কাউরে পঁচানোর এবং নিজে পঁচাইন্যা থেইকা বাঁচার 5 Rules


পঁচাইন্যার সংজ্ঞা কী তা কাউরে নতুন কইরা বলার কোনো দরকার আছে বইলা মনে হয় না। যে কোনও আড্ডার মধ্যে সবচাইতে মজার আর সবচাইতে দীর্ঘতম আইটেম এইটা। যে পঁচে সে ছাড়া আর বাকি সবাই চরম উপভোগ করে এই আইটেম। একবার কাউরে পঁচানো শুরু হইলে সেই জাল থেইকা বাইর হইয়া আসা ৪টা খানি কথা না। একের পর এক সবাই মিলে সে পঁচিতো বান্দার গুষ্টি উদ্ধার কইরা দেয়। মুহূর্তেই সে অভাগা করুণ হৃদয় দিয়া অনুধাবন করে তারে সাপোর্ট করার মতো কেউ নাই তার আশেপাশে। আইজ অক্কা…! আর সাপোর্ট করবেই বা ক্যামনে, যে সাপোর্ট করতে আসবে, একটু পর তারে শুদ্ধা যে পঁচানো হবে না তার গ্যারান্টি কী। এ্যান্ড পঁচানী খাওয়ার সবচে’ সিরিয়াস ব্যাড ইফেক্ট- ঐ দিনের পর থেকে প্রতি আড্ডায় তারেই বাইচা নেওয়া হয় পঁচানোর জন্য। ইমেজের ই-ও বাকি থাকে না। ধীরে ধীরে নিত্য দিনের বলির পাঠা হওয়া ছাড়া আর কোনো রাস্তা খোলা থাকে না সেই অভাগার। ইট্টুশ খানি সজাগ অর কেয়ারফুল থাকলেই এই খাতারনাক বিড়ম্বনা থেইকা বাইঁচা যাওয়া কোনো বিষয়ই না। নিজে জীবনে বহুত পইচা আসছি, এ্যান্ড অহন নিজেও পঁচাই মাইনষেরে, সো ইউ ক্যান ট্রাস্ট মী, ইট ওয়ার্কস 😉 আসেন পঁচানী শিখাই, আই মিন এক্সপেরিয়েন্স শেয়ার করি…………। =(( =((

:hatsoff: রুল নাম্বার ০১ : (self defence)
“self defence iz the best defence.” বাট, এই ডিফেন্স সেই ডিফেন্স না। এই ডিফেন্সে কাউন্টার অ্যাটাক মারা সম্পূর্ণ ও সংবিধিবদ্ধ নিষেধ। কেউ পচানী শুরু করলে চুপচাপ মুচকি হেসে ব্যপারটা ইগ্নোর করার চেষ্টা করুন। খবরদার রেগে যাবেন না। রাগলেই মাইনাস পয়েন্ট। অপোনেন্ট এর জিত আর আপনার হার। এমন একটা ভাব নিয়া থাকুন, যাতে পোলাপাইন বুঝে যে, এইটা আপনার গায়েই লাগে নাই (যদিও তহন আপনার পিত্তি জ্বইলা ছারখার)। জাস্ট মোক্ষম সুযোগের জন্য ওয়েট করে যান। ওয়েট-এ মেওয়া ফলে। Just be cool, dude. 😉

