“ছিলে দেবী,হলে দাসী!”

আমার ঘুমানোর পায়জামাটার পেছনে একটা পকেট আছে। দুদিন ধরে লেখাটা সেখানেই।সাথে নিয়েই ঘুমাচ্ছিলাম।পাশে ঘুমায় আমার‘বিয়ে করা বৌ, সারাদিনের ক্লান্তিশেষে। কিন্তু কোথায় হারিয়ে গেলো আমার চোখের ঘুম? কেন আমি ঘুমাতে পারিনা গত ক’রাত ধরে? পা টিপে টিপে বাথরুমে যাই, পকেট থেকে লেখাটা বের করে কলম দিয়ে ‘হাইলাইটেড’ করা অংশগুলো আবারো পড়ি। কেউ একজন ভেতর থেকে চিৎকার করে আমাকে বলছে, ‘প্লিজ, এসবকে উপেক্ষা করো, বাদ দাও এসব, এসব নিয়ে এত টেনশন নেয়ারই বা কি আছে?’ আমি কেমন করে এসবকে পাশ কাটিয়ে চলি? অনেকবার ভেবেছি, ঠিকই তো। কেন শুধু শুধু আমি এইসব নিয়ে এমন উথাল পাথাল ভাবছি? কেন আমি লেখাটার কথা বেমালুম ভুলে গিয়ে নিশ্চিন্তে একটু ঘুমাতে পারছি না? আমি কি অসুস্থ হয়ে পড়ছি? ভারসাম্যহীন হয়ে পড়ছি? কেন কাউকেই এমন একটি লেখা এমনিভাবেই লিখতে হবে, যা আমাকে এতটা পীড়া দিচ্ছে! বাক-স্বাধীনতার নামে, ‘ফ্রি প্রেস অ্যান্ড পাব্লিকেশন্স’ এর নামে মানুষ কি আজ যা ইচ্ছা তাই বলতে পারে? লিখতে পারে? ছাপতে পারে? কাল হয়তো আজ যা বলছে, লিখছে আর ছাপছে, তাই করে দেখাবে! ‘দাম্পত্য জীবনে বৈচিত্র আনার জন্য, একঘেয়েমী সম্পর্ককে তাজা’ রাখার মহৌষধ হিসেবে ‘গুচ্ছ-বিয়ে’ বা ‘দলবদ্ধ যৌনতা’কে আবারো একবার জোড়ালো সমর্থন দিলেন ‘জনাব’ তসলিমা নাসরিন,  যিনি ‘জরায়ু ও যোনীর স্বাধীনতা’র নামে নারীপুরুষের বহুগামিতাকে অত্যন্ত স্বাভাবিক ভাবে সুনজরে দেখে একসময় তুমুল আলোড়ন তুলেছিলেন, দ্রুত ‘সুনাম’ আর ‘খ্যাতি’ কুড়িয়েছিলেন, দেশের গণ্ডি ছাড়িয়ে একাধিক ভিন্ন ভাষায় তার লেখা বই বা ‘বিচ্যুত মতবাদ’ অনুদিতও হয়েছে, এমনকি টেলিভিশনে আমরা স্বচক্ষে দেখেওছি তাকে ভিনদেশে প্রকাশ্যে জুতোর বাড়ি খেতে, যদিও ব্যক্তিগত ভাবে আমি সেটাকে কখনোই সমর্থন করি না, বা সেটা নিয়ে কোনো উচ্ছাস প্রকাশেরও কোনো কারণ আছে বলে মনে করিনা।

