কিংবদন্তির কথা-২

এষান ভাই প্রসঙ্গে আগের লেখাটায় বলেছি যে “আমাদের মাঝেও কিছু মহান (!!!) ক্যাডেট থাকে। যারা তাদের স্বীয় মহিমায় নিজেকে কিংবদন্তির পযর্য়ে নিয়ে যান। পুংটামিকে যারা শিল্পের পযর্য়ে নিয়ে গেছেন । তো সাধারণভাবে মনে করা হয় যে দীর্ঘদিনের অক্লান্ত ঘাওড়ামি, রগড়ানি, “মাস্তানি “ এইসবই হল কিংবদন্তী হউয়ার মূলমন্ত্র। কিন্তু তারপরও কিছু কথা থেকে যায়। মন্ত্র ছাড়াও কেউ কেউ কিংবদন্তী হয়ে যান। আৎকা কোন পরিস্থিতির সুযোগ নিয়ে ঘটানো অনেক ঘটনাই হয়ে যায় হিট, নায়ক হয়ে যান হিরো। সিলেটের ১৭তম ব্যাচের ওবায়েদ ভাই “হিট” হয়ে গিয়েছিলেন এভাবেই।

আমাদের কলেজের প্রতিটি ক্যাডেট আর অন্যান্য সকল প্রণীকূলকে সুখের সাগরে ভাসাইয়া দিয়া সোহরাব আলী স্যার বদলী হয়ে গেলেন। তার চলে যাওয়া আমাদের মনে এতটাই প্রভাব ফেলেছিল যে তিনি চলে যাবেন এই খবরটা শুনার আমরা সবাই যাকে বলে ত্যাব্দা মেরে গিয়েছিলাম। আমাদের প্রায় ১ সপ্তাহ লেগেসিল এই সুন্দর সত্যকে হজম করতে।
তারপর যখন সেই মহেন্দ্র ক্ষণ এলো অর্থাত তিনি চলে গেলেন তখন অনেক ডেয়ারিং কাজ হয়ে গেল ডাল ভাত, অনেক গুডি বয় হয়ে গেল কিছুটা ডেয়ারিং। যাকে বলে আউলা একটা অবস্থা। এই সময়ই কিংব্দন্তীর রংমঞ্চে ওবায়েদ ভাইর আগমন । তিনি তখন ক্লাস ১২ ছিলেন। কলেজ প্রিফেক্ট তামিম ভাইর রুমমেট। ওবায়েদ ভাই মূলত ওই গ্রুপের মধ্যে পড়েন যারা পরিবর্তিত পরিস্থিতে গুডি বয় থেকে নিজেকে কিছুটা ডেয়ারিং পর্যায়ে উন্নীত করেছেন। তো তার ডেয়ারিং ঘটনাটার শুরু সেই রাতেই যেদিন সোহরাব আলী স্যার কলেজ থেকে চলে গেলেন এবং তা অব্যাহত থাকে পরবর্তী ২ টার্ম। তার ডেয়ারিং কাজ টা হ্ল রাতে লাইটস অফ-এর পর নাইট ড্রেস-এর বদলে লুঙ্গী পড়া। সুরমা হাউসের ক্যাডেটরা বিশেষত জুনিয়র পুলাপানই ছিল ওবায়েদ ভাইএর মূল টারগেট। ডেয়ারিং কাজটা করে তিনি যতটা আনন্দ , আরাম পেতেন আমার ধারণা জুনিয়র পুলাপানদের দেখিয়ে তিনি তার চেয়ে বেশী সুখ পেতেন। কারণ দেখা যেত প্রতিদিনি লাইটস অফ-এর পর দশ মিনিট পর পর তিনি ১২ এর ব্লক থেকে জুনিয়র ব্লকের টয়লেটে আসতেন হিসু করতে। তিনি যে নাইট ড্রেস-এর বদলে লুঙ্গী পড়েন এটা দেখানোই তার উদ্দেশ্য। জুনিয়র ব্লকের টয়লেট, ও তার রুমের অবস্থান একটা মানচিত্র দিলে হয়ত আপনারা সহজেই বুঝতে পারবেন লুঙ্গী প্রদর্শনীর ব্যাপারে কতটা শ্রম দিতে হত ওবায়েদ ভাইকে।

পুনশচঃ ওবায়েদ ভাই তার লুঙ্গীটা এখনও যত্ন করে রেখে দিয়েছেন Reunion গিয়ে পড়েন আর আমাদের সাথে গল্প করেন।

১,৯২০ বার দেখা হয়েছে

১৬ টি মন্তব্য : “কিংবদন্তির কথা-২”

মওন্তব্য করুন : সায়েদ উল হাসমত (৯২-৯৮)

জবাব দিতে না চাইলে এখানে ক্লিক করুন।

দয়া করে বাংলায় মন্তব্য করুন। ইংরেজীতে প্রদানকৃত মন্তব্য প্রকাশ অথবা প্রদর্শনের নিশ্চয়তা আপনাকে দেয়া হচ্ছেনা।