গুল-গল্পের আসর!!!

ব্যারন ম্যুনহাউজেনঃ (Baron Münchhausen) ইতিহাস বিখ্যাত গুলগল্প সম্রাট ছিলেন ব্যারন। ১৭২০ সালে জার্মানিতে জন্মগ্রহণ করেন তিনি। তাঁর বলা গল্পগুলো রুড্‌লফ এরিখ রাসপে সংগ্রহ করে ১৭৮৬ সালে দি অ্যাডভেঞ্চার অব ব্যারন ম্যুনহাউজেন নামে প্রকাশ করেন।

সূত্র: দৈনিক প্রথম আলো, জুলাই ১৩, ২০০৯

আমার যতদূর মনে পড়ে এই বসের লেখা প্রথম পড়েছিলাম উন্মাদ-এ। ২০০১/০২ এর দিকে উন্মাদের কয়েকটি সংখ্যায় ধারাবাহিকভাবে কিছু লেখা ছেপেছিল। তখন থেকেই আমি তাঁর ফ্যান হয়ে গিয়েছিলাম। মানুষের কল্পনা শক্তি কি রকম আজগুবি টাইপ এবং একই সাথে মজার হতে পারে তা ব্যারনের লেখা পড়লে বোঝা যায়। ব্যারনের সেন্স অব হিউমার ছিল অসাধারণ মাত্রার। এখনো যারা এই মহান ব্যক্তিত্ব সম্পর্কে কিছুই জানেন না, তারা খুব সহজেই ইতোমধ্যে যারা জানেন তাদের কাছ থেকে জেনে নিতে পারেন (কপিরাইটঃ নাসিরুদ্দিন হোজ্জা!)

গুরুর চরণ প্রণাম করে কিছু গুল-গল্প সাহস করে দিলাম। মনে রাখবেন এসব গল্পের কাহিনী, স্থান, কাল, পাত্র সবই কাল্পনিক।

১।
সেদিন মনটা বেশি ভাল ছিল না। গুলশানে যাবার ইচ্ছে থাকা স্বত্ত্বেও মহাখালী আসতেই কি ভেবে বাস থেকে নেমে পড়লাম। এরপর ফ্লাইওভারের উপর দিয়ে হাঁটতে থাকলাম। মাঝামাঝি এসে রেলিংএর উপর বসে পা দোলাতে দোলাতে ফ্লাইওভারের নিচ দিয়ে যাওয়া ছুটন্ত গাড়ি দেখতে লাগলাম। সত্যি কথা বলতে কি ঐ রকম বিপজ্জনক ভঙ্গিতে বসে থেকেও আমার বেশ মজাই লাগছিল। এভাবে কিছুক্ষণ বসে থাকার পরই সেই ভয়াবহ ব্যাপারটি ঘটল। ফ্লাইওভারের উপর দিয়ে এক বাস যাচ্ছিল। আমি যেখানে বসে ছিলাম ঠিক তার পাশে এসেই এমন বিকট আওয়াজ করে হর্ন দিল যে, চমকে উঠে আমি রেলিং থেকে নিচে পড়তে লাগলাম। আমি যথাসম্ভব মাথা ঠান্ডা রেখে নিজেকে বাঁচাবার জন্য কম্পিউটারের গতিতে চিন্তা করতে লাগলাম। উপর থেকে সরাসরি নিচে রাস্তায় পড়লে নিশ্চিৎ মৃত্যু, কারন অত উপর থেকে পড়ে মারা যদি নাও যাই চলন্ত গাড়ির নিচে পড়ে মারা যাওয়া কোনমতেই ঠেকানো যাবে না। ভাবতে ভাবতে হঠাৎ করে মাথায় এক বুদ্ধি খেলে গেল। ফার্মগেটে অনেকক্ষণ ট্রাফিকে আটকে ছিলাম বলে কিছু বাদাম কিনেছিলাম, পকেট হাতরে দেখলাম বেশ খানিকটা তখনো রয়ে গেছে। আমি দ্রুত পকেট থেকে সবটুকু বাতাসে ছড়িয়ে দিলাম। এই না দেখে আশপাশের যত কাক ছিল বাদামের লোভে সব উড়ে এল। এবার খুব সাবধানে কাকের সেই ঝাঁকের উপর পা দিয়ে আস্তে করে নামতে লাগলাম। রাস্তার গাড়িগুলো ততক্ষণে থেমে গেছে, সবাই অবাক হয়ে আমার দিকে তাকিয়ে ছিল। সবশেষে নিরাপদে রাস্তার উপর নেমে এসে, উপরওয়ালাকে ধন্যবাদ দিয়ে, ‘মনকে বেশি পাত্তা দিতে হয় না’ বলে গুলশানের দিকে হাঁটা শুরু করলাম।

