আমাদের গণতন্ত্রের দুর্বলতা এবং প্রযুক্তি

কিছুদিন আগে পুরোনো ব্লগ ঘাটতে ঘাটতে ফয়েজ ভাইয়ের “গণতন্ত্র, দলীয়করন, আর ফয়েজের আউলা চিন্তা” পড়লাম। ঐখানে আমাদের দেশে প্রচলিত গণতন্ত্রের দুর্বলতা নিয়ে কিছু পয়েন্ট ছিল। পড়ার পর আমার মাথায়ও ঐ ধরণের কিছু পয়েন্ট আসল। এর মধ্যে দুইটা হল-

– আমাদের বর্তমান সংসদে সদস্যরা দলের সিদ্ধান্তের বাইরে নিজস্ব মতামত দিতে পারেন না। বক্তব্য দেওয়ার সময় সামান্য সুযোগ থাকলেও, মূল বিষয়ে সিদ্ধান্ত গ্রহণে ভোটাভুটির ক্ষেত্রে দলের মতামতই সব সদস্যদের মতামত হিসেবে গণ্য হয়। আর আমাদের রাজনৈতিক সংস্কৃতিও এভাবেই গড়ে উঠছে।

– আমাদের সংসদে সাধারণ মানুষ সংসদ সদস্যদের কি হিসেবে পাঠান? উনারা পাঠান মূলত এলাকার প্রতিনিধি হিসেবে, ঐ এলাকার মানুষের বিভিন্ন দাবী-অভাব- অভিযোগ সংসদে পৌঁছে দেওয়ার জন্য। কিন্তু উনাদের মাধ্যমেই সংসদে আইন, শিক্ষা, স্বাস্থ্য, প্রযুক্তি, পররাষ্ট্রনীতি, শিল্প, বাণিজ্য, প্রতিরক্ষা ইত্যাদি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেয়া হচ্ছে। অথচ উনাদের অনেকেরই এসব ব্যপারে তেমন কোন ধারণাই নেই। আর অন্যদিকে অবহেলিত হচ্ছে এসব বিষয়ে বিষেশজ্ঞ দেশের অনেক বরেণ্য ব্যক্তিত্বের মতামত। স্বীকার করি সিদ্ধান্ত গ্রহণে সচিবালয়ের ভূমিকা থাকে, সেখানে অনেক অভিজ্ঞ এবং বিশেষজ্ঞ ব্যক্তি থাকেনও। তবুও মতামত নেওয়ার সুযোগ থেকেই যায়। আর আমাদের দেশে বিভিন্ন কারণে সরকারী চাকুরীতে অনেকের অনাগ্রহে সচিবালয়ে মেধাবীদের পরিমাণ কমেও যেতে পারে।

মূল কথা হল, দেশের অনেক গুরুত্বপূর্ণ বিষয় মুষ্টিমেয় কয়েকজন লোকের হাতে কুক্ষিগত থাকে। এটা হয়ত সব দেশেই থাকে এবং সেটাই স্বাভাবিক। তবে এখানে চিন্তা করার বিষয় হল, এই কারণে আমাদের পুরো প্রক্রিয়ায় যেসব সমস্যা তৈরি হয়েছে, সেগুলো কাটিয়ে ওঠা যায় কীভাবে। গণতন্ত্রের কথায় আসি। গণতন্ত্রের অন্যতম নীতি হল মত প্রকাশের স্বাধীনতা। কিন্তু একটা মত প্রকাশিত হওয়াটাই কি যথেষ্ট? কি লাভ মত প্রকাশিত হয়ে যদি তার যথাযথ মূল্যায়নই না হয়? মূল্যায়নের কোন ব্যবস্থা করে আমরা কি সমস্যাগুলো সমাধান করতে পারি? আর এই লেখায় আমার চিন্তাটা হল, প্রযুক্তিকে কি আমরা এক্ষেত্রে ব্যবহার করতে পারি?

