দিনকাল -১ : মাথাও আছে, ব্যাথাও আছে কিন্তু মহাবিশ্বে নেই একটা কুড়াল

বিভিন্ন সময় আমি আক্রান্ত হই তীব্র মাথাব্যাথার। ব্যাথাটা বিস্ফোরণের মত মাথার কোন এক নৈর্বত্তিক অংশে শুরু হয়ে তীব্রতা কমে বিস্তার বাড়ে, উভয়েই এক্সপোনেনশিয়ালী। মাথা ব্যাথার ফিজিক্যাল কারন ঘাটাঘাটি না করাটাই ভালো কারন, জান্তব বা দৈবচয়নে অনেক কারনই উঠে আসতে পারে। আমি অবশ্য মাথা ব্যাথার কারন কে বিশেষ গুরুত্ব দেই না। ব্যাথার প্রকোপে যখন সিগারেটের ধোয়া কাগজের মত বিস্বাদ লাগে তখন মাঝে মাঝেই দিশেহারা লাগে। জ্বলন্ত সিগারেট টা ফেলে দেই। মাথা ব্যাথা বাড়ে। আবার অন্যমনস্ক ভাবে সিগারেট ধরাই। পরিস্থিতিজনিত কারনে অভ্যাস ত্যাগ করি। কিন্তু বায়োলজির নিঁখুত পরিকল্পনায় অভ্যাসের হাতেই ধরা দেই।

এই বিরক্তিকর সার্কেলে ঘুরতে ঘুরতে যখন বমনার্ত মনে হয় নিজেকে, অথবা ঐশ্বরিক ঠিকাদারিতে ভীষন দুর্বল এবং অপাংক্তেয় লাগে নিজেকে তখন আঁকড়ে ধরার জন্যে একটুকরা খড়কুটা খুজতে থাকি ঈশ্বরের প্রিয় মহাবিশ্বে। আঁতিপাতি করে খুজে যখন বায়বীয়, নিউটনের তৃতীয় সুত্র অমান্যকারী , অবলম্বনে চারদিক ছেয়ে যায়, তখন হৃদয়ের অন্ত্:স্থল থেকে বেড়িয়ে আসে একরাশ অসভ্য গালি। গালি দিতে দিতে ক্লান্ত হয়ে যাই, কিন্তু ক্ষোভ আর ক্রোধের কিছুই উড়ে যায় না। বিষাক্ত মাকড়শার জালের মত ক্রমান্বয়ে মাথা ব্যাথা ছড়িয়ে যেতে থাকে সারা শরীরে।

ব্যাথা অনুভব করি অক্ষম হাতে, শক্তিহীন হাত ,কাপুরুষ হাত। বাসের ভীড়ের সুযোগে নিজের কন্যার চেয়েও ছোট বয়সী মেয়ের অপরিপক্ক স্তনে যখন মধ্যবয়সী মুখোশ পড়া শুয়োর হাত দেয়, এই কাপুরুষ হাত তখন চুপচাপ ঘুম যায়। হাতের মেরুদন্ডের খোজে আমি পৃথিবী চষে বেড়াই। সমুদ্রের গভীরতম বিন্দুতে ঝাপিয়ে পরি। কিন্তু এই অমেরুদন্ডী হাত স্বমেহন ছাড়া কিছুতেই জাগতে পারে না। চারপাশে এত নখরওয়ালা হাতের মাঝে সে বিষদাঁত সমর্পন করে নষ্টের বেদীতে।

ব্যাথায় চোখ বন্ধ আসে। লজ্জায় চোখে উঁকি দেয় অসংখ্য লাল রক্তছাপ। এই চোখটা রাত্রির অন্ধকারে খুব জ্বলে উঠে আর বড় বড় শক্তির ফোয়ারা ফোটায়। অথচ এই চোখ সময় আড়চোখে তরুনীর খাজভাজ দেখে। একবার দেখে আবার তাকায়। একবার নোংরা ঘেটে আবার নোংরার খোজে সতর্ক দৃষ্টিপাত করে।