:hatsoff: রুল নাম্বার ০২ : (Monitoring your surroundings)
বিচক্ষণতার সাথে আপনার চারপাশ লক্ষ্য করুন। এদের মধ্যে কোন ব্যাটা সবচাইতে ফাল পারতাছে। একদল পাবেন – পঁচানীর মেইন ভোকাল, আর একদল পাবেন- এরা হইলো ইন্ধন দাতা, এদের কাম হইলো মেইন ভোকালের সব কথায় তাল দিয়া অযথাই অট্টহাসি দিয়া পঁচানীর ভিত মজবুত কইরা আপনারে কাবু করা। এই পার্টি বহুত ড্যাঞ্জারাস। আড্ডার পঁচাইন্যা অংশে এগো সংখ্যা বেশি হইলে খবর আছে, তখন আমার এই সূত্র প্রযোজ্য না (মাইন্ড ইট)। এদের মধ্যে একজন রে পাইবেন যে ব্যাটা সবচাইতে বেশি মজা পাইতেছে, সবচাইতে বেশি হাসতেছে এ্যান্ড অহেতুক কারনে অতীব মজা পাইতেছে। ওরে টার্গেট কইরা রাখেন (ধরেন তার নাম দিলাম ‘X’), কী করবেন তারে? তার ব্যাখ্যা পরের সূত্রে পাইবেন। এবার, ভাল করে খেয়াল করুন কোনো না কোনো একজন আছে যে খুব একটা এ্যাকটিভ না পঁচানী তে। অরে হাতে রাখুন। সে আপনার সাপোর্টে আসলেও আসতে পারে, পরে কাজে দেবে। অরে হাতে আনার জন্য এক্সট্রা বেশি কিছু করার দরকার নাই। জাস্ট অল্প কথায় বিশ্বস্ত্যতা বাড়ায় নিতে পারেন।
উদাহরণ দেই। যেমন ধরেন, আড্ডার ফাঁকে অরে কানে কানে বলতে পারেন, “দোস্ত, তোর লগে একটা কথা আছে, বাসার ব্যাক করার সময় একলগে যামু, তখন কমু নে, একটু মনে করায় দিছ,হ্যা?”
ব্যাস, সে আপনার সাপোর্টে চইলা আসবে আশা করা যায়। At least আপনারে অ্যাকটিভলী সে পঁচাইবো না, গ্যারান্টী।