প্রথমে দেখা যাক মত প্রকাশ করার জন্য সাধারণত কী কী মাধ্যম ব্যবহার করা হয়। প্রচলিত মাধ্যমগুলোর মধ্যে রয়েছে প্রবন্ধ লেখা। সেটি সংবাদপত্রে বা পত্র-পত্রিকায়ও প্রকাশিত হতে পারে, আবার কোন বইতেও প্রকাশিত হতে পারে। আরেকটি মাধ্যম হল বক্তব্য উপস্থাপন। সেটি কোন সভা করে হতে পারে, সাংবাদিক সম্মেলনের মাধ্যমে হতে পারে বা কোন টিভি চ্যানেলে টক শো জাতীয় অনুষ্ঠানের মাধ্যমেও প্রদর্শিত হতে পারে। কিন্তু এসব ক্ষেত্রে প্রধান সমস্যা হল, প্রায় সব মাধ্যমগুলোই একমুখী। অর্থাৎ, মত প্রকাশের পর এখানে জবাবদিহিতা বা প্রতিক্রিয়া জানানোর সুযোগ খুবই কম। সাংবাদিক সম্মেলন ছাড়া বাকী প্রায় তেমন কোন ক্ষেত্রেই মত প্রকাশকারীকে তেমন কোন প্রশ্নের মুখোমুখী হতে হয় না। যার ফলে অনেকেই মত প্রকাশের ক্ষেত্রে স্বেচ্ছাচারী হয়ে ওঠেন। আর দ্বিতীয় সমস্যা হল, অধিকাংশ ক্ষেত্রে এসব মতের কোন মূল্যায়ন হয় না। বা সোজা কথায় বললে এসব মত শুধু প্রকাশিত হওয়ার মধ্যেই সীমাবদ্ধ থেকে যায়, কোন কাজে লাগে না। আর অনেক ক্ষেত্রেই এসব মত প্রকাশিত হয় সিদ্ধান্ত গ্রহণেরও পরে, যখন গুলি বন্দুক থেকে বেরিয়ে গেছে।

এবার আসা যাক অপেক্ষাকৃত আধুনিক যোগাযোগ মাধ্যমগুলোর দিকে। আধুনিক যোগাযোগ মাধ্যম বলতে আমি মূলত ইন্টারনেটকেই বুঝাচ্ছি। বর্তমানে ইন্টারনেটে মতামত প্রকাশের যে মাধ্যমগুলো আছে তা হল, ব্লগ, ফোরাম, ফেসবুকের মত সামাজিক যোগাযোগের সাইটগুলি আর ক্ষুদে বার্তার সাইট টুইটার। এসব মাধ্যমের একটা বড় সুবিধা হল, একমুখী না হওয়া। অর্থাৎ এসব ক্ষেত্রে অন্যরা সহজেই মত প্রকাশকারীকে প্রশ্ন করতে পারেন, প্রকাশিত মতের উপর মন্তব্য করতে পারেন। এভাবে জবাবদিহিতা বাড়ে অর্থাৎ স্বেচ্ছাচারিতার সুযোগ কমে আসে। বিস্তারিত মত প্রকাশ করার জন্য ব্লগই সবচেয়ে উপযোগী মাধ্যম। যদিও আমি ব্লগ আর ফোরামের মধ্যে তেমন কোন পার্থক্য দেখি না। ফোরামের তুলনায় ব্লগের প্রথম পোস্টটা বড় হয় এই আর কি। কিন্তু ব্লগে আলোচনা মূল বক্তব্যের বাইরে যায় কম। ফোরামের ক্ষেত্রে প্রায়ই আলোচনা মূল বক্তব্য থেকে দূরে সরে যায়। আবার ক্ষুদে বার্তার সাইটগুলো যেমন ফেসবুক বা টুইটার ইত্যাদিতে আলোচনা খুব বেশী আগায় না। আরা এসব ক্ষেত্রে আগে থেকে মতামত বা মন্তব্যের সীমা অক্ষর হিসেবে নির্ধারণ করা থাকে বলে খুব বিস্তারিত কিছু বলার সুযোগও কম। তবে দ্রুত কোন খবর বা মত প্রকাশ করতে এর জুড়ি নেই।

