খেরোখাতা – পুন্নিমার চান বড় হয়রে ধবল

শরতের আকাশ সবচেয়ে সুন্দর। কি দিনে, কি রাতে।

এর অবশ্য একটা ব্যাখ্যা আছে। বর্ষার কারনে আকাশ এবং পৃথিবীর মাঝের ধুলোর পর্দাটা মুছে যায়। আকাশ হয়ে উঠে সদ্যস্নাতা যুবতীর মত। তার নীল ফুটে উঠে, ফুটে উঠে তার জ্যোস্না। শরতের মেঘ গুলো সুন্দর। সাদা তুলোর মত উড়তে থাকে পুরো আকাশে। বাধা দেবার কেউ নেই যেন। একটা একটা মেঘ আবার একেক রকম। কোনটা ঘোড়ার মত, হাতির মত কেউ, কোনটা আমার পড়ার ডেস্ক, কবিতার খাতা। কোন কোনটাকে ইচ্ছেমত যা খুশি তাই মনে করা যায়, আবার কোনটাকে মেলানো যায়না কোন কিছুর সংগেই।

তবে সবচেয়ে সুন্দর মনে হয় অমাবশ্যার আকাশ। চাদের আলোয় যেগুলো ম্ল্যান থাকে, নিজেকে দেখাতে পারে না, তারা সব সেজেগুজে ফুটে উঠে কি চমৎকার ভাবে। একেক তারার আবার একেক নাম, ধ্রুব, সপ্তর্ষি, কালপুরুষ। আমি অবশ্য কোন তারার কি নাম তা জানি না। জানতে ইচ্ছে করেনা। তবে সবগুলো তারাকে ক্যানভাসের বিন্দু ধরে কালোর পটভুমিতে ইচ্ছেমত আকা যায় “যা ইচ্ছে তাই”। কল্পনার রেখা ধরে। খোলা মাঠে কিংবা ছাদে সম্পুর্ন নগ্ন হয়ে অমাবশ্যার আকাশ দেখার একটা আলাদা মজা আছে। আকাশটা তখন অনেক নীচে নেমে আসে, কথা কয়। গান গায়। সংগে শরতের লীলুয়া বাতাস।

প্রকৃতিকে বুঝতে চাইলে এর অংশ হতে হয়। কারন সে বড় লাজুক, সবার সামনে ঘোমটা খুলতে তার ভারি লজ্জা।

পুর্নিমার জোয়ারটা আবার সেইরকম। তখন পুরো সাগরটাই একটা ক্যানভাস, তার উপর ঢেউ তুলে রুপালি আলোর নাচন, আলোর তরংগের উপর আবার সাদা ফেনিল ছোয়া। আহা। গলা পর্যন্ত পানিতে ডুবে সাগরের রুপ। কেউ কি আছে জলকন্যা, নিয়ে যাবে আমাকে? ওই মাঝ সাগরে, তার পিঠে নিয়ে। কেউ কি আছে?

কেউ কি নেই?

নাহ, এবারের শরৎ পুর্নিমায় একটা কক্সবাজার ট্রিপ দিতেই হয়। মাঝ সাগরে ভেসে না গেলেই বাচি।

Get this widget | Track details | eSnips Social DNA
৪,০৪৯ বার দেখা হয়েছে

৫৮ টি মন্তব্য : “খেরোখাতা – পুন্নিমার চান বড় হয়রে ধবল”

    • ফয়েজ (৮৭-৯৩)
      বুঝলাম গাছে উঠছিলেন. হে হে হে

      কক্সবাজার এক নম্বর পয়েন্টের রাস্তা ধরে সাগরের দিকে এগুলো একদম বীচের উপর একটা হোটেল পাবে, ওটাই সাগরের সবচেয়ে কাছাকাছি হোটেল। ওদের সী-ফ্রন্ট রুমে থাকলে আর গাছে উঠতে হবে না।

      এইরকোম্লেক্তেপার্তাম

      পিরা ভাষা ইন্টারপ্রেট করে পড়তে পড়তে গ্রে-ম্যাটার হোয়াইট-ম্যাটার সব ইয়োলো হই যায়। আর এই ভাষা তো হিব্রু হিব্রু লাগে আমার। 🙁


      পালটে দেবার স্বপ্ন আমার এখনও গেল না

      জবাব দিন
  1. তানভীর (৯৪-০০)

    ভূগোলের শহীদ স্যারের ক্লাস যারা করে তারা প্রথম রাতেই আকাশের দিকে তারা চেনার চেষ্টা করে। স্যারের চিনিয়ে দেয়া তারাগুলো চিনতে আজও আমার ভুল হয়না।
    অমাবশ্যা রাতগুলো সবচেয়ে উপভোগ করা যেত কলেজে। জ্বলজ্বলে তারাগুলোকে খুব আপন মনে হত।

    ফয়েজ ভাই, খুব ভালো লাগল লেখাটা পড়ে। :clap: :clap: :clap:

    জবাব দিন
  2. তাইফুর (৯২-৯৮)
    খোলা মাঠে কিংবা ছাদে সম্পুর্ন নগ্ন হয়ে অমাবশ্যার আকাশ দেখার একটা আলাদা মজা আছে। আকাশটা তখন অনেক নীচে নেমে আসে, কথা কয়

    ক্যাডেট আকাশ, পিসিসি'র কথা কইলেন নাকি বস ??


