একটি ভাবনা

স্যার

আমি যে ব্যাপারটা বলব টা হয়ত আপনার কাছে খুব সাধারন লাগতে পারে। হয়ত অনেক আগে থেকেই আপনি জানেন । কিন্তু আমি ব্যাপারটা ভেবে ভেবে অনেক আগে বের করেছিলাম। এমন একটা বয়সে যখন টা ভাবা আমার পক্ষে কঠিন  ছিল।
আমরা একটা জিনিস্কে একই সাথে দুই জায়গায় দেখতে পারি । এই ব্যাপারটা নিয়ে আমি চিন্তা করেছিলাম যখন আমি ক্লাস নাইন এ পড়ি। আমি আমার খাতায় এই ব্যাপারটা লিখে রেখেছিলাম । খুব সুন্দর করে । এর শেষ লাইন টা ছিল,
“অনেক কিছুই আমরা বুঝলাম । অনেক অঙ্কই করলাম । কিন্তু সমস্ত ব্যাপারটা সম্ভব হবে যদি এবং কেবল যদি একটা জিনিস আলোর চেয়ে বেসি জোরে ছুটতে পারে । কিন্তু আইনস্টাইন যেহেতু বলে গেছেন আলোর চেয়ে বেশি জোরে ছুটতে পারে এমন কোন বস্তু পৃথিবীতে নেই । সুতরাং আমাদের এই ব্যাপারটা আজকের জন্য নয় । হয়ত ভবিষ্যতে কেউ একজন আলোর চেয়ে দ্রুতগতির কিছু আবিস্কার করবে । সেই দিনের অপেক্ষায় রইলাম।”
এটা ২০০৭ সালের কথা । সেই ব্যাপারটাই মাথাচাড়া দিয়ে উঠল স্যার যখন আমাদের দেশের দুজন বিজ্ঞানী বললেন নিউট্রিনো আলোর চেয়ে জোরে ছোটে । ব্যাপারটা সত্যি কিনা জানি না তবে সত্যি হলে অনেকগুলো প্রশ্ন চলে আসে মাথায় । একজন বিজ্ঞানী ল্যাব এ যতোগুলো নিউট্রিনো দেখে আদৌ কি ততগুলো থাকে? যেহেতু আমরা একই সময়ে একই বস্তু বিভিন্ন স্থানে দেখছি তাহলে কি অনেকগুলো শুধুই চোখের ধাঁধা হতে পারে না? শুধু তাই নয় এরকম যদি আরও কোন বস্তু থেকে থাকে দূর দূর মহাকাশে তখন কি আমরা ভুল দেখছি না? হয়ত অতগুলো নক্ষত্র নেই ওখানে!
স্যার আমি কি বোঝাতে পেরেছি ? হয়ত পারিনি । কিন্তু আমার তাতে কিছু করার নেই । হয়ত যা ভাবছি তা প্রকাশ করতে পারছি না । আর কিভাবে একটি বস্তু দুই জায়গায় দেখা যাবে সেই ব্যাপারটা খুবই সহজ । আমি বললাম না ওই সময় আমি নাইন এ পড়ি । আপনি একটু চিন্তা করলেই বের করতে পারবেন । আপনি আগ্রহি থাকলে আমি আপনাকে মেইল ও করতে পারি ।
স্যার প্লীজ বিষয়টা নিয়ে চিন্তা করবেন । আমার ভুল থাকলে ধরিয়ে দেবেন প্লীজ । কারণ আমি অত গভীর বিষয় হয়ত জানি না । আমি ওভাবেই চিন্তা করেছি যেভাবে একটা নাইন এর ছেলে চিন্তা করে । আর অভ্র ব্যবহার করেছি তো । বানানে ভুল থাকতে পারে । ক্ষমা সুন্দর দৃষ্টিতে দেখবেন আশা করি ।
পড়ার জন্য ধন্যবাদ
– ফরহাদ মাহমুদ
# একটা রিপ্লাই করবেন প্লীজ । আমি আপনার লেখা অসম্ভব ভালবাসি ।

এইটা জাফর ইকবাল স্যার এর জন্য লিখসিলাম… কিন্তু পাঠাইতে পারতেসিনা। মেইল এড্রেস নাই । আচ্ছা দেখেন তো আমার ভাবনাগুলো যৌক্তিক কিনা?… মনে হয় না? তাই না?

