ফেরারী ৫

পূর্ববর্তী লেখা গুলোর লিঙ্ক

পর্ব ১

পর্ব ২

পর্ব ৩

পর্ব ৪

পাঁচ

২৪ ঘন্টা হয়ে গিয়েছে ওরা হোটেলে শিফট করেছে।কিন্তু এখন পর্যন্ত কোন তৎপরতা চোখে পড়ছে না।এটা আরও বেশি সন্দেহের উদ্রেগ করছে জিকোর মনে। “ব্যাপারটা কি?”মনে মনে ভাবছে ও।প্রতিপক্ষ এতটা নির্ভার কি করে?গত ২৪ ঘন্টায় মাত্র ২ ঘন্টা ঘুমিয়েছে ও।আজিমি ঘুমিয়েছে ঘন্টা চারেক।এখনও কাজ করে যাচ্ছে ও মাইক্রোচিপটা নিয়ে।

সাতপাচ ভাবতে ভাবতে কখন যে ঝিমুনি চলে এসেছিল জিকোর টেরই পায়নি।সজাগ হলো আজিমির চিৎকারে।দৌড়ে এল ও আজিমির পাশে।

“কি হলো হঠাৎ”

“দিস ইজ এ মাস্টারপিস।করে ফেলেছি তোমার কাজ।এখন দেখ কি আছে এতে”

“নিউক্লিয়ার ওয়ারহেড রিলেটেড কিছু”

“ওটাতো সামান্য একটা অংশ মাত্র।” ল্যাপটপে ঝড়ের বেগে আঙ্গুলগুলো চলছে যেন অর।সেই সাথে বলে চলেছে।“বিজ্ঞানী তো টিকটিকিদের ভালই খবর সংগ্রহ করেছেন।এমআই-৬,মোসাদ,ফেডারেল সিক্রেট সার্ভিস সহ কোন দেশই তো বাদ যায়নি,এসব দেশের ডবল এজেন্ট দের নামের তালিকা,এদের কনট্যাক্ট,এদের শেষ যে সব জায়গায় এসাইনমেন্টে ছিল তাদের লিস্ট।অনেকের নামের পাশে কে.আই.এ।তাহলে বুঝতেই পারছ কত বড় ব্যাপার”

চিন্তায় মগ্ন হলো জিকো।একজন বিজ্ঞানীর কাছে এই জাতীয় তথ্য থাকার কারণ কি হতে পারে?কেন যেন ব্যাপারটা মিলছে না।

দরজায় নক করলো কে যেন।

জিকো বলল “আমি দেখছি”

দরজার কাছে গিয়ে নবে হাত দিয়ে দাঁড়ালো জিকো।“কে?”

“রুম সার্ভিস”
ষষ্ঠ ইন্দ্রীয় সতর্ক করে দিলো জিকোকে।আজিমির দিকে তাকালো ও।ইশারায় জিজ্ঞেস করলো ও কোন অর্ডার করেছে কি না।আজিমি না সূচক মাথা নাড়লো। জিকোর হাতে পিস্তল চলে এল।দরজা খুললো না ও আজিমিকে দ্রুত প্রয়োজনীয় সব কিছু ঘুছাতে সাহায্য করলো।ওদিকে দরজায় নক চলছে।

কাঁধের ব্যাগটা নিয়ে হোটেলে ঢুকবার সময় যেমন বেশ ধরেছিল ঠিক তেমন ভাবেই প্রস্তুত হলো ওরা।দরজায় নক থেমে গেল এর মাঝেই।আবারও দরজার কাছে গিয়ে দাঁড়ালো জিকো।ওপাশের কিছু কথা কানে এল।খুব সম্ভবত দুজন লোক।জিকোর পিছনের আজিমি দাঁড়িয়ে।

“দরজা খোলার সাথে সাথেই লিফট লক্ষ্য করে ছুটবে।আমার জন্য অপেক্ষা করবে না।গ্রাউন্ড ফ্লোরে গিয়ে পিছনের দরজা দিয়ে বের হবে।ট্যাক্সি নিয়ে হোটেলের ডান পাশের ক্যাফেটারিয়ায় পার্ক করিয়ে রাখবে।ট্যাক্সির টেইল লাইট জ্বালিয়ে রাখতে বলবে।অপেক্ষা করবে আমার জন্য পাঁচ মিনিট। এর মাঝে আমি না এলে সোজা বাংলাদেশের দূতাবাসে চলে যাবে।” এক নিঃশ্বাসে কথা গুলো বলে গেল জিকো। ইশারায় মাথা নাড়লো আজিমি।একটু যেন কাঁপছে ভয়ে,কিন্তু এখন সেদিকে তাকাবার সময় নেই।

