১) মোজা না ধুয়ে এক সপ্তাহ পরলে বাজে গন্ধ ছড়ায়। না ধুয়ে এক মাস পরলে গন্ধ থাকে না। প্রায় প্লাস্টিক হয়ে যাওয়া সেই মোজা ব্যবহার করে খুব আরাম। এতে পোলাও এর হালকা সুবাস থাকে।
২) সাদা কাপড় থেকে সব ধরণের ময়লা দাগ দূর করা সম্ভব, শুধু সবুজ ঘাসের ঘষটে যাওয়া দাগ তুলে ফেলা সম্ভব না।
৩) ব্যাচেলর জীবনে সবচেয়ে অনাদরের জিনিসের নাম হ্যাঙ্গার। তবে এক মাস ধরে জমানো ময়লা কাপড় ধোয়ার আগে বালতিতে ডিটারজেন্ট গোলানোর কাজে এর ব্যবহার বহুল প্রচলিত।
৪) ঘরের বাইরে যাই হোক না কেন, নিঃসন্দেহে ঘরের ভেতরে সবচেয়ে আরামদায়ক পোশাক হল তোয়ালে। বিশেষ করে গোসল শেষে ভেজা শরীরে ফ্যানের বাতাসের নিচে টারজান সেজে দাঁড়িয়ে থাকার সুখ বর্ণনার অতীত। দুর্ভাগা নারীজাতি।
৫) পরীক্ষার আগের রাত হল মানব জীবনের সবচেয়ে উর্বর সময়। তখন যা-ই করা হোক না কেন, তা বাড়তেই থাকে। উদাহরণ- টেনশন, ক্ষুধা, হাসাহাসি, আড্ডা, (কদাচিৎ) সিরিয়াস পড়ালেখা ইত্যাদি।
৬) যে ছেলেটা সকালের পিটিতে দুই কিলোমিটার দৌড়াতে গিয়ে বমি করে দেয়, সেই একই ছেলে কিন্তু বিকালে ফুটবল মাঠে তুফান তুলতে পারে। মারদাঙ্গা ডিফেন্ডার এবং স্পাইডারম্যান লাইক গোলকিপারকে নাকানিচুবানি খাওয়াতে পারে মিনিটে মিনিটে। কিংবা নিজ দলের ডিফেন্সে গ্রেট ওয়াল হয়ে দাঁড়িয়ে থাকতে পারে, প্রতিপক্ষ দলের তুখোড় স্ট্রাইকারকে মেনিবিড়াল বানিয়ে রাখতে পারে পুরোটা ম্যাচ জুড়ে। মর্নিং শোজ দ্য দে, বাট নট অলওয়েজ। তাই সেই বন্ধু কিংবা জুনিয়র ছেলেটাকে নিয়ে সতর্কতার সাথে হাসাহাসি করা উচিত।
৭) অ্যালার্ম ঘড়ির মূল কাজ পিপ পিপ আওয়াজ করে ঘুম ভাঙ্গানো নয়, রাত পৌনে এগারোটায় বাধ্যতামূলক লাইট নেভানোর পর লুকিয়ে গল্পের বই পড়ার ব্যবস্থা করে দেয়া। রাতের পর রাত ধরে মাত্র কয়েক ওয়াটের টিমটিমে হলুদ আলোয় পড়ে ফেলা যায় সেই সময়, প্রথম আলো, কড়ি দিয়ে কিনলাম, লীলাবতী, শঙ্কু সমগ্র কিংবা চাঁদের পাহাড়। ক্লাস সেভেন টু টুয়েলভ। ননস্টপ সার্ভিস। তাই প্রত্যেক ঘড়ির সাথে ন্যুনতম পনের ওয়াটের লাইট লাগানোর জন্য দেশি কোম্পানিগুলোর কাছে তীব্র দাবি জানাই।
৮) যে পড়াটা কঠিন, ভালো বোঝা যাচ্ছেনা, সেটা আয়ত্তে আনতে সাবজেক্ট টিচারের কাছে যাওয়ার প্রয়োজন নেই। পাশের, পিছের, দুই সিট পরের, কিংবা দরজার পাশে বসে থাকা তুলনামূলক খারাপ ছাত্রটিই সবচেয়ে সহজভাবে পড়া বুঝিয়ে দিতে পারে। এমনকি সারাদেশের সব ছাত্রদের মধ্যেই সে হয়তো এই বিষয়ে সবচেয়ে এক্সপার্ট। এভরি ব্যাচ বিলংস মেনি জুয়েলস। কেউ প্রকাশিত হয়, কেউ হয় না।