১,৪২২ বার দেখা হয়েছে

৯ টি মন্তব্য : “একটি ভাবনা”

  1. অয়ন মোহাইমেন (২০০৩-২০০৯)

    আমার মতে কথাগুলো যৌক্তিক। যদি নিউট্রিনো আলোর চেয়ে এবং এর অস্তিত্ব আলোর মাধ্যমেই দেখা হয় তবে একটির যায়গায় বেশ কয়েকটি দেখা অসম্ভব নয়।

    আমার নিউট্রিনোর আকার সম্পর্কে ধারণা নেই, কিন্তু যদি তা বেগুনি আলোর আলোকদৈর্ঘের চেয়ে ছোট হয়, তাহলে তার অস্তিত্ত্ব আলো দিয়ে বোঝা যাবে না, তবুও এটি সমস্যা হবার কথা নয় কারণ আমরা জানি যেকোনো ইলেক্ট্রোম্যাগনেটিক ওয়েভ এর গতিও আলোর সমান, তাই এ ক্ষেত্রেও তোর চিন্তাটাই হওয়ার কথা।

    জবাব দিন
  2. নাফিজ (০৩-০৯)

    ক্যাডেট কলেজে কেউ যে ব্যাপারগুলো নিয়ে এখনো ভাবে এই ব্যাপারটা খুব ভালো লাগলো। লেখাটা পড়ে কিছু ব্যাপার মাথায় আসলো-

    ১.নিউট্রিনোর "অস্তিত্ব" বা "নিউট্রিনোকে দেখতে পাওয়া" টার্মগুলোকে ক্লিয়ার করি। এত ছোট একটা সাবএটমিক পার্টিকেলকে একটা নির্দিষ্ট সময়ে নির্দিষ্ট যায়গায় দেখতে পাওয়া সম্ভব না...অনিশ্চয়তা সূত্র অনুসারে।ক্লাস ১১ এ orbital theory পড়েছ না- ওইরকম ব্যাপার অনেকটা । শুধুমাত্র probability টা বলা যায় যে সে এখানে আছে কি নাই, কিন্তু নিশ্চিতভাবে বলা যায়না। নিউট্রিনোর বেগ আসলেই কত এটা জানতে হলে আমাদের এর গতিপথ ফলো করতে হবে- কখন সে কোথায় আছে, কোথায় গিয়ে কখন থামলো- ইত্যাদি। কিন্তু এটা সম্ভব না-তাহলে অনিশ্চয়তা সূত্র খাটেনা। কাজেই শুধু একটা নিউট্রিনোর "দেখা পাওয়া " সম্ভব না।একই যুক্তিতে একটা নিউট্রিনোর দৌড় স্টপওয়াচ দিয়ে মাপা সম্ভব না- এটা টাইমিং করা হয় probablility function কে বিশ্লেষণ করে- যেখানে শুধু এর "সম্ভাব্য " স্পীডটা মাপা যায় । দেখতে পাওয়া বা অস্তিত্ব মানে হচ্ছে যেকোন physical experiment এর মাধ্যমে চেক করা (দেখা), আর এরা সবাই কিন্তু এই probabilty function এর উপর নির্ভর করে। তাই ভুল হবার সম্ভাবনা থাকে। এই আর্টিকেলটা দেখো, সোজাভাবে বলার চেষ্টা করেছে-

    http://www.wired.com/geekdad/2011/09/neutrinos-and-the-speed-of-light-a-primer-on-the-cern-study/

    ২. নিউট্রিনো এত ছোট যে এদের উপর কোয়ান্টাম এফেক্ট (যেটা কি আমাকে জিজ্ঞেস করলে আমিও ভালো বলতে পারবোনা ) অনেক প্রবল...অনিশ্চয়তা নীতি, কোয়ান্টাম ফ্লাকচুয়েশান অনেকগুলা ব্যাপার। এমনও হতে পারে যে তারা পরিচিত চার dimension এর বাইরে অন্য কোনটা দিয়ে লাফ দিয়ে তারা আরেকজায়গায় পৌঁছায় (যেটাকে জা.ই. বলেন হাইপার ডাইভ ) string theory কিন্তু এই ধারণাটা সাপোর্ট করে (যদিও proved না) কাজেই তারা আলোর চেয়ে গতিতে না গেলেও আপাতঃদৃষ্টিতে তাই মনে হতেও পারে।কিন্তু নক্ষত্রের মত এত বড়সড় বস্তুতে কোয়ান্টাম এফেক্ট নাই বললেই চলে- কাজেই এইভাবে জাম্প দিয়ে চলাফেরা করা এদের পক্ষে সম্ভব না।
    ৩।নক্ষত্রেরা আসলে আক্ষরিকভাবে দূরে দূরে ছোটে না- তাদের মধ্যকার স্পেসটা প্রসারিত হচ্ছে, আর আমাদের কাছে মনে হচ্ছে তারা ছুটছে। একটা বেলুনের কথা ভাবো - গ্যালাক্সি যদি বেলুনের গায়ে দুইটা ডট হয়, আর বেলুনটা যদি ফুলতে থাকে, তবে ডটে বসে থাকা একটা পিঁপড়ার কাছে কিন্তু মনে হবে ডটগুলো দূরে সরে যাচ্ছে।