তসলিমা নাসরিনের লেখা নিয়ে আমি আসলেই কোনো মন্তব্য করতে চাচ্ছিলাম না। তার লেখা পড়লে আশ্চর্যজনকভাবে আমার ভেতর কোনো রাগ বা ক্রোধের জন্ম হয় না। তবে অনেক কষ্ট হয় ভেতরে। কেন হয় কে জানে? কেন তাকে শুধুমাত্র এইসব বিষয় নিয়েই ক্রমাগত এমনিভাবেই লিখে যেতে হবে?কেন তিনি এইসব লেখা লিখে তড়িৎ আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে আসতে চান? আমি বুঝতে পারি না। তসলিমা নাসরিন, আপনি তো এমনিতেই অনেক জনপ্রিয়! এক নামেদেশবিদেশের অনেকেই আজ আপনাকে চেনেন, জানে্ন। আপনি আসলে কিসের পক্ষে? বা কিসের বিপক্ষে? আর আপনার বিপক্ষের সেই চিন্তা বা মতবাদকে রুখতে কতটা প্রতিরোধের বা অশালীন প্রতিবাদের প্রয়োজন হয় আপনার?  বা এ নিয়ে মাথা ঘামানোরও কোনো প্রয়োজনীয়তা আদৌ আছে কিনা সেটা নিয়েও তো ভাববার বিষয়ও থাকতে পারে। একঘেয়েমী সেই একই বিষয়ে অবিরাম ঘূর্ণির মধ্যেই কি আপনি বসবাস করছেন না? সেই তো একই প্রসঙ্গ! ‘নারীপুরুষের যৌন সম্পর্ক, সন্তান জন্ম দেয়া, একগামিতা, পুরুষের বহুগামিতা, পরকীয়া, সমকামিতা, উভকামিতা, হিপি কমিউন, দলবদ্ধ সেক্স বা সম্মিলিত যৌনতা, যৌনাঙ্গ ও জড়ায়ুর স্বাধীনতা, পুরুষতন্ত্র আর পুরুষতন্ত্রের বীভৎস নারীবিদ্বেষ, নারীঘৃণা আর নারীর ওপর প্রভুত্ব কায়েমে সদা সচেষ্ট-প্রচেষ্ট সামন্তবাদী-পুরুষসমাজ, নারী অর্থই যেন যৌনসামগ্রী, যৌনসঙ্গমসঙ্গী, স্রেফ ধর্ষণসঙ্গী, যৌনদাসী, ক্রীতদাসী ইত্যাদি ইত্যাদি’…- উফ, অসহ্য! জনাব তসলিমা নাসরীন, ভালো কিছু, নতুন কিছু, শালীন কিছু লিখুন। কত কিছুই তো আছে লেখবার। আপনার লেখার হাতও তো নিঃসন্দেহে খুবই উর্বর। কিছু ভালোচিন্তা, নতুন কিছু চিন্তা, সুস্থ কিছু চিন্তার খোরাক দিন না আমাদের। আপনাকে অনুরোধ করছি, দয়া করে আপনি অন্তত ঈশ্বরকে নিয়ে কোনো মন্তব্য করবেন না। যে বিষয়ে আপনার আগ্রহ নেই, সেই বিষয়ে কোটি কোটি মানুষের তো আগ্রহ থাকতেই পারে, তাই না? আপনি লিখেছেন, ‘প্রচণ্ড ঈশ্বর ভক্তরাও নাকি বিয়ের ব্যাপারে ঈশ্বরের উপদেশ আজকাল আর মানেন না’। যারা ঈশ্বরের উপদেশ মানেন না তারা তো আর ঈশ্বরের অনুগতই থাকেন না। প্রচণ্ড ঈশ্বর-ভক্তি তখন তো বায়োবীয় বা অস্তিত্বহীন একটি বিষয় হয়েই দাঁড়ায়। ঈশ্বরের অনুগত থাকতে হবে কেন? সেই বিতর্কে আজ না নাইবা গেলাম। শূন্য বিশ্বাস আর অপর্যাপ্ত বিশ্বাস দুটি ভিন্ন জিনিস। কারো ধর্মে বা ঈশ্বরের পরম-বিশ্বাসে অপর্যাপ্ততা থাকতেই পারে এবং সেটা নিয়ে তার মনে আক্ষেপ থাকাটাও অবাঞ্ছনীয় নয়, কিন্তু সেটা নিয়ে স্ফূর্তিপ্রকাশ যে আপনাকে বেমানান নয়, সেটা অন্তত আমাদের বোধগম্যের বাইরে নয়। আপনার মতে ভবিষ্যতের আদর্শ সভ্য-সমাজের রূপরেখা কেমন হওয়া উচিত, সেটাতো আপনি স্পষ্টই এঁকেছেন আপনার লেখায়। আপনি লিখেছেন, ‘অসভ্য-অশিক্ষিত-সমাজে বিয়ে প্রথা চলছে। কিন্তু একটি সমাজ তো চিরকাল অসভ্য আর অশিক্ষিত থেকে যায় না! সমাজও বিবর্তিত হয়, সমাজ যত সভ্য হচ্ছে, ততো সে সভ্য সমাজে বিয়ে কমে যাচ্ছে। সভ্য সমাজে নারী আর ধর্ষিতা হবে না, নির্যাতিতা হবে না, পুরুষের দাসী বা ক্রীতদাসী বা যৌনদাসী কোনটিই আর হবে না নারী’! আপনার সভ্য-সমাজের রুপরেখা হবে এমন, যেমনটি আপনি লিখেছেন, ‘তুমুল প্রেমে পড়ে একত্রবাস করছে নারীপুরুষ, কিন্তু বিয়ে নৈব নৈব চ, অথবা বিয়ে জিনিসটাই বিলুপ্ত হয়ে গেছে, তখন। অথবা স্বামী-স্ত্রী পরস্পরকে ভালবেসেও একঘেয়েমী দূর করতে ভিন্ন নারী ও পুরুষকে নিজেদের যৌনসঙ্গমে সঙ্গী হতে আমন্ত্রণ জানায়। কোনও লুকোচুরি নেই, নিজেদের শোবার ঘরে, নিজেদের বিছানায়, দুজনের সঙ্গে যোগ হয় এক দুই তিন বা চার বা তারও চেয়ে বেশি। এই দলবদ্ধ যৌনতা দাম্পত্যজীবনে নাকি বৈচিত্র আনে, সম্পর্ককে তাজা রাখে!!!’ কি ভয়ানক খেয়াল আর খায়েস! তবে সাথে ভয়াবহ পরিণামের কথাও ভুলে যাবেন না কিন্তু। সম্প্রতি চীনে যেমনটা ঘটলো ঠিক সেইরকমই অবাধ শারিরীক মেলামেশার ফলশ্রুতিতে আপনারই চিত্রিত বা ‘ডাক্তারী-প্রেসক্রিপশন’ মতে সেই ‘গুচ্ছবিয়ে’ বা ‘দলবদ্ধ যৌনতা’র ফসল নবজাতক শিশুদের অবশ্যম্ভাবী আবাসস্থল তখন হয়তো হবে পয়ঃনিষ্কাশনেরই পাইপ! সে সম্ভাবনাকেও কি গুড়িয়ে দেয়া যায়?