এখন বাংলাদেশে ইন্টারনেটের মাধ্যমে বিশেষ করে ব্লগের মাধ্যমে মত প্রকাশ করার একটা সংস্কৃতি গড়ে উঠছে।যদিও এতে বিশেষজ্ঞদের তুলনায় সাধারণ ব্লগারদের সংখ্যাই বেশী। তবুও অনেক ভাল ভাল মত সবার সামনে আসছে। আর বিশেষজ্ঞরাও ব্লগে আসছেন ধীরে ধীরে। মত প্রকাশের স্বাধীনতার মত ব্যপার ইন্টারনেটের মাধ্যমে সাধারণ নাগরিকের কাছে অনেকখানিই পৌঁছে গেছে। কিন্তু সেই পুরোনো সমস্যাটা, মত শুধু প্রকাশিতই হচ্ছে কিন্তু যথার্থভাবে মূল্যায়িত হচ্ছে না, সেটা থেকেই গেছে। আমার চিন্তাটা হল এই মত প্রকাশের মাধ্যমগুলোকে প্রয়োজনে কিছুটা ঘষে-মেজে আরো আনুষ্ঠানিক বা formal কোন রূপ দেওয়া যায় কিনা। যেখান থেকে জাতীয় পর্যায়ের সিদ্ধান্ত নেওয়ার সময়ও নিয়মতান্ত্রিকভাবে আনুষ্ঠানিক মতামত নেওয়া হবে। যদিও এটা অনেক উঁচু পর্যায়ের চিন্তা-ভাবনা, তাও মনে যা আসল তা শেয়ার করাটাই ভাল মনে হল। যদি সত্যিই কোন কাজে লাগে।