    তবে সবচে চমৎকার বিষয় হচ্ছে, তোমার ভাবনাটা প্রায় সঠিক ছিলো। মহাবিশ্ব কিন্তু আসলেই আলোর চেয়ে বেশি বেগেই প্রসারিত হচ্ছে! কিন্তু এই বেগটাকে ঠিক "বেগ" হিসেবে ধরা যায় না।কারণ দূরত্ব মাপা হয় স্পেস এর সাপেক্ষে- আর স্পেস নিজেই যদি বাড়তে থাকে তো মাপবো কিসের সাপেক্ষে। ধর পিঁপড়াটা একটা স্কেলকে বেলুনের গায়ে দেখলো ১০ সেমি- এখন এই স্কেলটা নিজেই যদি ফুলতে থাকে তাহলে মাপবে কিভাবে? স্পেস প্রসারণ মাপার নিয়মটাকে বলে metric expansion- এই সাইটটায় সোজাভাবে বোঝাতে চেয়েছে ব্যাপারটা, wiki তেও দেখতে পারো

    http://curious.astro.cornell.edu/question.php?number=575

    http://en.wikipedia.org/wiki/Metric_expansion_of_space

    কাজেই এটা কিন্তু খুবই সম্ভব যে একটা গ্যালাক্সি আলোর চেয়ে বেশি বেগে তোমার কাছ থেকে ছুটছে-তবে সেটাকে আক্ষরিক অর্থে বেগ বলা যাবে না ।

    যতটুকু জানতাম তার মধ্যে গুছিয়ে বলার ট্রাই করলাম (দুর্বোধ্য হয়ে গেলো নাকি বেশি? :-/ :-/ ) বোরড হয়ে থাকলে দুঃখিত। (সম্পাদিত)


    আলোর দিকে তাকাও, ভোগ করো এর রূপ। চক্ষু বোজো এবং আবার দ্যাখো। প্রথমেই তুমি যা দেখেছিলে তা আর নেই,এর পর তুমি যা দেখবে, তা এখনও হয়ে ওঠেনি।

    জবাব দিন
  3. নাফিজ (০৩-০৯)

    বাই দা ওয়ে, ক্লাস এইটে থাকতে বেজায় কঠিন একটা থিওরি প্রুফ করসিলাম B-) B-) , খোদ আইনস্টাইন দেখলে হার্টফেইল করতেন-

    E=mc^2

    এবং E= 1/2 mv^2

    mc^2=1/2mv^2

    সুতরাং
    v^2= 2*c^2

    😀 😀 😀

    প্রমাণটা করে ব্যাপক জ্ঞানী ভাব নিয়ে এক জিগরি বন্ধুকে দেখাইসিলাম। সেদিন প্রেপ টাইমে ব্যাটা বেঈমান সেটা পুরা ফর্মকে সেটা দেখাইসিলো। তারপর কি হইলো সেটা আর বলা যাবেনা 😛 😛


    আলোর দিকে তাকাও, ভোগ করো এর রূপ। চক্ষু বোজো এবং আবার দ্যাখো। প্রথমেই তুমি যা দেখেছিলে তা আর নেই,এর পর তুমি যা দেখবে, তা এখনও হয়ে ওঠেনি।

    জবাব দিন

মওন্তব্য করুন : কামরুলতপু (৯৬-০২)

জবাব দিতে না চাইলে এখানে ক্লিক করুন।

দয়া করে বাংলায় মন্তব্য করুন। ইংরেজীতে প্রদানকৃত মন্তব্য প্রকাশ অথবা প্রদর্শনের নিশ্চয়তা আপনাকে দেয়া হচ্ছেনা।