আমি খুব ভয় পাই

সানা ভাই,তৌফিক ভাই ও মান্নান ভাইয়ের বিদগ্ধ জ্ঞানপ্রসূত আলোচনার পর আমার ক্ষুদ্র মস্তিষ্কজাত চিন্তা-ভাবনা এইখানে সবার সাথে শেয়ার করতে বুকটা ঢিব ঢিব করছে।

তার চেয়েও বেশি ভয় পাইছি এবারের নির্বাচনের ফলাফল দেখে। বাঙালী বরই আজিব জাতি! আমি নীতিগত ভাবে বঙ্গবন্ধু ও তার দলকে সাপোর্ট করি, এবং অবশ্যই হুজুগে নয়। এই ফলাফলে আমার খুব বেশি খুশি হবার কথা।কিন্তু কেন যেন খুশি হতে পারছি না। বারেবারেই ২০০১ এর নির্বাচন ও নির্বাচনকালীন চিএ চোখের সামনে ভেসে উঠছে।ভয় হচ্ছে, আবারো সেই রাজনৈতিক প্রতিহিংসার খান্ডবদাহন দেখতে হবে নাতো!

কোন এক মনীষী বলেছিলেন,মানুষ জন্মগতভাবে রাজনৈতিক জীব। তার চেয়েও বড় সত্য হল, মানুষ জন্মগতভাবে প্রতিহিংসাপরায়ন। ২০০১+ সময়ে আমি আমার চোখের সামনে আমার গ্রাম পুড়তে দেখেছি। আওয়ামীলীগ এর ভোট ব্যাঙ্ক বলে পরিচিত ‘সংখ্যালঘু’ মানুষদের করুণ চোখে সব হারানোর আর্তি দেখেছি।কিশোরী মেয়ের ওপর ধর্ষকদের অত্যাচার কমানোর জন্য মায়ের আহাজারি শুনেছি। দেখেছি,ধর্ষিত বাংলাদেশের লজ্জাতুর হাহাকার……

আর লিখতে পারছি না। আমার হাত কাঁপছে…চোখের সামনে লেখাগুলো ঝাপসা হয়ে আসছে…..

যা নিয়ে লিখব ভেবেছিলাম,পারলাম না। আজও ঘুমের মধ্যে ওই স্বপ্নগুলো আমাকে তাড়া করে…..আরেকটি ৭১ কি দেখেনি বাংলাদেশ!

সংসদে দুই-তৃতীয়াংশ একক সংখ্যাগরিষ্ঠতা। যে কোন বিল পাস করার মোক্ষম অস্ত্র। গনতন্ত্র আর একনায়কতন্ত্রকে আলাদা করে দেখার অবকাশ কি আছে!

ধুর। কেন যে ভয় পাচ্ছি! আমার দেশের শিক্ষিত সোনার ছেলেরা আছে না! অন্তত প্রতি বছর শেষ মাসের ১৬ তারিখে রাজাকারদের সম্মান জানাতে জাতির সামনে,সারা বিশ্বের সামনে রক্তার্জিত লাল-সবুজ সত্তাকে তো আর ভূলুন্ঠিত করতে হবে না!

কাউকে মুখ ফুটে বলতে পারি না,কতটা কষ্ট জমে আছে এই বুকে……কাকে বলব?!….সেও যে আমার মতই ভুক্তভোগী!

২,৩৫২ বার দেখা হয়েছে

২৪ টি মন্তব্য : “আমি খুব ভয় পাই”

  1. টিটো রহমান (৯৪-০০)
    আমার দেশের শিক্ষিত সোনার ছেলেরা আছে না! অন্তত প্রতি বছর শেষ মাসের ১৬ তারিখে রাজাকারদের সম্মান জানাতে জাতির সামনে,সারা বিশ্বের সামনে রক্তার্জিত লাল-সবুজ সত্তাকে তো আর ভূলুন্ঠিত করতে হবে না!

    সহমত। আমরা তার প্রমাণ দেব


    আপনারে আমি খুঁজিয়া বেড়াই

    জবাব দিন
  2. মান্নান (১৯৯৩-১৯৯৯)
    আমার দেশের শিক্ষিত সোনার ছেলেরা আছে না!

    এটাই আমাদেরকে আরেক উন্নয়নের জোয়ার থেকে বাঁচাবে। সবাই দেখেছে দুই রাজপুত্রের তান্ডব, রাজাকারের দম্ভোক্তি। এথেকে কিছু না শিখলে আ:লীগ এ জয়ের যোগ্য নয়। আ:লীগকে দেশের মানুষের বিশ্বাসের প্রতিদান দিতে হবে। যুদ্ধাপরাধীদের বিচার করতে হবে, দেশকে ডিজিটাল বাংলাদেশে পরিনত করতে হবে। আ:লীগ যে আশার কথা শুনিয়ে ক্ষমতায় এসেছে তার বাস্তবায়ন না হলে পরেরবার আ:লীগকেও একই রকম অবস্থায় পড়তে হবে।

    জবাব দিন
  3. মাসরুফ (১৯৯৭-২০০৩)

    আমরা সাধারণ মানুষেরা যে কথাটি বুঝতে পারছি-সে কথা মাথায় রেখে আওয়ামি লীগ কি প্রয়োজনীয় সংযম দেখাতে পারবে?
    আমার মনে হয় এটাই এখন মিলিয়ন ডলারের প্রশ্ন।

    জবাব দিন
  4. রকিব (০১-০৭)

    টিভিতে ভোটের রেজাল্ট দেখার সময় এটিএন বাংলার সাংবাদিক মুন্নি সাহার একটা কথা শুনেছি। উনি বললেন গতবার ভোটের সময় মানুষ চিন্তা করত কোন মার্কায় ভোট দিবে, কিন্তু এবার ভোটকেন্দ্রে অনেক ভোটার এই কথা বলেছেন যে যোগ্য প্রার্থীকে ভোট দিবো। Infact, এবার কেন যেন মানুষ্কে আরো বেশি সচেতন মনে হয়েছে। তায় আমার মনে হয়, এবার যদি উলটা পালটা হয় তবে জনগণ বোধহয় ছেড়ে কথা বলবে নাহ।


    আমি তবু বলি:
    এখনো যে কটা দিন বেঁচে আছি সূর্যে সূর্যে চলি ..

    জবাব দিন
  5. তৌফিক (৯৬-০২)

    এই বাংলাদেশ সবার।

    বাংলাদেশের মানুষ সহনশীল ও মধ্যপন্থী। উগ্রপন্থীরা নিপাত যাক। তা সে ডান হোক, বাম হোক অথবা উপরের দিকেই (ধর্মীয় রাজনীতি) হোক।

    সেকুলারিজমের পথে বাংলাদেশ যে কবে যেতে পারবে!!!!!!!

    জবাব দিন

মওন্তব্য করুন : জাবীর রিজভী (৯৯-০৫)

জবাব দিতে না চাইলে এখানে ক্লিক করুন।

দয়া করে বাংলায় মন্তব্য করুন। ইংরেজীতে প্রদানকৃত মন্তব্য প্রকাশ অথবা প্রদর্শনের নিশ্চয়তা আপনাকে দেয়া হচ্ছেনা।