সন্দেহ… সংশয়… Doubt !!

প্রেক্ষাপটঃ ব্রংস,আমেরিকা ১৯৬৪। চিন্তার স্বাধীনতা ও সামাজিক মুক্তির বিষয়গুলো তখন মাথা চাড়া দিয়ে উঠছে। পরিচালক জন প্যাট্রিক শ্যানলী তার পুলিৎজার পুরস্কারজয়ী মঞ্চনাটক থেকে এই সিনেমার চিত্রনাট্য এডাপ্ট করেছেন। মূল থিমটা পুরোনো। একদিকে আছে প্রাচীন নিয়ম কানুন, পরম্পরা আর বিশ্বাসকে আকঁড়ে ধরে রাখা কট্টরপন্থী (গুরুকুলের অমিতাভ) আর অন্যদিকে আছে নতুন আচার আচরন,বিশ্বাস আর মুল্যবোধকে স্বাগত জানাতে প্রস্তুত উদারমনা আধুনিক ব্যাক্তিত্ব। (গানের মাস্টার ছ্যাঁকু শাহরুখ) Doubt সিনেমার কাহিনী্তে একজন নান তার এক সহযোগী পুরোহিতের সাথে দ্বন্দে জড়িয়ে পড়েন। যেখানে নান পুরোহিতকে একজন শিক্ষার্থীর সাথে অনৈতিক সম্পর্কে জড়িয়ে পড়ার অভিযোগ আনেন। ওই পুরোহিত অভিযোগ অস্বীকার করেন এবং কাহিনী এগিয়ে যায় দুর্দান্ত সংলাপে ভরপুর দৃশ্যবলীর ভিতর দিয়ে যাতে পরিচালক ধর্ম, আদর্শ, নৈতিকতা আর আধিপত্যের মত বিষয়গুলোকে খুব সুন্দরভাবে ফুটিয়ে তুলেছেন।
.
সেন্ট নিকোলাস চার্চ স্কুলের প্রিন্সিপাল সিস্টার এলয়সাস বিভার (মেরিল স্ট্রিপ) ছাত্র শিক্ষক সবার কাছেই মূর্তিমান আতংক; অত্যন্ত শক্ত অনুশাসনে স্কুলের শৃংখলা ঠিক রাখেন। ধর্মীয় আচার আচরনের পাশাপাশি বহুদিনের পরম্পরায় নিজের গুছিয়ে আনা সাম্রাজ্যে অন্য কোনো মুল্যবোধের অবৈধ অনুপ্রবেশ কখনোই তার কাম্য নয়।

ক্যাথলিক চার্চ ও এর স্কুলের দায়িত্বে আছেন ক্যারিশ্মাটিক ধর্মযাজক ফাদার ফ্লিন (ফিলিপ সিমূর হফম্যান)। চার্চে রবিবারের খুতবা (Sunday mass sermon) থেকে শুরু করে স্কুলের বাচ্চাদের সাথে দৈনন্দিন কথাবার্তায় সবক্ষেত্রেই তিনি একজন আধুনিক চিন্তা চেতনায় বিশ্বাসী মুক্তমনা মানুষ। শ্যানলী খুব মার্জিতভাবে একটু একটু করে কৌতুক মিশিয়ে গল্প শুরু করেছেন। যেমন ফাদার ফ্লিন আড়ালে প্রিন্সিপালকে মজা করে ডাকেন ‘দ্য ড্রাগন’। ফাদার ফ্লিন শুধু মদ্যপান ও ধূমপানই নয় বরং ম্যানিকিউরড করা লম্বা নখও রাখেন। স্কুলের বাচ্চাদের সাথে যেমন মজা করে বাস্কেটবল খেলেন তেমনি তাদের সাথে প্রেম বিষয়ক গল্পও করেন এবং প্রিন্সিপাল সিস্টারের দুই চোখের বিষ বল পয়েন্ট কলম দিয়ে তিনি লিখেন।