অতএব, বাতিল বিষয়ে বাতিল মতবাদের বাতুলতায় না মেতে বরং অন্যদের ভাবনায় ‘মরনোত্তর আপনাকে’ নিয়ে বা সেখানে আপনার স্কেচটি কেমন হবে তা নিয়ে একবার ভাবুনতো। যেমনটা আপনিই তো বললেন, ‘কুসংস্কার যেমন হাজার বছর ধরে বেঁচে থাকে! তারপর ধীরে ধীরে বিলুপ্তও হয়ে যায় বটে’। এবার আপনি এবং আপনার অগ্রজ সম-মতবাদী দার্শনিক বন্ধুদের কথা ভাবুন তো একবার। কুসংস্কারের আয়ুষ্কাল তো অন্তত হাজার বছর! তার তুলনায় কতই যে দ্রুতবেগে বিলুপ্ত হবেন আপনি ও আপনার বিচ্যুত ধ্যানধারণা! কি ফেলে গেলেন পেছনে? কিছু রেখে গেলেন কি আমাদের জন্য, যা নিয়ে আমাদের গর্ব হবে একদিন, আপনাকে নিয়ে? আপনার জন্য সবচেয়ে হাস্যকর আর দুঃখজনক কি জানেন, আপনি যাদের পক্ষ নিয়ে ভাবছেন আর এসব লিখছেনসেই “আলোকিত বহ্নিশিখা-নারী” – তারাও তো লজ্জায় আর অপমানে কুঁকড়ে আসে আপনার লেখা পড়ে!

