১. স্যার আমাদের ইসলাম শিক্ষা পড়াতেন। নাদুস নুদুস চেহারায় শিশুসুলভ হাসি লেগে থাকত, ক্যাডেট কলেজে অনেকটা বেমানান। এ বিষয়ের পরীক্ষা প্রস্তুতি হত সবচেয়ে আলাদা, বিভিন্ন রঙের কলম-পেন্সিলের জন্য হুড়োহুড়ি পড়ে যেত। পরীক্ষার খাতায় লেখার চেয়ে মিনার, মসজিদ, চাঁদ-তাঁরা আঁকাতেই আগ্রহী ছিলাম সবাই। শিল্পী মনটাকে উজার করে দিতাম পরীক্ষার খাতায়, দেখার মত জিনিস হত একেকজনের খাতা। সব সহ্য করতেন স্যার। সেবার পরীক্ষার খাতা দেওয়ার পর একজন রেগেমেগে স্যারের সামনে হাজির,
-“স্যার… এইটা কি লিখসেন?! আমি ভিপি স্যারের কাছে যাব।”
সবাই হুমড়ি খেয়ে পড়লাম খাতার উপর, বড় বড় করে লাল কালিতে লেখা “বেয়াদপ”। আর ফেল করাতে যা লাগে সেই নম্বর।
স্যার খানিকটা দমে যান, খাতা টেনে পাশ করিয়ে দেন।
প্রেপ টাইমে কি একটা বিষয় নিয়ে সবার উদ্দ্যেশে জোরে জোরে কথা বলছিলাম। পিছন থেকে স্যার এসে কলার চেপে বাইরে নিয়ে মারতে শুরু করলেন। যতই বলি জরুরী ছিল, মারের পরিমাণ বাড়তে থাকে। মেজাজ খারাপ করে দাঁড়িয়ে থাকি। এরপর থেকে স্যারকে এড়িয়ে চলতে থাকি। কিছুদিন পর চাকুরী ছেড়ে দেন তিনি। যাবার আগে একদিন প্রেপ টাইমে ফর্ম থেকে বাইরে ডেকে নিয়ে যান আমাকে,
-“হাসনাইন… তোমাকে একদিন মারছিলাম। মাফ করে দিও” মুখে স্যারের সেই চিরাচরিত হাসি।
অবাক আমি লজ্জায় নত হই,
-“না না … স্যার। কি বলেন স্যার!!”
২. আইসিসিভিবিএম -এ প্রস্তুতি ম্যাচ খেলতে গেলাম ক্যান্টনমেন্টে। পায়ের মাসাআল্লাহ মার্কা সাইজের কারণে কলেজ থেকে দেয়া জুতা ছোট হয়। তাও ম্যাচের কথা চিন্তা করে তা পড়েই খেলতে যাওয়া, যথারীতি নখে রক্ত জমে খারাপ অবস্থা। সারা কুমিল্লা খুঁজেও নাকি আমার পায়ের মাপে জুতা পাওয়া যায় নাই। বরিশাল যাওয়ার আগে এডজুট্যান্ট স্যারকে বললাম বিষয়টা। স্যার বললেন যাওয়ার পথে ঢাকায় খুঁজে দেখবেন। সাত না আট ঘন্টার জার্নি শেষে সবাই বরিশাল পৌছাই সম্ভবত বিকেলের দিকে। রাতে ডিনার শেষে রুমে এসে শুনি স্টাফ খুঁজেন আমকে। গিয়ে দেখি পাওয়ার কেডস, আমার জন্য বরিশাল শহর থেকে আনা হয়েছে।
প্রথম খেলায় জিতে যাই কোনমতে। দ্বিতীয় ম্যাচ ছিল রাজশাহী ক্যাডেট কলেজের সাথে। খেলার অবস্থান আমাদের দিকে তাও কিভাবে কিভাবে জানি চার ফাউল করে ফেলি।
এডজুট্যান্ট স্যার মাঠ থেকে বের করে দুহাতে জার্সি চেপে ধরেন আমার,
-“হাসনাইন… কি করতেছ? আর ফাউল করলে ত ম্যাচ থেকে বের হয়ে যাবা।”
সেদিন স্যারের চোখে শাসনের চেয়ে আবেগটাই বেশি দেখেছিলাম।
স্যারদের এমনতর জ্বালাতন অন্যকোন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে হয় কিনা ঘোর সন্দেহ আমার। বছর ধরে সকাল থেকে পরদিন সকাল পর্যন্ত একদল বান্দরকে মানুষ করার অমানুষিক চেষ্টা। অনেক ভুল দেখেও না দেখার ভান করে এড়িয়ে গেছেন। ব্যতিক্রম অবশ্যই আছে। কিন্তু তাঁদের জন্য অন্যদের ম্লান হতে দিব কেন? সম্পর্কগুলোতে ফাঁটল থাকে বলেই এত অমূল্য তারা, সাবধানে থাকি ছিঁড়ে না যায়। কলেজে গেলে চার-পাঁচ বছর আগের দেখে যাওয়া মানুষগুলোকেই দেখি, কোন বদল হয়নি। মুখে হাসি এনে এখনো জিজ্ঞেস করে যান এই-সেই। কলেজে যাই আর কিছু সুখস্মৃতি নিয়ে ফিরে আসি। তা দিয়ে ভালই চলে যায় কিছুদিন। তারপর আবার অপেক্ষা কলেজে যাওয়ার। কিছু মানুষ সারাজীবন আমার শ্রদ্ধা পেয়ে যাবেন। যুগ যুগ জিয়ো ক্যাডেট কলেজ।
যুগ যুগ জিয়ো ক্যাডেট কলেজ
"আমি খুব ভাল করে জানি, ব্যক্তিগত জীবনে আমার অহংকার করার মত কিছু নেই। কিন্তু আমার ভাষাটা নিয়ে তো আমি অহংকার করতেই পারি।"
🙂
যুগ যুগ জিয়ো ক্যাডেট কলেজ
... :boss:
"......ভিবিএম" এইটা কি খেলা বুঝি নাই।
পালটে দেবার স্বপ্ন আমার এখনও গেল না
ভাস্কেট আর বলি মীট মনে হয় ... 😮
পথ ভাবে 'আমি দেব', রথ ভাবে 'আমি',
মূর্তি ভাবে 'আমি দেব', হাসে অন্তর্যামী॥
😀
তাইফুর ভাই চরম বল্লেন???বলি মীট?