ফাদার ফ্লিনের মতে বাইরের জগতের মানুষের মনমানসিকতায় পরিবর্তনের ছোঁয়া চার্চ ও স্কুলের কর্মকান্ডেও প্রতিফলিত হওয়া উচিত। আর এতে প্রিন্সিপাল সিস্টার এলয়সাস বিভার যারপরনাই বিব্রত এবং মনে করেন ফাদারের স্কুলের শিক্ষার্থীদের সাথে সহজ মেলামেশাও ছাত্র-শিক্ষক সম্পর্ককে অনেক হালকা ও সহজ করে ফেলছে। তাই সে কনিষ্ঠ শিক্ষক সিস্টার জেমসকে ফাদারের বিরুদ্ধে উস্কে দেন এবং সুযোগ খুঁজতে থাকে কিভাবে ফাদারকে থামানো যায়। যখন স্কুলের প্রথম কালো ছাত্রের প্রতি ফাদারের অতিরিক্ত মনোযোগকে প্রশ্ন সাপেক্ষ করে তুলা হয় তখন প্রিন্সিপাল আর ফাদারের কথা বার্তায় ব্যাপারগুলো আর হাসি ঠাট্টার বিষয় থাকে না বরং স্কুলের প্রিন্সিপাল সিস্টার এলয়সাস বিভার এর সাথে ফাদার ব্যাক্তিত্বের দ্বন্দে জড়িয়ে পড়েন।

আসলে কখনোই এইটা পরিস্কার করা হয়নি আসলে কি ঘটেছিলো ফাদার আর শিক্ষার্থী ডোনাল্ডের মধ্যে। আর এটাই দর্শকের মধ্যে সন্দেহ (doubt) আর দ্বিধার সষ্টি করে। কি সিদ্ধান্তে পৌঁছাবেন আপনি যখন আপনার কাছে সন্দেহ থাকবে কিন্তু কোনো প্রমান থাকবে না। আসলেই কি কেঊ নিরাপরাধ যতক্ষন অপরাধ প্রমান হচ্ছে না? সিস্টার বিভারের মতে তিনি এই দুনিয়া অনেক দেখেছেন। যথাযত প্রমান না থাকলেও তিনি আসল ঘটনা জানেন। কিন্তু এই সিদ্ধান্ত কি শুধু মাত্র ওই শিক্ষার্থীর জন্য ন্যায়ের ব্যাবস্থা করা নাকি হুমকির মুখে পড়া নিজের রক্ষনশীল দুনিয়াকে বাঁচানোর অপচেষ্টা। যখন ডোনাল্ডের মা নিজের ছেলের সাথে ফাদারের অনৈতিক সম্পর্কের ইঙ্গিতেও সিস্টারের আশানুরুপ ভাবে অভিব্যাক্তি প্রকাশ করে না; তারপরও সিস্টার হাল ছাড়ে না।

মঞ্চ নাটকের দুই ডাকসাঁইটে শিল্পী মেরিল স্ট্রিপ আর ফিলিপ সিমূর হফম্যান অসাধারন অভিনয় করেছেন এই সিনেমায়। মঞ্চের প্রতি আমার দুর্বলতা ছোটবেলা থেকেই। তাই যেসব অভিনেতা অভিনেত্রী মঞ্চ থেকে ক্যামেরার সামনে যায়, তাদের অভিনয় সবসময়ই আমার মধ্যে একটু বেশী ভালোলাগা তৈরী করে। দুইবারের অস্কার জয়ী মেরীল স্ট্রিপ এত বিশ্বাসযোগ্যভাবে খান্ডারনী মার্কা নান এর চরিত্রের ভিতর ঢুকেছে; যে চিন্তা করে Frosty The Snowman is heretical। সিমূরের সাথে তার দৃশ্যগুলো ইলেক্ট্রিফাইং।