আমার মনে হয় একাজটা ইন্টারনেটে একটা ওয়েবসাইটের মাধ্যমে হতে পারে। এখন পর্যন্ত সাইটটার যেসব বৈশিষ্ট্য মাথায় আসল সেগুলো লেখার চেষ্টা করছি।
– স্বাভাবিকভাবেই এই সাইটে সদস্য হওয়ার পদ্ধতিটা সাধারণ সাইটের মত হবে না। জাতীয় পরিচয়পত্র বা এই ধরণের কিছুকে সদস্যপদের ক্ষেত্রে শর্ত হিসেবে রাখা যেতে পারে যেন বাংলাদেশের নাগরিক ছাড়া অন্য কেউ এখানে সদস্য হতে না পারে এবং একজনের একাধিক সদস্যপদ বা account না থাকে।
– বিভিন্ন ওয়েবসাইটের মত এখানেও বিষয়ভিত্তিক বিভিন্ন বিভাগ থাকবে। প্রত্যেক বিভাগে নির্দিষ্ট কিছু সদস্য থাকবেন যারা মতামত প্রবন্ধ বা ব্লগ আকারে দিতে পারবেন। অর্থাৎ প্রবন্ধ/ব্লগ লেখা সবার জন্য উন্মুক্ত থাকবে না। তবে মন্তব্য সবাই করতে পারবেন।
– নির্দিষ্ট প্রক্রিয়ায় এক একটা বিভাগে মতামত দেওয়ার ক্ষমতা অর্জন করার সুযোগ থাকবে। যেমন ফোরামগুলোতে সদস্যদের রেটিং থাকে। এরকম নির্দিষ্ট রেটিং পার করলে মতামত দেওয়ার সুযোগ পাওয়া যাবে। তবে এই রেটিং অর্জনের নিয়মটা সাধারণ ফোরামের মত না হয়ে আরও সূক্ষ হতে পারে।
– শুরুতে এবং পরবর্তীতেও বিভিন্ন বিষয়ে বিশেষজ্ঞ ব্যক্তিত্বদের সংশ্লিষ্ট বিভাগে সম্মানসূচক সদস্যপদ দেওয়া হবে মতামত দেওয়ার ক্ষমতাসহ। প্রথমে মূলত উনাদের মতামতের ভিত্তিতেই সাইটের কার্যক্রম শুরু হবে। পরবর্তীতে অন্যরাও এর সাথে উপরে বর্ণিত প্রক্রিয়ায় যুক্ত হতে পারবেন।
এই সাইটে মডারেটরদের অনেক গুরুদায়িত্ব পালন করতে হবে। যেমন-
– মন্তব্যের ক্ষেত্রে ‘ভাল লেগেছে/লাগেনি’ টাইপের মন্তব্যগুলোকে মডারেশনের মাধ্যমে পরিহার করতে হবে। সদস্যদেরকেও এধরণের মন্তব্যের ব্যাপারে নিরুৎসাহিত করতে হবে। মডারেটরদের খেয়াল রাখতে হবে যেন প্রকাশিত মন্তব্যগুলো কাজের হয়। অপ্রয়োজনীয় মন্তব্য যেন না আসে। ‘ভাল লেগেছে/লাগেনি’ টাইপের মন্তব্যগুলোর পরিবর্তে মতামত/ব্লগের রেটিং করতে উৎসাহিত করতে হবে। এক্ষেত্রে পাঁচ তারা জাতীয় রেটিং না রেখে poll বা ভোট টাইপের রেটিং এর ব্যবস্থা করতে হবে। পোলের অপশনগুলো হতে পারে- সম্পূর্ণ একমত, বেশীর ভাগ ক্ষেত্রে একমত, বেশীর ভাগ ক্ষেত্রে দ্বিমত পোষণ করছি, সম্পুর্ণ দ্বিমত পোষণ করছি, মন্তব্য নেই।
– মন্তব্য বা আলোচনা যেন মূল বিষয় থেকে সরে না যায় সেদিকেও মডারেটরকে খেয়াল রাখতে হবে।
– একটা পোস্টের পর সেটা নিয়ে আলোচনা হবে মূলত মন্তব্যের মাধ্যমে। এজন্য মন্তব্যের ক্ষেত্রেও মূল ব্লগ পোস্টের মতই রেটিং এর ব্যবস্থা থাকবে।
– কোন মতামত বা মন্তব্য স্পষ্টত জাতীয় স্বার্থের বিরুদ্ধের গেলে ঐ সদস্যের রেটিং কমানো হবে। প্রয়োজনে মতামত বা মন্তব্য দেওয়ার ক্ষমতা রহিত করে দেওয়া হবে যেমন ব্লগ বা ফোরামগুলোতে প্রচলিত আছে।
– নির্দিষ্ট সময় পরে কোন মতামতের থ্রেড বা পাতাকে ফ্রিজ করে দেওয়া হবে যেটা ঐ পাতায় দেখানো হবে। অর্থাৎ তারপর আর কেউ ঐখানে নতুন করে মন্তব্য বা রেটিং করতে পারবে না।
– এরপর মডারেশন প্যানেল কোন মতামতের উপর বিভিন্ন মন্তব্য, রেটিং ইত্যাদি পর্যবেক্ষণ করে ঐ মতামতের উপর চূড়ান্ত প্রস্তাবনা তৈরী করবেন। যেটা চূড়ান্ত নীতি নির্ধারক মহলের কাছে যেমন সংসদে বা সচিবালয়ে যাবে। সাথে সাথে অবশ্যই সেটা ওয়েবসাইটেও প্রকাশ করা হবে।
– বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ বা সংবেদনশীল বিষয় বা মতামতের পাতা প্রদর্শনের ব্যপারে বিশেষ অনুমতির ব্যবস্থা থাকবে। যেমন শুধুমাত্র নিবন্ধিত সদস্যরাই এসব পাতা দেখতে পারবেন এবং নির্দিষ্ট পরিমাণ রেটিং না থাকলে মন্তব্য করা যাবে না শুধু ভোট দেয়া যাবে ইত্যাদি।
– সদস্যদের মতামতের ভিত্তিতে বিদেশী নাগরিকদেরও সম্মানসূচক সদস্যপদ দেওয়া যেতে পারে যেন উনারা কোন বিশেষ ব্যপারে বিশেষজ্ঞ হিসেবে আমাদের সাহায্য করতে পারেন কিংবা উনাদের দেশের অভিজ্ঞতা আমাদের সামনে উপস্থাপন করতে পারেন।
– সিদ্ধান্ত গ্রহণের সময় ওয়েবসাইট থেকে আসা এই প্রস্তাবনাগুলোর Weightage বা গুরুত্ব কতখানি হবে সে বিষয়ে প্রচলিত নীতি নির্ধারক মহলের কাছে সুনির্দিষ্ট নীতিমালা থাকবে।
– স্বাভাবিকভাবেই এই ওয়েবসাইটের বিভিন্ন নিয়ম-কানুন বা নীতিমালাও এই ওয়েবসাইটের মতামত নেওয়ার নিয়ম অনুসারেই পরিবর্তিত হতে পারবে।
– আমার মনে হয়, ওয়েবসাইটের পুরো ব্যবস্থাটাই স্বেচ্ছাশ্রমের ভিত্তিতে চালানো যেতে পারে। এখানে সবাই দেশের প্রতি ভালবাসা আর দায়িত্ববোধ থেকে কাজ করবে। কোন বিনিময় ছাড়া।