অইখানে পাঁঠা বলির কম্পেটিশান হবে???
ক্যাডেট কলেজ অমর হউক!
:boss:
হাসনাইন খুবি সুন্দর একটা লেখা। আরেকটু বড় করবি?? ধর আর দুইটা পয়েন্ট যোগ করে দিলি...দেখনা প্লিজ...
এইবার... :grr:
কি কইলাম কানে গেছে, শালা??
লিংক দিসি... আপাতত ঐটা খাইয়া কাজ চালা। :grr:
মামা বেশি লেখা আসে না। 🙁
কই লিংক দিসোস?
অনেক কিছু মনে পইরা গেল রে হাসনা ...
অনেক কিছু মনে পইরা গেল।
পথ ভাবে 'আমি দেব', রথ ভাবে 'আমি',
মূর্তি ভাবে 'আমি দেব', হাসে অন্তর্যামী॥
তাইফুর ভাই,
আমার নামডারেও রেহাই দিলেন না। 😛
কত কিছু মনে করায়া দিলিরে হাসনা, কত কিছু 😉
সংসারে প্রবল বৈরাগ্য!
আমারে কি মাস্ফু ভাই পাইছেন। :grr:
কত কিছু মনে করায়া দিলিরে হাসনা, কত কিছু :grr: :grr: :grr:
মাইরটার কথাও ভুলে যাস নাই নিশ্চয়?? নাকি ঐটাও মনে করায় দিতে হইব।। :grr: :grr: :grr:
সুন্দর স্মৃতিচারণ। 🙂 হাসনাইন এতো ছোট করে লিখো কেনো? আরো বেশি করে লিখবে। 🙂 🙂
ভাই গুল্লি মারলেও লেখা আসে না। এটম বোম মারছিলাম বইলা এদ্দুর বাইর হইছে। 😀
ওকে বস নিকট ভবিষ্যতে বড় করে লিখব। 🙂
শুধু ফন্ট বড় করে লিখ না যেন... :-B
ঐ দেখা যায় তালগাছ, তালগাছটি কিন্তু আমার...হুঁ
ভালা বুদ্ধি। :-B
:khekz: :khekz: :khekz:
পথ ভাবে 'আমি দেব', রথ ভাবে 'আমি',
মূর্তি ভাবে 'আমি দেব', হাসে অন্তর্যামী॥
ভালো লাগলো। ধন্যবাদ।
"মানুষে বিশ্বাস হারানো পাপ"
সানাউল্লাহ ভাই আজকে এই পর্যন্ত ৫ জনরে ধন্যবাদ দিছেন। 😀 অন্যদিন তো পান থেকে চুন খসলেই রগড়া দেওয়া শুরু করেন। 🙂
নাহ! মরতুজা ভাই ঠিকই বলছেন। ইলেকসন মনে হয় আইসাই পড়ছে। 😉 😉
=)) =))
সংসারে প্রবল বৈরাগ্য!
বস... এই ফেরাস্ট আমার কোন লেখায় কমেন্ট করলেন, এর আগে ইমোটিকন দিয়া চইলা গেসিলেন। :shy:
আপনাকেও ধন্যবাদ। 🙂
সত্যিই অনবদ্য।
জটিল ইমো। :)) :))
? ঠিক বলসেন ভাই।কয়েকটা বাজ়ে লোকের কারনে সবাই খারাপ হবে কেন??যেমন আমাদের form master নিজাম স্যার x-( x-( উনি খারাপ তাই বলে কি সবাই খারাপ ??? :boss: :boss:
ঠিক ঠিক...
ঠিক একদম ঠিক
"আমি খুব ভাল করে জানি, ব্যক্তিগত জীবনে আমার অহংকার করার মত কিছু নেই। কিন্তু আমার ভাষাটা নিয়ে তো আমি অহংকার করতেই পারি।"
হাস্না রে, বড়ই ভালা লিখছস।কত্ত কথা মুনে পইড়া গেল...
বস... আপনারে কিন্তু কখনো আমি মাস্ফু কই নাই আগে। :grr:
সেইসব স্যারদেরকে অন্তরের অন্তঃস্থল থেকে :salute: ।
Life is Mad.
আমিও :salute:
হাসনাইনকে অন্য নামে ডাকার ঝঁউকি আমি নেবো না। আমার নাম নিয়ে কিছু লিখলে সমস্যা আছে।
হ... খিয়াল কইরা ...খুব খিয়াল কইরা।। :grr:
ঝুঁকি বানান ভুল হইছে
কত কিছু মনে করায়া দিলিরে হাসনা, কত কিছু :khekz: :khekz:
অনেক কিছুই ভুলে গেসস দেখা যাচ্ছে।। :grr: :grr: :grr:
কয় সেকেন্ডের জন্য ঢুকছিলি?? B-)
মামা এইবার লেখা শুরু কর।
আমার তো মনে হয় অমর হয়েই আছে :hatsoff: ক্যাডেট কলেজকে :salute: