আউলা চিন্তা – মানবতার গান।

(আগের সর্তকবানী মনে আছে তো, মনে না থাকলে এই পোষ্ট পড়ার দরকার নাই। আর একটা কথা, আমার পোষ্টে সিরিয়াস আলোচনা একদম নিষেধ।)

“আচ্ছা তুই আমারে বল, চুরি না কইরা কোন শালা বড় লোক হইছে, আর কর্পোরেট হাউস কখনো নিজের স্বার্থ ছাড়া নেতাদের টাকা খাওয়াইছে, তুই এটা বিশ্বাস করিস? এই যে মোবাইল কোম্পানী গুলার কাছ থেকে এত এত ল্যাপটপ অনুদান হিসেবে নিছে সেনা-প্রধান, সরকার পরিবর্তনের পর যদি এরা বলে বসে চাঁদা হিসাবে নিছে এইগুলা, ক্যামন হবে তখন? ব্যাংক গুলাকে জোর করে গছায় দিছে এক-একটা স্পোর্টস-লীগের সংগে, এরা যদি পরে মামলা করে বসে তখন? চাদাবাজির মামলা?”

ঠিক তো, চুরি না করে কোন শালা বড় লোক হয়েছে। আর চোরের বাপ হচ্ছে গিয়া আমেরিকা আর বৃটিশ। একদল ভুমি দখল করেছে, রেড-ইন্ডিয়ান মেরে মেরে দখল করে নিয়েছে জায়গা, আফ্রিকা থেকে লোক ধরে এনে এনে বিত্তের পাহাড় বানিয়েছে, আরেক দল সারা দুনিয়ার ধন-সম্পদ চুরি করে নিয়ে গেছে নিজের দেশের জন্য। চট্টগ্রাম এর কন্যা দায় গ্রস্থ পিতা যদি অস্ট্রেলিয়ার সাদা চামড়ার সংগে মেয়ের বিয়ে দিতে চান, বড় বিপদেই পরে যাবেন প্রথা অনুযায়ী বংশ-পরিচয় জানতে চাইলে। জাপান তো পুরা চীনের লোকগুলারে আফিম খাওয়াই রাখছিল দিনের পর দিন, আর চীন, পুরা পৃথিবীর ধোলাইখাল হই গেছে ওইটা, ভারত, এরাও চুরি করে, তবে শিল্প-সম্মত চুরি। কেতাবী নাম দিছে এইটার “টেকনোলজী-ট্রান্সফার”, “ট্রান্সফারিং টেকনোলজী”, হালার পুত।

” তাই চুরি কইরা হইলোও একদিন আমাদের মাথা উচু করতেই হবে। উন্নত বিশ্বের একমাত্র শক্তিধর দেশে পরিনত হতেই হবে। সমস্ত দেশের নিউজ চ্যানেলের প্রধান নিউজ হবে আমাদের প্রধানমন্ত্রীর মুখ “ আজকের বিশেষ খবরঃ বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, পৃথিবীতে মন্দার সবচেয়ে বড় কারন হচ্ছে, পাশ্চাত্যরা ফাস্ট-ফুডের পাশাপাশি ঘাস-পাতা এবং আজেবাজে পচা জিনিস খাওয়া বাড়িয়ে দিয়েছে, তাই পুষ্টিকর খাবার তেমন একটা বিক্রী হচ্ছেনা। এইসব আজেবাজে খাবার খেয়ে তারা অধিকাংশই আবার পেটের পীড়ায় আক্রান্ত হচ্ছে, এবং তাদের মাত্রাতিরিক্ত বায়ু ত্যাগে পৃথিবীর আবহাওয়া আরও অধিক উষ্ণ হয়ে উঠছে, মেরুর বরফ গলে যাচ্ছে। পুরা বিশ্বের জন্য এটা একটা হুমকি। তাদের এই অভ্যাস দ্রুত বদলে ফেলা উচিৎ”।” আমরা দেখব মুখ বেজার করে আমেরিকার প্রেসিডেন্ট এর তীব্র প্রতিবাদ করছে। ”