সিস্টার বিভারের চরিত্রে মেরীল স্ট্রিপ আবারো তার ভার্সালিটি প্রমান করেছে। মামা মিয়া এর মেরীল স্ট্রিপ কে এখানে খুঁজেই পাওয়া যাবে না। হ্যাঁ ডেভিল অয়্যারস প্রাডা এর সম্পাদক স্ট্রিপের শীতল কাঠিন্য এখানেও আছে। তার ক্রোধ ও আধিপত্যের আক্রোশ কখনো ফিউজ হয়ে যাওয়া বাল্ব, কখনো বিদ্যুত চমকানো কিংবা কিংবা তুমুল ঝড়ো বাতাসের সাথে একাকার হয়ে গেছে।

সিনেমার আরেকটি দুর্দান্ত চরিত্র কালো স্কুল বালক ডোনাল্ডের মায়ের ভূমিকায় অভিনয় করেছেন ভিওলা ডেভিস। এত কম সময়ের মধ্যে খুব অভিনেত্রীই পারবেন বঞ্চিত পুত্রের দুঃখে কাতর মায়ের কষ্ট, আশা, আকাঙ্ক্ষা এত বিচক্ষনতার সাথে ফুটিয়ে তুলতে। আর এজন্যই স্ট্রিপ আর হফম্যানের পাশাপাশি ভিওলা ডেভিসও পার্শ্ব-অভিনেত্রী ক্যাটাগরীতে অস্কারের মনোনয়ন পেয়েছিলো। সিস্টার জেমস হিসাবে এইমী এডামসের চরিত্রটির শুরুটা মজার ও চমৎকার হয়েছে যদিও সিনেমার মাঝামাঝি এসে তা হারিয়ে গেছে।

সিনেমার সংলাপগুলো খুব জম্পেশ। সিনেমার শুরু আর শেষে আছে দুটি দারুন সারমন। দুইটাই দারুনভাবে আলোড়িত করবে। বিডিআর ট্র্যাজেডী যেমন আমাদের সবাইকে বিভিন্ন দিকে সন্দিহান ও জাতির ভবিসষ্যত নিয়ে সংশয়াচ্ছন্ন করে তুলেছে তেমনি এই সন্দেহই পারে জাতি হিসাবে আমাদের ঐক্য ধরে রাখতে। আবার গুজব কিভাবে আমাদের বিভ্রান্ত করে তাও সুন্দরভাবে বলা হয়েছে এই সারমন দুটিতে। সিনেমার সিকোয়েন্সগুলো ছোট ছোট ফাইন ডিটেইলস দারুনভাবে ব্যাখ্যা করেছে। সিনেমার শুরুরদিকে যখন প্রিন্সিপাল হুট করে ক্লাসের ভিতর ঢুকে ত্রাস ছড়িয়ে দেন ঠিক তখনই সিস্টার জেমস পড়াচ্ছিলেন (নীলোৎপলের) ফ্রাংকলিন ডেলানো রুজভেল্টের বিখ্যাত বানীটি “The only thing we have to fear is fear itself” এছাড়াও সিনেমাতে অনেকগুলো সংলাপ আছে যা মনের মধ্যে অনেক সংশয় কিংবা প্রশ্নের সৃষ্টি করে যে এখন আমার কাকে সমর্থন করা উচিত। যেমন নিজেদের ঝগড়া-ঝাঁটিতে যখন প্রমানের আশায় প্রিন্সিপাল বেড়িয়ে পড়েন তখন নিজেদের একতার কথা মনে করিয়ে দিয়ে ফাদার বলেন
“ You have no right to act on your own! You have taken vows, obedience being one! You answer to us! You have no right to step outside the church!”
প্রত্যুত্তরে সিস্টার বিভার বলেন
“I will step outside the church if that’s what needs to be done, till the door should shut behind me! I will do what needs to be done, though I’m damned to Hell! You should understand that, or you will mistake me.”
আবার প্রিন্সিপাল ফাদারের বিরুদ্ধে বলায় প্রিন্সিপালকে ডোনাল্ডের মা বলেন
“Sister, I don’t know if you and me are on the same side. I’ll be standing with my son and those who are good with my son. It’d be nice to see you there.”