:hatsoff: রুল নাম্বার ০৩ : (Divert the target)
এই রুলটা কিছুটা নীতিবিরুদ্ধ হইলেও ভালো কার্যকর এবং ফলপ্রসূ। নীতিবিরুদ্ধ বলতেসি কারণ, এই পর্যায়ে আপনার যেইটা করতে হইবো, তা হইলো, আপনারে Target Divert করতে হইবো। এতক্ষণ পোলাপাইন আপনেরে Target করা পঁচাইতেছিলো, সেই টার্গেট টা ঘুরায়া আরেকজনের কান্ধে দিয়া দেন। কারে দিবেন? ঐ যে ০২ নাম্বার পয়েন্টে যে ‘X’ এর কথা কইলাম, তার দিকে আস্তে কইরা টপিক ডাইভার্ট কইরা দিতে হইবো। মানে পোলাপাইনের দৃষ্টি ওইডার দিকে ঘুরায় দিতে হইবো এই আর কী। এ্যান্ড এই কামডা করতে হইবো, ঠান্ডা মাথায় (Cool Headedly) মাথা গরম কইরা উলটাপালটা কিছু কইয়া ফেলাইলে হিতে বিপরীত হওয়ার সম্ভাবনা শতভাগ। তখন, রীভেঞ্জ লইতাছেন এইডা প্রকাশ পাইলে আরো পঁচানী খাইতে হইতে পারে। সো, টার্গেট ডাইভার্টিং নট দ্যাট মাচ ইজি, Okey?
এইডার একটা এ্যাডভান্টেজ হইলো- যেহেতু সে সবচাইতে বেশি মজা পাইতেছে, হাসতে হাসতে লুটোপুটি খাইতেছে, কাজেই তার ব্রেইন অহন হুট কইরা অন হইবো না, তারে হূট কইরা পঁচানো শুরু করলে ব্রেইন আচমকা শক পাবে, বাট পাল্টাঘাত করার জন্য ব্রেইন তো তখনো প্রস্তুত না। সো, স্বভাবতই সে কিছুক্ষনের জন্য থ হয়ে যাবে। মুখ থেইকা হাসিও গায়েব হবে, আর সেইটা পোলাপানের দৃষ্টিতে দিতে পারলেই কাম সারা। সত্যি-মিথ্যা যাই হউক, বানায় ছানায় চাপা-চুপা, রং-চং দিয়া “X” এর কোনো একটা বোকামীর কাহিনী বলা শুরু করেন, কাজে দিবে 😉
উদাহরণ দেই। ধরেন, হেব্বি পঁচতেছেন কোনো এক আড্ডায়। টপিক হইলো- কোনো এক মাইয়ার সামনে আপনে ইনসাল্ট হইছিলেন কোনো একদিন (নিঃসন্দেহে পঁচাইন্যা টপিক) স্বাভাবিক ভাবেই, ইন্ধন দাতা গ্রুপ সেই মজা পাইতেছে। “X” মজার চোটে গড়াগড়ি খাইতেসে। আপনের প্রেস্টিজের অবস্থা কেরোসিন। মাথা ঠান্ডা রাখুন। মুচকি হাসি দিন। সত্যটা স্বীকার করুন But অন্যভাবে, এবং কনফিডেন্টলী বলুন- ” আরে হ্যা রে, হেব্বি ইনসাল্ট হইসিলাম ওই দিন, আর কইস না। অহনো লজ্জা লাগে ভাবলে।” দেখবেন “X” এইটায় আরো মজায় লুটাইতেসে। তখনই বলে ফেলুন, “আরে তোগো তো “X” এর একটা কাহিনী বলাই হয় নাই (…মনে মনে কাহিনী রেডি কইরা ফেলান…এই ফাঁকে) আরে সেদিন কলেজের ক্যান্টিনে ঢুকছি। পাশের টেবিলে সুমাইয়ারা কী যেন নিয়া তুমুল হাসাহাসি…। “X”এর নামও শুনলাম একবার, তাই চুপচাপ কান খাড়া কইরা শুনা শুরু করছি। উফফফ… শুইনা হাসতে হাসতে পেট ফাইট্যা যায় অবস্থা। সুমাইয়া কী কইতাছিল শুনবি? ”
এইবার স্বভাবতই পোলাপাইন শুনতে চাইবেই। তখন বলে দিন, “সুমাইয়া নাকি করিডোর দিয়া হাটতাছিলো, তখন “X” টয়লেট থেইকা বাইর হইছে মাত্র। খুব ভাব নিয়া হাইটা যাইতেছিলো “X”. এ্যান্ড ওর প্যান্টের জিপার খোলা আছিলো………হো হো হো……” (জোর কইরা হাসির রোল তুলুন)
ব্যাস, টার্গেট ডাইভার্টিং কমপ্লীট। 😉 মনে রাখবেন, যদি চাপা মারেন তবে বুইঝা শুইন্যা এমন চাপা মারবেন, যাতে সেই চাপা প্রমাণ করার কোনো পথ খোলা না থাকে (যেমন জিপার খোলা থাকে কারো কারো…) “X” এর বাপেরও সাধ্য নাই, মাইয়্যা কাউরে গিয়া এর সত্যতা প্রমাণ করে। হিহিহিহি……। ;)) ;)) ;))