কি এমন মেধা আর সামগ্রিক সামাজিক উন্নয়নের চাবিকাঠি আছে আপনার ‘এমনিতেই নাচুনি বুড়ি তার ওপরে ঢোলের বাড়ি’ জাতীয় লেখাগুলোতে যা ছাপতে হবে দেশের সর্বাধিক প্রচারিত ও পঠিত দৈনিকের মূল পাতায়? ছোট বেলায় ইস্কুলে, টিফিনের ফাকে লুকিয়ে কিছু ইঁচড়ে পাকা বন্ধুদের যেমন পড়তে দেখতাম ফুটপাথ থেকে কিনে আনা ‘কিভাবে কি করিতে হয়’ জাতীয় চটিবই। ঐসমস্ত ‘কান গরম করা’ লেখার সাথে কোথায় কতটা ফারাক আপনার এই সাম্প্রতিক লেখাটাগুলোর? তবে কি ‘নিষিদ্ধ’ জিনিসের প্রতি সেই যে ছেলেবেলায় বা বড়বেলায় মানুষের যেমনটা আকর্ষণ থাকে, সেরকম কোনো অহেতুক কারনেই আমার রাতের ঘুম হারাম হলো? সে সম্ভাবনাও তো খুব জোড়ালো নয়, অন্তত আমার ক্ষেত্রে। সুতরাং আর সবার মতো তবে কেন আমাকেও চুপ করে বসে থাকতে হবে? কেন আমাকে মানতে হবে ‘বিয়েটা মূলত যৌনসংগমের একটা লাইসেন্স, নারীর ওপর পুরুষের প্রভুত্ব কায়েম করার একটা সামাজিক চুক্তিপত্র’! কেন আমাদের মেনে নিতে হবে, ‘বিয়ে করা স্ত্রী মানেই স্রেফ ‘যৌনদাসী’ বা ‘যৌনসামগ্রী’!’ কেনই বা তসলিমার ‘আইডল’ গ্লোরিয়া স্টাইনেম এর মতবাদকে মেনে নিয়ে সজোড়ে হাততালি দিয়ে বলতে হবে, ‘সেই মেয়ে স্বাধীন মেয়ে, যে বিয়ের আগে যৌন সম্পর্ক করে, আর বিয়ের পরে, চাকরি’। কেন আমাদের মানতে হবে ‘যে সমাজে শিক্ষিত, স্বনির্ভর, সচেতন মেয়ের সংখ্যা বেশি, সেই সমাজে বিচ্ছেদের সংখ্যাটাও বেশি, বিয়ের সংখ্যাটাও কম’ বা ‘সমাজে বিয়েটা নিতান্তই পুরুষের ক্ষেত্রে অর্জন, মেয়েদের ক্ষেত্রে তা বিসর্জন’! তসলিমা আরোও লিখেছেন, ‘ধর্ম যেমন মিথ্যে প্রমাণিত হওয়ার পরও টিকে আছে, বিয়েটাও ওই ধর্মের মতোই, যুক্তিহীন, কিন্তু টিকে আছে, কুসংস্কার যেমন হাজার বছর ধরে বেঁচে থাকে’! ধর্ম কবে কখন মিথ্যে প্রমাণিত হলো? কে বা কারা কিভাবে ধর্মকে মিথ্যে প্রমাণ করলো? এতবড় একটা ঘটনা ঘটে গেলো পৃথিবীতে আর আমরা তা টেরও পেলাম না! আমি যতই লেখাটা পড়ি ততোই যেন বাকরুদ্ধ হয়ে পড়ি। তসলিমারই মতে ‘বিবর্তন’ হয়তো তার পূর্ব-পুরুষদের শুধু লেজই খসিয়েছে প্রয়োজন নেই বলে’! তসলিমার ক্ষেত্রে তো খসিয়েছে তার পুরো লাজ! লজ্জাশরম তো মানুষেরই অনুষঙ্গ। পশুপাখির তো নয়। তসলিমার ভাষাতেই বলি, ‘মানুষ তো আর ন্যাড়া ঈগল নয়, বা কালো শকুনের মতো একগামী নয়’! আরেক অসাধারণ তথ্য-উপাত্য তসলিমা নাসরিন আজ আমাদের সামনে যোগাড় করে এনেছেন, যা নিয়ে আমি অবশ্যই গবেষণা করবো। তিনি লিখেছেন ‘আলবাট্রস, রাজহাঁস, কালো শকুন, ন্যাড়া ঈগল, টার্টল পায়রা, ডিক-ডিক হরিণ, বনেটমাথা হাঙ্গর, গিবন, ফ্রেঞ্চ এঞ্জেলফিস, ছাইরঙা নেকড়ে, প্রেইরী ভোলএরা সবাই নাকি ‘অবিশ্বাস্যরকমের বিশ্বস্ত আর একগামী প্রাণী! যত দূরেই যাক, যত সমুদ্রই পেরোক, যত বয়সই বাড়ুক, ঘরে ফিরে পুরোনো সেই সঙ্গীকেই নাকি চুমু খায়, তার বুকেই নাকি মাথাটা রাখে!’ খুবই মজার তথ্য। এ তথ্য সত্য হলেও তো কারো ক্ষতি নেই কোনও। তবে তসলিমার মতে মানুষই নাকি একমাত্র ‘স্বভাবতই বহুগামী, অসমকামী, সমকামী, উভকামী, জটিল আর বিচিত্র প্রাণী!’ যে কারনেই যেমনটা তিনিই বলেছেন, ‘মানুষ ছাড়া পৃথিবীর অন্য কোনও প্রাণীর মধ্যে বিয়ের কোনও রীতি নেই, দিব্যি তারা একত্রে বসবাস করছে, সন্তান জন্ম দিচ্ছে…’ ব্যাপারটা দাঁড়াচ্ছে অনেকটা এরকম যে, বহুগামী মানুষকে নাকি ‘ধরে বেঁধে বিয়ে নামের এক প্রাচীন, পিতৃতান্ত্রিক, অযৌক্তিক, অপ্রয়োজনীয় সামাজিক প্রথার’ বন্ধনে আবদ্ধ করে ফেলা হয়েছে।