হ্যা শেষ করা উচিত। সিনেমার ক্ল্যাইমেক্স তৈরী করতে খুব বেশী সময় নেয়া হয়েছে। তাই শুরুর দিকে সিনেমাটা বেশ গতিহীনতায় ভুগেছে। মাঝে মাঝে পুরো Doubt সিনেমাটাকেই মনে হয় একটা সারমন। শ্যানলী যেনো তার দর্শককে রবিবারে চার্চে যাওয়া dim-witted congregation বানিয়ে ফেলেছে। তারপরো দুর্দান্ত অভিনয় আর দারুন সংলাপের জন্য সিনেমাটি আমি দেখার জন্য অনুরোধ করবো।

২,২৮৯ বার দেখা হয়েছে

২০ টি মন্তব্য : “সন্দেহ… সংশয়… Doubt !!”

    • এহসান (৮৯-৯৫)

      এই সিনেমা দেইখা আমার এক '**** পোলা' প্রিন্সিপালের কথা মনে পড়সে, যে আমাদের জীবনে ত্রাস সৃষ্টি করেছিলো। Bullying কি এবং কত প্রকার তা ওই ব্যাটার কাছ থেকে শেখা যাবে। হুটহাট করে ক্লাসে চলে আসতো, শুধু আমরা না বাংলার শাহজাহান স্যারের মত মানুষও ডরে থাকতো কখন ওই ব্যাটা আসে। যাই হোক আমি আমার ভাষা ঠিক রাখতে পারতেসি না। ওই বয়াতার উপর রাগ উঠতাসে।

      সরি... কি লিখতে গিয়া কি লিখলাম। সিনেমাটা দেখেন। মনে হয় ভালো লাগবে।

      জবাব দিন
    • এহসান (৮৯-৯৫)

      দেখো। আমিও আরো কয়েকবার দেখবো। 🙂 এই সপ্তাহে সব ইন্টারন্যাশনাল ফুটবল খেলা। মানসিক চাপ কম। তাই এই সপ্তাহে সিনেমাই দেখবো খালি। আমি দুইটা সারমন নিয়ে আর লিখতে চাইসিলাম। আর এম্নিতেই লেখাটা বড় হয়ে যাচ্ছিলো তাই লিখিনি। এছাড়াও সামিয়ার মত পাঠক আইসা বলতে পারে এই রিভিউটাও বুঝি নাই। তাই সহজ করে লেখা চেষ্টা করেছি। কিন্তু তাও মনে হয় পারি নাই।

      আজকাল সিনেমা নিয়ে লিখতে ভয় লাগে। একবার কে যেনো কোনো একটা সিনেমার ভালো লাগার কথা বলেছিলো তার উত্তরে একজন কমেন্ট করেছিলো "আমি ভাই কুরুচিপুর্ণ দর্শক। ওই সিনেমা দেইখা পরিচালকের মুখে হাইগা দিতে ইচ্ছা করেছে"। আমি এতে কোনো মজা পাই নাই বরং ওই কমেন্টাকেই কুরুচিপূর্ণ লেগেছিলো। 🙁

      জবাব দিন
      • মুহাম্মদ (৯৯-০৫)

        আর এহসান ভাই, নিঃসংকোচে রিভিই লেখতে থাকেন। সিনেমা নিয়ে আলোচনা এবং তর্ক-বিতর্ক করতে আমার বেশী ভাল লাগে। আমি সবসময় আছি। সিনেমা নিয়ে হার্ডকোর আলোচনা করতে সবার ভাল না লাগাটাই স্বাভাবিক। সেদিকে সবার আগ্রহ থাকারও কথা না। যার যেদিকে আগ্রহ। সব পোস্টে তো সবাই আগ্রহ প্রকাশ করবে না, এটাই স্বাভাবিক।

        আমি স্পেস অডিসি নিয়ে কিছু লেখার তালে আছি। কিংবা ডক্টর স্ট্রেঞ্জলাভ নিয়ে লিখতে পারি। সাহস হচ্ছে না আমারও। কারণ স্ট্যানলি কুবরিকের হাই থট আমি আসলেই বুঝতে পেরেছি কি-না তাও ডাউটের বিষয়। কিন্তু শিল্পের মজা এখানেই, সবারই নিজের মত করে বুঝে নেবার অধিকার আছে এখানে; বিজ্ঞানে যেটা নেই।