:hatsoff: রুল নাম্বার ০৪ : (সাইড কাটা)
নিঃসন্দেহে এখন পোলাপাইন সব কয়টা মিলে “X” রে পঁচাইতে ব্যাস্ত, এই সময়টা বহুত ক্রিটিকাল। “X” অহন প্রাণপন ট্রাই করবে, আপনার চাপার ভুল প্রমাণের। বহুত কোশ্চেনের সম্মুখীন হইয়া চাপা ধরা খাওয়ার চান্স আছে। ধরা খাইলে আপনার আর নিস্তার নাই। আবারো অক্কা। তাই বেশি ফাল না পাইরা আস্তে করে কোনো এক অযুহাতে কিছুক্ষণের জন্যে সাইড কাটুন। “দোস্ত, তোরা বস, চা আনতাছি” এইটা বলতে পারেন, কিংবা হুদাই ফোন বাইর কইরা কল আসছে এমন ভাব কইরা কিছুক্ষণের জন্যে আড্ডা ছাইড়া একটু হাওয়া খেয়ে আসুন। (ফোন এক্কেরে হুদাই কানে লাগায় রাইখেন না, কানে নেওয়ার পরে ঐ মুহুর্তে সত্যি কল আসলে এক্কেরে হাতে নাতে ধরা। তাই মনে করে ফোন টোটালী অফ করে কানে দিয়েন ) দুঃখ একটাই, যে,”X” এর পঁচানীর মজাটা মিস করলেন। ব্যাপারস না, বৃহত্তর স্বার্থে ক্ষুদ্রতর স্বার্থ নাহয় ত্যাগই করলেন…… 😉

:hatsoff: রুল নাম্বার ০৫ : (মলম after sore / ছিল্লা কাইট্টা মলম দেওন)
লাস্ট বাট নট দ্যা লিস্ট। ছিলছেন, কাটছেন, খবরদার আর লবণ দিয়েন না। “X” আপনার উপর অহন বেজায় খেপা। কাটা ঘায়ে লবণ না, এইবার মলম দিন। কিন্তু হ্যা, লক্ষ্য রাখবেন সেইটা যেন আবার ওয়েলিং এর পর্যায় চইলা না যায়। তাইলেও আপনার মাইনাস পয়েন্ট। আড্ডা থেকে বের হয়ে এমন একটা ভাব করুন, যেন আপনার কিছুই মনে নাই, আড্ডা ইজ আড্ডা, ফ্রেন্ড ইজ ফ্রেন্ড। পঁচানীর ঘটনা যথাসম্ভব avoid করার চেষ্টা করুন। এটা সেটা বলে কথা অন্যদিকে ঘুরায় নিতে পারেন। যেমন, “দোস্তো, শোন, একটা কাজ ছিলো, একটু দোকানে যামু, একটা মানি ব্যাগ কিনতাম, তা আমার যে বিশ্রি চয়েজ……, তোরে সাথে যাইতে হইবো, তোর চয়েজ ক্যান যেনি সবাই পছন্দ করে……..etc etc.(কথার টপিক কিন্তু অলরেডি আপনি ঘুরায় দিয়েছেন, সাথে ইট্টুশ খানি তেল মারাও শেষ, এইবার কথা চলতে দিন……মলম তার ক্ষমতা দেখানো শুরু করে দিবেই) 😉

উপরের আউলা প্যাঁচালগুলা হয়তো জীবনের কোনো গুরুত্বপূর্ণ কিছুতে কাজে আসবে না। তারপরেও অলস মস্তিষ্ক শয়তানের বাসা বইলা একটা কথা আছে তো। অনেক্ষন অলস বইসা ছিলাম, শয়তান আইসা কইলো এইটা লিখতে, (তবু পাত্তা দিতেসিলাম না) যাওয়ার সময় এইডাও কইয়া থুইয়া গেছে কানে কানে, “বাঁচতে হলে জানতে হবে”। কত্ত বড় বজ্জাত দেখছেন??? 😀 😀 😀

৩,১৮৩ বার দেখা হয়েছে

৩৭ টি মন্তব্য : “কাউরে পঁচানোর এবং নিজে পঁচাইন্যা থেইকা বাঁচার 5 Rules”

মওন্তব্য করুন : ইফতেখার (৯৯-০৫)

জবাব দিতে না চাইলে এখানে ক্লিক করুন।

দয়া করে বাংলায় মন্তব্য করুন। ইংরেজীতে প্রদানকৃত মন্তব্য প্রকাশ অথবা প্রদর্শনের নিশ্চয়তা আপনাকে দেয়া হচ্ছেনা।