আপনার কথাই সত্যি হোক একদিন যে, ‘আগামী দিনের সমাজবিজ্ঞানীরা ইতিহাস খুঁড়ে একদিন অবশ্যই কিছু ফসিল আবিস্কার করবেন, সেদিনের আলোকিত মানুষদের পুরোনো দিনের গল্প শোনাবেন তাঁরা’…। পৃথিবীতে দ্রুতবিলুপ্ত ও চরম-নিন্দিত ‘হিপি কমিউন’ এর মত আন্দ্রিয়া ডোরকিন, গ্লোরিয়া স্টাইনেম অথবা ভাগ্য একটু সুপ্রসন্ন হলে আপনিও – তসলিমা নাসরিনের এর মত প্রচণ্ড নারীবাদী, বা নিটসে, কান্ট বা হেগেলের মতো ভারসাম্যহীন প্রবল নারীবিরোধী একগুচ্ছ মানসিক প্রতিবন্ধী মানুষ ছিলো যারা অহেতুক মনোযোগ আকর্ষণের আশায় নানান আজগুবি, স্থ্লূ, অপ্রাসঙ্গিক বিষয় নিয়ে অপ্রয়োজনীয় রকমের বাড়াবাড়ি করতো, সময়ের পরিক্রমায় আজ যারা ইতিহাসের আস্তাকূড়ে বিলীন হয়ে গেছে! তসলিমার এই কথাটাও তো ঠিক যে, ‘এভারেস্টটা আছে বলেই হয়তো অনেকেই এর চূড়ায় চড়ে বসে’। তবে আমার দুঃখটা কোথায় জানেন? এই এভারেস্টটা একদিন যেদিন তুলার মত উড়তে থাকবে আকাশে, সেইদিন আমরা বা তসলিমা নাসরিনরা হয়তো থাকবো না তা স্বচক্ষে দেখার জন্য, আমার এই কথা শুনে আপনার মতো আরো অনেকেই এখন হয়তো শুধুই হাসবেন। রবীন্দ্রনাথের  মতো আমিও কেবল দূর থেকে ‘বিদীর্ণহিয়া ফিরিয়া ফিরিয়া চারি দিকে চেয়ে দেখি’- আর বলি,