আপাতত আর কিছু মাথায় আসছে না। কারও মাথায় কিছু থাকলে বলতে পারেন। কিছু পয়েন্ট বাস্তবায়ন করতে হয়ত অনেক নিয়ম-কানুনের মধ্যে দিয়ে যেতে হবে। এমনকি সংবিধান সংশোধনেরও প্রয়োজন হতে পারে। কিন্ত আমার মনে হয় প্রথমে এটা অনানুষ্ঠানিকভাবেই শুরু করা যেতে পারে। সবাই কি বলেন?

[বি. দ্র. নতুন কোন পয়েন্ট মাথায় আসলে সেটা পোস্টেই আপডেট করে দিচ্ছি। সেজন্য পোস্টটা কিছুটা পরিবর্তিত হয়েছে এবং আরও হতে পারে।]

১৪ টি মন্তব্য : “আমাদের গণতন্ত্রের দুর্বলতা এবং প্রযুক্তি”

  1. সাবিহা জিতু (১৯৯৩-১৯৯৯)

    :clap: :clap: :clap:
    আমি কিছু দরকারি জায়গাতে দরকারি মানুষদের কাছে এই লেখার লিঙ্ক টা সেন্ড করে দিলাম। এফবি তে শেয়ার করলাম, পাঁচ তারা।


    You cannot hangout with negative people and expect a positive life.

    জবাব দিন
  2. আদনান (১৯৯৭-২০০৩)

    বেশ কার্যকর চিন্তাভাবনা। ভাল লিখেছো।
    সংবিধান সংশোধন খুব সহজ কাজ না। সংসদে two-third majority নিয়ে পাশ হওয়া লাগে। এই বিষয়ে সংবিধান সংশোধন তখুনি সম্ভব যখন সেখানে IT বিষয়ক ব্যাপারগুলি স্থান পেতে পারবে, আমেরিকাতে যেমন এখন এটি মৌলিক অধিকারের পর্যায়ে গিয়েছে এবং তাদের constitution-এ অন্তর্ভুক্তির প্রসেসিং চলছে।
    "নির্বাচনকারীদের কাছে জবাবদিহিতা" বিষয়টি খুব গুরুত্বপূর্ণ। এটারই অভাব লক্ষ্য করা যায় আমাদের পলিটিশিয়ানদের মধ্যে। Accountability-এর প্রভিশন আইনে থাকলেও তার সঠিক বাস্তবায়ন সম্পর্কে দেশের মানুষ (রাজা এবং প্রজা) সবাই নির্বিকার! তার একটা প্রমাণ হল গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সংবিধানে Ombudsman এর কার্যবিধির উল্লেখ এবং তার আজ পর্যন্ত অস্তিত্বহীনতা।
    আশা রাখি ভবিষ্যতে মানুষ অধিকার সম্পর্কে সচেতন হবে; সংবিধানের আর্টিকেলগুলি সুষ্ঠুভাবে পালিত হবে, ২০০৭-এ বিচার বিভাগ পৃথকীকরণ দিয়ে যার সূচনা। উন্নয়নের এই ধারা অব্যহত থাকুক।

