ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ঘৃণাস্তম্ভ বলে একটা স্তম্ভ আছে। ৭১ এর রাজাকারদের বিরুদ্ধে ধিক্কার জানানোর উদ্দেশ্যে এখানকার শিক্ষার্থীরা এই স্তম্ভ নির্মাণ করেছে। ডাকসু ক্যাফেটেরিয়ার সামনে অবস্থিত এই স্তম্ভের পাশ দিয়ে যাওয়ার সময় আপনাকে শুধু একটু কষ্ট করে এই স্তম্ভটির কাছে গিয়ে থুথু নিক্ষেপ করতে হবে। ব্যস হয়ে গেল; যুদ্ধাপরাধীদের আপনি জানিয়ে দিলেন আপনার মনের অনুভূতিটি। যারা যুদ্ধাপরাধীদের বিরুদ্ধে রাজপথে নামতে পারেন না কিংবা কোন ফোরামে প্রকাশ করতে পারেন না নিজের মতামত তাদের জন্য এটি একটি এই অনন্য সুযোগ । ডাকসু ও তার আশপাশে নিয়মিত আড্ডা মারার সুবাদে এই স্তম্ভটিকে ঘিরে বিভিন্ন ধরনের ঘটনা নিয়মিতই আমদের চোখে পড়ে। শুধু থুথু দেয়ার কথা লেখা থাকলেও ওখানে মানুষজন ঘৃণা জানানোর সম্ভাব্য সব উপায়েই স্বাধীনতা বিরোধী আল বদর, রাজাকারদের প্রতি ঘৃণা জানায়। কেউ কেউ থুথুর সাথে একটা দুইটা লাথি দিয়া যায়, কেউ কেউ নাক পরিস্কার করে টিস্যুটা এখানে নিক্ষেপ করে, সুবিধা জনক সময়ে (রাতের বেলা)এখানে এসে কেউ আবার প্রকৃতির ছোট ডাকে সাড়া দেয় বলে জনশ্রুতি আছে। মানুষের প্রতিক্রিয়া দেখে কখনো কখনো আমরা বিস্মিত হই, কখনো আতকে উঠি আবার কখনো বা ভীষণ রকমে আশাবাদী হই স্বাধীনতা বিরোধীদের বিচারের ব্যাপারে। যাই হোক এইরকম একটি ঘটনা সবার সাথে শেয়ার করতে চাই-
এক বিকালে যথারীতি আমরা আড্ডা দিচ্ছিলাম ডাকসু ক্যাফেটেরিয়ার সামনে। হঠাৎ দেখলাম আমাদের বেশ কাছাকাছি বোরখাপরা একমহিলা আর আমাদের বয়সী এক মেয়েএসে বসল। তাদের টুকটাক কথাবার্তা, যতটুকু আমরা শুনতে পাচ্ছিলাম তাতে এইটুকু ধারণা হলো যে বিশ্ববিদ্যালয়ের হলে থাকা এই মেয়েকে দেখতে এসেছেন মা আর মেয়ে তার মাকে নিয়ে বেরিয়েছেন ক্যাম্পাস দেখাতে। খুব উৎসাহ নিয়ে হাত নেড়ে মেয়ে মাকে দেখাচ্ছিলো –ঐটা হল কলাভবন, চার তলায় আমাদের ক্লাশ হয়, আর বা পাশে ঐযে সাদা বিল্ডিংটা দেখতাছো ঐটা লাইব্রেরী রাত সাড়ে নয়টা পর্যন্ত খোলা থাকে, আমরা পড়ি, আর এইযে হলুদ বিল্ডিংটা এইটা হইলো…
আমাদের গুলতানি কখন জানি আবার শুরু হয়ে গিয়েছিল, খেয়াল নেই । সম্বিত ফিরে পেলাম চোখের সামনে অস্বাভাবিক দ্রুত একটা নড়াচড়া টের পেয়ে । দেখলাম বোরখা পড়া মহিলাটি দ্রুতবেগে এগিয়ে যাচ্ছে ঘৃণা স্তম্ভ এর দিকে আর হতভম্ভ মেয়েটি তাকিয়ে আছে সেদিকে। মানে ঠিক কি করা উচিত সে বুঝতে পারছে না, মাকে থামাবে নাকি নিজেও সঙ্গে যাবে । আমরাও ঠিক আন্দাজ করতে পারছিলাম না যে কি হতে যাচ্ছে। কয়েক সেকেন্ডের মধ্যেই আমাদের সবারই প্রশ্নের উত্তর মিলল। আমরা দেখলাম মেয়েটির মা ঘৃণা স্তম্ভটির একেবারে সামনে গিয়ে থামলেন তারপর মুখ থেকেএকদলা থুথু ছূড়ে মারলেন ঘৃণা স্তম্ভের দিকে। থুথু গিয়ে পড়ল স্তম্ভের সেই অংশে যেখানে যেখানে ব্যংগচিত্রে ফুটিয়ে তোলা হয়েছে রাজাকারদের পৈশাচিক চেহারা। তারপর উল্টা ঘুরে মেয়েকে বললেন – তুই আবার অতদূরে দাড়াইয়া রইলি ক্যান?
