত- কেন বাবা এবং ছেলের স্ত্রী এরকম করল সেটা নিয়ে কিছুক্ষণ কথাবার্তা হল, আর শেষে বাবা-ছেলের আলিঙ্গনে সুখী পরিবারের চিত্র তুলে ধরা হল!!!!

    এধরণের ঘটনা ওদের সমাজে হরহামেশা ঘটেনা হয়তো কিন্তু পরিচালক এমনভাবে দেখিয়েছেন যেন এটা নিত্যনৈমিত্তিক!!!

    এরকম আরো কিছু দৃশ্য আছে যেখানে পরিচালক আমেরিকার মোহময় জীবনের পাশাপাশি তার অন্তঃসারশূণ্যতাকেও তুলে ধরেছেন।

    বিশ্রি রকমের ভাল একটা সিনেমা!

    জবাব দিন

মওন্তব্য করুন : নাজমুল (০২-০৮)

জবাব দিতে না চাইলে এখানে ক্লিক করুন।

দয়া করে বাংলায় মন্তব্য করুন। ইংরেজীতে প্রদানকৃত মন্তব্য প্রকাশ অথবা প্রদর্শনের নিশ্চয়তা আপনাকে দেয়া হচ্ছেনা।