‘ধিক ধিক ওরে, শত ধিক তোরে নিলাজ কুলটা ‘নারী’,

যখনি যাহার তখনি তাহারএই কি জননী তুমি!…

আমি তোর লাগি ফিরেছি বিবাগি গৃহহারা সুখহীন,

তুই হেথা বসি ওরে রাক্ষসী, হাসিয়া কাটাস দিন!…

কল্যাণময়ী ছিলে তুমি অয়ী, ক্ষুধাহরা সুধারাশি,

যত হাসো আজ, যত করো সাজ,

ছিলে দেবী,হলে দাসী’!

৯২৯ বার দেখা হয়েছে

৮ টি মন্তব্য : ““ছিলে দেবী,হলে দাসী!””

  1. রেজা

    ওমর ভাই, আপনার লেখা পড়ে ভালো লাগলো। লেখাটা তসলিমা নাসরিন পড়লে আরো ভালো হতো। নারীবাদী কিংবা মুক্তচিন্তা আর বিকৃত চিন্তাধারা এক জিনিস না।আফসোস বেশিরভাগ লোক এইসবকে মুক্তচিন্তা ও প্রগতির সূচক মনে করে।এনারা মানসিকভাবে পঙ্গু। এসবের বাইরে এরা চিন্তা করতে পারে না। :clap: :clap: :clap:


    বিবেক হলো অ্যানালগ ঘড়ি, খালি টিক টিক করে। জীবন হলো পেন্ডুলাম, খালি দুলতেই থাকে, সময় হলে থেমে যায়।

    জবাব দিন
  2. রাজীব (১৯৯০-১৯৯৬)

    ক্যানো জানি মনে হলো ভিডিও টি আপনার ভালো লাগতে পারে। লিঙ্ক।

    তসলিমা নাসরিনের প্রতি আপনার উষ্মার কারণটি বুঝা গেলো না।
    তিনি তো গুচ্ছ বিয়ে বা জরায়ুর স্বাধীনতার কথা বলতে পারেনই; নয়কি।
    স্বাধীনতা কি কেবল পুরুষের সম্পত্তি হয়ে থাকবে!


    এখনো বিষের পেয়ালা ঠোঁটের সামনে তুলে ধরা হয় নি, তুমি কথা বলো। (১২০) - হুমায়ুন আজাদ

    জবাব দিন

মওন্তব্য করুন : রেজা (২০০২-২০০৮)

জবাব দিতে না চাইলে এখানে ক্লিক করুন।

দয়া করে বাংলায় মন্তব্য করুন। ইংরেজীতে প্রদানকৃত মন্তব্য প্রকাশ অথবা প্রদর্শনের নিশ্চয়তা আপনাকে দেয়া হচ্ছেনা।