এন্ড লেট দেয়ার বি ডার্কনেস..

আজকাল কিছুই যেন ভাল লাগে না। অযত্নে বেড়ে ওঠা চুল-দাড়ি তাকে কুটকুট যন্ত্রনা দেয়। রিক্সার টিং টিং, গাড়ির আর্ত চিত্কার কিছুতেই যেন বোধগম্য হয় না। চারিদিকের কোলাহল-কলমের কালি সবই যেন কালোময় আর কালোর মায়ায় আবদ্ধ ও আছন্ন। অনির মনটা আজ বড় বিষন্ন, বিমর্ষ।

ছোট ছোট সপ্নগুলি যখন ভাঙ্গা কাচের চুড়ির মতন ঝিন-ঝিন শব্দে ভেঙ্গে পড়ে, তখন অনির মনে হয়, জীবনটা এখানেই সমাপ্ত করে দেইনা কেন? কয়েকবার চেষ্টাও করেছিল সে, পারেনি, জানে পারবেনা। তার মনে পড়ে সেই নদীর জলে হুটোপুটি আর আনদ বিমল আনন্দ। এসবের আনন্দ পাবার যন্যই কী সে বেঁচে আছে? একটা সময় ছিল, যখন সে চেয়েছিল কিংবদন্তী হতে, কিন্তু হায়, কিংবদন্তী আজ তাকে প্রসব যন্ত্রনার মতই পীড়া দেয়। নিকষ কালো অন্ধকারের গহিনে সে তলিয়ে যায়, তলিয়ে পড়ে অতল তলে। বিস্মৃতির পরত তাকে ঢেকে দিয়ে যায়। অন্ধকারে যেন আলোড়ন ওঠে তাকে দেখে। অন্ধকারের প্রতিটি কণা তাকে স্বাগতম জানায়, টেনে ধরে চেপে ধরে বুকে।পরম মমতায়,আদরের সান্নিধ্যে। যেন বলতে চায়- “এতদিন কোথায় ছিলে, তোমার প্রতিক্ষায় প্রহর গুনে আমরা আজ ক্লান্ত। এত দেরী কেন তোমার?”

এই দুনিয়ায় সব কিছুর অভাব সহ্য হয়। কিন্তু আদরের অভাব কি সহ্য করা যায়? কেন সেই হলুদ শাড়িটা তার সাথে ছল করল, কী দরকার ছিল তার কথা দেবার, আবার কথা ফিরিয়ে নেবার? হলুদ শাড়িটা তাকে দিয়েছিল কিছু আশ্বাস আর বিন্দু বিন্দু ভালবাসা। সিগারেটের ধোয়ায় যখন সে ডুবে যায়, ক্লান্ত দৃষ্টি দিয়ে চেয়ে থাকে কালো কাকের দিকে, কাকটা যেন তাকে বলে, “তুমি মরে গেছ, আর মৃত এক শরীরের বোঝা বয়ে বেড়াচ্ছ। তোমার শরীরে আমরা মড়ার গন্ধ পাই। দেবে কী তোমার শরীরের তাজা মাংস খেতে?” অনি যেন কাকের চোখের ভাষা পড়তে জানে।

বৃষ্টির প্রতিটি টাপুর টুপুর আজ তাকে সাহস দেয় আর দেয় এক আজানা প্রবল ভালবাসা। যেন বলে যায়- ঝরে পড়ি
বলেই তো আমরা মহান। রাতের রাস্তায় নিয়ন উপচে পড়ানো মাথা ঝিম ধরানো হলুদ বাতি বলে- এগিয়ে যাও, আমরা সাথি হব। নিয়ন বাতি তাকে এনে দেয় প্রশান্তির ছায়া।ছায়ার মায়ায় সে হয় আবদ্ধ আর আছুন্ন। সাদা পায়রার রঙ্গিন বাসা তাকে স্বপ্ন বুনতে শেখায়। এজন্যই অনি বেঁচে আছে প্রতিটি মূহর্ত আর সময়। সময়ের কলাহলের ভীড়ে আজো সে বেঁচে আছে, সাথে নিয়ে তার নিয়তি। বাঁকা চাঁদ তাকে আলো দিয়ে নিয়ে যাবে অজানা পথে। অজানা অচেনা আর প্রান্তরহীন প্রস্তরময় পথ। অন্ধকার তাকে দেবে আলো। আলো আলো আর সাদা আলো।

সেই উত্তেজনায় অনি উঠে দাঁড়ায়, দেখে দিগন্তের প্রভাত তাকে হাতছানি দিয়ে ডাকছে। সে স্বাগতম জানায়, অনি নিজেই চিনে নিবে তার নিজের পথ………………………

৯৪৩ বার দেখা হয়েছে

১৭ টি মন্তব্য : “এন্ড লেট দেয়ার বি ডার্কনেস..”

  1. আয়েশা ( মগকক) আয়েশা

    স্বাগতম ব্লগে! :thumbup:
    ইচ্ছে করেই কি চুরির ঝিন ঝিন শব্দ আর নদীর জলের হুটোপুটির কথা লিখেছ? রিন-ঝিন শব্দটা বেশি মানাবে কি? লিখার হাত আছে.....লিখতে লিখতে আরো অনেক ভালো হবে!

    জবাব দিন
  2. কিবরিয়া (২০০৩-২০০৯)

    প্রথম লেখা নাকি??!! স্বাগতম স্বাগতম। :hug: :hug:
    তো মাহমুদ আর দেরী কেন?? ;)) ;))
    লেখা ভাল ছিল।


    যেমন রক্তের মধ্যে জন্ম নেয় সোনালি অসুখ-তারপর ফুটে ওঠে ত্বকে মাংসে বীভৎস ক্ষরতা।
    জাতির শরীরে আজ তেম্নি দ্যাখো দুরারোগ্য ব্যাধি - ধর্মান্ধ পিশাচ আর পরকাল ব্যবসায়ি রূপে
    - রুদ্র মুহম্মদ শহীদুল্লাহ

    জবাব দিন

মওন্তব্য করুন : Foiz mahmud arif (2003-2009)

জবাব দিতে না চাইলে এখানে ক্লিক করুন।

দয়া করে বাংলায় মন্তব্য করুন। ইংরেজীতে প্রদানকৃত মন্তব্য প্রকাশ অথবা প্রদর্শনের নিশ্চয়তা আপনাকে দেয়া হচ্ছেনা।