রোগের প্রকোপে চোখে অন্ধকার দেখি আর প্রতিদিন একটু একটু করে মরে যাই। প্রতিদিন মাথা ব্যাথা বাড়ে আর আমি আরো একধাপ আগাই সামাজিক মুখোশের দিকে। আরো নিকটে চলে আসি সভ্যতার নোংরা তকমার কাছে। আমি নষ্টের স্তন ছুতে পারি। মাংশাসীর মত বানোয়াট সব সুগন্ধের ঘ্রান পাই। নষ্টের নিতম্বে লোভ, আর লালসার শিশ্নের মত বিধে যেতে পারি। আমি একটু একটু করে মরে যাই।

মৃতপ্রায় সাহস, আর সত্যের ইশারা তাই কুড়াল খুজে। প্রচন্ড এক অতিমানবীয় আঘাতে সে ব্যাথাযুক্ত মাথাটিকে উৎপাটন করতে চায়। কাটা গলা দিয়ে ফোয়ারার মত নষ্ট রক্তের উৎসারন দেখতে চায়।

একটা কুড়াল দরকার। আমি কামারের দোকান খুজছি। একটা সুতীক্ষ্ণ কুড়াল দরকার।

১,৭৭১ বার দেখা হয়েছে

৩০ টি মন্তব্য : “দিনকাল -১ : মাথাও আছে, ব্যাথাও আছে কিন্তু মহাবিশ্বে নেই একটা কুড়াল”

  1. ইফতেখার আলম খান (৭৯-৮৪)

    পরথমে ভাবলাম গল্প। নাহ পরে দেখি ইডা কোবতে!!!
    পইড়ে তো কিছুই বুইঝে উঠতি পারলাম না।
    :-/

    অঃটঃ কোবতে বুইঝে ফেললি পরে নাকি কবির অপমান হয়। রেজওয়ান বলিছে। কবির কথাতো আর ফেইলে দিয়া যায় না। কি বলেন প্রিঞ্চিপাল সার?

    জবাব দিন
  2. আমিন (১৯৯৬-২০০২)

    কবিতা গল্প যাই হোক লেখাটার বিষয়টা নিয়ে ভাবার আছে। কী বলেন কাইয়ুম ভাই??
    লেখাটার পিছনের লেখকের মাঝেকার বোধটা দারুণভাবে উঠে এসেছে।
    সাবাস কবি অথবা গল্পকার।

    জবাব দিন
  3. হোসেন (৯৯-০৫)

    এইটা কবিতা না গল্প সেইটা নিয়া দেখি গবেষণা চলতেছে।:)এইটা আসলে দিনলিপি লেখার একটা চেষ্টা। কবিতা হবে না অন্য কিছু হবে সেরকম ভেবে লিখি নাই:)


    ------------------------------------------------------------------
    কামলা খেটে যাই

    জবাব দিন
    • জুলহাস (৮৮-৯৪)

      তাই বলিয়া তুমি তোমার আমরণ :frontroll: :frontroll: :frontroll: :frontroll: :frontroll: থামাইলে কেন ছুড বাই???? :grr: :grr: :grr:

      তরে না কইলাম ব্যথা বানান-ডা ঠিক করতে!!!!!!!!!!! 😡 😡 😡

      তাড়াতাড়ি ঠিক করেন মিয়া ভাই...নাইলে কিন্তু (প্রিন্সিপ্যাল ভাইস্যার-এর পাশাপাশি...) দিহান ভাপু (ওরফে সাময়িক এডজুট্যান্ট ম্যাডাম)...(ওরফে ভাইস প্রিন্সিপ্যাল ভাপু) তোমারে পাঙ্গা লাগাইতে আইলো বইলা!!!!!! :duel: :duel: :duel:

      কি বলেন কাইয়ুম ভাই??? :grr: :grr: :grr:


      Proud to be an ex-cadet..... once a cadet, always a cadet

      জবাব দিন

মওন্তব্য করুন : ইফতেখার আলম খান (৭৯-৮৪)

জবাব দিতে না চাইলে এখানে ক্লিক করুন।

দয়া করে বাংলায় মন্তব্য করুন। ইংরেজীতে প্রদানকৃত মন্তব্য প্রকাশ অথবা প্রদর্শনের নিশ্চয়তা আপনাকে দেয়া হচ্ছেনা।