৯) দুটো জিনিস সবসময় উপেক্ষা করতে হয়। এনসিও স্টাফের কাছ থেকে পাওয়া প্রশংসা এবং প্রিটেস্ট পরীক্ষার রেজাল্ট।
১০) দুটো জিনিস কখনোই উপেক্ষা করতে হয় না। পরীক্ষার হলে কবে কোন স্যারের ডিউটি এবং টেস্ট পরীক্ষার রেজাল্ট।
১১) পরীক্ষার হলে বাঁ পাশের সিটে বসা ভালো ছাত্রের খাতার দিকে নিশ্চিন্তে উঁকিঝুঁকি মারার জন্য পাওয়ারলেস চশমার ব্যবহার অত্যন্ত নিরাপদ। পাশাপাশি চেহারায় একটা কিঞ্চিৎ সুদর্শন ভাবও চলে আসতে পারে। ব্যাপারটা ভালোই।
১২) কয়েকদিন নির্ঝঞ্ঝাট আরাম আয়েশ করতে চাইলে হাসপাতালে ভর্তি হওয়ার বিকল্প নেই। কিন্তু এমনি এমনি তো আর অসুস্থ হওয়া যায় না। জলপাই রঙের উর্দি পরা ডাক্তারটাও তো আর মুড়ি খেয়ে এমবিবিএস পাশ করেনি। তবে এটাও মনে রাখতে হবে যে ফাঁকিবাজি ক্যাডেটদের রক্তে মিশে আছে। শিরায় শিরায়। ধমনীতে ধমনীতে। হাঁড়ে হাঁড়ে। লিভার, কিডনি, অগ্ন্যাশয়, কলিজা, ফুসফুস, নাড়ি ভুঁড়ি এমনকি ছিলা মোরগ সদৃশ চুলেরও আগা গোঁড়ায়। রাতে ঘুমানোর আগে সাবান দিয়ে মুখ ধুতে হয়। সাবানের ফেনা আলতো করে মাখিয়ে দিতে হয় চোখে। অটোমেটিক চোখে জ্বালাপোঁড়া শুরু হয় সাথে সাথেই। সেই সাথে শুরু হয় হাতের উল্টো পিঠ দিয়ে চোখ চুলকানো। এবার কোনোমতে ঘুমিয়ে পড়তে হয়। রাত পার হয়ে যায়। সকালে পিটির আগে ঘুম থেকে উঠে দেখা যায় দুই চোখ আলুর মত ফুলে আছে। পাকা টমেটোর মতন যার রঙ। স্টাফ নিজেই তড়িঘড়ি করে হাসপাতালে পাঠায়। ভর্তি সুনিশ্চিত।
১৩) মাইক্রোফোন হাতে নিয়ে কিছু বলতে চাইলে অবশ্যই সাউন্ড চেক করে নেয়া উচিত। সেজন্য মাইক্রোফোনের উপর আঙুল দিয়ে দুটো হালকা টোকা দিলেই ভালো হয়। চুমু দেয়ার ভঙ্গি করে ফুঁ দিলে যে আওয়াজটা আসে, সেটা এক কথায় বীভৎস। কুৎসিত এবং কুরুচিকর।
১৪) প্রচণ্ড ঘেমে গেলে একগ্লাস পানিতে এক চামচ লবণ গুলে খেয়ে নিন। শরীরে লবনের অভাব পূরণ হল। এবার এক গ্লাস নরমাল পানি খান। চিনির শরবতের মত মনে হবে।
১৫) চামচ দিয়ে খিচুড়ি-ইলিশ খাওয়া এবং হাত দিয়ে স্যুপ খাওয়া পরস্পর সমান এবং সমান্তরাল।
চমৎকার পোষ্ট। কিন্তু প্রথমেই মোজার গন্ধ ছড়িয়েছ... উহু... নাক ধরে কমেন্ট করতে হচ্ছে 😛
কলেজের টুকরো টুকরো স্মৃতিগুলো চোখে ভাসছে...