        জবাব দিন
  1. ফয়েজ (৮৭-৯৩)

    তোমার জ্বালায় রাইত জাইগা বিপিএল দেখা শুরু করতেছি, আর তোমাগো যন্ত্রনায় (মাসুম ভাই, তুমি, মুহাম্মদ) সিনেমা দেখতে হইব মনে হইতেছে রেগুলার। 🙁


    পালটে দেবার স্বপ্ন আমার এখনও গেল না

    জবাব দিন
  2. মুহাম্মদ (৯৯-০৫)

    এহসান ভাই, ভাবছিলাম বিশাল কোন কমেন্ট করব, সিনেমার গুষ্টি উদ্ধার করব, ভাল লাগা গুলো ডিটেইলস বলব। কিন্তু সিনেমা দেখার পর আপনার রিভিউ পড়ে, লেখার আর কিছু খুঁজে পাচ্ছি না। আমার মনে হয়েছে, আপনি রিভিউয়ে সিনেমার প্রতিটি দিকই খুব সুন্দরভাবে তুলে ধরেছেন। রিভিউটা সত্যিই খুব ভাল হয়েছে।

    প্রথম সার্মনটা আসলেই খুব ভাল লেগেছে। সিনেমার মূল থিমটা এতে উঠে এসেছে এবং এ কারণেই আপনার কথা ঠিক: পুরো সিনেমাকেই একটা সার্মন মনে হয়। আমি এক কাজ করি, প্রথম সার্মনটা বঙ্গানুবাদ করে দিয়ে দেই:

    প্রথম সার্মন

    আজ আমি একটা গল্প বলব। এক রাতে গভীর সমুদ্রের একটি মালবাহী জাহাজে আগুন ধরে গেল, স্বভাবতই জাহাজটি গেল ডুবে। কেবল একজন নাবিক সে যাত্রা বেঁচে গেল। সে আসলে একটা লাইফবোট পেয়েছিল, সাথে ছিল একটা ছেঁড়া পাল। লাইফবোটের সাথে ছেঁড়া পাল জুড়ে দিয়ে সে নেভিগেশনের নিয়মকানুন অনুসরণ করল। নিয়ম অনুসারে স্বর্গের দিকে চোখ ফেরাল, অনুসরণ করল তারাগুলোকে। তার বাড়ির দিকে লাইফবোটের দিক ঠিক করার পর বিধ্বস্ত নাবিক ঘুমিয়ে পড়ল। এর মধ্যেই আকাশ মেঘাচ্ছন্ন হয়ে পড়ল। যার ফলে পরবর্তী ২০ রাতে আকাশের একটি তারাও দেখা গেল না। সে জানত, প্রথমে তার দিকনির্ণয় ঠিক ছিল, কিন্তু বর্তমানে দিক সম্পর্কে নিশ্চিত হওয়ার কোন উপায় নেই। দিন যেতে লাগল আর নাবিকের মনে পুঞ্জীভূত হতে থাকল প্রগাঢ় সন্দেহ। তার দিকনির্ণয় কি ঠিক ছিল? সে কি এখনও তার বাড়ির দিকেই যাচ্ছে? নাকি সম্পূর্ণ দিকভ্রান্ত হয়ে মৃত্যুর দিকে এগিয়ে চলেছে? জানার কোন উপায় নেই। তারা থেকে কি আসলেই কোন বার্তা এসেছিল, নাকি প্রচণ্ড বেপরোয়া থাকায় সে তখন এটা কল্পনা করে নিয়েছিল? নাকি একবার সত্যকে জানতে পেরে সেটাই সে আঁকড়ে ধরে আছে, পুনরায় প্রমাণ করার প্রয়োজন অনুভব করছে না? আমি এখানে বিশ্বাসের যে সংকট বর্ণনা করলাম তার সাথে আপনারা সবাই পরিচিত। আমি কেবল আপনাদের বলতে চাই: নিশ্চয়তা যেমন গভীর বন্ধন হিসেবে কাজ করতে পারে ঠিক তেমনি সন্দেহও গভীর বন্ধন হিসেবে কাজ করতে পারে। হারিয়ে গেলেও মানুষ একা হয়ে যায় না, কারণ তার মত আরও অনেকেই তো হারিয়ে গেছে।

