অর্থনীতি বিষয়ক কিছু ভাবনা – ২

আগের পোষ্টের ইফতেখার ভাইয়ের মন্তব্য থেকে এবং সেখানে থাকা উইকিপিডিয়ার লিংক থেকে অর্থনীতিতে ব্যাপারটাকে কীভাবে দেখা হয় তার উপর একটা ছোটখাটো ধারণা পেলাম। অর্থনীতির পরিভাষায় এই ব্যাপারটাকে বলা হয় “অর্থ প্রবাহ” বা “Money Supply”। আমার চিন্তার সাথে অবশ্য অর্থনীতির ব্যাখ্যা পুরোপুরি মেলে না। কারণ বেশ কিছু ব্যাপার আমার মাথায় আসেনি।

যেমন আমি রাষ্ট্রীয় ব্যাংকের কথা একদমই চিন্তা করিনি। পুরো ব্যাপারটা নিজের মত করে চলছে এমনই ছিল আমার ধারণা। কিন্তু এখন সমস্ত দেশেই অর্থপ্রবাহ নিয়ন্ত্রিত হয় রাষ্ট্রীয় ব্যাংকের মাধ্যমে। শুধু নিয়ন্ত্রন না, এই অর্থপ্রবাহের উপর সবসময় নজর রাখা হয় যেন এটার পরিমাণ ঠিক থাকে। অবশ্য পূর্ণ নিয়ন্ত্রণ না বলে নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা বলাটাই ভাল।

আবার আমি বাজারের যোগানকে ধ্রুবক ধরে নিয়ে শুধু অর্থের প্রবাহের কথা আলোচনা করেছিলাম। এতে অর্থের প্রবাহ কমে বা বেড়ে গেলে কীভাবে বাজারে সংকট তৈরি হয় সেটা বলেছিলাম। এর মধ্যে অর্থ প্রবাহ বেশি হলে যে সংকট তৈরি তার সাথে আমরা অতি পরিচিত। এর নাম- “মুদ্রাস্ফীতি”।(সেদিন প্রথম আলোতে এই নিয়ে শিরোনাম ছিল) তবে পরে বুঝলাম বাজারে পণ্যের যোগানকে বিবেচনা না করলে ধারণাটা পুরোপুরি পরিষ্কার হয় না। পণ্যের যোগান বাড়লে অর্থ প্রবাহও সাথে সাথে বাড়তে হবে।

তারপর Virtual Money সম্পর্কে জানলাম। অর্থাৎ বাজারে পণ্যের তুলনায় অর্থ না থাকলে অন্য একটা সহজলভ্য পণ্য অর্থের কাজটা চালিয়ে নেয়। যেমন আমাদের দেশে এক টাকার বিকল্প হিসেবে ক্যান্ডি ব্যবহার করা হচ্ছে। এটা দিয়ে এখনও পণ্য কেনার মত অবস্থা এখনও হয়নি অবশ্য।

তবে আমি যেকথা আসলে বলতে চাচ্ছিলাম সেকথায় আসি। আমার মনে হয়, অর্থ-ব্যবস্থায় সবাই লাভ করার চেষ্টা করছে। কেউ কিন্তু ক্ষতির সম্মুখীন হতে চাচ্ছে না। কেউ অর্থই মূলধন হিসেবে ব্যবহার করছে। আবার কারও অর্থ না থাকলে নিজের বিভিন্ন দক্ষতাকে পুঁজি হিসেবে ব্যবহার করছে। কিন্তু সবাই লাভ করবে এটা তো আর সম্ভব নয়। মোটামুটি একই পরিমাণ অর্থই সবার মধ্যে ভাগ হয়ে যাচ্ছে। আর এক্ষেত্রে লাভ-ক্ষতির হিসেবটা সবাই জানি। ধনীরা আরও ধনী হচ্ছে, গরীবরা আরও গরীব হচ্ছে। সম্ভবত অর্থনীতিতে এসব পর্যবেক্ষণ করে এর কোন তাত্ত্বিক নামও দেয়া হয়ে থাকবে। তবে এই যে সবাই লাভ করতে চাচ্ছে, এই চাহিদাকে সামাল দিতে গিয়ে অর্থপ্রবাহ বেড়ে যেতে পারে। মানে মোট অর্থের পরিমাণ বাড়লে হয়ত সবার লাভ করার ইচ্ছাকে কিছুটা হলেও পূরণ করা সম্ভব। তবে শেষ পর্যন্ত মুদ্রাস্ফীতি হয়ে মানে জিনিস-পত্রের দাম বেড়ে অবস্থা খারাপের দিকেই যায় বেশি।

এখন এই যে ধনী-দরিদ্রের ব্যবধান বেড়ে যাচ্ছে, একে সাম্যাবস্থায় আনার জন্য অর্থের বিপরীতমুখী একটা প্রবাহ থাকা দরকার। যেই প্রবাহটা বিত্তশালীদের থেকে দরিদ্রদের দিকে যাবে, আর্থিক লাভের আশা ছাড়া। তাতে আমার মনে হয়, মুদ্রাস্ফীতি (বা জিনিস-পত্রের দাম) কমে যাবে। সবাই কী বলেন?

৬ টি মন্তব্য : “অর্থনীতি বিষয়ক কিছু ভাবনা – ২”

  1. মুদ্রাস্ফিতি এবং অন্যান্য সমস্যার প্রধান কখনো কখনো একমাত্র কারণ হচ্ছে 'সুদ ভিত্তিক ব্যবস্থা'। আমার ধারাবাহিক পোষ্টগুলো পড়ে দেখতে পারেন:

    জবাব দিন

মওন্তব্য করুন : মরতুজা (৯১-৯৭)

জবাব দিতে না চাইলে এখানে ক্লিক করুন।

দয়া করে বাংলায় মন্তব্য করুন। ইংরেজীতে প্রদানকৃত মন্তব্য প্রকাশ অথবা প্রদর্শনের নিশ্চয়তা আপনাকে দেয়া হচ্ছেনা।