“রেডি?”বলেই এক ঝটকায় দরজা খুলে আন্দাজে ডান পাশে ঝাপিয়ে পড়লো। স্থুলকায় এক লোকের উপর পড়লো ও।পড়তে পড়তেই চোয়াল বরাবর ঘুষি চালিয়ে দিল ও।সেই ফাঁকে আজিমি বের হয়ে বাম দিকের লিফট লক্ষ্য করে দৌড় লাগালো।দরজার বাম পাশে দাঁড়ানো লোকটা ব্যাপারটা টের পেতে কিছু সময় নিল।ততক্ষনে পাঁচ হাত এগিয়ে গেছে আজিমি।জিকো ততক্ষনে মোটা লোকটার শরীরের উপর থেকে উঠে দাঁড়িয়ে বা পাশের দাঁড়ানো লোকটাকে ল্যাং মারলো।মুখ থুবড়ে মেঝেতে পড়লো লোকটা।একই সাথে ওর পিঠের উপর চেপে বসে সজোরে পিস্তলের বাট চালিয়ে দিল চাদিতে।থ্যাপ করে ভোঁতা একটা আওয়াজ হলো।জ্ঞান হারিয়েছে লোকটা।

ততক্ষনে মোটা লোকটা উঠে দাঁড়িয়ে পিছন থেকে জিকোর ঘাড় পেচিয়ে ধরলো।মোটা দেহের ক্ষিপ্রতায় লোকটার দিকে মুখ ঘুরাবারই সুযোগ পেল না জিকো।খুব দ্রুত চাপ বাড়াচ্ছে লোকটা।বাতাসের জন্য হাঁসফাঁস করছে জিকো।উপায়ান্তর না দেখে হাতের  কোল্ট .৩৮ নিজের শরীরের বাম পাশে এনেই ট্রিগার টেনে দিল।করিডোরে বিকট আওয়াজ করলো কোল্ট।সেই সাথে আর্তনাদ করে উঠে লোকটা পিছিয়ে গেল।জিকোও ঘুরে দাঁড়ালো। বাম পায়ের হাঁটুর একটু নিচে লেগেছে গুলি। ব্যাথা অগ্রাহ্য করে নিজের হোলস্টারের দিকে হাত বাড়াচ্ছে মোটা লোকটা।তার আগেই মাথায় একটা টিপ পড়িয়ে দিলো জিকো।

গুলির প্রচন্ড আওয়াজ নিশ্চয়ই এই ফ্লোরের সবার কানে গিয়েছে,ভাবছে জিকো।কিন্তু  কোন চঞ্চলতা লক্ষ্য করা যাচ্ছে না।তার মানে এই ফ্লোর পুরোটাই খালি!

লিফট ধরে নিচে চলে গেছে আজিমি বহু আগেই।লিফট কিংবা সিঁড়ি কোনটাই ব্যবহার করলো না জিকো।করিডোরের মাথায় এসে এই ফ্লোরের ব্লু প্রিন্ট টার দিকে তাকিয়ে বোঝার চেষ্টা করলো ফায়ার এস্কেপ রুট টা কোন দিকে হতে পারে।ফ্লোর টা ইংরেজী T অক্ষরের মতো।ফায়ার এস্কেপ রয়েছে এর বাম পাশের একদম শেষ মাথায়।দরজার তালা দেখে আবার কোল্ট চালালো জিকো।দ্রুত সিঁড়ি বেয়ে নামতে শুরু করলো ও।শুধু দুই জন?নাহ হতে পারে না।ব্যাক আপ থাকতে বাধ্য।কিন্তু ওরা খুঁজে পেল কি করে?সব চিন্তা মাথায় চলছে ঝড়ের বেগে।আগের কাজ আগে

প্রথমে ওদের ব্যাক আপ খুঁজে বের করতে হবে।আজিমির এতক্ষনে হোটেল ছাড়তে পারার কথা।তা পারলে ট্যাক্সি নিয়ে কফিশপের সামনে যেতে আরও মিনিট তিনেক।তার মানে জিকোর হাতে আর আট মিনিট সময় আছে।

ফায়ার এস্কেপ থেকে দোতলায় নামলো জিকো।এই ফ্লোরের শেষ মাথায় খুব সম্ভবত লন্ড্রি রুম রয়েছে।গায়ের পোষাকে রক্তে মাখামাখি।এ নিয়ে বাইরে বের হলে সাধারণ যে কারও সন্দেহ হবে। লন্ড্রি রুমে দুজন কর্মচারী নিজেদের কাজে ব্যস্ত।নিজের শার্ট আর জ্যাকেট খুলে হালকা রঙ এর আরেকটা শার্ট পড়লো ও।একটু আঁটসাঁট হলো।এর উপরে পড়লো ওভারকোট,সময় বেরিয়ে গেল প্রায় আড়াই মিনিট।মনের মধ্যে পাগলা ঘন্টি বেজেই চলেছে।হাতে একদম সময় নেই।লন্ড্রি রুম থেকে বের হবার সময় এক মেইড দেখে পিছন থেকে ডাকাডাকি শুরু করলেও সেদিকে নজর নেই ওর।দৌড়ে ফায়ার এস্কেপ ধরে আবার নিচে নেমে এল।তবে হোটেলের সামনে সরাসরি গেলনা ও। হোটেলের পিছন দিক থেকে দুটো ব্লক পেরুলো।তার পর মেইন রোডে উঠল ও।হোটেলের সামনে একটা ধূসর রঙের ফিয়াট ডবলো ভ্যান দাড়ানো। গাড়ির সাথে ঠেস দিয়ে দাঁড়িয়ে ষণ্ডা মার্কা এক লোক।হাতে চুরুট জ্বলছে। এসব লোক দেখে তো ভাড়া করা বলে মনে হয়।উপরের দুজন।সামনের দাঁড়ানো জন,উহু যেই পাঠিয়ে থাকুক নিজের লোকদের পাঠায় নি।পরিচয় গোপন করতে চাচ্ছে!!!

ওভারকোটের কলার উঁচু করলো জিকো।দুপাশের পকেটে হাত ঢুকিয়ে মাথা খানিকটা নিচু করে হাঁটতে লাগলো কফিশপ লক্ষ্য করে। কফিশপের সামনে ট্যাক্সি নেই। ধাক্কা খেল একটা,ঘড়ির দিকে তাকালো ও হাতে এখনও ৩ মিনিট সময় আছে,তাহলে?খারাপ কিছু চিন্তা করতে মন চাইলো না।দ্রুত কফিশপে ঢুকলো ও।কোনার একটা টেবিলে বসে আছে আজিমি,ওর ডান পাশে একটা লোক,হ্যাটের কার্নিশে মুখ ঢাকা।চোয়াল শক্ত হয়ে গেল জিকোর। ডান পকেটে রাখা কোল্টটা মুঠো করে ধরলো ও,ওভারকোটের পকেটেই পিস্তলের নল লোকটার দিকে মুখ করে সামনের দিকে এগিয়ে গেল।জিকো সামনে আগাতে দেখে আজিমির মুখে স্বস্তির ছাপ দেখা গেল।যেন দুশ্চিন্তার মেঘ সরে গিয়েছে।কিন্তু  পাশের লোকটা কে?জিকোর মনে প্রশ্ন।

লোকটা মাথা থেকে হ্যাটটা নামালো,উচ্চতায় প্রায় জিকোর সমান শক্ত সমর্থ একজন লোক বয়স ৪০ বা এর আশে পাশে হতে পারে। লোকটি জিকোর দিকে তাকিয়ে আশ্বস্ত করার মতো করে হাসলো। “আপনি পিস্তল থেকে হাত সরাতে পারেন।আমরা বন্ধু,শত্রু নই।“ নিজেকে সমর্পনের ভঙ্গিতে দুহাত কাঁধ পর্যন্ত তুলে আবার একটু হাসলো সে। “আমি সলিল শেখ,বাংলাদেশ এমব্যাসি” পকেট থেকে আইডি কার্ড বের করে দেখালো সলিল শেখ।

লোকটার আইডির দিকে তাকিয়ে দেখলো জিকো।বাংলাদেশ এমব্যাসির এসিস্ট্যান্ট এটাশে।যদিও এই আইডি আসল না ভুয়া পরীক্ষা করার কোন সুযোগ নেই জিকোর। সলিল বলে চললো “আপনি এখন এটা পরীক্ষা করার পর্যায়ে নেই,আপনি ভালোমতোই জানেন কি অবস্থায় আছেন।এই অবস্থায় সময় নষ্ট না করে বরং আমার উপর ভরসা করতে পারেন”

“আপনি আমাদের খুঁজে পেলেন কিভাবে”

“আজিমির সেলফোন ট্র্যাক করেছি আমরা।আজিমি গত কয়েকদিন ধরে ওর ডেইলি রিপোর্ট করছিল না,তখন আমাদের সন্দেহ হয়,পরে আমরা ওর লোকেশন জানতে পারি।আপনাদেরকে এখান থেকে সরিয়ে নিয়ে যাবার নির্দেশ রয়েছে ”

“কার তরফ থেকে নির্দেশ পেয়েছেন?”

“বি.সি.আই”।বলেই জিকোর মুখের দিকে তাকিয়ে থাকলো সলিল।জিকোর মুখের ভাব বোঝা গেল না দেখে বললো “এখানে আর বেশিক্ষন নয়,আমি একটা ফোন করবো,তারপর আপনাদের নিয়ে রওনা হবো”এই বলেই উঠে গেল সলিল শেখ।বুথ এর দিকে গেল

আজিমির দিকে ফিরলো জিকো “তুমি এ লোককে চেন?”

“না চিনি না,তবে ফোনে এর সাথে আমার কয়েকবার কথা হয়েছে,ছোট খাটো কিছু কাজ দিয়েছিলেন উনি।তবে সামনা সামনি আজই প্রথম দেখলাম।”

“ওদিকে হোটেলে তিনজনকে দেখলাম।আরও থাকতে পারে,এখান থেকে সরতে হবে দ্রুত”

ওদিকে সলিল শেখ এসে ওদের টেবিলের পাশে দাড়ালো,  “আমার সাথে আসুন আপনারা।”

আজিমি আর জিকো সলিলের পিছু পিছু চললো। একটা কালো ওপেল এসট্রা ২০০৯ মডেলের গাড়ি দাঁড়িয়ে আছে পার্কিং লটে।পার্কিং লট টা কফিশপের পিছন দিকে। গাড়িতে ওঠার সময় চালক তারেক এর সাথে ওদের পরিচয় করিয়ে দিল সলিল শেখ। ড্রাইভার বটে অথচ গায়ের পোষাক তা বলে না স্ট্রাইপড স্যুট।স্যুটের বাম পাশে হোলস্টারের অস্তিত্ব অনুভব করা যাচ্ছে।যদি সলিল শেখ সত্যি কথা বলে থাকে তবে এ এজেন্সীর লোকই হবে
গাড়ি চালু হতেই সলিল শেখ ডগ ট্যাগের মত দুটো জিনিস এগিয়ে দিল আজিমি ও জিকোকে। “এগুলো কি?” প্রশ্ন করলো আজিমি। হাতে দেবার আগে সলিল ট্যাগ দুটো দুহাতে চাপ দিল। সুঁই এর চেয়ে অল্প মোটা এক ধরণের দন্ড। “আপনাদের দুইজন কে ট্যাগ করা হবে” উত্তর দিল সলিল শেখ
আজিমি অবাক হয়ে তাকিয়ে  রইল। এ জিনিস জীবনে দেখে নি সে। “মানে?”

সলিল শেখ উত্তর দেবার আগেই মুখ খুলল জিকো। “এক ধরণের সূক্ষ্ম ট্রান্সমিটার। আমাদের লোকেশন কে সব সময় ট্র্যাক করার জন্য।“

“হ্যাঁ তা ঠিক তবে স্লাইট মডিফিকেশন করা হয়েছে এতে। কোন কারণে আপনারা যদি মারা যান তো এটির রেসপন্স ও থেমে যাবে”

আজিমি অবিশ্বাস নিয়ে তাকিয়ে থাকলো সলিল শেখ এর দিকে। মৃত্যুর ব্যাপারটা কি সহজেই না বললো সে। সলিল শেখ এর হাত থেকে জিনিস টা নিয়ে কোমরের একটু নিচে ঘ্যাচ করে গেঁথে দিল জিকো। ইঞ্চি খানেক এর মত গেঁথে গেল সুঁই এর মত জিনিসটা। অটোমেটিক ক্ষুদে ট্রান্সমিটার টা মাংসের স্তরে জায়গা করে নিল। জায়গাটায় ছোট একটা ব্যান্ডেজ বেঁধে নিল জিকো। ইশারা করলো আজিমিকেও করতে।

আজিমির হাত কাঁপছে। “আ…আমি পারবো না। এ জিনিসের কোন দরকার নেই।আপনারা তো আমাদের সেল ফোনেই ট্র্যাক করতে পারছেন এর দরকার নেই কোন।“
“দেখুন সেলফোন যে কোন সময় বেহাত হয়ে যেতে পারে। এই মুহুর্তে আপনাদের এ ছাড়া উপায় নেই।তাছাড়া বিপদ কেটে গেলে পরে ফেলে দেয়া যাবে।“