    পথ ভাবে 'আমি দেব', রথ ভাবে 'আমি',
    মূর্তি ভাবে 'আমি দেব', হাসে অন্তর্যামী॥

    জবাব দিন
  3. রহমান (৯২-৯৮)

    খোলা মাঠে কিংবা ছাদে সম্পুর্ন নগ্ন হয়ে অমাবশ্যার আকাশ দেখার একটা আলাদা মজা আছে।

    😮 😮 😮 😛 😛 😛

    বস্‌, দেখবেন তো চোখ দিয়া, কাপড় খোলেন ক্যান :-/ ? লোকজন যদি টর্চ মারে আর পাগল ভাবে :-B

    জবাব দিন
  4. ওবায়দুল্লাহ (১৯৮৮-১৯৯৪)

    ফয়েজ বস,
    আপনার খেরোখাতা পড়ে খুব খুব ভাল লাগলো।

    আকাশ, মেঘ আর বৃষ্টি আমার তিনটি প্রিয় বিষয়।

    আপনি এখানে দুটি নিয়ে এসেছেন।
    আর দুটিও এসেছে দারুন ভাবে।
    অদ্ভুত এক মাদকতা আছে এই ভাবনাটুকুতে।
    :boss:

    আমি ভাবছি - এর পরে বৃষ্টির একটি লেখা শেয়ার করবো আপনাদের সাথে। 🙂
    শুভেচ্ছা নিন।


    সৈয়দ সাফী

    জবাব দিন
  5. আলম (৯৭--০৩)
    খোলা মাঠে কিংবা ছাদে সম্পুর্ন নগ্ন হয়ে অমাবশ্যার আকাশ দেখার একটা আলাদা মজা আছে। আকাশটা তখন অনেক নীচে নেমে আসে, কথা কয়। গান গায়। সংগে শরতের লীলুয়া বাতাস।

    ট্রাই মারসেন নাকি কখনো, ভাই?

    জবাব দিন
  6. সানাউল্লাহ (৭৪ - ৮০)

    রাত পৌণে বারটায় 'নীল চাঁদোয়া' শুনতে শুনতে তোমার লেখা পড়ে অমাবশ্যার রাত দেখতে স্বাদ হলো। এই বয়সে তো নগ্ন হওয়া যায় না। বাপের এই কাম দেখলে পোলা তাইলে নির্ঘাৎ পিসিসি x-( পাঠাইয়া দিবো!!


    "মানুষে বিশ্বাস হারানো পাপ"

    জবাব দিন
  7. শার্লী (১৯৯৯-২০০৫)

    ভাইজান আমার খুব তারা দেখতে ইচ্ছা করছে। শনিবার চট্টগ্রামের উদ্দেশ্যে রওয়ানা দিচ্ছি। বান্দরবন আর রাঙ্গামাটি যাবো। একটা আমাবস্যা মনে হয় পেতে পারি(নিশ্চিত জানি না)। ওখানে নগ্ন :shy: হয়ে আমাবস্যা দেখার ইচ্ছা আছে।

    জবাব দিন
  8. মান্নান (১৯৯৩-১৯৯৯)
    আমার মরন চান্নিপসর রাইতে যেন হয়

    বস আপনার লেখা পড়লে সব ছেড়েছুঁড়ে দেশে ফিরতে ইচ্ছা করে। মনটা ভালো করার জন্য আটলান্টিকের পাড়ে কিছুক্ষন ড্রাইভ করলাম। কিন্তু মনটা আরো বিষন্ন হয়ে গেল।

    এমন মর্মস্পর্শী লেখার ব্যান্চাই। :boss: :boss: :boss:

    রংপুর দেখি সমানে আগাচ্ছে। সেন্ঞ্চুরীর বেশি বাকি নাই।

    জবাব দিন
  9. সায়েদ (১৯৯২-১৯৯৮)

    সেই কবে চাঁদের আলোর পাশে ম্লান হয়ে যাওয়া তারার তুলনা পড়েছিলাম আইভান হো'র নায়িকার বর্ণনায়।
    আপনার অমাবশ্যার আকাশের কথায় সেটা ফিরে এলো।

    :boss: :boss: :clap: :clap:


    Life is Mad.

    জবাব দিন
  10. রায়হান আবীর (৯৯-০৫)
    তখন পুরো সাগরটাই একটা ক্যানভাস, তার উপর ঢেউ তুলে রুপালি আলোর নাচন, আলোর তরংগের উপর আবার সাদা ফেনিল ছোয়া। আহা। গলা পর্যন্ত পানিতে ডুবে সাগরের রুপ। কেউ কি আছে জলকন্যা, নিয়ে যাবে আমাকে?

    কবিতা আমি খুব একটা পড়িনা। তবে আপনার এই গদ্য কবিতার ভীষণ ভক্ত আমি।

    জবাব দিন
  11. বন্য (৯৯-০৫)

    গানটা চ্রম...অনেকদিন ধরেই খুজতেসিলাম... 😀

    লিখা দুর্ধর্ষ :clap:

    তবে সবগুলো তারাকে ক্যানভাসের বিন্দু ধরে কালোর পটভুমিতে ইচ্ছেমত আকা যায় “যা ইচ্ছে তাই”

    :clap: :clap:

    জবাব দিন

মওন্তব্য করুন : শার্লী (১৯৯৯-২০০৫)

জবাব দিতে না চাইলে এখানে ক্লিক করুন।

দয়া করে বাংলায় মন্তব্য করুন। ইংরেজীতে প্রদানকৃত মন্তব্য প্রকাশ অথবা প্রদর্শনের নিশ্চয়তা আপনাকে দেয়া হচ্ছেনা।