আমাদের ব্যাচের একজনের মোজা ঝুলছিল তারে। জে পি এসে জিজ্ঞাসা করলো,
ঃএই কালো মোজা গুলো কার, গন্ধ আসছে।
ঃ ভাইয়া, অইটা সাদা মোজা।
মানুষ* হতে চাই। *শর্ত প্রযোজ্য
যখন লিখেছি তখন আমার সর্দি ছিল, তাই গন্ধ পাই নাই :)) :))
যে জীবন ফড়িঙের দোয়েলের- মানুষের সাথে তার হয় নাকো দেখা
:))
এখনো বিষের পেয়ালা ঠোঁটের সামনে তুলে ধরা হয় নি, তুমি কথা বলো। (১২০) - হুমায়ুন আজাদ
চমৎকার লেখা ! :))
আমি চোখ মেললুম আকাশে
জ্বলে উঠলো আলো পূবে পশ্চিমে
ধন্যবাদ, আপা 😀
যে জীবন ফড়িঙের দোয়েলের- মানুষের সাথে তার হয় নাকো দেখা
মজা পেলাম। এই ধরনের লেখাগুলো অনেক কথা মনে করিয়ে দেয়। প্রিয়তে যোগ করে রাখলাম যেন মাঝে মাঝে ফিরে এসে আবার পড়া যায়।
চ্যারিটি বিগিনস এট হোম
অনেক ধন্যবাদ, আহমদ ভাই 🙂
যে জীবন ফড়িঙের দোয়েলের- মানুষের সাথে তার হয় নাকো দেখা
একটি জিনিস বাদ পড়ে গেছে,
আফটার নুন প্রেপ বলে যে জিনিসটি আছে, সেটি আসলে ঘুমানোর জন্য- তবে বসে বসে।
আবার পড়লাম। ফেসবুকে তো দেখছি আগেই। দারুন হইছে। :clap:
চাঁদ ও আকাশের মতো আমরাও মিশে গিয়েছিলাম সবুজ গহীন অরণ্যে।
হামীম ভাই, আপনার মুরাদ টাকলা পোস্ট দুইটা এপিক হইছে! ডেফিনিটলি স্পেশাল পোস্টস :boss: :boss:
যে জীবন ফড়িঙের দোয়েলের- মানুষের সাথে তার হয় নাকো দেখা
😀 😀 😀 😀 😀
থ্যাংক ইউ, রায়েদ ভাই 🙂
যে জীবন ফড়িঙের দোয়েলের- মানুষের সাথে তার হয় নাকো দেখা
:clap: :clap: :clap:
এখনো বিষের পেয়ালা ঠোঁটের সামনে তুলে ধরা হয় নি, তুমি কথা বলো। (১২০) - হুমায়ুন আজাদ
😀 😀
যে জীবন ফড়িঙের দোয়েলের- মানুষের সাথে তার হয় নাকো দেখা
পরার আরামের পাশাপাশি কিছু মোজা রেখে দেয়া হতো (প্রিন্সিপাল ইন্সপেকশানেও ধোয়া হতো না) ফ্যাকাল্টি রিপেল্যান্ট হিসাবে। চার জোড়া - ব্যাড নিউজ ফর এনি ফ্যাকাল্টি।
কথিত মতে ৩৬ মকক (৯৮-০৪) এর কতিপয় দুষ্টু ক্যাডেট গোসল করতে যেতে ও আসতে তোয়ালে পরিধান করতো না। সেটা কাঁধে ঝোলানো থাকতো।
😛 😛
\\\তুমি আসবে বলে, হে স্বাধীনতা
অবুঝ শিশু হামাগুড়ি দিল পিতামাতার লাশের ওপর।\\\
অনলি জাইঙ্গা পইরা রুমে আসতেন আপনে?? ছেঃ ছেঃ : :bash: :bash:
যে জীবন ফড়িঙের দোয়েলের- মানুষের সাথে তার হয় নাকো দেখা
কমেন্ট রিপোস্ট: 1 নাম্বার পয়েন্ট ১০০% সত্যি ! একবার প্যারেন্টস ডে এর পর রুমে হাউজ মাস্টার এসে বলে, কি রে খাবার এনেছিস নাকি? আমি পোলাও এর গন্ধ পাচ্ছি ! কাচুমাচু মুখ করে দাড়িয়ে ছিলাম। অনেক চেষ্টা করেও বলতে পারিনি যে স্যার ঐটা আসলে মোজা পচা গন্ধ :goragori:
বন্ধু নাফিস, তোমার ঘটনাকে প্রমাণ হিসেবে দাঁড়া করাইয়া আমি বহু সিভিলিয়ান সহপাঠীকে আমার তত্ত্ব বিশ্বাস করাইতে সক্ষম হইয়াছি 😀 😀
যে জীবন ফড়িঙের দোয়েলের- মানুষের সাথে তার হয় নাকো দেখা
সেই লিখচেন ভাই, বেফুক বিনুদন পাইলাম
ভাই পড়ে খুব মজা পাইলাম। ধন্যবাদ।