২।
এবারের ঘটনাটি কয়েক বছর আগের। সেবার সবাই মিলে গিয়েছিলাম গ্রামের বাড়ি ঈদ করতে। একদিন বিকেল বেলা কয়েকজন বন্ধু মিলে রাস্তা দিয়ে হাঁটছিলাম। হঠাৎ দেখি রাস্তার পাশের ইয়া বড় এক আম গাছে অনেক আম ধরে আছে। কিছুক্ষণ আগে হাল্কা বৃষ্টি হয়েছিল বলে গাছের ডাল সব ভেজা, স্যাঁতসেঁতে হয়ে ছিল। গাছে ওঠা নিরাপদ না ভেবে আমরা যে কয়জন ছিলাম (সাত/আট জন) সবাই মিলে গাছের গুড়ি ধরে নাড়াতে লাগলাম এই ভেবে ঝাঁকি খেয়ে দুই একটা পাকা আম তো পড়বে…কিন্তু আম পড়া তো দূরে থাক, একটা পাতাও পড়ল না। এমনকি মনে হল না গাছ এতটুকু নড়ল! কি করা যায় ভাবতে ভাবতে সমাধান পেয়ে গেলাম। আমি দ্রুত সবার কাছ থেকে সেল ফোন নিয়ে, ভাইব্রেশন অন করে সবগুলো একসাথে গাছের গুড়ির উপর রেখে দিলাম। এবার আমার সেল থেকে একসাথে সবাইকে এসএমএস পাঠালাম। সবগুলো সেল একসাথে ভাইব্রেট করে উঠতেই গাছ ভীষণভাবে দুলে উঠল, এবং হুড়মুড় করে অনেকগুলো পাকা, আধপাকা আম পড়ল। এরপর আমরা সবাই মিলে আম খেতে খেতে আবার রাস্তা ধরে হাঁটা শুরু করলাম।

৩।
গত মাসের ঘটনা। সকাল বেলা উঠে সিসিবি খুলে বসতেই দেখলাম কাইয়ূম ভাই লেখা দিয়েছেন। আমি অবশ্য বেশি অবাক হলাম না, কেননা কিছুদিন ধরেই তিনি প্রতিদিন একটি করে লেখা দিচ্ছিলেন। যাইহোক আমি আয়েশ করে কাইয়ূম ভাই এর লেখা পড়তে থাকলাম…!!!!

৪,৩৯৫ বার দেখা হয়েছে

৫১ টি মন্তব্য : “গুল-গল্পের আসর!!!”

  1. কাইয়ূম (১৯৯২-১৯৯৮)
    কেননা কিছুদিন ধরেই তিনি প্রতিদিন একটি করে লেখা দিচ্ছিলেন।

    এইটা আর কি গুলগল্প, প্রত্যেকদিন তিনটা কইরা লেখা দিচ্ছেন কইলে না হয় হাল্গুলগল্প হইতো 😡 যা গিয়া ফ্লাই ওভারের পাশে শূন্যেই কাকের দলরে ফলইন করায়া তার লগে লঙ্গাপ হয়া থাক :grr: :grr:


    সংসারে প্রবল বৈরাগ্য!

    জবাব দিন
  2. মইনুল (১৯৯২-১৯৯৮)

    =)) =)) =)) =)) =))
    junaed tumi vai bossssssssssss ...............

    গত মাসের ঘটনা। সকাল বেলা উঠে সিসিবি খুলে বসতেই দেখলাম কাইয়ূম ভাই লেখা দিয়েছেন। আমি অবশ্য বেশি অবাক হলাম না, কেননা কিছুদিন ধরেই তিনি প্রতিদিন একটি করে লেখা দিচ্ছিলেন। যাইহোক আমি আয়েশ করে কাইয়ূম ভাই এর লেখা পড়তে থাকলাম…!!!!

    ei ta best ..............

    জবাব দিন
  3. তানভীর (৯৪-০০)

    জুনা, কথা রাখার জন্য ধন্যবাদ। চমৎকার লাগল। :thumbup:

    এরকম গুল-গল্প তোকে দিয়েই সম্ভব। আশা করি এটাকে সিরিজ বানিয়ে ফেলবি।

    তিন নাম্বারটা পড়ে হাসতে হাসতে পিরা গেলাম। সহ-কমরেড কাইয়ূম ভাই যদি উনার সেমিস্টার সিস্টেম থেকে বের হয়ে এসে অন্ততঃ মান্থলি সিস্টেমে চলে আসতেন তাহলে কতই না ভালো হত। :dreamy:

    জবাব দিন
  4. সায়েদ (১৯৯২-১৯৯৮)
    গত মাসের ঘটনা। সকাল বেলা উঠে সিসিবি খুলে বসতেই দেখলাম কাইয়ূম ভাই লেখা দিয়েছেন। আমি অবশ্য বেশি অবাক হলাম না, কেননা কিছুদিন ধরেই তিনি প্রতিদিন একটি করে লেখা দিচ্ছিলেন। যাইহোক আমি আয়েশ করে কাইয়ূম ভাই এর লেখা পড়তে থাকলাম…!!!!

    :khekz: :khekz: :khekz: :khekz:


    Life is Mad.

    জবাব দিন
  5. সানাউল্লাহ (৭৪ - ৮০)
    গত মাসের ঘটনা। সকাল বেলা উঠে সিসিবি খুলে বসতেই দেখলাম কাইয়ূম ভাই লেখা দিয়েছেন। আমি অবশ্য বেশি অবাক হলাম না, কেননা কিছুদিন ধরেই তিনি প্রতিদিন একটি করে লেখা দিচ্ছিলেন। যাইহোক আমি আয়েশ করে কাইয়ূম ভাই এর লেখা পড়তে থাকলাম…!!!!

    ওরে জুনা কি দিলি রে!!! হাহাপিগে........... :gulli2: :gulli2: :gulli2:


    "মানুষে বিশ্বাস হারানো পাপ"

    জবাব দিন

মওন্তব্য করুন : জুনায়েদ কবীর (৯৫-০১)

জবাব দিতে না চাইলে এখানে ক্লিক করুন।

দয়া করে বাংলায় মন্তব্য করুন। ইংরেজীতে প্রদানকৃত মন্তব্য প্রকাশ অথবা প্রদর্শনের নিশ্চয়তা আপনাকে দেয়া হচ্ছেনা।