“সম্রাট অশোক নিজেরে যত ভালো মানুষ বইলা কয়, হে কি আসলেই অত ভালো? ক্যামনে বুঝবি তুই, সে তো নিজের ইতিহাস নিজেই লিখছে, আকবর তো রীতিমত লোক পূষত তেল মারার জন্য। যোধা-বাঈ কি আসলে ওর বিয়া করা বঊ আছিল, নাকি ধইরা নিয়া আসছিল এই হিসাব করছিস তুই? এই রকম কতগুলা যোধা ছিল তুই জানিস আকবরের? রাজপূত গুলারে সাইজ করার জন্য আকবর এই কাম করছিল, বুঝছিস? রাজনীতি, রাজনীতি। আসলে যারা বিজয়ী, তারা নিজের ইতিহাস নিজেই লেখে, তাই ইতিহাস তাদের সম্মান কইরা কথা কয়। আর এক পাগল দেখ, মহাসমারোহে কবর বানাইছে একটা। এইটা আবার কত লোক ঘটা কইরা দেখতে যায়, প্রেমিক শাহজাহান। আচ্ছা তোর কি মনে হয় যত শ্রমিক মারা গেছে এইটা করতে গিয়া, তাদের বঊ বাচ্চা ছিল না, তারা কষ্ট পায় নাই। তারা কি শাহজাহান রে প্রেমিক কয়, নাকি খুনী কয়? ইতিহাসে তাদের কথা নাই কেন? মানুষ তাজ দেখতে যায় প্রেমের সমাধি মনে কইরা, আমি যদি কখনো যাই, তাহলে দেখতে যামু একজন বাদশাহ কত খানি উন্মাদের মত আচরন করতে পারে এইটা দেখার জন্য। এই ধর ষ্টালিন, হালার পুতে হিটলারের সংগে লাঞ্চ করে নাই, চুক্তি করে নাই, মাও তার বিরুদ্ধের লোক ধইরা ধইরা মারে নাই। সিরাজ শিকদারের গ্রুপ তো পরে পুরাই ডাকাতি শুরু করি দিছিল, আর হইলো গিয়া চারু মজুমদারের নকশাল, তুই জানিস কত্ত গুলা ভালো ছেলের জীবন নষ্ট করছে এই লোকটা।“ বিপ্লবী হইছে এইগুলা।

“আসলে তোকে জিততে হবে, জিতলে সব মাফ, আর যদি হারিস, তুই খাইলেও দোষ, ঘুমাইলেও দোষ। আমাগো দ্যাশে কয় “হাগতেও দোষ, মুততেও দোষ” । বুঝছিস তুই? ”

” হালার পুতের আমেরিকা, তুই আমারে ক, লাদেন রে মাথায় উঠাইছে কে? সাদ্দামরে লেলাইছে কে? পাকিস্থান রে মাথায় নিয়া নাচ্চছে কে? ক্যান এরা পাকিস্থানকে সাপোর্ট করে নাই, যুদ্ধের সময়। নাকি তারা জানতোনা, নিরীহ লোক মরতেছে আমাদের দেশে। জাতিসংগরে পর্যন্ত চাপে রাখছিল বদ গুলা। ”

” যতদিন এরা তোমার কথা মত চলছে এরা হইগো গিয়া মহান বিপ্লবী, আর যেই উল্টা দিকে দৌড় মারছে হয়া গেছে সন্ত্রাসী। ”

” ক্যান তুই জানিস না, মধ্যযুগে জলদস্যুদের পর্তুগাল আর স্পেনের রাজারাই পেট্রোনাইজ করতো? ফ্রান্সের রাজা তো বাস্তিল বানায় রাখছিল, পরে বাস্তিলের হাতেই ধরা খাইছিল। পলাশীতে যে ফরাসি বেটা যুদ্ধ করছে সে ইংরেজ মারার জন্য যুদ্ধ করছে, বাংলা-বিহারের জন্য করে নাই। ”

” নিজের কার্যসিদ্ধির জন্য হেন কাম নাই এই শালার করে নাই। এইগুলা এখন মানবতার জন্য াল ছেড়ে। ”

” আমাগো মাথা খাড়া কইরা দাড়াইতে হইবো, এইটা ফাইনাল, চুরি হোক, মারামারি হোক, যেমনেই হোক। এরপর আমাগো ইতিহাস আমরা নিজেরাই লিখুম। এরপর আমরা মানবতার জন্য বুক চাপড়াই চাপড়াই কান্দুম। ”

কিন্তুক আগের কাম আগে। এরপর অন্যকাম। এটাই ফাইনাল কথা।

৭০ টি মন্তব্য : “আউলা চিন্তা – মানবতার গান।”

  1. আমাগো মাথা খাড়া কইরা দাড়াইতে হইবো, এইটা ফাইনাল, চুরি হোক, মারামারি হোক, যেমনেই হোক। এরপর আমাগো ইতিহাস আমরা নিজেরাই লিখুম। এরপর আমরা মানবতার জন্য বুক চাপড়াই চাপড়াই কান্দুম। ”

    সহমত
    :thumbup: :thumbup: :thumbup:

    জবাব দিন
  2. আহসান আকাশ (৯৬-০২)

    অসাধারন ফয়ে্জ ভাই :hatsoff: :hatsoff: :hatsoff:

    যো জিতা ওহি সিকান্দার


    আমি বাংলায় মাতি উল্লাসে, করি বাংলায় হাহাকার
    আমি সব দেখে শুনে, ক্ষেপে গিয়ে করি বাংলায় চিৎকার ৷

    জবাব দিন
  3. নাজমুল (০২-০৮)

    দারুণ লাগলো ভাইয়া :boss:
    শুধু পড়েই শেষ পড়লে খাপ লাগে এই আর কি 🙁
    একটু আগে প্রথম আলোতে পড়লাম UNO এক মিটিং এ হেডমাষ্টার কে দাড় করাই রাখসে সে হাই তুলসে বইলা x-(
    আল্লাহ মাফ করুক 🙁

    জবাব দিন
  4. এহসান (৮৯-৯৫)

    ফজু মল্লিক একটা চীজই বটে। আল্লাহ উনারে আনেক গুলো জোহরা জুটায়ে দিক!!