তবু ভয় কাটছে না আজিমির। ওর অস্বস্তি দূর হবার সুযোগ দিল না জিকো। আজিমির হাত থেকে নিয়েই ট্রান্সমিটার বিঁধিয়ে দিল জিকো। আর্তনাদ করে উঠলো ও। কিন্তু যতক্ষন ব্যাথায় কাতরালো ততক্ষনে জিকো ওর ক্ষতে ব্যান্ডেজ ও বেঁধে দিয়েছে।

“খুব একটা মন্দ নয় কি বল” ওর দিকে মিচকি হাসলো জিকো। রাগী ভঙ্গি নিয়ে বাকি পথ টুকু গম্ভীর হয়ে বসে থাকলো।

“আপনারা আমাদের কোথায় নিয়ে যাচ্ছেন?”

“সেফ হাউজে। এখানে আমাদের বা রানা এজেন্সির কোন সেফ হাউজ নেই তাই আপাততঃ আমরা সি.আই.এ এর একটা সেফ হাউজ ব্যাবহার করবো।“

“কোথায় সেটা?” প্রশ্ন করলো জিকো?

“আঙ্কারা”

পথে আরও কথা হলো ওদের। বেশির ভাগ কথা বললো সলিল শেখ।ওরা শুনে গেল।মাঝে মাঝে দু একটা প্রশ্ন করলো ওরা।সেগুলোর সন্তোষ জনক উত্তর দিল সে। ভূমধ্যসাগরের কূল ঘেঁষা ইতাম্বুল থেকে আঙ্কারা যেতে হলে আরও তিনটা শহরের উপর থেকে যেতে হয়। আদাপাযারি,দুশযে ও বলু। ওরা মাঝে দুশযে তে যাত্রাবিরতি নিল। তারেকের নিয়ে আসা লাঞ্চ খেল ওরা।তারপর আবার রওনা হলো।প্রায় ৫ ঘন্টা হয়ে লেগে গেল আঙ্কারায় পৌছাতে। জায়গাটা মিডল ইস্ট টেকনিকাল ইউনিভার্সিটির এরিয়ার পাশে একটা এপার্টমেন্ট হাউজ। এপার্টমেন্ট হাউজের সামনে গেট বন্ধ। গাড়ি থামিয়ে গেট কিপার এর সাথে কথা বললো সলিল শেখ।ওর পরিচয়পত্র দেখালো। এপার্টমেন্টের গেট থেকে ইন্টারকমে কথা হলো সলিল শেখ এর
“আমাদের একটা রিজার্ভেশন রয়েছে।“ ভিতর থেকে জানতে চাইলো “নাম বলুন”

“সলিল শেখ। কোড ৫০৩৬।“

“পাসওয়ার্ড বলুন”

“ফ্যালকন”

গেট খুলে গেল।

গাড়ি থেকে ওরা সবাই নামলো। হেঁটেই এগোল ওরা চারজন।

কিছু দূরে একজন লোক ফোন বুথ থেকে একটা বিশেষ নম্বরে ডায়াল করলো। “ডিনার সার্ভ করা হয়ে গেছে,এখনও গেস্ট এসে পৌছায়নি”
ওপার থেকে নির্দেশ এল “গেস্ট রওনা হয়ে গিয়েছে।পৌছাবার পর তোমার দায়িত্ব শেষ।এর আগে চেয়ার টেবিল পরিষ্কার রাখ”

{চলবে}

১,১০৩ বার দেখা হয়েছে

৩ টি মন্তব্য : “ফেরারী ৫”

  1. ইমরানুল হক

    ভালো লাগছে। জোর আছে। চালিয়ে যান ভাই। 🙂


    বিশ্ব মেতেছে আজ 'আগুন-ঝরা-ফাগুন'-এর উৎসবে। রক্তস্নানে তুষ্ট হৃদয়। প্রতিটি নিঃশ্বাসে শকুনের আনাগোনা অনবরত।

    জবাব দিন

মওন্তব্য করুন : ইমরান (২০০০-২০০৬)

জবাব দিতে না চাইলে এখানে ক্লিক করুন।

দয়া করে বাংলায় মন্তব্য করুন। ইংরেজীতে প্রদানকৃত মন্তব্য প্রকাশ অথবা প্রদর্শনের নিশ্চয়তা আপনাকে দেয়া হচ্ছেনা।