সিসিবি ব্লগের লেখক হেলাল মুহাম্মদ (সিলেট ক্যাডেট কলেজ এর ক্যাডেট, বাংলাদশ সেনাবাহিনীর সাবেক মেজর) এর কবিতার বই ‘হৃদয়ের রাজপথে’ একুশে বইমেলাতে ‘পাঠসুত্র প্রকাশনী (স্টল নং- ৩০৭)’থেকে প্রকাশিত হয়েছে।
আমাদের পাঠকদের জন্যে ‘হৃদয়ের রাজপথে’ থেকে দুটি কবিতা দেয়া হলঃ
“মোগাদিসু থেকে বলছি”
এক মুঠো ভাত…
সাকুল্যে এক মুষ্টি খাদ্য চাই
এক বোতল পানি…
এক কোটি সোমালীয় বসে আছি বুভুক্ষায়,
রুটি- বার্লি কাসাভা-যা দেবে উচ্ছিষ্ট
চেটেপুটে খাবো!
আমাদের মনন জুড়ে সুতীব্র আফ্রিকার খরা
দৃষ্টি চিরে সুদীর্ঘ শাসনের জরা
মোটে এক বেলা ভরা পেটে ছড়াবো চূড়ান্ত- শ্বাস,
তার পরে-তৃপ্ত চোখে-এক কোটি চলন্ত- লাশ
মুমূর্ষায় ভেসে যাবো সব ছেড়ে
মরুপথে ভিজে মরণের দ্বারে!
এক কোটি পিপাসিত সোমালীয় ছায়া
একদিন মানুষ ছিলাম
এখন এক কোটি শ্বাপদের মতো,
ক্ষুৎ-পিয়াসা না মিটলে তান্ডবে
ছড়াবো জান্তব-নাদ!
এক কোটি শরণাগত সোমালীয় প্রাণ
খেতে দাও, নইলে মরণ কামড়ে
খুবলে খাবো পৃথিবী
এক কোটি নেকড়ের মতো!
এই বেলা বোধনাশী ক্ষুধা কুঁড়ে কুঁড়ে
সোমালিয়া কেনিয়া ইথিওপিয়া জুড়ে
মৃত্যুর পসরা খুলে বসে আছি,
এক কোটি নিরন্ন সোমালীয় শব
আল-কায়েদা শাবাব চিনি না
ক্ষুধা চিনি!
“তার নাম”
সে নেই, অথচ তার নাম পড়ে আছে
প্রেম-বিরহের পাট চুকিয়ে সে চলে গেছে গ্রীবা উঁচু করে,
অনুপস্থিতি জুড়ে শুধু রেখে গেছে ওই অশরীরি অক্ষরগুলো-
স্পর্শ নয়, গন্ধ নয়, প্রিয় কোন গান বা লালপেড়ে শাড়িটাও নয়,
যেতে যেতে সে ফেলে গেছে তার নাম-পকেটে রুমালের কোণে,
ঘরের দেয়ালের পলেস্তারায়, টেবিলে কবিতার খাতা জুড়ে।
আমি ভেবেই পাই না, এক নি:শ্বাসে উচ্চারণযোগ্য একটি শব্দ,
অথচ সন্ধ্যার প্রণযস্পর্শের মতো কেন তাকে দীর্ঘ মনে হয়!
ইতিপূর্বেও, যখন তাকে আমি এমনকি চোখেও দেখিনি,
তখনও তার নামটা শুনে ওটাকেই ভালবেসেছিলাম আগে-
ওটাই ছিল আমার কৈশোরে প্রেমের প্রথম পাঠ, তাই কি না
গ্রীবা-উঁচু অহংকারে সে চলে গেছে, ফেলে গেছে তার নামটা।
এই এত দিন পরে, যখন আমিও হয়তো তাকে আর
আগের মত ভালবাসি না;
এখনও সে আমাকে ছুঁয়ে থাকে বিকেলবেলার একাকীত্বে,
মাঝরাতে মাঝেমধ্যে ধুয়ে দেয় অভিযোগী স্মৃতির জলে,
দিনে অফিসের ব্যস্ততার ফাঁকেও ড্রয়ার খুলে ওই প্রাণসঞ্জীবনী
শব্দটিকে একবার দেখে নিতে আমার ভুল হয়না মোটেই্
ঠিক জানি, একদিন তার ব্যথা-জাগানিযা চুল-চোখ-নাকও
কোনো রকম কষ্ট দেবেনা আর; কোন আততায়ী ছায়া এসে হয়তো
চিনে নেবে পুরো অসিত্ব, তখনও আমার সাথে ছায়াসঙ্গী হয়ে
থেকে যাবে খুব সাধারন, আটপৌরে উচ্চারনের ওই নামটা;
অনেকটা অভিমানে অগোচরে দেশত্যাগী মানুষের মতো।
১ম 😀
আফ্রিকার একদম আসল চিত্র তুলে ধরেছেন স্যার :boss:
বইয়ের জন্য অনেক অনেক শুভকামনা রইল :clap:
"আমি খুব ভাল করে জানি, ব্যক্তিগত জীবনে আমার অহংকার করার মত কিছু নেই। কিন্তু আমার ভাষাটা নিয়ে তো আমি অহংকার করতেই পারি।"
হেলাল মুহাম্মদ ভাইকে জানাই অনেক অনেক অভিনন্দন ও শুভকামনা... :clap:
ঐ দেখা যায় তালগাছ, তালগাছটি কিন্তু আমার...হুঁ