পাঁচ মিনিট সেনাবাহিনীর গল্প

একগাদা বন্ধুবান্ধব, সিনিয়র ভাই আর জুনিয়র ছেলেপেলে এখন আর্মি অফিসার। জুনিয়র গুলো সেকেন্ড লেফটেন্যান্ট, ফ্রেন্ডরা লেফটেন্যান্ট, বড়ভাইয়েরা প্রায় সবাই ক্যাপ্টেন। তাদের সাথে বিগত পাঁচ বছরের চলাফেরা, কথাবার্তা, অবজারভেশন এবং অ্যানালাইসিস করে কিছু সিদ্ধান্তে পৌঁছেছি। ভুল হতে পারে, তবে এগুলো একান্তই আমার ব্যক্তিগত মতামত~

এক# শতকরা ৯০% জুনিয়র আর্মি অফিসারের ল্যাপটপের হার্ডডিস্কে সবচেয়ে বড় ফোল্ডারটি তামিল ম্যুভির। হাতে দুই ঘণ্টার অবসর পেলে তারা হয় নতুন তামিল ম্যুভি দেখে, নয়তো পুরনো ম্যুভি আবারও খতম দেয়। তবে আধা ঘণ্টার কম অবসর পেলে তারা ম্যুভি দেখে না, ম্যুভির পছন্দের গান গুলো কেটে কেটে দেখে।

দুই# অফিসের সিনিয়র অফিসার যদি লেফটেন্যান্ট কিংবা ক্যাপ্টেন র‍্যাংকের হন, তবে তার সাথে নির্দিষ্ট কয়েকটি বিষয় নিয়েই কথা হয়। সকালে~ স্যার চলেন বিকালে বাইরে গিয়া স্যুপ খাইয়া আসি……দুপুরে~ (স্যারের দরজায় ঠকঠক, হাতে পেনড্রাইভ) স্যার নতুন কোন তামিল ম্যুভি আছে?……  বিকালে~ স্যার বাইক কয়টা ম্যানেজ হইসে? আমি কিন্তু আপনার বাইকের পিছে যামু…… সন্ধ্যায়~ (স্যুপ খেতে খেতে) স্যার মিশনে যাচ্ছেন কবে?…… রাতে (ফেরার পথে) স্যার পাশের টেবিলের মাইয়াটা সুন্দর ছিল, দেখসেন?

তিন# জুনিয়র অফিসারদের ভেতর ইজ্জত-সম্মানের প্রধান সূচক হল ‘বাইক’। যে অফিসার ফেজার চালায়, সে ব্যাপক! যে পালসার চালায়, সে বস! যে ডিসকভার চালায়, সে গান্ধা।

চার# কোন অফিসারই সস্তায় কিংবা মোটামুটি সস্তায় জামাকাপড় কেনে না। এবং আশেপাশের অফিসারদের কাছে সেটার দাম বলার সময় কখনই অরিজিনাল দাম বলে না। একশো-দুশো বাড়িয়ে বলে, নয়তো অর্ধেক কমিয়ে বলে।

পাঁচ# অনলাইনে নন-আর্মি বন্ধুদের সাথে চ্যাট করতে গিয়ে তাদের কাছ থেকে ঘুরেফিরে একই টেক্সট পাওয়া যায়~ দোস্ত একটা গার্লফ্রেন্ড ম্যানেজ কৈরা দে।

ছয়# যে অফিসার তার ক্যারিয়ারে যত বেশি সিরিয়াস আর অফিসে যত বেশি রাশভারি, নববিবাহিতা বউয়ের সাথে ফেইসবুকে তার তত বেশি লুতুপুতু প্রেম।

সাত# শতকরা ৫০% জুনিয়র অফিসার তাদের বেতনের ৫০% টাকা খরচ করে মোবাইল ফোনে কথা বলে।

আট# শতকরা ৫০% জুনিয়র অফিসারের ফেইসবুক প্রোফাইল পিকচার হিসেবে কখনো না কখনো অবশ্যই জলপাই রঙের বিখ্যাত ইউনিফর্মের সাথে চোখে কালো সানগ্লাস ছিল।

নয়# শতকরা ১০০% জুনিয়র অফিসার নিয়মিত দামি ফেইসওয়াশ দিয়ে মুখ ধোয়।

দশ# চাকরিজীবি শ্রেণির ভেতরে অফিস টাইমের বাইরে ফেইসবুকে সবচেয়ে বেশি সময় কাটায় জুনিয়র আর্মি অফিসাররা।

বন্ধু তালিকায় অসংখ্য আর্মি অফিসার সহপাঠি-সিনিয়র-জুনিয়র আছে, যাদের কেউ আপন ভাইয়ের মত, কেউ আদরের ছোট ভাইয়ের মত, কেউ বড়ভাইয়ের মত। এই লেখায় তাদের কেউ কেউ যে খানিকটা মাইন্ড করবে, আমার অবজারভেশন সেটাও বলে।

৪,৬০০ বার দেখা হয়েছে

২৯ টি মন্তব্য : “পাঁচ মিনিট সেনাবাহিনীর গল্প”

  1. আহসান আকাশ (৯৬-০২)

    ভাল বিশ্লেষণ :thumbup:

    লেখার মাঝে ইমো বিরক্তিকর, এই লেখায় পরিমানটা একটু বেশিই হয়ে গেছে।


    আমি বাংলায় মাতি উল্লাসে, করি বাংলায় হাহাকার
    আমি সব দেখে শুনে, ক্ষেপে গিয়ে করি বাংলায় চিৎকার ৷

    জবাব দিন
  2. মোঃ সাদাত কামাল [০১-০৭]
    .. নয়# শতকরা ১০০% জুনিয়র অফিসার নিয়মিত দামি ফেইসওয়াশ দিয়ে মুখ ধোয়।

    =))

    আট# শতকরা ৫০% জুনিয়র অফিসারের ফেইসবুক প্রোফাইল পিকচার হিসেবে কখনো না কখনো অবশ্যই জলপাই রঙের বিখ্যাত ইউনিফর্মের সাথে চোখে কালো সানগ্লাস ছিল।

    B-) ...


    ভালো থাকা অনেক সহজ।

    জবাব দিন
  3. নূপুর কান্তি দাশ (৮৪-৯০)

    অল্পবয়সী টগবগে ছেলেপেলেদের জীবন - আহ!
    তবে এই মোটর বাইকের কথা শুনলেই আমার ভয় হয় -- কিছুদিন পরপরই শুনি কেউ না কেউ এক্সিডেন্ট করেছে। বেপরোয়া চালানো আর বিপজ্জনক রাস্তাঘাট দুটোই দায়ী সমানভাবে নিশ্চয়ই! (সম্পাদিত)

    জবাব দিন
  4. সামিউল(২০০৪-১০)

    তামিল নায়িকা গুলান যে সুন্দর হয়!!!!!!!

    ছবি না দেখে উপায় আছে???

    তাদের সৌন্দর্য তামিল ভাষা না বোঝার দুঃখ ভুলিয়ে দেয়।

    স্যাম্পল দেখুন

    তামান্না


    ... কে হায় হৃদয় খুঁড়ে বেদনা জাগাতে ভালবাসে!

    জবাব দিন

মওন্তব্য করুন : আহসান আকাশ (৯৬-০২)

জবাব দিতে না চাইলে এখানে ক্লিক করুন।

দয়া করে বাংলায় মন্তব্য করুন। ইংরেজীতে প্রদানকৃত মন্তব্য প্রকাশ অথবা প্রদর্শনের নিশ্চয়তা আপনাকে দেয়া হচ্ছেনা।