সূর্যপুত্র (পর্ব দুই)

সূর্যপুত্র (পর্ব এক)
****আমি স্পষ্ট করেই বলতে চাই…আমার এই লেখাটি সম্পূর্ণই বানানো। জীবিত…………মৃত…কাল্পনিক কারও সাথে আমার এই লেখা মিলে গেলে সেটার দায়ভার আমার একেবারেই নেই…আছে সিসিবির প্রিন্সিপ্যাল ভাইস্যার… ভাইস প্রিন্সিপ্যাল ভাপু… অ্যাডজুট্যান্ট ভাইস্যার…ইত্যাদিসহ আমার সকল সিনিয়র/জুনিয়র ভাই/বোনদের…কারণ, বৃক্ষের আবার দায়ভার কিসের???????!!!!!]

২৬ এপ্রিল, ২০০৯।
৬। সারাদিন ধরে সমুদ্রে যাওয়ার বন্দোবস্ত করছে হৃদয়, পুষ্পকুমারা, নীলন, নিরঞ্জন এবং সঞ্জীব। একচল্লিশ ফুটি “সূর্যপুত্র” বিকেলের পড়ন্ত রোদে চকচক করছে। সকল প্রস্তুতি শেষে যার যার পরিবারের কাছ থেকে বিদায় নিতে বাড়ি চলে গেল সবাই… হৃদয় ছাড়া। ওর বোন এখন শ্বশুড় বাড়িতে…আর ওর বাবা নিজেই ডক মাষ্টার…কাজেই বাড়ি গিয়ে লাভ নেই। ছেলে বেলা থেকে মায়ের আদর পায়নি ও…ছোট বোনটির জন্ম দিতে… ওর মা সেই যে হাসপাতালে গেলো… আর কোনদিনই বাড়িতে ফেরেনি। হঠাৎ মায়ের কথা মনে হতেই কেন যেন চোখে জল এলো হৃদয়-এর। চোখ মুছে ফিরে তাকাতেই চাঁদকুমারী এবং ওর মা-কুমুদিনীকে দেখতে পেল ও…মুখে হাসি ফিরে এল আবার।

৭। বোটের সকল কাগজপত্র হৃদয়-এর কাছে বুঝিয়ে দিতে এসেছে কুমুদিনী। সাথে চাঁদকুমারীও এসেছে হৃদয়কে বিদায় জানাতে। ছেলেটিকে কুমুদিনী বেশ খানিকটা পছন্দই করে…ওর মেয়ের সাথে ভালো মানাবে বলেও মনে হয়। পারিবারিকভাবে অঢেল অর্থসম্পদের মালিক না হলেও হৃদয়-এর পরিবারটি ভাল। আর ছেলেটিও নম্র, ভদ্র, বিনয়ী, আর পরিশ্রমী স্বভাবের। একমাত্র মেয়েকে জলে ভাসিয়ে দিচ্ছে না ভেবে কুমুদিনীর মনটা হঠাৎ খুশীতে ভরে ওঠে। কয়েকটি কথা বলে চাঁদকুমারীকে হৃদয়ের কাছে রেখেই বাসায় ফিরে যায় সে।

৮। মা-কে ফিরে যেতে দেখেই হৃদয়-এর বুকে ঝাঁপিয়ে পড়লো চাঁদকুমারী। তারপর বললো…, তাড়াতাড়ি ফিরে আসবে কিন্তু। মনে আছে তো……, আগামী ১২ মে আমার জন্মদিন!! তার আগে না ফিরলে কিন্তু খবর আছে!!! জবাবে স্বভাবসূলভ হাসি দিয়ে হৃদয় বলে উঠলো… না ফিরলে কি করবি??? আমাকে ফেলে আর কারও সাথে জন্মদিনের পার্টি করবি??? চাঁদকুমারীর ঝাঁজালো উত্তর…… না, সাগরে গিয়ে তোমার কান ধরে টেনে নিয়ে আসব। তারপরে তোমার অতি সাধের “সূর্যপুত্র”-কে হয় কেটে টুকরো টুকরো করবো……নয়তো অনেক দূরে বিক্রি করে দেবো। এবার হৃদয়-এর কিঞ্চিত চিন্তিত উত্তর…তা হলে তো ওই সময়ের আগে ফিরে আসতেই হয়!!!