    জবাব দিন
    • সাবিহা জিতু (১৯৯৩-১৯৯৯)

      আদনান, তোমার সাথে আমি একেবারেই সহমত। IT বিষয়ে জ্ঞ্যান থাকা একান্ত জরুরী একটা ব্যাপার যা আমাদের সরকারের নাই (এখানে সরকার বলতে কেবলমাত্র বর্তমান সরকার বুঝাচ্ছি না)। তবে আশার ব্যাপার এই যে খুব ধীর গতিতে হলেও এই ক্ষেত্রে সরকার এগুচ্ছে।


      You cannot hangout with negative people and expect a positive life.

      জবাব দিন
  3. সাবিহা জিতু (১৯৯৩-১৯৯৯)
    অথচ উনাদের অনেকেরই এসব ব্যপারে তেমন কোন ধারণাই নেই। আর অন্যদিকে অবহেলিত হচ্ছে এসব বিষয়ে বিষেশজ্ঞ দেশের অনেক বরেণ্য ব্যক্তিত্বের মতামত

    উপলব্ধি করার মত একটা কথা বলেছে। দ্বিতীয় বারের মত পড়লাম লেখাটা।


    You cannot hangout with negative people and expect a positive life.

    জবাব দিন
  4. সৌমিত্র (৯৮-০৪)

    আমার মেডিকেল কলেজের সাইকিয়াট্রির প্রফেসর তাঁর এক লেকচারে বলেছিলেন যে সিদ্ধান্ত গ্রহণের বেলায় প্রচলিত গণতান্ত্রিক পদ্ধতির একটা গুরুত্বপূর্ণ সীমাবদ্ধতা হলো - মত প্রকাশের সময় অন্যে কি ভাববে তা মনে করে ঠিক ঠিক মনের ভাবটা অকপটে প্রকাশ করা থেকে বিরত থাকা বা একটু ঘষেমেজে মতটা প্রকাশ করতে গিয়ে আসল কথাটাই পাল্টে ফেলা। তখন আমার মনে হয়েছিল, একটা গণতান্ত্রিক ফোরামে যদি anonymously মত প্রকাশের সুযোগ থাকে তবে এই অসুবিধা এড়ানো সম্ভব। সংসদে এটা সম্ভব না কিন্তু ইন্টারনেটে এটা সম্ভব। অবশ্য উপযুক্ত মডারেশনের ব্যবস্থা থাকা চাই যাতে মন্তব্যকারী পরিচয় গোপন রেখে যাচ্ছেতাই আচরণ না করতে পারেন এবং একধরণের দায়বদ্ধতা থাকে। সেদিন কিন্তু আমি ক্লাসে আমার এই মত প্রকাশের সাহস পাইনি, সবাই কিভাবে নেবে সেই ভয়ে!

    জবাব দিন

মওন্তব্য করুন : আদনান (১৯৯৭-২০০৩)

জবাব দিতে না চাইলে এখানে ক্লিক করুন।

দয়া করে বাংলায় মন্তব্য করুন। ইংরেজীতে প্রদানকৃত মন্তব্য প্রকাশ অথবা প্রদর্শনের নিশ্চয়তা আপনাকে দেয়া হচ্ছেনা।