1st 😀
:thumbup: :thumbup: :thumbup:
😀
শেয়ার করার জন্য ধন্যবাদ । এই জাতীয় ঘটনা দেখলে আশায় বুক বাধতে মন চায় । কিন্তু বাস্তব বড়ই কঠিন ।
আওয়ামিলীগ সরকার যদি এই মেয়াদে বিচার সম্পন্ন করতে না পারে তাহলে তাদেরকেও ইতিহাসের আস্তাকুড়ে নিক্ষেপ করবে দেশের জনগন।
সত্য
আওয়ামিলীগ সরকার যদি এই মেয়াদে বিচার সম্পন্ন করতে না পারে তাহলে তাদেরকেও ইতিহাসের আস্তাকুড়ে নিক্ষেপ করবে দেশের জনগন
একটা কু ডাক ডাকি। নিতান্তই আজাইরা চিন্তা।
কোন সরকারই যুদ্ধাপরাধীদের বিচার করার জন্য খুব একটা জোরালো পদক্ষেপ নিবে না। নিলেও মেয়াদকালের একেবারে শেষের দিকে নিবে, যাতে এটাকে ইস্যু বানিয়ে পরবর্তী নির্বাচনে নিজেদের গদি টা পাকাপোক্ত করা যায়।
মইত্যা রাজাকাররা তাই ফ্ল্যাগ লাগানো গাড়ীতে ঘুরবে, আর বাচ্চু রাজাকাররা এনটিভিতে ইসলামী অনুষ্ঠান করবে।
আর আমরা আজীবন থুথু মেরেই খুব বড় একটা দায়িত্ব পালন করে ফেলেছি ভেবে পুলকিত হব।
সরি। নিতান্ত ব্যক্তিগত কু চিন্তা, কেউ কষ্ট পায়েন না।
যদিও বাস্তব অন্য কথা বলছে, তারপরেও আশা করছি তোমার মনের এই কু-ডাক, শুধুই কু-ডাক হয়ে থাকবে ......
আমিও তাই আশা করি। তবে একটু কথা। এই সরকার আমাদেরকে কথা দিয়েছে তারা যুদ্ধাপরাধীদের বিচার করবে। এবং যেহেতু তারা স্বাধীনতার স্বপক্ষের শক্তি তাগিদ আমাদের মত তাদেরও থাকার কথা। অথচ এই ব্যাপারে সরকারকে চাপ দেওয়ার দাবি ষাধারণ জনতার। এই ব্যাপারটিই সন্দিহান করে তোলে। তবে কি দেশবাসীর সমর্থন আর নিজেদের আন্তরিকতা থাখা সত্ত্বেও সরকার এদের বিচার করতে অপারগ। এদের শিকড় কী সুদূরে গ্রথিত?
একটু চিন্তা করলে যে উত্তর গুলো আসে সেগুলো খুব একটা আশার নয়।
আমিন ভাই, এই সরকার তো আগেও একবার সুযোগ পেয়েছিলো। তখন তারা বিচার করেনি কেন?? আবার '৭১ থেকে '৭৫ এরাই ক্ষমতায় ছিলো। তখনি বা কেনো করে নি? আমার এব্যাপারে জানার আগ্রহ।
যারা এব্যাপারে কাজ করছেন কেও কি বলতে পারবেন??
ভবিষ্যতে তো আবারো পাবে। তখন করে কি না দেখি। এদেরকে স্নাইপার ভাড়া করে মারার মত হাস্যকর চিন্তাগুলাই মাঝে মাঝে আশা জাগায়।
আমারো খুব থুতু ছিটাতে ইচ্ছে করছে; হয়তো এরচেয়ে বেশি কিছু করতে পারবো না বলেই। তারপরো আমি আশাবাদী।
আমি তবু বলি:
এখনো যে কটা দিন বেঁচে আছি সূর্যে সূর্যে চলি ..
আমার একটা প্রস্তাব আছে , যেহেতু ওই জায়গাটা খুব নোংরা হয়ে থাকে তাই কোনো যুদ্ধ অপরাধী কে দিয়ে ঐটা নিয়মিত পরিষ্কার করানো দরকার. ইউনিভার্সিটি এর পরিবেশ এতে ভালো থাকবে .
:khekz: জব্বর আইডিয়া :thumbup:
হুমমম...
এই *********** গুলারে
একদিন গিয়া ছেপ দিয়া আসতে হবে !
---------------------------------------------------------------------------
বালক জানে না তো কতোটা হেঁটে এলে
ফেরার পথ নেই, থাকে না কোনো কালে।।
আমি অলরেডি দিছি 😀
আমারেও নিয়া যাইয়েন
:clap: :clap: :clap:
আমি থুথু দিব... :ahem:
আমি কিন্তু এইটাতে প্রথম যেদিন তৈরি হল সেইদিনই থুথু দিয়েছিলাম 😀
মানুষ তার স্বপ্নের সমান বড়
ছোট্ট একটি তথ্য সবার জন্য, আলোচিত ঘৃণা স্তম্ভ টি স্থাপন করেছে উত্তরাধিকার'৭১ নামের একটি মুক্তিযুদ্ধভিত্তিক সামাজিক সংগঠন। ধন্যবাদ জানাই সংগঠনটিকে তাদের সাহসী ও সময়োপযোগী উদ্দ্যোগের জন্য।
ভালো লাগলো।
এখনো বিষের পেয়ালা ঠোঁটের সামনে তুলে ধরা হয় নি, তুমি কথা বলো। (১২০) - হুমায়ুন আজাদ