৯। ভারত কোষ্টগার্ডের লেঃ কমান্ডার বিক্রমাদিত্য প্রথমবারের মতন একটি জাহাজের অধিনায়কের দায়িত্ব পেয়ে আজ খুব গর্বিত। অল্প বয়সেই ওর অনেক সুনাম এবং খ্যাতি ছড়িয়ে পড়েছে সিনিয়র অফিসারদের মাঝে…বিশেষ করে ওর অসাধারণ একাগ্রতা, ধৈর্য্য, দেশপ্রেম এবং কর্তব্যপরায়ণতার জন্যে। অবশ্য, ওর কঠোরতাটা মাঝে মাঝে বাড়াবাড়ি পর্যায়ে চলে যায়…তবে বয়স হলে নিশ্চয়ই ঠিক হয়ে যাবে বলে সকল সিনিয়রদের বিশ্বাস।

১০। বাংলাদেশ নৌবাহিনীর “………” জাহাজের অধিনায়ক ক্যাপ্টেন রাহাত খান অনেক রাগ নিয়ে সময় পার করছেন। তাঁর জাহাজের কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ কাজের বিষয়ে কোন অগ্রগতি রিপোর্ট পাচ্ছেন না তিনি। রাগের মাথায় হঠাৎ করেই তাঁর মনে হলো…কারও মাথা ফাটালে কেমন হয়?? পরক্ষণেই তাঁর কলেজ জীবনে করা পাগলামীগুলির কথা মনে পড়ে যায়। আচ্ছা…, সেই মাথাটা তাঁর সেক্রেটারীর……কিংবা……তাঁর নিজের হলেই বা কেমন হয়!!!
[ক্রমশঃ]

২,৩৭৪ বার দেখা হয়েছে

২০ টি মন্তব্য : “সূর্যপুত্র (পর্ব দুই)”

  1. জুনায়েদ কবীর (৯৫-০১)

    দাদা, লেখা আরো বেশি করে দে...এবারের পর্ব খুব তাড়াতাড়ি শেষ হয়ে গেল... :-B
    পরের পর্বের অপেক্ষায় থাকলাম... :thumbup:


    ঐ দেখা যায় তালগাছ, তালগাছটি কিন্তু আমার...হুঁ

    জবাব দিন
  2. হাসনাইন (৯৯-০৫)

    সবচেয়ে ভাল হয় বিক্রমাদিত্যের মাথা ফাটাইলে ভাই। 😡 😛
    পর্ব দিতে দেরী করছেন না দেখে ভাল লাগছে (যদিও নিজে ডজার :grr: )
    লিখতে থাকেন ভাই, ভাল লাগতেছে পড়তে।

    জবাব দিন
  3. দিহান আহসান

    ভাইয়া তাড়াতাড়ি শেষ হয়ে গেলেও,লেখা দিয়ে দিয়েছেন জলদি 😀
    এখন পরের পর্ব ও দিয়ে দেন 🙂
    ঈদের শুভেচ্ছা রইলো আপনাদের সবাইকে, আর মাহিনের জন্য ইস্পিসাল আদর :hug:

    জবাব দিন
      • রকিব (০১-০৭)

        ভাইয়া, যে ব্লগ এডিটে গেলে যে বক্সটার মধ্যে পুরা পোষ্টের বডিটা লিখছেন ঐটার যেখানে লিঙ্ক দিতে চান ঐখানে কারসার রাখুন। তারপর উপরে একটা নীল হাইলাইট করা বাটন আছে link, ঐটা ক্লক করুন। একটা ছোট মেসেজ বক্স আসবে, ওখানে আপনার আগের ব্লগটার লিঙ্কটা পোষ্ট করে দেন। তারপর সেভ করে ফেলুন, তাহলেই হয়ে যাবে। 😀 😀
        অফটপিকঃ একবার জুনা ভাইরে উদ্ধৃতি কেমনে দিতে হয় তা কয়া দিছিলাম, এরপর কয়েকদিন আমি নিজেই ঠিক্মত উদ্ধৃতি দিতে পারতাম না। এইবার না জানি কি হয়।


        আমি তবু বলি:
        এখনো যে কটা দিন বেঁচে আছি সূর্যে সূর্যে চলি ..

        জবাব দিন
  4. জুলহাস (৮৮-৯৪)

    অবশেষে আমি লিঙ্ক করিতে পারিয়াছি......। B-) B-) B-) :awesome: :awesome: :awesome:
    থ্যাংক্‌স টু জুনা...রকিব...তাদের সহায়তার জন্যে... :guitar: :guitar: :guitar: এবং অন্যান্যদের...তাদের নীরবতার জন্যে!!!!!!!!!!!! 😛 😛 😛 😉 😉 😉


    Proud to be an ex-cadet..... once a cadet, always a cadet

    জবাব দিন

মওন্তব্য করুন : ফয়েজ (৮৭-৯৩)

জবাব দিতে না চাইলে এখানে ক্লিক করুন।

দয়া করে বাংলায় মন্তব্য করুন। ইংরেজীতে প্রদানকৃত মন্তব্য প্রকাশ অথবা প্রদর্শনের নিশ্চয়তা আপনাকে দেয়া হচ্ছেনা।