    শেষ সার্মন

    এটাকে আসলে সার্মন বলা যায় না। সার্মন দিতে গিয়ে আসলে ফাদার বিদায় নিয়েছেন। এটার আর অনুবাদ করলাম না:
    I never like to say goodbye. But there is a wind behind every one of us that takes us through our lives. We never see it, we can't command it, we don't even know its purpose. I would have stayed among you longer, but that wind is taking me away. I will miss it here. And I will miss you. But I'm content that the power that propels me does so with superior knowledge as to what is for the best, and that is my faith.

    বালিশ কাটার পর ছড়িয়ে পরা পালকের উপমাটাও বেশ ভাল লেগেছে। সিনেমা সন্দেহ নিয়ে, এদিক দিয়ে চিন্তা করলে এর খুব বেশী সীমাবদ্ধতা ছিল না। আরও যেসব থিম এসেছে সেগুলো তো এহসান ভাই বলেই দিয়েছেন।
    অভিনয় অসাধারণ হয়েছে। মেরিল স্ট্রিপের খুব বেশী সিনেমা দেখিনি, ৬-৭ টা হবে। প্রতিটা দেখেই মুগ্ধ হয়েছি। একসময় হয়ত সর্বকালের সেরা অভিনেত্রী হিসেবে মানুষ মেরিল স্ট্রিপেরই নাম করবে।

    জবাব দিন
    • এহসান (৮৯-৯৫)

      প্রথম সারমনে গল্প শুরুর আগে ফাদারের কথা গুলোও অনুবাদ করে দিলে ভালো হতো। প্রেসিডেন্টের এসাসিনেশন পরবর্তী অনুভূতি গুলোর সাথে জাতীয় ঐক্যের প্রয়োজনীয়তার ব্যাপারটা আমার কাছে দারুন লেগেছে।

      ২য় সারমনে ছড়িয়ে পড়া পালকের সাথে গুজবের ব্যাপারটাও দারুন। একবার ছড়াইলে আর ফেরত নিয়ে আসা যায় না। তাই গুজব ছড়ানোর আগে একটু খিয়াল কইরা...

      জবাব দিন
  3. শওকত (৭৯-৮৫)

    ছবিটা কিনে রেখেছি। দেখবো দেখবো করেও দেখা হচ্ছিল না। কেননা জানা আছে গভীর মনোযোগ দিয়ে দেখতে হবে। এখন ভাবছি দেরী করা যাবে না।
    আর মেরিল স্ট্রীপের আমি বহু পুরানা ভক্ত।

    জবাব দিন
    • এহসান (৮৯-৯৫)

      শওকত ভাই,

      আমিও সেই ফেব্রুয়ারীর ২য় সপ্তাহ থেজে সিনেমাটা ফেলে রাখসিলাম গভীর মনোযোগের উসিলায়। কিন্তু সিনেমা দেখে এতো কঠিন কিছু মনে হয় নাই। আসলে অনেক সহজ সিনেমা কিন্তু মঞ্চ নাটকের এডাপ্টেশন তো তাই ১:১ সংলাপ গুলো বেশি ইন্টারেস্টিং লাগসে। হ্যা সারমন গুলো দুই বার শুনেছি।

      জবাব দিন

মওন্তব্য করুন : এহসান (৮৯-৯৫)

জবাব দিতে না চাইলে এখানে ক্লিক করুন।

দয়া করে বাংলায় মন্তব্য করুন। ইংরেজীতে প্রদানকৃত মন্তব্য প্রকাশ অথবা প্রদর্শনের নিশ্চয়তা আপনাকে দেয়া হচ্ছেনা।