    সম্রাট অশোক নিজেরে যত ভালো মানুষ বইলা কয়, হে কি আসলেই অত ভালো? ক্যামনে বুঝবি তুই, সে তো নিজের ইতিহাস নিজেই লিখছে, আকবর তো রীতিমত লোক পূষত তেল মারার জন্য। যোধা-বাঈ কি আসলে ওর বিয়া করা বঊ আছিল, নাকি ধইরা নিয়া আসছিল এই হিসাব করছিস তুই?

    হিন্দি সিনেমা দেখার পর গুগল করসেন বুঝছি।

    ক্লাসে গেলেই মন ভাল হই যায়।

    কলিকাল। নিজে একজন মেয়ের বাবা হয়েও..... ছিঃ.... ওহ ভুলে গিয়েছিলাম আপনার প্রিয় এথলেটের নাম কার্ল লুইস।
    (পোষ্টে সিরিয়াস আলোচনা একদম নিষেধ।) 😛

    জবাব দিন
    • ফয়েজ (৮৭-৯৩)

      না মুহাম্মদ, বেশ নাই আমরা।

      WTO এর নাম শুনেছো মনে হয়। আর এডিবি, ওয়ার্ল্ড ব্যাংক তো আছেই। সামনে কি যে বিপদ আছে বুঝতে পারছোনা। সব কিছু পেটেন্ট হয়ে যাচ্ছে। এমন কি ফসল পর্যন্ত। হাইব্রীড হচ্ছে এটার প্রথম ধাপ। তুমি যাই কর, কর্পোরেট হাউজকে টাকা দিতে হবে। শুধু মানবিক অনুভূতির পেটেন্ট বাকী আছে।

      তৃতীয় বিশ্বের দেশ হিসাবে বাংলাদেশ এখনো পেটেন্ট নীতিমালা এর বাইরে আছে, তবে মাথা উচূ না করতে পারলে মরে যেতে হবে সিকিমের মত।


      পালটে দেবার স্বপ্ন আমার এখনও গেল না

      জবাব দিন
    • ফয়েজ (৮৭-৯৩)

      😀

      একটা জুক্স মনে পড়ল। কইয়া ফেলি কি কও

      রাজা সন্তানের বাবা হবার পর গোপাল ভাড়ের কাছে জানতে চাইল গোপাল ভাড় কি রকম আনন্দিত এই সংবাদে। গোপাল ভাড় বল্ল, "বাহ্য ত্যাগের মত আনন্দ পাচ্ছে সে"।

      এত বড় অপমান সহ্য হল না রাজার। প্রমান চাইলো, নইলে গর্দান যাবে, রাজ হুকুম জারি হল। গোপাল অনুরোধ করল রাজাকে তার সংগে শিকারে যাবার জন্য। শিকারে যাবার দিন গোপনে গোপাল ভাড় জোলাপ খাইয়ে দিল রাজাকে, নৌকায় উঠার আগে আগে। গভীর বনে রাজার বাহ্য ত্যাগের প্রয়োজন পড়ল, কিন্তু গোপাল ভাড় ডাকাতের ভয় দেখিয়ে নৌকা আর ভিড়ায় না কূলে। রাজা বারবার তাগাদা দেন, ভাড় একথা ওকথা বলে এড়িয়ে যান। অবশেষে নিরুপায় রাজা বেগ সামলাতে না পেরে নৌকায় কর্ম সাবার করে তৃপ্তির হাসি হাসেন।

      গোপাল ভাড় বলে রাজার কি রকম লাগছে বাহ্য ত্যাগ করে। "আহা, আনন্দই আনন্দ"। গোপাল ভাড় বলে এই আনন্দ আমিও পেয়েছিলাম আপনার সন্তান হবার সংবাদে।

      গর্দান বেচে গেল ভাড়ের।


      পালটে দেবার স্বপ্ন আমার এখনও গেল না

      জবাব দিন
  5. মাহমুদ (১৯৯০-৯৬)

    বস,
    দারুন কইছেন :boss: :boss:

    তয় এইসব আউলা চিন্তাকে 'সিস্টেমের মধ্যে' আনতে না পারলে এসব থেকে মুক্তি নাই। সেই চেষ্টাই করছি। :grr: দোওয়া রাইখেন।

    অ.ট.-এইবার মনে হয় দেশে গিয়ে আপনার দেওয়া শর্তপূরণ স্বাপেক্ষেই আপনার সাথে সাক্ষাত ঘটবে।


    There is no royal road to science, and only those who do not dread the fatiguing climb of its steep paths have a chance of gaining its luminous summits.- Karl Marx

    জবাব দিন

মওন্তব্য করুন : ফয়েজ (৮৭-৯৩)

জবাব দিতে না চাইলে এখানে ক্লিক করুন।

দয়া করে বাংলায় মন্তব্য করুন। ইংরেজীতে প্রদানকৃত মন্তব্য প্রকাশ অথবা প্রদর্শনের নিশ্চয়তা আপনাকে দেয়া হচ্ছেনা।